রাণা চ্যাটার্জির ত্রিবর্ণ রঞ্জিত দৃষ্টিকোণ,,,,,
ত্রিধারা মানবতার উচ্ছ্বসিত প্রগতিশীল ক্ষুধা,,,, ত্রিযামা পরিণতি,,,,
জয় হিন্দ,,,
স্বাধীনতা(২) : "গরম ভাত"
গত বছর সেদিনটা ছিল ১৬ই আগস্ট, স্বাধীনতা দিবস পালনের ঠিক পরের দিন । আমার অফিস শহর বীরভূম জেলার সাঁইথিয়া । আহা মরি সপ্রতিভ শহর না হলেও আর পাঁচটা মফস্বল শহরের থেকে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারে বেশ কয়েক কদম এগিয়ে বলাই যায়।
সাঁইথিয়া স্টেশন এ নেমে বাইরে মেন রোডের ভিড় ভাট্টা যানজট এড়িয়ে মাঝে মধ্যেই শর্ট কাট অলি গলি, তস্য গলি ,বসতি এলাকার এঁদো পথ পেরিয়েই অফিস পৌঁছে যাই। কখনো কেমন আপন মনে হলেও নজর এড়ায় না কর্ম চাঞ্চল্য বসতি জীবন ,ছোটো ছোটো তাদের নিকানো ঘর দোর । দরজায় বাঁধা ছাগল এর পাশে বসে স্কুল যাবার প্রস্তুতিতে কোনো ছাত্রীর খেতে বসা । কখনো ছোট ছোট পুচকে খুদে বাচ্চাদের রান্না বাটি খেলার দৃশ্য ভীষণ মন ভালো করে অন্য ভাবনায় নিয়ে ফেলে আমার কাল্পনিক মনন চিন্তনকে। আবার খালি গায়ে এক নাগাড়ে কেঁদে চলা বাচ্ছা টিকে ফেলে ,উনুনের আগুন জ্বালিয়ে রাখার আপ্রাণ প্রচেষ্টা কোনো মায়ের ।
আপাত সস্তা মালে ঠাসা মুদির দোকানে দু পাঁচ টাকার তেল নুন কেনার ভিড় ঠেলে আমার পথ চলার গতিময়তার মাঝে সেদিন একটু গতি শ্লথ হয়ে পড়ে এক বিশেষ ঘটনায়। নজরে পড়েছিল,ভিজে যাওয়া জ্বালানি কাঠ ,কঞ্চিতে ভরসা না করতে পেরে লাইট পোস্ট সহ এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আগের দিনের লাগানো ছোটো ছোটো কাগজের পতাকা গুলো কে সংগ্রহ রাখা এক বস্তা থেকে বার করছে চুলে জট পাকানো ওই হাড় লিকলিকে ক্ষয়িষ্ণু মা।
বয়স,বছর বাইশ তেইশ হবে,কি হবে না কত আপ্রাণ প্রচেষ্টায় সে, কিছু শুকনো বাঁশ পাতা ,কাঠ গুঁড়ির সাথে দুমড়ে মুচড়ে ওই প্লাস্টিক ও কাগজের পতাকা গুলো চুলায় গুঁজছেন আর ফুঁ দিয়ে ভাত ফোটানোর স্বস্তিতে ! পাশে হামাগুড়ি আর কাদা মাটি মাখা ল্যাঙটা বছর দেড়েকের কুচকুচে ,কোলের গোপাল তখনও খিদের জ্বালায় কেঁদেই চলেছে। কখনো উনুনের হঠাৎ আগুন শিখায় হয়তো বা ভাতের গন্ধ পেয়ে মা কে দেখে চুপ। এক অন্য স্বাধীনতার ঘ্রাণ নিয়ে পায়ের গতি বাড়ালাম অফিসের দিকে।
অনেক ভালো লাগা...
উত্তরমুছুনসুন্দর
উত্তরমুছুন