বৃহস্পতিবার, ৩১ মে, ২০১৮

রণজিৎ পান্ডের কবিতা।



সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলম রণজিৎ পান্ডের।


১. ভাগাড়তলির বাসিন্দা।


বেশির ভাগ মানুষ চাইলেই যদি মঙ্গল এসে হাজির  হয়

 তবে যোগ- বিয়োগের কোন  প্রয়োজন থাকে না

বেনো জলের নোংরা গুলোও   দম্ভভরে উড়ছে
কেননা

       কিডন্যাপারের চাওয়া বড়  অঙ্ক

       সেঁটে আছে চোখে মুখে

নিষেধ মানলে যেমন সিগারেট বেঁচে থাকে

  যমদূতদের  ছুটির কারণে আমরাও
অথবা

 ভাগাড়ের পচা মাংস যেভাবে উপাদেয় হচ্ছে

  সেই পথ বেয়েই  ঝুলে পড়ছে

   কাঙ্ক্ষিত সভ্যতা ও  সংস্কৃতি

                  এবং স্বেচ্ছাচারির   নামের তালিকা


২. সুজনেষু।

আবারও একটি কালো সিংহি  নিদান দিয়ে গেল যে

                  নিরামিষ খেলে সুস্থ থাকা যায়

ঠিক যেভাবে আলো ফেললে

                      নির্দিষ্ট স্থানটি দেখাতে অক্ষম হই

সেভাবেই আমরা মান্যবর গর্দভ হয়ে তাতেই  নাচতে থাকি

    যতদিন স্বাধীনতার ইমেজ ছিল

বিবেকের মাথায় যে কেউ কিল মারতে পারেনি

                       এমনটি  ঠিক   নয়

তবুও

    পায়ে কাঁটা ফুটলে যদি গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা থাকে

তবে ঔদ্ধত্য গণতন্ত্র-রোগের এবং স্বৈরাচারের

             নামকরণও  আবশ্যক   হয়ে পড়ে

 


বুধবার, ৩০ মে, ২০১৮

রাজিত বন্দোপাধ্যায়ের কবিতা।




নজরুলের বিদ্রোহদ্দীপ্ত অগ্নিক্ষরা কন্ঠে জাগ্রত

 কলম।


১. কবিতা: দিনকাল।


দিনকাল যে দিশায়

চুমা চামি গুলো দিও আড়ালে ।

নচেৎ আলিঙ্গনেই চামড়া খুলে --  

ডুগডুগি বাজিয়ে বুড়ো ভোমরারা  

গান গাবে যে মেট্রো ট্রেনের খোলে !

দিনকাল যে দিশায় --

গেল গেল রব চারিদিকে !  

কী গেল , কতটুকু গেল ,  

মাপ নিয়েছিলে কি নিজের ভরা যৌবনে ?

আজ দেখে রাগে --  

যতই ঠেঙ্গাও , তোমারও ওষ্ঠ      

ছিলনা কি এ ছবির অধীন ?  

পড়ন্ত রোদে চোখ নাহি চলে --  

তাই বুঝি রাগে হলে বিলীন !!




২. কবিতা: বিদ্রোহী।


হঠাৎ বেমরসুম বৃষ্টি এসে --  

ভিজিয়ে গিয়েছে দেখি স্মৃতির দ্বার !  

অনেক ছবি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে    

বুকের গভীরে আমার ।      

তোমরা গিয়েছো চলে নির্বিকারে

যে যার পথরেখা ধরে --        

উৎসবের উপান্তে থাকা উচ্ছিষ্টের মত

পড়ে থাকা কিছু ছবি যেন    

আজো ডাক দেয় হৃদয়ে আবৃত তলে ।

শ্রাবণী --- কোথায় যেন তুমি ছিলে !  

বর্ষার ছিটায় ছিটায় আর কালের        

ক্ষয়ে যাওয়া দাগ ধরে --        

আজো দেখি হৃদয়ে গহীন অতলে  

তোমার হাতের স্পর্শ লেগে !    

জীবনেরে আমার ছুঁড়ে ফেলে গেছে  

কর্ম অবসর যেন বাহুবলে --      

এ পৃথিবীর সবেরই তো দেখি মূল্য আছে !  

সেই মূল্যের জগতে আমার কলমের দামে  

যায়নি কিনতে পারা সেই ছবি , তাই দ্রোহী !

তাই জীবনের অতল কর্দমের নীচে গাঁথা  

এ জীবনের একমাত্র বুনিয়াদে --  

হঠাৎ হঠাৎ জাগে কাঁপন , আর তুমি  

হঠাৎই অতল হতে দাও ডাক ,  

আর এ কলমও হয়ে উঠতে চায় বিদ্রোহী !



শান্তা কর রায়ের কবিতা।




গৃহসুখের আলাপনের আঙ্গিকে প্রমীলার

 কলম।


১. কবিতা - কর্ণ।


খুঁড়ে দিয়ে গেলে সমস্ত ক্ষত

ছুঁড়ে দিয়ে গেলে আমায়

অনাগত ঝড়কে দাঁড়াতে বলেছি,

ভেজাচ্ছে শহর চোরাবালি স্রোত

এভাবেই হাতলবিহীন ঝড় ভালবাসি:

রাত অজগর হয়ে জড়ায় স্নায়ু

জটাধারী কেউ তেজী রূপ ঢালে

দৃষ্টি ছুঁয়ে যায় গর্ভতল ;

যোনিমুখে ঢেলে দাও বিষ

জন্ম হোক বিষবৃক্ষের

সূর্য প্রণামের নামে শপথ পরমায়ু

চেয়ে নেবে নিয়মমাফিক

চুরচুর ভাঙবে সকাল  ।



বড় বেশী দূরে গেছো তুমি

নগ্ন রাস্তায় ছড়ানো প্রমাণ সংকেত যত

নির্বেদ ছায়া ওড়ে চাবুকের মতো  ।



২. কবিতা: শাস্তি দিলাম প্রভু।


শান্তিজল নিয়ে ফিরে যাও

ভেবোনা ফেরাতে পারিনি!

শেওলা উঠোনে ছড়িয়েছি আবাহনী বীজ

ঝড়গতি চুম্বন করেছি

অনায়াসে হিমঘরে রেখেছি তোমায়

শূন্যতার উড়ানে রেখেছি চিঠি ।

ঝরাপাতা আমি,কি আসে যায়

উড়ন্ত যুক্তির ভগ্ন দেউলে হাত রেখে

কাঠফাটা রোদ হয়ে বাঁচি

রামধনু ছুঁয়ে ফিরে গেছি

শরীর বৃত্তে অনেক শব্দ ভিড় করে

আগের মতোই নীল সেই নীতি  ।

ভালবাসার জ্যামিতি থেকে ক্রমাগত

শুধু তুমি মুছে গেছো

শীতের দুপুরে শিল কুটো  শব্দ

প্রাণহীন প্রতিঘর কল্পনার মতো  ।



সোহিনী সামন্তের কবিতা।



অপরিচিত আলোকে পরিচিত নারীকথা আঙ্গিকে

কলম।




১. মরীচিকা  প্রেম।


 ক্লান্তির বশে ধূসর মরুভূমি ,


মরীচিকার ঘেরাটোপে দগ্ধ মনকেমন......


ফুরিয়েছে শুধুই প্রেমের নিঃশ্বাস ......


অস্থির মন ব্যাকুল আশ্বাস ।।


তৈলাক্ত মন ছিনিয়ে নিয়েছে ......


অব্যক্ত  কিছু মলাটে ভালবাসা ,


জীবন্ত লাশের মৃত আশা ...


আজ ব্যর্থ  ,ক্ষান্ত ,...।।..


মনকেমনের প্রেম ঢাকা পড়েছে,


মরীচিকার লুকোচুরি খেলায় ......


ব্যর্থ প্রেমিক ক্ষান্ত তার ব্যারাটোপের জালে......


কিছু যন্ত্রণা কিছু অস্থিরতা তৈরি করেছে মায়াজাল...


মরীচিকা প্রেমের ইতিকাল ...।।




২. একলা নারী।


ধ্রুবতারার জ্বলজ্বলে অনুভূতিতে লক্ষ্যভেদের ব্যাপক আশা,


পথের মোড়ে একলা হেঁটে চলার বিশেষ অভিধান ,


উন্মুক্ত করে পাখির মতন স্বাধীন অভিব্যক্তির অক্লান্ত নেশা......


স্যাঁতস্যাঁতে চৌরাস্তায় , কাঁকড় বিস্মৃত লালমাটি............


শত্রুর দামামা বাজে বকুলের অসহায়তায় ......


দুর্বহ পথে একলা নারীর গৌরবের জয়গান,


মুগ্ধ পলাশ ছুঁয়ে যায় একান্ত স্বাধীনতায়......।।







অভিজিৎ দাস কর্মকারের কবিতা।



আধুনিক চিন্তনের আঙ্গিকে কলম।


১. কথা।


জোনাকিসন্ধ্যায় বাঁশতলার ফাঁকে

রাতের চাঁদ মোঘল ইতিহাস পড়ে;

জানালার কপাটে বিচ্ছুরিত প্রতিবিম্বে

পথের ধারে ঘাসেরা বেড়ে উঠছে

ঢেকেরাখা ফসলে।


কাজল পিসি বলেছিলো

শব্দগুলো ট্রয় থেকে থরের মোড়ে

ওলট পালট স্পার্টার সমীকরণে গুন-ভাগ যোগে পরাগরেণুর অস্তিত্ব চৌকাঠে।


বইয়ের কথা ভূলে

ডেকে নেবো নেপলিয়নকে পলাশির

অমীমাংসিত চৌরাস্তায় বুড়ো আঙুল চেপে পরিচয় দেবে পৃথিবীর কক্ষপথ...





২. সংখ্যার ডেবিট-ক্রেডিট।



ক্যাপিটাল মার্কেট সমান বাফেট।

হাতছানি সূচকে অসমান

লাল-নীল ডিজিট

অংশিদারী কেনা-বেচায় গোলক-ধাঁধাঁ।

ফাঁকা লাব-ডাব পেটে সঞ্চয় চড়া রঙে।

ন'টা পনেরোয় লম্বে উপচে পড়া লোক।

চাপ না থাকা সমতল ডিভানেও ঘুম নাই।

চাদরের ফুলে প্লে-স্টোর ভর্তি রঙিন অ্যাপ।

রাত ভৈরবী গায় বর্গাকার মশারি পাশে।

ঘুমে সরল বলিরেখা মিলিয়ে দেয় আগন্তুক ছোঁয়া।

কেনা ডি-ম্যাট ভর্তি ঘনাকার এক্সচেঞ্জ ফোলিও।

আর্যভট্টের বিন্দু দিক তহবিলে ভবিষ্যত সংখ্যা।

কখন থেমে যায় ঢেউখেলা NEFT-র জাল তরঙ্গ।

হন্যে হয় সমান্তরাল সংখ্যার ডেবিট-ক্রেডিট...



অনুরূপা পালচৌধুরীর কবিতা।




সোহাগ রসায়নের আঙ্গিকে সাম্প্রতিক লেখনী।






রেডিয়েট বাইফোকাল রেডিয়েট

---------------------------------------------



অস্থায়ী সূর্যের ক্ষণপায়ে কোলাহলের দীর্ঘ কোলাজ


অবশিষ্ট কামিনী = কাম(টু)মি : আদুরে প্রেক্ষাপট


থেকে যাবতীয় টু     টু লাল ব-দ্বীপ

                           স  (এ)

                           ↓

                           ↓

                        (কাম)


স্তাবকতার প্রতিন্যাসে অন্ধপাতকুয়ো


অসম জল।জলীয় প্রলাপ।অবগাহন


         ১বন্দী = ৪দেওয়ালের আলার্ম


চোরারোদ____রোদচেরা শহরে


                             গলে পড়ে নীল শরীর






১টুকরো জলীয় ক্ষরণ

-------------------------------



তখনো পারদ উত্তাপ ভেঙে প্রবাহমান মাটিশিকড়


বোতামের দখলদারি : বরফ অজুহাতে নদীগর্ভ


অশ্লীল চোখে কাঙ্ক্ষিত ফার্নের হোয়াইট মোনার্কি


এসো পাথরে ঠোঁট ঘসে নেই


জন্ম নিক লাল ক্ষিদের অক্ষরেখা


লুকিয়ে রাখি গাছের আড়াল।অবশ দেওয়ালের  দীর্ঘ সংলাপ


ব্যাকুল কুয়াশার এজলাসে শিউলিবাসর


নীরব আগুনে পিপাসার হলুদ পৃথিবীকোষ


বুক ভিজে তুমি নেমে যাও ঝুড়িমূলে


২হাতের চেটোতে তখনো আগুন পুষে রাখি অছিলায়


প্রত্যূষা সরকারের কবিতা।




আধুনিক চালচুলোহীন প্রেমের আঙ্গিকে কলম।



১| |তোমার পরকীয় প্রেম|


 --- কবিতা কী হারিয়েছে?

