বৃহস্পতিবার, ৩০ মে, ২০১৯

তাপসকিরণ রায়


বসন্ত পিপাসা

তাপসকিরণ রায়

উৎক্ষেপ্য লতার মত তোমার মসৃণ শরীর,
তার মধ্যে প্রসাধনী ডাক--আমি সংস্কার খুলে রেখে
তোমার ফুটন্ত শরীর দেখি-- .
কামাদ্রী থেকে উঠে আসছে এক তিরতির নদী ধারা
তোমার বসন-ব্যসন আমার চোখে লাগা নেই।
ব্লগাহারা এক জানোয়ার খুলে আসছে তার শরীর প্যাটারা ঠেকে
দেখি বসন্ত কোথাও নেই--নিজেকে খুইয়ে এক নেকড়ের মত।
বীজগন্ধ ফেনা রন্ধ্র ডুবে আছে--
মনে হয় তোমার শরীর ফালফাল করে লাল ব্রা ছুঁড়ে ফেলি দূরে--
জ্বলন্ত বৃন্ত থেকে তখন ধুঁয়া উড়ে যাচ্ছে
আমার ঠোঁটের ফাঁকে পলাশ শিমুল দুমড়ে মুচড়ে যায়।

বন্ধুর খাঁজে খাঁজে ভাজ করা রহস্য সমুদ্রর--
এবার লন্ডভন্ড বিপর্যয়ের মাঝখান দিয়ে
ক্ৰমশঃ এক লেলিহান ছুরিফলা বিঁধে যাবার আস্ফালনে
ঘামার্ত ঘ্রাণের মাঝে এক চিনচিন বেদনা উল্লম্ফন--
খাপে খাপ মিলিয়ে দেবার উদ্ধত সেই ঠেক--
আমি হিংস্রতার মাঝে চিড়ে দিই সেই উত্তপ্ত লাল শলাকা।
ঘর্ষণে আগুনজ্বলা সেই তপ্তকুন্ড--
আর সেই তাথৈ তালে তাল হিস্ হিস্ শব্দ লহরী--
শীৎকার শব্দগুলি যেন মুদ্রিত হয়ে যাচ্ছে...
ধ্বনিত হয়ে যাচ্ছে কোটর কন্দর।
আমি বসন্তের কৃষ্ণচূড়া ও পলাশের লাল লাল ছিঁড়ে ছিঁড়ে কুটিপাটি করি।
বসন্ত পিপাসা প্রলাপে তুমি আমি দগ্ধ হই মন্থন ও ঘর্ষণ শরীরে।