     শুধুই  মিটিং-মিছিল? হুম?

     কতদিন বারণ করেছি, চশমাটা পড়বে না!


চশমায় আমি আভিজাত্য পাই

তোমার কুচকুচে ঠোঁটের ধোঁয়ায় মত।


মাঠের ওপাড়ে আর সূর্যাস্ত হয় না

এ' পাড়ে আমি সন্ধ্যা নামাই হেসে।

দোয়াত কালোয় ডুবতে ডুবতে

আমি অজ্ঞাত পলিটিশিয়ন হয়ে উঠেছি।

সাইবেরিয়ার সাদা অন্ধকার আমার গ্রীষ্মবেলার আস্তিন।

ভেজা চাদরে পরিযায়ীর ভিড়

খড়কুটো সামলে রাখে পাশের বাড়ির চড়ুই

যদি বেহাত হয় বাসা।

তোমায় কতদিন দেখি নি আমি...

স্টেজের আলোয় আমার ছন্দপতন ঘটেছে,

চিহ্নহীনে আমি অবৈধ।

বারবার উচ্চারণ করেছি মিছিলের শিরোনাম

পংক্তি কাটতে কাটতে জুড়েছি শ্লোগান।

তল খুঁচিয়ে খুঁজে পাই নি তোমায়

নীরব দর্শক হয়ে তুমি বসেছিলে

গ্যারেজের ভ্যাপসা নর্দমায়।

চৌকাঠ পেরোই নি আমি, পাছে ভুল হয়ে যায়।

ভোটাভুটি, মারামারি, দাঙ্গা, মিছিলে

তোমার প্রিয় কবি ক্ষীণ হত রোজ।

পড়ে দেখ দেড়শো বছর পর আমায়...

কবি শুধু রাজনীতি বোঝে।

বয়স তো আমারও বেড়েছে!


আমিহীন কেটে যাক, কাটুক যে ভাবে কাটে...

বছরটা জন্মে যেন রাজনীতি না করে

ছন্দস্রোত হঠাৎ থামলে, খুব ভয় পেয়েছিলাম।


ইতি,

      তোমার পরকীয় প্রেম





২| | নিশাগম |


রাত্রি নামে নরম শরীর জুড়ে

খাঁজ-কাটা গোঁফ এড়িয়ে চলে ঘ্রাণ

বংশবৃদ্ধি সজাগ টেলিস্কোপে

দেখতে পেলেই বয়সে দড়ির টান।


মেয়েটি ছিল আধ-খোলা ইতিহাস

পরাগ তেজে শান্ত স্বতন্ত্র

ভুলের মাশুল জ্যান্ত ছিন্ন লাশ

পচন ধরা নষ্ট নক্ষত্র।


জোয়ার এখন মধ্য স্নায়ু মূলে

জরায়ু বেয়ে কুয়াশার উৎপাত

বিষ নেমেছে নাভির তলদেশে

উপড়ে ওঠে মনুষ্য নিশ্বাস।


অন্ধকারে চোখ যায় না ঠোঁটে

শরীর পেল মাদক সহবাস

কেউ জানে না যন্ত্র যোগে প্রেমে

যন্ত্রণাটা ভীষণ উন্মাদ।


আরিফুল ইসলাম সাহাজির কবিতা।




আত্মসমীক্ষণের অন্তর্দৃষ্টি আঙ্গিকে কলম।



১. অন্ধকার :পথ দেখাও


শতাব্দীর শবদেহ বহন করবার মত

একটা শক্ত কাঁধ চাই ,

গণকবরের পাশে কঙ্কালের রাশিগুলো

ঠিকঠাক সাজিয়ে রাখার মত

একদল ডোম চাই ,

ছন্দের গহীনে এত আঁধার ঢাকবার জন্য

বিবেকহীন একদল কবি চাই ,

ক্ষয়িষ্ণু শরীর হতে পাঁজর খুলে

মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে দেবার জন্য

একদল ভুয়ো ডাক্তার চাই ।


পাশাপাশি

তিমির হননের গান উপেক্ষা করে

প্রেমের মশাল ধরানোর জন্য

একজন সাচ্চা মানুষ চাই :গোধূলির

নেতিয়ে পড়া আলোতে লন্ঠন হাতে

অগণন সপ্নকে সে পথ দেখাক ।




২. জীবন্ত ফসিল -


অসুস্থতা বাড়ছে !চামড়া ভেদ

করে শিরগুলো উঁকি দিচ্ছে ,

রুক্ষ্মতা ,স্নায়ু দূর্বলতার ফেনুস

শরীরকে করে তুলছে জীবন্ত

ফসিল !


অসুস্থতা বাড়ছে !উত্কণ্ঠা

নির্দ্রাহীনতার রূপ নিয়েছে ,

দেহনদী জল্প্পতায় ভুগছে ,

অবসাদ আর হতাশা শরীরকে

করে তুলছে জীবন্ত ফসিল !


অসুস্থতা বাড়ছে !হৃদয়ে অগ্নিস্ফুলিঙ্গ ,

নিঃশব্দের তর্জনীতে সময়ের জলছবি ,

সামনে মৃত্যুদ্বার ;পীড়িত মুখ :পাঁজরের

দাঁড়ে অসহ দহন..........

যুগযন্তনার শব্দিত তান্ডব অন্তঃসারহীন

ভবনদীকে করে তুলছে জীবন্ত ফসিল !






পবিত্র চক্রবর্তীর কবিতা।




অভিনব উপপাদ্যের আঙ্গিকে প্রেমের কলম।



১. কবিতা: শুক্রানুদের সংসার।


শ্রেণীসংগ্রামে কয়েকশো ডিম্বাণু - শুক্রাণুর মৃত্যুর পর ,
অসীম গর্বে ,বিজয় উত্সব করতে করতে দুটি হাত
এক হয়ে ক্রমে আরও ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে !বাঁধে সুখী গৃহকোণ;
সৃষ্টি হয় আপাত ঘুমন্ত স্বপ্ন- মাতৃ জঠরের নরম শয্যায় !
নাটোরের বনলতার সাথে হাঁটতে হাঁটতে একে একে
তারা এগিয়ে চলেছে - আরও এক উদ্যেশ্যে !
সকলে যে সকলের মত এক হবে তার কোন
অর্থ না থাকলেও , প্রাগৈতিহাসের দেহজ সংসারেরা
একই ভাবে রচনা করে সৃষ্টির অনিন্দ গভীর উল্লাস !
উষ্ণ জলে নড়বড়ে ওঠানামা নরম মাংসপিন্ডে ,
ক্রমান্বয়ে চাপে ধর্ম-অধর্মের অভেদ্য বস্ত্র বর্মের মত !
শুধু ভাবি , শুক্র আর কুসুমের - ধর্মটা ঠিক কি ছিল ?




২. কবিতা: প্ল্যাসেন্টা।


ভালোবাসি বলে যে ঘৃণাগুলো প্রতিনিয়ত
এলোকেশের মত উড়ন্ত হাওয়ায় পড়ন্ত
গোধূলিতে এলোমেলো থাকে , সূর্যের
আপাত শেষ রশ্মির মত খেড়ো নদীর গহ্বরে
কুণ্ডলী পাকানো প্ল্যাসেন্টা আর ঠিক তারই
নান্দনিক লয়ে অবহেলাদের বিলি কেটে কেটে
কবরী বেঁধে দেই । পাশে সজ্জিত থাকে অবহেলা ।


হয়তো এইভাবেই জরায়ুর অকাল কান্না আর --
গোলাপ লাল রক্তে ক্ষরণ হয় অব্যক্ত থাকবে
কিছু যন্ত্রনাদের নিশ্চুপ অভিলাষ । তবুও দেখি ,
কত দগ্ধ হয় এমন ভাবেই হৃদয় । ক্রমে ,
ঘূর্ণিঝড়ের শেষ দাপটে উপড়ে পরে বনস্পতিদের
সংসার অথবা ,মাথা নুইয়ে থাকে গুল্মের কলোনী ।


সেই মত ভালোবাসাদের দীনতা রেখে যাবে
হয়তো , প্রতিদিনের মুখোশ পরা প্রেমের দিবস ॥


অর্ণব গড়াইয়ের কবিতা।




সাম্প্রতিক সামাজিক প্রেক্ষাপটে কলম।



১. কবিতা: মধু।


একটা বিষাক্ত কাম, শিরশিরে অনুভুতি,

অল্প অল্প করে কুড়ে খায় ভালোবাসা ।

বস্তাপচা মূল্যেবোধের ভারে ক্রমশ নুব্জ্য,

অলীক উন্মাদনায় সব তরলীকরন ।


প্রত্যাশিত ভালোবাসা হঠাৎ করে ইউ টার্ণ,

কুলুঙ্গির কোনে জমে থাকা উষ্ণতা এখন বরফ ।

হিমালয়ের পাদদেশ থেকে নেমে আসা একটু শীতল জল,

ফুটন্ত যৌবনে পড়তেই চোঁ চোঁ করে একটানে সব শেষ ।


ভিড় করে থাকা মাছিদের গুনগুন,

ফুলে ফুলে মধুর আশায় গুজ্ঞরন ।



২. কবিতা: দ্রৌপদী।



চলো দ্রৌপদী আমার হাত ধরে এগিয়ে চলো

তোমার অপেক্ষার প্রহর প্রায় অন্তিমলগ্নে ,

আজকের শ্রীকৃষ্ণ ব্যস্ত অর্জুনের সহজপাঠ শিক্ষায় ।

ভাঙা চশমার ফাঁক দিয়ে বাঁকা চোখে ডাক পাড়ে অসুস্থ রিকসাওয়ালা ।

ধরো দ্রৌপদী আমার গামছা, ঢেকে নাও তোমার লজ্জা

খোলামেলা দ্রৌপদীতে আমরা অভ্যস্ত নয়, তোমার আঁচল সামলে নাও ।

আজকের শ্রীকৃষ্ণ ব্যস্ত, কানে গোঁজা মোবাইলের হেডফোনে ।

দেখো দ্রৌপদী কেমন সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে,

তোমার নগ্নতার শেষ নির্যাসটুকু চাতকের মত পান করে নিচ্ছে অবলীলায় ।

এখন ব্যস্ত শ্রীকৃষ্ণ সংবাদপত্রের পাতায় আর এক দ্রৌপদীর খোঁজে ।



রবিবার, ২৭ মে, ২০১৮

পিয়ালী সাহার কবিতা।




সহজিয়া প্রেম ফ্ল্যাশব্যাক এর আঙ্গিকে কলম।


১.

দু খানা শৈশব


কোন এক বিকেলে পাখিদের ঘরে ফেরা দেখে বড্ড মন কেমন করে


নারকেল তেলের গন্ধ আর ফিতে জড়ানো কলা বিনুনি

ঠাকুমার কোলের কাছে চুপটি করে বসিয়ে দেয় আমায়


পাশের আশ্রমের বাচ্ছারা ঠিক তখনই কোথাও প্রার্থনায় বসে


সম্পর্কের মা শব্দটা যাদের কাছে আজও জটিল


ওদের রুক্ষচুল,নারকেল তেল আর কলা বিনুনি সব গুলিয়ে

অন্ধকার হয়ে আসে


ঢুলে পড়া চোখে ভাসে

মা এর গলা জড়ানো কোন

রুক্ষ চুলের কচি হাত


 মাটির  কুলুঙ্গি তে যত্নে তোলা থাক তোর আমার রাংতায় মোড়া

 শৈশব




২. সহজ এর মৃত্যু


নিকোনো উঠোন,পুতুলের ঘর আর হামাগুড়ি দেওয়া ছোট্ট আগামী

পৃথিবী মানে তো এটুকুও হতে পারতো


হিসেব নিকেশ মাপ জোপ ওসবের জন্য ছিল রঙ্গীন মলাট বাঁধানো অংকর খাতা


পুরনো বইখাতায় উই ধরলে ছড়িয়ে পড়লো যত জটিল গুন ভাগ

ঢাকা পড়লো তোর আমার সহজ সরল বেঁচে থাকা গুলো


আর ওই উইঢিপির তলায় চাপা পড়ে গেলো সেই তুই আমি আর আমাদের হাত ধরে  খেলা জল ডিঙনোর বিকেল গুলো।




সুনন্দ মন্ডলের কবিতা।


স্বচ্ছতোয়া নদীর স্রোত প্রেমের আঙ্গিকে কলম।




১. মন কেমনের পালা

         

ওরে মন তোর ফাগুন রাঙা বাতাস

আলোময় উদ্গীরনের তৈলাক্ততা

চিলেকোঠায় কাক চিল

ঠক ঠক করে কাঠঠোকরা গাছে।


বসন্ত কোকিল সুর বেঁধেছে গলায়

আমার শ্রী চোখের কাজলে

নরম কাঁথায় ভেজা স্বপ্ন

সত্যি করার অদম্য বাসনায়।


মন কেমনের পালা শুরু

কালরাত্রি শেষে নতুন জীবন

ভালোবেসে বর্গক্ষেত্রের চারকোনায়

হাত পা ছড়িয়ে কামনা বিলাপ।


যৌবনের চাহিদা মেটাতে সহবাস

সঙ্গমে পালাবদল বিছানায়

অনাসক্ত কামে মিশে যায় দেহের তাপ

লালায়িত রসের ফল্গুধারা।




২. কল্পবিতান

                 
ভালোবেসে পাওয়া যায় সব। পাওয়া যায়না হৃদয়ের বালি।

কান্নায় বিরহ মাপি রোজ। যতইনা দাবি করি, আপনার বলি।

অন্তর ছুঁতে চায় সুচাগ্র মনের ফলা, প্রেমিকার দেহ নয়!

দেহে আছে মোহ, সুখ আর পরিতাপ। জানি সে কাঙাল আমি নই।


আকাশ যেমন পৃথিবীকে কাছে চায় ভালোবেসে,

দুজনার ঠোঁটের ফাঁকে শত যোজন দূরত্ব!

চুমুর নেশায় ভিজে যাওয়া ঠোঁটের বারান্দা

তুমিও ভালোবাসো, তবু পাবেনা নারীর নারীত্ব।


বিশ্বাস ও ভরসায় চির থাকলে মন কাছে পাবেনা

সেখানেও অনেক সাধনা লুকিয়ে, অনেক বিশ্বাসের ফল।

সুখের রসাস্বাদনে গড়ে উঠবে অমরায় কল্পবিতান

যদি সে ডানায় ভর করে খুঁজে পাও অমৃত সকল।

                   -------------------






অরণ্যচারী সন্ন্যাসী আরণ্যকের কবিতা।


পৌরুষ দম্ভে আদমের কাঙ্খিত আঙ্গিকে

প্রেমের কলম।


এক।

অন্ধকারে আহ্বান


নাহয় তুমি দানবের সাথে করো সঙ্গম

ঈর্ষায় মরুক ঈশ্বর, লজ্জা পাক পৌরুষ;

কাছে দাঁড়িয়ে বাহবা দেবো আমি।

তবুও নয় আদিম আলোয় আত্মবিসর্জন!


তাদের আলো থেকে বেরিয়ে আসো

লিলিথীয় অন্ধকারে অনাবৃত করে দাও বুক

লজ্জায় অন্দরে যাক ইভকাঙ্ক্ষী পুরুষ।


তোমার ফলন্ত বুক হতে ঝরতে থাকুক সমতার অমৃত;সঙ্গমের প্রভু জানুক তা হেমলক!

তুমি এসে দাড়াও উন্মুক্ত সমুদ্রের পাড়ে

কিতাবের পৃথিবী উল্টাতে থাকুক নিয়মের পাতা

গালি দিতে  থাকুক- বলে রাতের রাণী!

তবুও দিলাম কন্ঠ নিলাম আন্ধারের ভার!


পুতুলের খেলাঘর থাকুক সজ্জিত- সেজদারত

থাকুক ইভআত্মা আদিম শক্তির পায়ে।




দুই।

মাটির মানবী


রাতের গভীরে বেড়ে যাওয়া শ্বাসকষ্টে

ফিরে আসে বিগত শতক।কবে কোন

হলুদ প্রজাপতি ঠোঁটে চেপে পৃথুলা পৃথিবী

ডুবে গিয়েছিলো সূর্যাস্তের ভেতর।

কবে কোন আগুনের নদী, জ্বালিয়েছিল

সাদা নৌকায় অবোধের যতটুকু বোধ।


মহাকাল পুরোনো বটগাছ, ছড়িয়ে দেয়

হাত-পা চারিদিকে; ঝরে পড়ে সময়ের ফল

কুকুরের লালার মত।


বক্ষবন্ধনী খুলে নীলিমা, ঝরঝর ঝরিয়েছে

সমস্ত নীল-আমি রঙ মাখি নি গায়ে।বুকে

নিয়ে পীযূষ পেয়ালা কত সমুদ্র পাঠিয়েছে

ভ্রু বার্তা! উপেক্ষা করেছি কতবার

ব্যবিলনীয় নারীদের উষ্ণ আহ্বান; বহুবার

পালিয়েছি উর্বশীদের নরম কোল থেকে।

জানি, মাটির মানবী রাখে তৃষ্ণার জল

মদিরার নেশা রাখে শরীরের ঘ্রাণে।


বহু মহাকাল পরিভ্রমণ পরিক্রমণ শেষে

ফিরে আসি শ্বাসকষ্ট আর শ্লেষ্মার রাতে

এক-দুই-তিন নয় সহস্র জন্মান্তরের হিসাব

মিশে যায় গভীর অন্ধকারে,শাশ্বত সত্য এই-

পোড়ামাটির পৃথিবীতে তুমি পেলব পলি

জনম থেকে জনমে করছি আমাকে চাষ।



অপাংশু দেবনাথের কবিতা।



দেউলের পর্নমোচী প্রাঙ্গনে ভিক্ষুক বাউল প্রেমের

আঙ্গিকে কলম।




১. খিলভূমি


বিষমলাগা কণ্ঠ্য আমার দাঁড়াই উঠে সম্মুখে

আদিগন্ত বিছায়ে দিয়েছো সোহাগ আঁচল।

এতো যে জল বাইরে গড়ায়,

                     এক কুঁজো সুখ দিতে পারি---

জলঘাটে ও-তরঙ্গ ভাসে

এমন চক্ষু কোথায় গড়বে ছবি হৃদয়ে!


হাওয়ায় মনোবিষ বয়,মাটিতাপ এসে রক্তে মেশে

                                                   টের পাও প্রিয়!


বিস্মৃত নয় কখন অনাবাদী জমি লিখে গেছে

বেদনা-লিপিতে কোনো এক অনাদি বাউল।


থেমে থেমে বৃষ্টি হয়,

অকস্মাৎ জাগে, ভেতরের প্রাচীন খিলভূমি।





২. গ্লোকোমা ও ছায়াতরুণী


দেখিনি তোমার চোখে বহুদিন হলো

বেড়েছে নয়নে এই জটিল গ্লোকোমা

বাইরে ভীষণ রোদ ভেতরে শীতল

তরুণী চেয়ারে বসে দেখছে পুরুষ

শীতল বাতাস ছুঁয়ে ওড়ে তার চুল


কাচের ছায়ায় আজ আকাশে শহর

সাঁই সাঁই যান ছুটে রোদের ঝালর

স্বরলিপি সব যেন উলট পালট

তুমি তার জেগে থাকা বিষণ্ন প্রণয়

সবুজ শহর লেখে কেমন অসুখ!!


এখানে গভীর রাতে জেগে উঠে পাপ

তরুণীরা বাড়ি যায় ছায়ার ভেতর।

আমি তার কিছু দেখি তোমার মতোন

গ্লোকোমা তো রোগ নয় অঙ্কের গমন।


সৌমাল্য গড়াই কবিতা।




প্রেমের উদ্দাম কালবৈশাখী ঝড়ের কলম।



১. মেকি সভ্যতা।


তোমার উলঙ্গ রূপেই আমার শ্যামলবর্ণ দেহে

একগাছি চুলের মত সরু সোনালি নদী বয়

কবিতারা রোজ স্নান করে

আর তুমি অবগাহন করো আমার সত্ত্বার ভিতর...


উর্বর ঊষসীর উষ্ণ আলিঙ্গন বিভাজিকাময় কামড়ে ধরা শরীর শিহরণে রক্ত তঞ্চন।


তোমার উলঙ্গ রূপেই আমার স্রোতস্বিনী প্রেম

প্লাবিত করে মনোভূমি

মজে যাওয়া গতিপথে তোমার পেলব স্পর্শ

আমার লাম্পট্যকে ঢেকে রাখে।


নগ্ন শরীর নদীতে রোজ ডুব-

চোরাপথে, শিকারির দল তৃপ্তির সাঁতার কাটে

তারপর-

সভ্যতার পোশাকে,মুখোশের আবরণ

অসভ্যেরাও সভ্য হয়ে ওঠে।


তোমার ওই মেকি পোশাকটা, খুলে ফেলো

তোমার শরীর বেদীর প্রত্যেকটি আঁচড়

দেখুক, লজ্জাহীন এ পৃথিবী

তুমি কি জানো না?

এক একটা পোশাক , এক একটা অসভ্যকে ঢেকে রাখে...




২. তোমাকে লেখার মত কোনো কবিতা নেই


তোমাকে লেখার মত কোনো কবিতা নেই

ভ্রূপল্লবের ইশারা, কেয়ারি করা  চুলে হাওয়ার নাচ

এসব কবিতায় দেখানো যায় না

আমি যা দেখি তাই লিখি

যা লিখি তা দেখাতে পারি না

প্রতিটি নিঃসীম অন্ধকারে কবিতা জানু পেতে বসে

আলোর মুহূর্তে তুমি সেই অন্ধকার

যেখানে ক্ষীণ হয়ে আসে দৃষ্টিপ্রপাত

খুব কাছেই একটা অরণ্য,

কোলাহল চিরে নদী হয়ে উঠছে


আমরা একজোড়া হরিণ হবার স্বপ্ন দেখেছিলাম

একজোড়া পিঠোপিঠি  রোদ্দুর

আমরা একসাথে নদীতে সাঁতারের কথা ভেবেছি

উপেক্ষার মত ভয়ানক স্রোত আর কি আছে?

ক্লান্ত এই অবগাহন...

স্পর্শের লেফাফা খুলে বুঝেছি

তুমি দূরত্ব বেশি ভালবাসো...




৩. বাসবদত্তার কাছে


আলো নিভে গেলে শূন্যতার স্টেথোস্কোপে

পাঁজরের ঝাঁপতাল

অনেক প্যাঁচ পয়জার কষে ব্রহ্মান্ড সৃষ্টির মূহুর্তে

তুমিই ইভ আর ইভনিংয়ের দ্যোতনা


সেই তো ফিরে এলে বাসবদত্তা  মানুষের গন্ধরাজ রুমালের ভাঁজে

মেঘ- রোদের এলাটিং বেলাটিং...

নাভিজল জুড়ে পরকীয়া ঢেউ

আজও সিঁদুরের রাস্তা ধরে সিঁথি হেঁটে যায়।

অখন্ড দেহতত্ত্বের উঠোনে

  সমস্ত পুরুষ আজ তোমার দেহে  রজঃস্বলা ঘর বাড়ি...



জয়দেব মহান্তর কবিতা।




হ্লাদিনী ক্ষনিকের পশলা প্রেমের আঙ্গিকে।


১. সংস্পর্শ

         ––––

চৈত্রের শানিত চোখ খোঁজে স্ফুর্তি

গর্ভাঙ্গে মোচর দেয় অলিক শিখা।

তপ্ত উল্লাস পেতে চায় 'ঘাম ভেজা গন্ধ'

লাজুক ক্রোধ ঘোমটা খুলে-

মাখে হ্লাদিনী শুণ্য বেডরুম।

আতকিয়ে ওঠে লোমকূপ গ্রন্থি

বাধানো সংযম,কেরে নেয় লবন বিন্দু।


এবার তবে ম্লান হোক্

আলুথালু চুলের কাতর চাহুনি।

শৈলগুঞ্জ বল্কল এলিয়ে ছুয়ে যায়;

কোমর ভরা ঐস্বর্গিক দুটো হাত

রক্ত মাখে,তৃষ্ণা জমাট বাঁধেনি তখনও।

একটু একটু করে জমে উল্কা থেতু

জাতক থিয়েটালেন্স চুপিসারে,

ঠোঁটে চায়-লিপস্টিক।

জানু লুফে দেয় কুমারি সোহাগ

স্ফিত অভিমান চোখ ছুয়ে থাক;

হাতের ফাঁকে ভরাট,নরম আঙ্গুলের আচ।

দৈব্যবাণী নষ্ট করে দিক;

চাঁদের আলোর নেশা মগ্নতা।

উদ্-গ্রীব নস্টালজিয়া কাতর কন্ঠে

কানে কানে ছুয়ে যাক্ বিষাক্ত দীর্ঘশ্বাস।

পাজর ডিঙ্গিয়ে ইশারা ডুবে যাক্

ক্লান্ত ছায়া,তৃষ্ণামোহিনীর তেজে।

-----------------------------------



      ২.  সম্মোহন

     ——————

তোর রাগি পশলা মিলিয়ে

আমার ছন্নছাড়া আঙ্গুল দুলিয়ে ধর।

পলাশ-ডিঙা নোভেলি চাইছে

মৌনবিতান ছুয়ে দে শিরায় শিরায়।

শেফালি হুকে ঝুলে রাখা লাজ

মেলে দে ওড়নার দস্যিপনা

ভাবি সন্ধ্যার হাতে তুলে দে

আমার কুলিক সম্মোহন ।

গোলাপি বুকে চুলের ডগা আঁকে

অভিমানি ছায়া।

আমায় স্পর্শ করে সোহাগি লতা;

মোমপ্লেটে আসে নি তখনও সহবাস

ভেঙে ধরছে কাছে পাবার আচল।

ইঙ্গিতের হাতছানি পেতে পেতে-

হয়তো,মিলিয়ে যাবে জ্যোৎস্নার গতিক।

অচেনা ঘৃনা আলাপ করে

ছাটানো সম্পর্কের ব্যালকনি ঘেষে।

ছায়ায় ছায়া রেখে,লুটোপুটি খায়

দীর্ঘশ্বাস, মিলিত সহাঙ্গে

তৃষ্ণার চৌকাঠে ঝরে মান-অভিমান।

রক্তাভ গালে ফেরে শুষ্ক-ঠোঁট

এলানো টিপ খসে

পরে থাকে আমার অতল স্পর্শ

তোর পাশে রাখা টিউবলেট জুড়ে।


সৌরভ বর্ধনের কবিতা



ভাঙাচোরা শব্দসাঁকোর প্রেম আঙ্গিকে কলম।



১. স্বপ্ন থেকে ফিরে : গাছ অর্থে পাগল


আজ অ্যাকটা কবিতার অনুষ্ঠান হয়ে গেলো মধ্য ঘুমের ঘরে


ঠিক মোটরবাইকের আয়নায় বসে পেছন রাস্তা দ্যাখার মতো


ক্লিভেজ পড়ানো সন্ধ্যেব্যালায় অ্যাক ব্যাগ সাঁতার খাবার পর


ফিরে আসো বাঁশফুল রাডার তোলো হাতে হাতে রাত হয়ে যা।


এলিজির দেয়াল প্লাস্টার করেও আরো কিছু ঘরবাড়ি তুলো
দিয়ে আমরা হাত ধুয়ে নেবো।


 স্টেশনান্তরে ধর্ম কুড়াবো ভিন্ন তারপর সঙ্গীতে কাল আমরা দুজন ট্রাক হয়ে যাবো সযত্নে।


গাছ অর্থে পাগল অ্যামন অভিসন্ধি আমাদের ছিল না বাঞ্ছায়।


তবু ক্যামন করে বায়োলজিক্যাল পোয়েম লেখার সময় হলে
গাছ আর যোনি আগে চলে আসে তারপর শুধু শান্তি - সঙ্গম।


গাছ আর গাছ থাকে না হয়ে ওঠে অ্যাক্রোপলিস পাতার স্টু।


বেরঙিন চোখে বছর পাল্টে পাল্টে বন্ধ্যা শরীরে সেফটিপিন বিছিয়ে দিয়েছি অ্যাখন।


পোস্টম্যান খোঁজার দায়টাও হিংস্রলু বা ওই পর্বেরই কোনো ফ্লোরা যারা নাইট্রোজেন স্থিতিকারী ছেঁড়া সাইটোপ্লাজম।


বালতি, তুলি আর বাম হাতে আমলকী
শরীরে একটি একটি করে দ্রাঘিমার টানে পৃথিবী বেড়ে যায়।


উটপাখি গল্পের ছাদে চিড়িয়াখানার জাল লিখে আসে রোজ
জানলায়।

আকাশ আকাশে লুদ্ধক ছাতিম পাতার শ্বাস মেখে
গিঁথে যাওয়া থেকে গ্রন্থ জন্মলাভ।


শেষাবধি প্রশ্রয় পায় পেয়ে স্বপ্ন থেকে ফিরে আসে গাছ চোখমুখ ধোয় জল খায় উন্মাদ।

            ________________________




২. এবার সূর্যের পালা।


মরে যাও সুন্দরী তোমাকে আর সুন্দর দেখতে চাই না
যাও সারা গায়ে উল্কা মেখে এসো.......
মেট্রো থেকে নেমে রাজপথে, মোহনায় এসে দাঁড়াও!

খাঁড়া পায়ে লাথি মার নপুংসক সিস্টেমের পাছায়, মুখে
ফোরস্কিন কেটে চচ্চড়ি বানা সমাজশালার কপালে
টিকিদাড়িটুপিমালা ভেড়ুয়াগুলোকে গিলোটিনে চড়া

নষ্টা
      ভ্রষ্টা
             হতচ্ছাড়ী                          যা মন চায় হয়ে যা;

জ্বালিয়ে দে নদীমাতৃক সখ্যতা....
জরায়ু থেকে বেড়িয়ে আসুক সূর্যের ঔরস
সংযোজন বিয়োজনে গেলো গেলো রব তুলে গলা
শুকিয়ে মরুক বুদ্ধিজীবি নেতামন্ত্রীর দল

তবু নির্ভয়া আসিফা হোস্ না,
উনুনের মুখে মুখ থুবড়ে থাকা তাপসী মালিক হোস্ না

হতে হয় দাবানল হয়ে যা, নিদেনপক্ষে উনুন কিংবা
বিউটেন এলপিজি....... .....

কবিদের বল চাঁদের দিন শেষ, এবার সূর্যের পালা
ওরা কিছু ঘাম ছিঁড়ে রাখুক ঝুড়িতে,
বড্ডো ক্লান্ত দেশ এটা!
             ________________________


শনিবার, ২৬ মে, ২০১৮

মায়িশা তাসনিম ইসলামের কবিতা




ভিন্নধর্মী স্বাদ প্রেমের আঙ্গিকে কলম।


১. অভিজ্ঞা


প্রথম যখন খুন হই, বয়স ছিল আঠারো

প্রতি সকালে আমার এপিটাফের কাছে এসে বাজাতে ভায়োলিন

মাংসল প্রেমে ঐশ্বরিক মৃতের জন্ম হতো নবজাতকের মতো।


মৃত্যু চাইনি, অদৃশ্যের কাছেই চোখের প্রার্থনা জেগেছিলো

অন্ধ করে দাও!

অন্ধ করে দাও!

আত্মার ঘ্রাণ শুঁকে হৃদয় যেন একবার নিজেকে জয়ী মনে করে।


তবু আমি খুন হলাম, প্রথমবার।

এ দায় কি আমি ঈশ্বরকে দিব?

যাঁর পরীক্ষাগারেই নাক্ষত্রিক অমানিশায় জন্ম নেয়া নারীত্বের অন্তহীন সূত্র!

এ দায় কি আমি ঈশ্বরকে দিব?

যাঁর অস্ত্রাগারেই বেড়ে ওঠা পৌরুষ স্বরলিপি রচনা করতে শিখে শিহরণের নতুন কাগজে।





২. হারানো আলজিভ


তুমি আমায় আজ বলছো আবেগহীন

সরলতা নেই কৈশোরের, প্রেম চোখে নিয়ে আর ঘুমোতে যাই না....

যেন উষ্ণতাহীন কোন দুপুর গড়াগড়ি খাচ্ছে গ্রীষ্মের বুকে!

সন্ধ্যাগুলো শুধুই ঘেমে উঠে অভিনয়ের পরিশ্রমে!

আমি হেসে উঠি, কারণ আবেগের দরজার সামনে এতকাল দাঁড়িয়ে ছিলাম উপহাস হয়ে..

সরলতার হাত হাত রাখতেই উধাও হয়ে যেত নিজ হাতের প্রেমের রেখাগুলো!


এতকাল একটু বাঁচার আশায় কতশত মৃত্যুসঙ্গম!

এতকাল নিঃশ্বাস নিতে নিতে ভুলে গেছি যৌবন!


বিশ্বাসের ভাষায় মানুষকে অনুবাদ করতে গিয়ে হারিয়েছি আলজিভ, হারিয়েছি নিজস্ব ব্যাকরণ....

কনডম ও কবিতাকে এক কাতারে দেখে জানতে পেরেছি, ভালোবাসা এক স্তন্যপায়ী প্রাণীর নাম!


আমি ফিরে আসব, ফিরে আসব সরলতা নিয়ে...

আবেগ ও প্রেম নিয়ে....

যদি আজ রাতেই আকাশ থেকে সমস্ত নক্ষত্র পদত্যাগ করে ফিরে যায় ঈশ্বরের ঘরে...


জিৎ পাত্রের কবিতা




আকাঙ্খিত স্বপ্ন আঙ্গিকে কলম।


♪♪♪♪♪স্বপ্নরূপ ♪♪♪♪

মেঘলা মধ্যাহ্নে একাকী বসে আলোর বর্নে

আষাঢ়ে মেঘের বৃষ্টি ছুঁয়েছি জানালার ফাঁকে হাত বাড়িয়ে

এই সময় তোমার দূরত্বের ব্যবধান পেরিয়ে এসে

পেয়েছি আপন করে রিমঝিম বৃষ্টির সঙ্গে,

চোখে আসে আপন কল্পনার স্বপ্নালু মায়াজাল


বৃষ্টির কনা তোমায় সারা শরীরে এঁকে দিয়েছে কাম পত্নী রতির বেশ!

তোমার ভিজে চুল স্পর্শ করেছে ঠোঁটের লালাময় অমৃত,

ভেসে উঠে মনের ঘন থেকে একটা একটা সময়ের ছবি

মেঘের চাদর লেপ্টে তোমার সিক্ত শরীর

ফুটে উঠে শরীরের ভাঁজ!

গভীর শ্বাস ছড়িয়ে পড়ে অন্তরে দেখি তৃষ্ণার্ত হৃদয়ের প্রত্যাশা


আরো সজ্জিত হয় সময়ের তালে প্রেমের অসভ্যতা

আরো গাঢ় হয় আমার প্রেমের র্স্পধা,


হে বৃষ্টি ধন্যবাদ তোমায় বারবার!

তুমি ফিরিয়ে দিয়েছ স্মৃতির স্বপ্নময় অতীতের প্রেম!




♥♥♥♥শেষ চিঠি♥♥♥


♪♪♪♪জিৎ পাত্র♪♪♪♪♪


আমিতো তৃষ্ণার্ত তিমির বিশ্বাস্য দুটি হাতের


পৃথিবী জয়ের দূর্নিবার আকাঙখা!


সাগরের অতলসেচে মুক্ত খুঁজি সাবধানী ঢঙ্গে কাউকে সাজাবো বলে!


এই রকম চাওয়া যদি অপরাধ হয়!


আমিও পাপ ক্ষরনের জন্য অগ্নি কুন্ডে প্রবেশ করবো।


যদি সেই আগুন শুষে নেই আমার সমস্ত সত্তা


দংশিত করে মনুষ্যত্ব!


জানি আমার এ অনন্তযাত্রা নিশ্চিত ধ্বংসের পানে


তুমি দেখে নিও প্রিয়,,,,,


একদিন আমিও চলে যাবো!


অসংখ্য স্বপ্ন, অপূর্ণ সাধ,নিষ্ফল আশা


আর মানুষের দেওয়া র্নিদয় বেদনা নিয়ে।


ইতি


তোমার অবহেলা।







রবীন বসুর কবিতা




সোহাগের অতলান্ত ঐকান্তিক গভীরতায় লেখনী।



প্রেমের ভুবন




তোমাকে চুম্বনে ডাকি, আলিঙ্গনে ধরি

তোমার ও স্তনের স্পর্শে প্রতিদিন মরি,

কী কোমল পেলবতা সুগভীর পদ্মনাভি

ওখানেই মুখ রাখি, দেখি অনন্ত উদ্ভাসি l




তারও পরে নদীরেখা, বালুতট প্রসারিত

কামনা আছাড় খায়, পথ শুধু অবারিত,

অনন্ত গভীরে গিয়েই শিশ্ন খোঁজে তাকে

যোনি বলে ডাকে যারে আপামর লোকে l




তারপরেই অন্ধকার আশ্লেষে মোহিত হই

শীৎকারে জানান দাও তুমি প্রাণাধিক সই,

ঠিক পথে যাচ্ছে দণ্ড, হবে ঠিক বীর্যপতন

তোমারও সমুদ্রসুখ বয়ে যাবে নদীর মতন l




পাপপুণ্য তোলা থাক, তোলা থাক সংকোচ

সহবাসে তৃপ্ত হই, হাত ভরি মিলন-উৎকোচ,

সংরাগ তীব্রতায় তোমাকেই ফের করি চুম্বন

মুগ্ধ জীবন আজ, ভরে দেখি প্রেমের ভুবন l



২.  সম্ভোগেই তৃপ্তি জাগে


সঙ্গমে লিপ্ত হলে সম্ভোগেই তৃপ্তি জাগে মন

আশ্লেষে আবিষ্ট হয়ে পুরুষের শরীর খনন l

খননে যে অগ্নি ওঠে, অগ্ন্যুৎপাতে শুধু ধায়

জ্বলনে শীতলপাটি, কামসূত্র বহুদূরে যায় l


দেহের ভিতরে আছে অজানা সে আপনজন

তাকে ছুঁলে সম্ভোগ পেয়ে যাবে নিজস্ব মনন l

মন তো আসল চাবি, সব সুখ খুঁটে নিতে পারে

মোহিতে আবিষ্ট হয়, অন্তর্লীন অসুখ যে সারে l



ভজন দত্তের ব্যতিক্রমী রচনা



সংক্ষিপ্ত কথাকলি আঙ্গিকে স্পষ্ট স্বীকারোক্তির কলম।


ভজন দত্ত।


আটকুঠরি নয়দরজা


             ভজন দত্ত



তমসা পার হওয়ার পর দেখি/

মরুভূমিতে এক অনামা নদী /

কালের ঘড়ি সোহাগি চাঁদ /

শ্যামলী ঢেউয়ে ঢেউয়ে নষ্ট বাৎসায়ন/

#

জানলায় নিদ্রিত যৌবন/

দর্পণে মুখোশহীন/

ছৌএর তালে তালে গম্ভীর/

গম্ভীর আজ শিকারিপাখি/

নৃত্যে নৃত্যে এসো উৎসব/

 কিংবা জন্মদিন.../



সংলাপ গদ্য কাব্য।

একটি  সুসংবাদ
                      
                                        ভজন দত্ত

রবি ঠাকুর,
আমি আমার বসকে কোনদিন বলতে পারিনি,ট্রেনের কামরায় লেখা আপনার 
" চিত্ত যেথা ভয়শূন্য উচ্চ যেথা শির" পড়ে ভেবেছিলাম কাল রাতে, 

আগাম, আগাম বলবোই,
স্যার, একটা সুসংবাদ আছে, স্যার, 
কাল আমি ডিউটি যেতে পারবো না।

বলতে পারিনি,স্যার। 
আধঘণ্টা ধরে আপনার ন্যাকা ন্যাকা বিরক্তিকর বক্তৃতায় আমার মাথা ঘোরায়, বদহজম হয় স্যার।
আমার ভীষণ হাই ওঠে,ক্লান্তি আমায় একটুও ক্ষমা না করে, ভীষনভাবে আঁকড়ে ধরে।

বলতে পারিনি স্যার।
আপনি যেসব কথা এত বছর ধরে বলে আসছেন সেগুলি কি কোনদিন আপনি আপনার স্ত্রী পুত্র কন্যাদের শুনিয়েছেন?

কোনদিন যদি শোনাতেন, তবে স্যার, 
আপনার স্ত্রী তরকারিতে বেশী নুন দিতেন, 
না হয় ঝাল, আর তিনি যদি স্বয়ংসিদ্ধা হতেন, তবে আপনার বক্তৃতা চলাকালীনই আপনাকে শুনিয়ে শুনিয়ে মোবাইলে তার প্রেমিকের সঙ্গে ঘর ছাড়ার কথাটা এবেলা পাকা করে নিতেন, 
আপনার ছেলে তার ট্যাবলেটে ক্যান্ডিক্রাস খেলতো
আর মেয়ের ঠিক তখনি টিউশন যাওয়ার তাড়া থাকতো

স্যার,আমি আপনাকে গত একশ আঠান্ন বছর ধরে বলার চেষ্টা করছি, একশো আঠান্ন থেকে আপনার ক্ষমতায় আপনি  একশো কেটে নিলেও আঠান্ন তো থাকে স্যার। আমি গত আঠান্ন বছর ধরেই আপনাকে বলতে পারিনি, স্যার,একটা সুসংবাদ আছে, আমি কাল ডিউটি জয়েন করতে পারবো না,  কাল আমার ছুটি।

সত্যি, সত্যি ছুটি। 
ঠাকুরের আকাশের আলোয় আলোয় আমার মুক্তি।
স্যার, একটা সুসংবাদ আছে স্যার
সেদিন সত্যিকারের রবীন্দ্র জয়ন্তী...


স্পন্দন চ্যাটার্জীর কবিতা



অজন্তা ভাস্কর্যের আঙ্গিকে প্রেমের কলম।



১.

প্রেয়সী, তোমায় দেখে দাবানল জ্বলে এ-বুকে

তোমার কোটিদেশে শিহরণে ঘুরে বেড়াতে চায় আমার সমস্ত স্বাদকোরক...

নারী, তোমার দুর্গম সব জলপ্রপাতের বানে ভেসে যেতে চায় আমার আজন্ম লালিত সব পৌরুষ

তোমার ভাস্কর্যের মত গঠিত আবেদনের শরীর

আমি পাখির মত খুঁটে খুঁটে খেতে চাই, বুঝতে পারো?

তোমার সেসব প্রাচীন ভাস্কর্য

বোকার মত সারা রাত্রি প্রহরা দেয় ঋতুচক্রে সিক্ত রাত্রিবাস..

তারা বোঝে না

ওভাবে আগলে রাখা যায়না এ যৌবনের শ্রেষ্ঠ সব সম্পদ..

তারা বোঝে না, এক রাতে আমি দস্যুর মত আসবই,

তোমায় হাঁটকে, লন্ডভন্ড করে, লুঠ করে নিয়ে যাবো সব আগল, সব পরিমিতিমাপ, সকল ইতস্ততবোধ..

তোমার ক্লিভেজের জন্মদাগরা শুধু টের পাবে, মুষলধারে কামড়-বৃষ্টি,

বুঝতে পারোনা, শুধু তোমার সামনে সুধারসে স্নান করব বলে আমার সমস্ত পৌরুষকে কাঠিন্যের আগুনে জ্বেলে রেখেছি, হে প্রেমিকা...



২.
তোমাকে, বেশভূষা, অলঙ্কারে না পারি,
সোহাগে, গৌরবে পূর্ণ করব, প্রেমিকা আমার...
এসো প্রেম করি উন্মাদের মত,
পর্ণমোচীর বনভূমি, চিরহরিৎ এর জঙ্গল পেরিয়ে,
বরফকুচি তোমার উরু ছুঁইয়ে গুপ্তধনের সন্ধানে উঠেছে ধীরে ধীরে
জেগে উঠেছে তোমার ওই বৃন্তরা, জেগে উঠে
বিষাক্ত সর্পদংশন কামনা করেছে তারা।
যৌবনের রাগে আমি উপগত হই তোমারই সিংহাসনে,
আমার সকল পৌরুষ স্খলন হয় তোমারই অন্দরে
তোমার স্তনে, গভীর নিতম্বে, উত্থিত বক্ষে,
কামনার পিঠে
পরাগরেণু প্রবিষ্ট করি বারবার...
করো শীৎকার,  করো শীৎকার,  করো শীৎকার;
আদরে আদরে নিকিয়ে নি সব রহস্য...

--

বৃহস্পতিবার, ২৪ মে, ২০১৮

নবজাতকের কবিতা



নবজাতকের প্রস্ফুটিত প্রনয় কুসুম

সাম্প্রতিককালের আঙ্গিকে কলম।



 ১। অলীক প্রেম-- নবজাতক

------------------------------ ------------------------------ ----------------

ধোঁয়াটে অন্ধকারের আড়ালে ভেসে বেড়াতে চায়

দীর্ঘশ্বাস মাখা প্রেমের অব্যর্থ বিরহ।

চিতার আগুনে ঝলসে ওঠা স্মৃতির গনগনে কালো কুয়াশায়

আমি খুঁজে পেতে চাই

প্রতি রাতে ক্যাপাচিনোর উষ্ণ ধোঁয়ায় ভেসে ওঠা

যুগযুগান্তর প্রতীক্ষিত, সেই প্রেম!

সেই প্রেম- যে প্রেম খুঁজে দিয়েছে বনলতা সেন।

সেই প্রেম- যে প্রেম উন্মুক্ত করেছে নীরার উদ্ধত বুক।

সেই প্রেম- যে প্রেম পানপাত্রে নির্দ্বিধায় ভরে দিতে পারে

নিশ্চিত বিরহের মত মারাত্মক বিষ।

দিনে দুপুরের কাব্যিক মাতলামি আর মরীচিকার খোঁজ

রঙচঙে গেলাসের তরল উন্মাদনায় যার প্রতিবিম্ব

হাতছানি দেয়, আমার হারিয়ে যাওয়া এক একটা ‘পল’কে।

সেই প্রেম!

সেই প্রেমের খোঁজে আজও ভেসে বেড়াতে চাই

আসন্ন ক্যাটাস্ট্রোফির উত্তুরে বিভাজিকায়।



চাদরমোড়া শরীরে হেঁটে বেড়াই, ও গলির আনাচ কানাচ;

ক্যাপাচিনোর কড়া গন্ধে

হন্যে হয়ে শুধুই খুঁজে বেড়াই

চড়া দামে বিক্রি হওয়া এক একটা অলীক প্রেম!!


দয়িতা সরকারের কবিতা



অকপট বাস্তব কথন আঙ্গিকে কলম।



কবিতা: দ্রষ্টব্য(যা দেখা যায়)।

এই পঁচাত্তরের রক্তক্ষরণ
আর, ধুরন্ধর আঠারো, ক্ষিপ্ত ব‍্যস্ততা, র্দুবার,
মাঝে লার্ভার লিকলিকে হৃদস্পন্দন ।
থতথমে ধোঁয়া আসে অসংখ্য খবরে,

তিল ফেটে তেল বেরোয় সকলের,

'স্থায়ীত্ব-ক্ষীণ'
হয়ে গেলে ঘুমের ,
অগোছালো বিছানার- বালিশের তেল,ফিরে আসে,

ঠেলে দিয়ে মাথা সিনেমায়-
দিনের লাইইইট_ক্যামেরা-অ্যাকশন-
"এক কাপ আমেজের ভাড়" 'গরম চুরুট'
"লতা কে চাই",আম-পাতা আর বাসনের ভীড়'ও চাই
বাস-স্ট্যন্ড,চৌমাথা,সিনেমার কাওতালি----
 চাই ।

'পরিপাটি 'সব'(শব)' এর সমাজ।

ঘানি ঘুরলে, আর ফোঁটে ফোঁটে তেল জমা হলে পাত্রে
তবে দিন চলে           ,.............. তিলের,

গরুর বলিদান চুষে ঘানির বন্ধ হলে ঘোরা
"জামানা"------
জীবন্ত রেখে দেব 'ফরমালিনে চোঁবানো, সরীসৃপের  পেট'।

পায়েল খাঁড়ার কবিতা


প্রতিসরাঙ্কে তোমার প্রেমের ছায়াপথ আঙ্গিকে কলম।

১. ছায়া মলাট


খোপবন্দী শহর সাজিয়েছি চোখের বাইপাসে।

ঠোঁটের কোষে জীবাশ্ম হওয়া প্রেম

বিগত বসন্তের এপিটাফ গড়ে নিঃসাড়ে,

বলব বলব করেও বলা হয়নি-

সে কথার স্তূপ ইদানীং পাঁজরে নীল সন্ধ‍্যে নামায়।

ডায়রীর ওমে মূহুর্তেরা মৌখিক হয়ে ওঠে, দুরন্ত!

একটু করে জমানো সৌখিন আঘাতেরা

দুপুর জানালায় পড়শি হয়েছে

যখন রোদ নিভে আসে ঝড়ের মেঘ মেখে।

আজ, মুঠোফোনে নয়-

ডাকটিকিটেই লিখলাম তোকে,

'এখনই সত‍্যি করে ভালো আছি জানিস....

.....অনেক বিষাদের মাঝে।'





২. ইতি উহ‍্য ১৭


অমানিশির দোয়াতে কলম ডুবিয়েছি,

একটু অপেক্ষা ......আর

এক নিব জোছনা উঠে আসবে।

তারারন্ধ্রে ঢালছ সম্মোহনের নিকোটিন,

আমি তুমিগ্রস্থ হয়ে পড়ছি .... ক্রমশই।

নাও, এভাবেই লেখা শুরু কর গল্পটা

সন্ধ‍্যামণির ঠোঁটে জমাট রহস‍্য এবং.......


ঘোর কাটে বৈদেশিক রিংটোনে।

বালিশের ফাঁকে এক পৃথিবী দূরত্ব

ইনফিনিটিভ সাংখ‍্যমান।

তাকিয়ে দেখি

অভিযোজিত দৃষ্টি

আঙুলের পায়চারি। তোমার আন্তর্জালিক নাগরিকত্ব

।।

বেলজিয়াম কাঁচের প্রতিসরাঙ্কে ঐ কোজাগরী চাঁদ।

কী আশ্চর্য!

আমার আকাশটা আজকেই সবচেয়ে বেশি কালো।







সন্দীপ পিপলাই এর কবিতা



প্রেমের তরঙ্গায়িত উচ্ছ্বল ঝর্ণার স্রোতের আঙ্গিকে কলম।



১. নীরব ইচ্ছে নদী

শুনশান পথের বাঁকে গোলাপী স্বপ্নের নীল সীমানা!
টুকরো কোলাজে সোহাগী চিরকুট,
ডেনিম ভাঁজে লুকোনো অনুরণন... আসমানি চুপ রেখা খেয়ালি বাঁধনে।
চোখের মিনারে উচ্ছাস দুর্নিবার
খাঁচার পাখি দেয় উড়ান মনযমুনায়,
কুঞ্চিত আবেগ উন্মুক্ত নীলদিগন্ত।

পাট ভাঙ্গা স্রোতের জোয়ার
অনুকম্পা উন্মীলিত জোনাকি,
বুকের স্কেলে স্পন্দনের ইকুয়েডর...
মসৃণ ভাঁজ তীব্র শিহরণ ,
ঈপ্সিত মননের গভীর সমুদ্রে উড়ান উজানের টানে।
তুলির স্বপ্নীল বেহাগ রাগে রংরুট মানচিত্র।

দুয়ের সম্পৃক্ত উষ্মা...
পারদ উতল মেঝের স্পর্শে নামাঙ্কিত কলেবর!
একাত্ম নিকেতনে পূজিত পরম আমিত্ব।
কুলের অতলে সমাহিত পরতে নীরব ইচ্ছে নদী...
চুপকথা ঘিরে উত্তাল পরিণয়..



২. সহবাসে সঙ্গম


গভীর রাতে উত্তাপ মেশা কামাতুর অভিযোজন
ভাঁজে মোড়ানো শরীর,সহবাসে সঙ্গম।

কাঁপা ঠোঁট,উষ্ণ নিঃশ্বাস, নিবন্ধে মোনোলগ
উন্মুক্ত চুলের ঘ্রাণে তীব্র অশ্লেষ
ঠোঁটের প্রাচীরে অনুসন্ধান।

বুকের ভাঁজে মত্ততা নিশান
আঙ্গুল লেখে বৃন্ত দলিত সোহাগ...
নীল সঙ্গম, রিপুর তীব্র প্রতিফলন
লেপ্টে থাকা শরীর সহবাস।

ঘড়ির কাঁটা আটকে, বাদামি অঙ্কুরোদগম
পিচ্ছিল দ্রবণ অনুভব মিশেল
ওঠানামা ,পেশির উন্মোচন।
দেহপটে উদ্বেলিত সাগর সঙ্গম,
প্রেমের মিনারে শায়িত নগ্ন আলিঙ্গন...

লক্ষ্মীকান্ত মণ্ডলের কবিতা



অপরূপ নৈসর্গিক স্পর্শের নাব্যতা আঙ্গিকে কলম।


১. দংশন ও নিরাময়


ঠোঁটের কালো তিলের বাইরে একরাশ সাদাফুলের রাতপথ।
বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি সেই তীব্র সুগন্ধে, তারপর শিরদাঁড়া
অসাড় করে ভেসে যেতে থাকি আকাশ পাখির কম্পনে, কোন
ইচ্ছা নেই চুম্বনের। নিরাময় চায় দংশনে, আকাশের
শুক্লপক্ষ নিয়ে উঁকি দিয়ে যায় মাধুকরী খিদে, আমি তরঙ্গ বাঁধি
সেই মাটিতৃষ্ণার নির্বাক উর্বরতায়

মৃত্যুর জন্য যা যা পাওয়া যায় নি এখনও সেই সব বসন্তকাল
লাবণ্য খুঁজছে যৌবন নামক মানব, আঙুল দিয়ে লিখে চলেছে
ব্রহ্মাণ্ডের ঋতুমতী নিঃসঙ্গতা, এই ভয়ে দূরত্বের কাছে দিকে
এগিয়ে যেতে থাকি। পানকৌড়ি ডুব দেয়, আমার বুকে গুগলি,
ঠোঁটের আঘাত নিতেই ডুবে থাকতে চাই পাঁকের শীতল নাভিতে।

কাছের অন্ধকারে জলের ছায়া পড়ে, চলো, একটা বিকেল উষ্ণতায়
মিশে যাই মকুল সৃষ্টির গান গেয়ে--



২. চারুতৃষা


এক জোড়া আগুন ঠোঁটের নীরবে বেজে যায় বেহালা, নিঃশ্বাসের শব্দভারে
চারুচোখ ভেসে আসে, অহল্যা পাষাণ থেকে মুক্তি চায়
আলো কি তবে ঘিরে ফেলে অন্ধকার

এরকম অনেক কাম হেঁটে গেছে জঙ্গলে জঙ্গলে, সেই পদশব্দের খিদে নিয়ে
সুগন্ধি মায়া,  দু হাত ছড়ানো আকাশে
যাদের কোনো চাঁদহীনতা নেই

যে একটুকরো বনবাস রেখেছিলে আমার জন্য, মেঘ ভাঙা বানে অবিকল
ভেসে চলি বসন্তে চড়াই উৎরাইয়ে।  আশ্রয় বন্ধনে উদার আকাশ
এক কুঁজো জল দিল উপহার

এই নিবিড় দুরত্ব নিয়ে বিন্দুআলো, দোল খায় ভোর স্বপ্নের অস্থিরতায়,
দূর জ্যোৎস্নার নদী থেকে হে প্রান,
তুমি জেগে থাকো অনন্তের পরাজন্মের ভেতর

সন্দীপ ভট্টাচার্যের কবিতা



পরবাসী উদগ্র রশ্মিদগ্ধ প্রেমের আঙ্গিকে কলম।



১-       ইচ্ছে------
             

আজকাল এ এক আজব অভিরুচি
মনের কোনের না পাওয়া গুলো মাথাচারা দেয়
তোর উপেক্ষার বিষাক্ত রক্ত বয়ে যায় হৃৎপিণ্ডে


ইচ্ছে করে তোকে খুন করি
সব পরাজয়ের বিষ ঢেলে তোর মুখে
তারপর কেউ থাকবেনা আমাদের মাঝে
এক জীবন্ত আমি
আর এক স্বর্গীয় তুই


তখন না হয় হাসবি অমন করে
আমি চেটেপুটে খাবো তোর হাসি
তোর উদ্ধত বুকে
বিপজ্জনক শরীরের ভাঁজে
আমার অবাধ আনাগোনা


উচ্ছল কামনারা খেলবে তোর অহংকার জুড়ে
তোর সব দুপুর
সব রাত হবে শুধু আমার
আমি বাঁচব তোর ভালোবাসা
অস্পৃশ্য বলার থাকবেনা কেউ।

---------------––-----------------------------------



২.

নতুন দিন

           


এই বারান্দায় রোদের দেখা নেই বহুদিন

যেন লক্ষ বছর ধরে এখানে

শুধু বিষাক্ত পরজীবিদের ভিড়

উদাসীন আলো শুষে নেয় বটগাছ অশরীরি


রেলিঙে এসে বসেনা এখানে চন্দনা

দখিনা বাতাসে প্রাণ কোথায় জুড়াবার মতো

অপলক তাকিয়ে থাকা বিষণ্ণ ফুলদানী

ফাঙ্গাস পচা সূর্যমুখী প্লামেরিয়া


নীল হয়ে জমে থাকে হৃদয়ের বুদবুদ

আর শরীর জুড়ে তেতো জ্বর


নতুন দিন নতুন দিন

পারলে এসো বারান্দার এই কোনে

বেঁচে আছি সে টুকু বোঝাবার জন্য

যদি আসো তবে আলোর দোলায় লিখবো

জারুল রঙা কবিতা


অনন্ত গভীরে অগনিত অক্ষরবীণা

তোমার উষ্ণতার অপেক্ষায়।


পলেস্তারা খসা ক্ষয়িষ্ণু কঙ্কাল জুড়ে শুধু

নগ্নতার স্যাঁতস্যেতে গন্ধ

মুঠো ভরা রৌদ্রঋণে ঘুচে যাবে দেখো এ দৈন্যতা


বিরহভূমি তে শুরু হবে আবার নতুন অধ্যায়।


নাসির ওয়াদেনের কবিতা


                                                                     অপরূপ নৈসর্গিক আঙ্গিকে প্রেমের কলম।




 ●    আটকে আছি    ●

জন্ম আর মৃত্যু সত্য জেনে তবু কেন
হলুদপাতার বুকে আঁক পতনের ঝরনা
যে ঝরনার জল নিয়ে বিলাসী দিনেরা
লুকোচুরি খেলে বাতাসিমনের ডানায়

নগ্নপদে কাঁটাপথ পেরিয়ে এসে
ফুলের বিছানা পেতে রৌদ্রছায়া
শুষে নেয় লালপেড়ে বউয়ের ভালবাসা
নখের রঙিন প্রলেপ আর লিপস্টিক

যতবারই যাই , ফিরে ফিরে আসে অবিশ্বাস

পোড়ারোদ জলের বিছানার ওপর
স্রোতের কলস নিয়ে সাগরের চরে
উত্থাপন করে যায় ভরসার কথা

আমি যুক্তির কানাগলির চোরাপথে আটকে
আটকে আছি দুর্বোধ্য জ্ঞানের ছুরির ফলায়।

                     ☆☆☆☆



      ●  সুখের নকশাকাঁথা  ●


রোদের পিপাসা ঠোঁটের স্পর্শে
বৃষ্টির আলিঙ্গনে জেগে ওঠে ঝড়

জন্ম এবং মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়ের
স্তনের উপত্যকার ভাঁজে জাগে
অফুরন্ত শীতল জীবন --

চাঁদ উঠেছিল এক বিরল মুহূর্তে
কালো অন্ধকার রাতের ঘন আকাশে
জন্মেছিল কাঁচা বাতাসের জরায়ু হতে •••
জীবন জড়িয়ে আছে সারাটা দুপুর

সেই মাঠ,সেই সব শৈশব দিগম্বরদিন
স্মৃতির পাটে আছড়ে পড়া কাশবন
ডাংগুলি, চু-কিত-কিত,চৌদ্দ কোট
সাঙ্গ হবে খেলা নীরবরাতে
প্রতিবেশিনীর পরাজিত ঠোঁট, লাবণ্য মুখ

জীবনের খেয়াঘাটে পালতোলা তরি
ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ ভাঙে পাড়

জড়িয়ে জড়িয়ে আছে সুখের নকশাকাঁথার মাঠ

সন্দীপ দাসের বাঙালী সিরিজ কবিতা


                                                 ছাপোষা বাঙালীর সংকোচ হৃদয় আঙ্গিকে কলম।

#বাঙালী সিরিজ


বাঙলা আমার দুগ্গা দুগ্গা করে
#সন্দীপ_দাস

সাগরের জল নীল , বাঙলা আমার আজও অমলিন
খাচ্ছে আর চলছে , দুবার হোঁচট খেল পথে যেতে
তবু জাতি আজও অতীতটুকুই বলছে ।।
শরীর এর নেই শক্তি , অন্তরে তবু পুরো ভক্তি
উতলে উঠে পড়ে ---- গরিব মানুষ খেতে পাক না পাক
বাঙলা আমার দুগ্গা দুগ্গা করে ।।
আজানের ভিড় পথে জ্যাম , খোদাই খিদমদগর
দু চারটে কুরবানী এমন আর কি !! মণ্ডপ সাজাতে
সোনা মিলেছে দহ ভরি
পথের পশু পথেই মরুক , বাঙালি প্রাণ কি আর বাঁচাতে জানে !!
বাঙলা আমার দুগ্গা দুগ্গা করে ।।
.
.
.
বছরের তো কটা দিন , রাস্তা জুড়ে ভোটের মিছিল
অলি গলি স্লোগান ঠাসা , নালির কোনায় দাঁড়িয়ে দেখে
সাহিত্যের ভাষা ।। ওটাও তো উৎসব , বাঙলা তোমার
বারো মাসে এমনই হাজার ছুটির জোয়ার ।।
কর্মহীন , কুঁড়ে গুলো উন্নতি কি তা জানে !!
বাঙলা আমার দুগ্গা দুগ্গা করে ।।
.
.
.
হাজার হাজার ইতিহাসের স্মারক , পথ চেয়ে দাঁড়িয়ে
জাগবে বাঙলা আবার , ভারত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে ---
প্রশ্ন একটাই জেগে থাকে রাত দিন সংস্কৃতির মঞ্চে
পৃথিবীর সঙ্গে তাল রেখে উন্নতিটুকু আসবে আবার কবে !!
বাঙলা আমার  ভাবে নাকি এত কিছু হিসাব করে
বাঙলা আমার দুগ্গা দুগ্গা করে ।।

স্বনামধন্য সাহিত্যিক মলয় রায়চৌধুরী


                                                 কালজয়ী প্রেমের ইতিহাস আক্ষরিক সোহাগ ভূষন।






"প্রচণ্ড বৈদ্যুতিক ছুতার"

'ওঃ মরে যাব মরে যাব মরে যাব

আমার চামড়ার লহমা জ্বলে যাচ্ছে অকাট্য তুরুপে

আমি কী কোর্বো কোথায় যাব ওঃ কিছুই ভাল্লাগছে না

সাহিত্য-ফাহিত্য লাথি মেরে চলে যাব শুভা

শুভা আমাকে তোমার তর্মুজ-আঙরাখার ভেতরে চলে যেতে দাও

চুর্মার অন্ধকারে জাফ্রান মশারির আলুলায়িত ছায়ায়

সমস্ত নোঙর তুলে নেবার পর শেষ নোঙর আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছে

আর আমি পার্ছিনা, অজস্র কাঁচ ভেঙে যাচ্ছে কর্টেক্সে

আমি যানি শুভা, যোনি মেলে ধরো, শান্তি দাও

প্রতিটি শিরা অশ্রুস্রোত বয়ে নিয়ে যাচ্ছে হৃদয়াভিগর্ভে

শাশ্বত অসুস্থতায় পচে যাচ্ছে মগজের সংক্রামক স্ফুলিঙ্গ

মা, তুমি আমায় কঙ্কালরূপে ভূমিষ্ঠ করলে না কেন ?

তাহলে আমি দুকোটি আলোকবর্ষ ঈশ্বরের পোঁদে চুমু খেতুম

কিন্তু কিছুই ভালো লাগে না আমার কিছুই ভালো লাগছে না

একাধিক চুমো খেলে আমার গা গুলোয়

ধর্ষণকালে নারীকে ভুলে গিয়ে শিল্পে ফিরে এসেছি কতদিন

কবিতার আদিত্যবর্ণা মুত্রাশয়ে

এসব কী হচ্ছে জানি না তবু বুকের মধ্যে ঘটে যাচ্ছে অহরহ

সব ভেঙে চুরমার করে দেব শালা

ছিন্নভিন্ন করে দেব তোমাদের পাঁজরাবদ্ধ উত্সব

শুভাকে হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে যাব আমার ক্ষুধায়

দিতেই হবে শুভাকে

ওঃ মলয়

কোল্কাতাকে আর্দ্র ও পিচ্ছিল বরাঙ্গের মিছিল মনে হচ্ছে আজ

কিন্তু আমাকে নিয়ে কী কোর্বো বুঝতে পার্ছিনা

আমার স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে

আমাকে মৃত্যুর দিকে যেতে দাও একা

আমাকে ধর্ষণ ও মরে যাওয়া শিখে নিতে হয়নি

প্রস্রাবের পর শেষ ফোঁটা ঝাড়ার দায়িত্ব আমায় শিখতে হয়নি

অন্ধকারে শুভার পাশে গিয়ে শুয়ে পড়া শিখতে হয়নি

শিখতে হয়নি নন্দিতার বুকের ওপর শুয়ে ফরাসি চামড়ার ব্যবহার

অথচ আমি চেয়েছিলুম আলেয়ার নতুন জবার মতো যোনির সুস্থতা

যোনিকেশরে কাঁচের টুকরোর মতো ঘামের সুস্থতা

আজ আমি মগজের শরণাপন্ন বিপর্যয়ের দিকে চলে এলুম

আমি বুঝতে পার্ছিনা কী জন্য আমি বেঁচে থাকতে চাইছি

আমার পূর্বপুরুষ লম্পট সাবর্ণ চৌধুরীদের কথা আমি ভাবছি

আমাকে নতুন ও ভিন্নতর কিছু কোর্তে হবে

শুভার স্তনের ত্বকের মতো বিছানায় শেষবার ঘুমোতে দাও আমাকে

জন্মমুহুর্তের তীব্রচ্ছটা সূর্যজখম মনে পড়ছে

আমি আমার নিজের মৃত্যু দেখে যেতে চাই

মলয় রায়চৌধুরীর প্রয়োজন পৃথিবীর ছিল না

তোমার তীব্র রূপালি য়ুটেরাসে ঘুমোতে দাও কিছুকাল শুভা

শান্তি দাও, শুভা শান্তি দাও

তোমার ঋতুস্রাবে ধুয়ে যেতে দাও আমার পাততাড়িত কঙ্কাল

আমাকে তোমার গর্ভে আমারি শুক্র থেক জন্ম নিতে দাও

আমার বাবা-মা অন্য হলেও কি আমি এরকম হতুম ?

সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শুক্র থেকে মলয় ওর্ফে আমি হতে পার্তুম ?

আমার বাবার অন্য নারীর গর্ভে ঢুকেও কি মলয় হতুম ?

শুভা না থাকলে আমি কি পেশাদার ভালোলোক হতুম মৃত ভায়ের

ওঃ বলুক কেউ এসবের জবাবদিহি করুক

শুভা, ওঃ শুভা

তোমার সেলোফেন সতিচ্ছদের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীটা দেখতে দাও

পুনরায় সবুজ তোশকের উপর চলে এসো শুভা

যেমন ক্যাথোড রশ্মিকে তীক্ষ্ণধী চুম্বকের আঁচ মেরে তুলতে হয়

১৯৫৬ সালের সেই হেস্তনেস্তকারী চিঠি মনে পড়ছে

তখন ভাল্লুকের ছাল দিয়ে সাজানো হচ্ছিল তোমার ক্লিটোরিসের আশপাশ

পাঁজর নিকুচি-করা ঝুরি তখন তোমার স্তনে নামছে

হুঁশাহুঁশহীন গাফিলতির বর্ত্মে স্ফীত হয়ে উঠছে নির্বোধ আত্মীয়তা

আ আ আ আ আ আ আ আ আ আঃ

মরে যাব কিনা বুঝতে পার্ছিনা

তুল্কালাম হয়ে যাচ্ছে বুকের ভেতরকার সমগ্র অসহায়তায়

সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়ে যাব

শিল্পের জন্যে সক্কোলকে ভেঙে খান-খান করে দোব

কবিতার জন্য আত্মহত্যা ছাড়া স্বাভাবিকতা নেই

শুভা

আমাকে তোমরা ল্যাবিয়া ম্যাজোরার স্মরণাতীত অসংযমে প্রবেশ কোর্তে দাও

দুঃখহীন আয়াসের অসম্ভাব্যতায় যেতে দাও

বেসামাল হৃদয়বত্তার স্বর্ণসবুজে

কেন আমি হারিয়ে যাইনি আমার মায়ের যোনিবর্ত্মে

কেন আমি পিতার আত্মমৈথুনের পর তাঁ পেচেছাপে বয়ে যাইনি

কেন আমি রজঃস্রাবে মিশে যাইনি শ্লেষ্মায়

অথচ আমার নিচে চিত আধবোজা অবস্থায়

আরাম গ্রহণকারিনী শুভাকে দেখে ভীষণ কষ্ট হয়েছে আমার

এরকম অসহায় চেহারা ফুটিয়েও নারী বিশ্বাসঘাতিনী হয়

আজ মনে হয় নারী ও শিল্পের মতো বিশ্বাসঘাতিনী কিছু নেই

এখন আমার হিংস্র হৃৎপিণ্ড অসম্ভব মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে

মাটি ফুঁড়ে জলের ঘূর্ণি আমার গলা ওব্দি উঠে আসছে

আমি মরে যাব

ওঃ এ সমস্ত কী ঘটছে আমার মধ্যে

আমি আমার হাত হাতের চেটো খুঁজে পাচ্ছি না

পায়জামার শুকিয়ে যাওয়া বীর্য থেকে ডানা মেলছে

৩০০০০০ শিশু উড়ে যাচ্ছে শুভার স্তনমণ্ডলীর দিকে

ঝাঁকে ঝাঁকে ছুঁচ ছুটে যাচ্ছে রক্ত থেকে কবিতায়

এখন আমার জেদি ঠ্যাঙের চোরাচালান সেঁদোতে চাইছে

হিপ্নোটিক শব্দরাজ্য থেকে ফাঁসানো মৃত্যুভেদী যৌন-পর্চুলায়

ঘরের প্রত্যেকটা দেয়ালে মার্মুখী আয়না লাগিয়ে আমি দেখছি

কয়েকটা ন্যাংটো মলয়কে ছেড়ে দিয়ে তার অপ্রতিষ্ঠ খেয়োখেয়ি।'

মঙ্গলবার, ২২ মে, ২০১৮

তৈমুর খানের কবিতা।


অন্তর্লীন কল্পনার সমুদ্রে প্রেমের ডুব সাঁতার

আঙ্গিক কলম।





১.

                  যুগের সোনালি হাঁস

                ___________________

সমস্ত পুরুষইচ্ছাগুলি

             নেমেছে রাস্তার জলে

                              যুগের সোনালি হাঁস হয়ে


আমরা কেউ বিকল্প বুঝিনি

                  সাঁতারের তীব্র আকাঙ্ক্ষায়

                           গার্হস্থ্য মোহনা থেকে ভেসে ভেসে

                                           চলে যেতে চেয়েছি সবাই

                                                       সমুদ্রের দিকে


নোনা ঢেউ মেখে

            কাল্পনিক ডানার নকশায়

                         আমাদের বিরামহীন গান

                                       ছলকে ওঠে


স্তব্ধতার হংসীর কাছে

              আমরা সবাই প্রেমের ভিখিরি

                           এক পশলা বৃষ্টিতেই নির্ভীক উল্লাস


আমাদের স্বপ্নের ইশারাগুলি

                  আলো জ্বেলে দেয় একে একে....











বিষাদের গরু

                        ______________

সব বিষণ্ণতার গরু

         চ'রতে আসে জ্যোৎস্নার মাঠে

                মাথায় মুকুট পরে নেয়

                       যদিও হৃদয়ে তাদের কোনো আরোগ্য নেই



শিঙ্ নাড়ে আর শিঙে শিঙে

               ঘর্ষণের গান

                     বেজে ওঠে ক্ষয়যুগ

                             দূরের অবিমৃষ্য কলতান



ফলত বিশ্বাস মরে

         ভঙ্গুর আলস্য উজ্জাপনে

                 নেমে যায় অসঙ্কোচ টান



দু একটি সচকিত লেজ

               কেঁপে ওঠে

                      স্বপ্নের সীমানা থেকে

                              যদিও আসে অভিমান



গরু তবু খেয়ে চলে ঘাস


               এমাঠে খুঁজে ফেরে হারানো বিশ্বাস

মঞ্জুরুল হক তারার কবিতা।


উদ্দাম যৌবনের শিহরনের আঙ্গিকে প্রেমের লেখনী।





তৃষ্ণা বুকে
-মঞ্জুরুল হক তারা
-
শুয়ে আছে বিছানায় সম্মুখে উন্মুক্ত খাতা
যুবতীর উপুড় শরীর কিছুটা উপরে মাথা।
একটুকু ফাঁক করা ভাঁজ করা পা দু'টি
খাটের উপরে নিবিড়ে দোলছে,
গরম বুকের নিচে নরম তুলার বালিশটি
দীর্ঘ শ্বাস-প্রশ্বাসে ক্ষণে ক্ষণে ফোলছে।
,
পিঠে চুমে ভেজা চুল সাগরের মত ঢেউ
ছায়াময় ঘর আশেপাশে নাই তার কেউ।
প্রেমের গল্প পড়ায় মগ্ন  পেট,নাভি,নগ্ন নারী
জড়ো হয়ে আছে শাড়ি কোমরের নিচে,
নদীর অস্থির জলকণা খোঁজে নিবিড় রৌদ্রকণা
সুখ-নীড় স্বপ্ন বুকে গভীর সাগর চোখে অশ্রু আছে।
,
রাতের স্তব্ধতা ভাঙ্গে নিশাচর ডানা ঝাপটায়
ঊকি দেয় জ্যোৎস্নায় উত্তরের জানালার পর্দায়।
উর্বর উপত্যকায় সতেজ পাতায় সাধ জাগে
জাহাজ ভাসায় দূর সাগরের নীল জলে,
নিরুদ্দেশের পথে স্নিগ্ধ জ্যোতি নিভৃতে দোলে
স্বপ্নের প্রদীপ জ্বেলে স্বপ্ন দ্বীপে যায় চলে।
,
গভীর রাত পাশ ফেরায় তৃষিত মুখখানি
মাটিতে লুটে আছে তার শাড়ি আধখানি।
নির্জন অরণ্যের একাকিত্ব ব্যাকুল
অস্থির গুঞ্জরণ সর্ব-অঙ্গে শিহরণ,
ঝড়ের হাওয়ায় নড়ে চেনা আঙ্গুল
ঢেউ খেলে তনু-মন অলৌকিক ক্ষণ।
বিছানার চাদর জড়ায়ে গায়ে
খোঁজে বেড়ায় গড়ায় গড়ায়ে।
প্রেম ভালোবাসার অন্তরালে
সঙ্গিহীন রাত হাহাকার করে উঠে,
শাড়ির জানালায় পর্দা খোলে
দেখা দাও দেখা দাও চিৎকারে গগন ফাটে।



সুখের খোঁজে

-
নির্জন তপোবনে পর্ণকুঠিরে ধ্যানে মগ্ন
ঋষি মণি, অনন্ত সুখের খোঁজে
দিবা রাত যায় - তপ,জপ,পূজায়।
রূপসী রমণী রমনের অতৃপ্ত কামনায়
যৌবন  ভরা দেহ দহনে, অস্থির যন্ত্রনায়
একা নির্জনে অশ্রু সিক্ত কুঠিরে বালা।
প্রত্যহ ভোরে এই পথ ধরে গুরু ভক্ত,
শিষ্য যায় পূজার অর্ঘ লাগি।
যৌবন দহনে জ্বলছে গুরু পত্নি
উত্তাল জাহ্নবী যমুনায়
চপল কোমল পল্লব দেহ দোলে অস্থির যন্ত্রনায়
" সমাজ ধর্ম নীতি বাক্য " পদ দলিত করে
রূপসী পথ রুদ্ধ করে,
জড়িয়ে ধরে পথ চারী সুদর্শন যুবার,
চকিত সোম, গুরু ভক্ত হতবাক
ভু- লুন্ঠিত অর্ঘ পুষ্পদল
চন্দ্রদেহে যৌনশিহরণ মৃদু কম্পন চঞ্চল
বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারে
জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গনে
চুম্বন সঙ্গমে তৃপ্ত অপুর্ব মিলনে
সুখের বন্যা বহে তপবনে।


খুরশিদ আলমের কবিতা।


         সঙ্গম সোহাগে প্রেয়সী আঙ্গিকে কলম।




1)

এক চুম্বন উষ্ণতা


আজন্ম তোমাকে ভালবেসেছি,
বেয়াদপের মত তোমার শরীর জুড়ে---
পান্ডুলিপির প্রতিটি অক্ষরে ব্যঞ্জনাত্মক মিশেল ঘটিয়ে,
তুমি হয়ে ওঠো যেন রুপবতী নারী।
একরাশ মুগ্ধতা রেখে-
প্রেম জোয়ারে লাবণ্যতার ঘ্রান ছুঁয়ে,
উন্মত্ত প্রেমিকের মত ঋতুমতী নরম বালিশে-
তোমার স্বাস্থ্যবতী শরীরে "এক চুম্বন" উষ্ণতা খুঁজি।
রজঃশলা মেঘের মত-
বাস্পায়িত হয় তোমার গোপন নদী,
শব্দ ঢেউ এ ভাসতে ভাসতে মাস্তুলে সজোরে,
হারিয়ে যায় মন অকূল দরিয়ায়।



2)

নীলা আমি দু'জনে


সেই রাতে নীলা আমি দু'জনে,
নগ্ন বুকে চুম্বন নীলার উষ্ণ ঠোঁটে।
শিশির ঝরা রাতে হিমের পরশ-
আমার উরু যুগলে নীলা আসন পেতে -
শার্টের বোতাম খোলে আদর করে।
খেলা করে কাম বাসনার মুক্ত ঘরে।
বুকে কম্পন শব্দরা শ্বাস প্রশ্বাসে,
নীলার একরত্তির গোপন গুহায়-
ফেনা ওঠে স্নিগ্ধ সুখে।
মধু রাতে নীলা আমি দু'জনে,
হাতে হাত রেখে -
স্বপ্নের মশাল জ্বেলে দূরে বহুদূরে।
হাসির হিমেল অনুভূতি,
ভালবাসার স্বর্গ দ্বারে।
সেই রাতে নীলা খুঁজে পেল প্রশান্তি ভরা প্রানে-
হারিয়ে গেল তনু সুখের ঘুমে।

শুক্রবার, ১৮ মে, ২০১৮

সন্ধ্যাপ্রদীপ



কবিতা: সন্ধ্যাপ্রদীপ।
নাম: সুপ্রীতি বর্মন।



সন্ধ্যাপ্রদীপের নিঃশেষ জ্যোতি ফরফর, তলানির তৈলাক্ত সমুদ্রে হাবুডুবু।
বুক পকেটের ভাঁজে তিরতির অসামান্য জ্বরে কেঁপে নামে সন্ধ্যা।
এইবারে এইখানে থে থাম হও, অনেক হয়েছে প্রেমিক তোমার শুঁয়োপোকা।
বিষাক্ত কীটের যেন শান্তশিষ্ট নৃত্য হামাগুড়ি সর্পিল সর্বাঙ্গ,
আদম আপেলে পুরুষত্বের সাতকাহন মালকোঁচা।
মনের কোনগুলো শক্ত খুঁটে বেঁধে রাখা আমার সংসার, আমার দাম্পত্য।
অনিবার্য সঙ্গমের তোর ঘুমস্নান আমার আলগোছে সামাল তোর নোঙ্গর,
লক্ষ্যের শিখর থেকে নিশিদিন বিচ্যুত পোড়া কপাল।
রাখালিয়া ডাকে কোথায় বাঁশি বাজাবি তমাল গাছের নীচে,
তা না স্পর্ধিত স্বরে ডাকছে সন্ধ্যাতারা আয় আয় প্রজাপতি,
তোর সৌন্দর্য্যতৃপ্তিতে হোক আমার বিবাহ যোগ।
মলিন আকাশে অগনিত তারার আঁচল,
বিহ্বল করে চালুনির ফাঁকে বিন্দু বিন্দু আকাশ।
সুগন্ধী ধূপের ক্ষেপাটে আদম নৃত্যে অস্থির ঈশ্বর,
থাম থাম এবার বেমানান শুঁয়োপোকা খুব ঘটা তোর প্রজাপতি হবার।
ঝাঁঝালো শাস ছাড়িয়ে পুষ্ট মাংসে দাঁত,
তুমি খুব সেয়ানা হতে চাও শুকতারা, হোক তবে সুপ্রভাত।
বিষাক্ত মথ মন্ত্রে সহজ শরীরে অদৃশ্য সখ্যতার সন্ধান।
লাটিমের মতন আত্মকেন্দ্রিক শুধু চায় অমৃতসুধাভোগ।
গায়ে গা ঘেঁষে এসে বসেছিলি মনে আছে ঐ সান্ধ্যভ্রমনে,
হৃদপিন্ডে আছড়ে পড়া আমার চিবুক,
তুই তো ভেবেছিস আমার আর নেইকো গতি,
আমি যেন কোন উন্মাদিনী।
কর্পূরের মতন দগ্ধ অগ্নিশিখায় দপ করে উবে যাওয়া,
তোর শরীরের গন্ধ শুষে আমি নিজেই এখন প্রজাপতি।
বদ্ধ ঘরের একপাট ওকপাট ছুটছে জরায়ু গন্ধ পেতে,
কিন্তু সে তো অসম্ভব যতক্ষন না লাগছে বিয়ের যোগ।
তবে সন্ধ্যাপ্রদীপেই তোর সোহাগ আগুন অস্তমিত হোক।

আলিঙ্গন।







কবিতা: আলিঙ্গন।
নাম: সুপ্রীতি বর্মন।

ঝাউবনের অনিন্দ্যসুন্দর শীৎকারে বজ্রপতন ঝঞ্ঝা,
উরুর তটে প্রসারিত শীর্ণ কায়া দুধসাদা মুক্তোর খোঁজ।
ফেনিল উচ্ছ্বাস সমুদ্রের অন্তরে গহীন সাম্রাজ্যে,
আলিঙ্গন দুয়োরানীর আধখোলা বুক উষ্ণতার আবদার।।

চুরুট গন্ধে নিকোটিনের আসক্তি দুফোঁটা বাঁচা,
কৃষ্ণগহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে জঠর ক্ষুধা, উষ্ণ প্রসবন ধুঁকছে।
অক্সিজেনের অভাবে হাঁপর টানছে পাঁজরে, গামছায় ভগ্নাংশ ঘাম জড়িয়ে উফ কি অস্বস্তি গোঙায়, ফোঁপায়।।

তোমার আঁচলে মমতার আদরে শিশুর হাত ফেলে,
চোষা স্তনের বোঁটায় কলকল নদীর যৌবনের উদ্দাম বেগ,
নাভিমূলে আরোহন নীচে ভাঙাচোরা সাঁকো।
রুগ্ন তোমার কাঠামো, দিব্য পুরুষ সামলে যেও,
অসাবধানে পিছলে যাবে, আলিঙ্গনে অন্ধ চৌকাঠ।।

মৃত আগ্নেয়গিরি বাঁচার জন্য ছটফট, ক্লান্ত ঘুম।
ব্যাস্তানুপাতে শূন্যভার তোমার কাঁধে অর্পণ,
লক্ষ্মীছাড়া পা আটকে তোমার শৃঙ্খলে, কোটাল বাণ।
হুড়মুড়িয়ে গঙ্গাপ্রাপ্তি আদরে চাদর ভিজে।।

সাদা মেঘ ট্রাউজার ঘন ঘন চুমুর স্বীকারোক্তি,
নাসিকা রাঙানো ঘষটে যাওয়া একচিলতে সিঁদুর,
তোমাকে চাই শুধু তোমাকে, একপশলা বাসি হোক পুড়ানো খই আটচালার প্রাঙ্গনে, ভোররাতে।।

হাট করে খোলা জানলা গর্ভবতী হোক ভাঙাচোরা পংক্তি,
আমার সবটাই স্ফীত ইতিহাস অহম শিকলে বাঁধা।
শায়িত দীর্ঘ স্তুতিকাব্য কামশাস্ত্র প্রশস্তি লোকমুখে।
অস্থির শিল্পী আমাকে করো পদ্মাবতী,
তোমার শৈল্পিক ক্ষুধার স্পর্শে,
আজ তুমিই হও আমার প্রেমের ঐকান্তিক স্পর্ধায়,
আমার ভাস্কর।।

ময়ূরকন্ঠীর অন্তর্দহন।

পুরুষালী গম্ভীর আওয়াজ ময়ূরের ডাক, 
 আয় বলছি রাগে হুঁশহুঁশ, আমার চাই তোকে। 
  ময়ূরী মেলেছে ছত্রে ছত্রে আগমনী প্রেমালাপ।   
   ছড়িয়ে ছিটিয়ে যত্র তত্র আঁচলের,   
        ছেঁড়া ছেঁড়া সুখ পালক।

 তুমি বড় বেহায়া লুটেপুটে খাও আমায়, 
  ক্রমাগত নিষিদ্ধ চুম্বন, আমিও সর্বভুক।   
সর্প তোমাকেও নিই আষ্টেপৃষ্ঠে গিলে। 
    জানি তুমি চলে যাবে একলা ফেলে পশ্চাদগমনে,
তবুও জ্ঞানপাপী নাচি বেঘোরে। তাতা, থৈ থৈ।   
 বৃষ্টির ছমছম বিবাহের আটচালা। 
    প্রেমিক তুমিই তো হবে আমার স্বামী একদিন। 


অন্তর্দহন বিষাক্ত অমাবস্যা,
 নীলঘুম সর্পের অভিশাপ। 
ছটফট ক্লান্তির আঘ্রান খোলস। 
 পরিত্যক্ত রূপ নব নব উন্মোচনে। 
    নগ্ন মধুপ জ্যোৎস্নার স্রোতে।   
  নীল সর্পের স্বস্তি ক্ষনিকের ঘুম।     
     জড়িয়ে জড়িয়ে জট অঙ্গ প্রত্যঙ্গের,   
           ভ্রমিল উচাটন শঙ্খ লাগা।         
        ধূপের ধিক ধিক দহন,       
             নিষিদ্ধ চুম্বন অমৃতসুধা।

পরবাস নীল আঁচলের, 
  চাদরের তলায় লুকানো নীল প্রেম সর্পের হাঁচি। 
    সোনা আমি আছি তাকিয়ে দেখো। 
      আমি থাকবো, সুবিধার সবটুকু রস শুষে নিয়ে,             সর্বস্বান্ত উজাগরে ক্লান্তি, 
              ঢালতে লেগেছি অবসাদের গহ্বরে।                    চাই চাই আমার অমৃত।   
                     যতই কাঁপুক বিষে শরীর।।