সোমাদ্রি সাহা


ঘুম
~~~~~~~~
সোমাদ্রি সাহা

দুটো এসি-র ঠান্ডাতে দীর্ঘ ঘুমে আক্রান্ত এক সভ্যতা।

শরীরের আনাচে-কানাচে চলচ্চিত্রের অমোঘ ছায়া-ছবি, নখে সৌন্দর্য, চোখের কাজলে স্নিগ্ধ মেঘ, এক রাশ চুলে ঘুমিয়ে রয়েছে সম্পূর্ণ দেহজ রস। কাব্য গাঁথার সুর তোলা শরীরে এখন নারী গন্ধের নাচের মুদ্রা, বিহঙ্গ।
পুরুষযাপনের সেই ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্সের রাস্তা, সেই কৃষ্ণচূড়া আর রাধা, বড্ড প্রাসঙ্গিক।
কৃষ্ণ শরীরের সেই লক্ষ্মী বশত করছে ঘুমের রবি ঠাকুরে।

জাগিয়ে তোলা মহাভারত জানে না ঘুমের অন্তরে দিস্তা দিস্তা বিরক্তি জমিয়ে রেখেছি।
তুমি একদিন উপলব্ধি করবে জীবন, ভালোবাসা-এক যাপন, দৃঢ় ছায়া,

অনুভূতিরা স্বপ্ন দেখুক, অন্য ভাষায়, অন্য কালে...

প্রিয়াঙ্কা চ্যাটার্জি


ঋতুপর্ণ ঘোষের একটি লাইন,,,,,

"বনমালী তুমি পরজনমে হয়ো রাধা",,,,,,


#পুরোনো_ডাকবাক্সে_নীলখাম

প্রিয়াঙ্কা চ্যাটার্জি,,,,,

#কলঙ্কিনী

প্রিয়তম,

কি নামে ডাকি তোমায়? আমি এখন বসে থাকি নদীর ধারে। বড় নীল এই জল। চেয়ে বসেই থাকি। মনে হয় বিষ। বিষের রঙ যে নীল, সে বিষে আমার শরীর মন প্রাণ সব নীল, তুমি কি তা জান সখা? তোমার স্পর্শ অনুভব করি আমি। কিন্তু কোথায় তুমি প্রিয়তম? সখীর স্পর্শে চমক ভাঙে, সে বলে
---বাড়ি যাবি না?

তার মুখেও খুঁজে চলি, শুধু, করুণা, নাকি ঘৃণা? ঘৃণাই আছে আমার জন্য শুধু। লজ্জা কি লজ্জা! আমার ভিতর বাহির পুড়ে যায় । কি অসহ্য জ্বালা সখা, প্রিয়তম, তুমি বোঝ না?
   " একলি যাওব তুঝ অভিসারে,
   তুহুঁ মম প্রিয়তম কি ফল বিচারে-
   ভয় বাধা সব অভয় মুরতি ধরি
       পন্থ দেখায়ব মোর।"
না সখা কেউ দেখায়না পথ আমায়, সভয়ে সকলে মুখ ফিরিয়ে নেয়, পথ যে বড় অন্ধকার। তুমি কি করে বুঝবে?  হায়,  আমিও পাগলিনী! তুমি যে এখন রাজাধিরাজ! সকলে বলেছে আমায়,  তুমি চলে গেছ,  আমি শুনি,  মন শোনেনি,  হৃদয় মানে না।

যখন তুমি ছিলে মনে আছে, কত রঙ্গ করতে। আমি ভয়ে কাঁপতুম, এই বুঝি কেউ দেখে ফেলে। আমি তখন সদ্য বিবাহিতা কিশোরী। স্বামী থাকে না। কখন যে ছলায় কলায় তুমি আমার মন হরণ করলে আমি বুঝতে পারিনি প্রিয়। তোমার মোহন বাঁশির সুরে, পাগল হয়েছি আমি,  তাও যাই নি । দরজা বন্ধ করে থেকেছি,কান চেপে ধরেছি দুহাত দিয়ে,তোমার আর্তি যাতে প্রবেশ না করে। তোমার পাগল করা ডাক উপেক্ষা করার সাধ্য কি আমার মত সাধারণ নারীর? মনোহরণ করেছ তুমি প্রিয়।
 বলতে পার প্রিয়, আমায় কেন সকলে কুলটা বলে? ভালোবাসা কি অপরাধ? তাই যদি হয়,  অন্যের বিবাহিতা স্ত্রীকে ভালোবাসার অপরাধে তুমিও যে সমান অপরাধী। কই তোমায় কেউ কিছু বলে না?  কেন? তুমি পুরুষ বলে? নাকি আজ তোমার অগাধ সম্পত্তি ও প্রতিপত্তির জন্য সকলে তোমার দিকে আঙুল তুলতে ভয় পায়। তুমি যে পুরুষোত্তম! এসকল প্রশ্নের উত্তর তুমি দাও তাহলে। প্রাণনাথ সকলে আমায় ঘৃণা করে,  ঠিক শুনেছ ঘৃণা।  তোমায় ভালবেসে যে কলঙ্কের বোঝা তুলেছি মাথায়। আর তুমি,  হায় হায় তুমি আজ সম্মানিত ব্যক্তি বিশেষ, কলঙ্ক তোমায় স্পর্শ করতেও ভয় পায়, তুমি যে সমাজের মাথা,  আর আমি সামান্য নারী।
জানো যেদিন আমার স্বামী জানতে পেরেছিলেন, কি অকথ্য অত্যাচার করেছিলেন তিনি। রাগে ঘৃণায় আরক্ত বদনে ঘরে এসেই ধরেছিলেন আমার চুলের মুঠি। সর্বাঙ্গে অসহ্য যন্ত্রণা ছিল। তাও পারিনি ছাড়তে তোমায়। প্রত্যেকদিনের এই অত্যাচার ছিল সহচর, তোমার পরশ ভুলিয়ে দিত সে সব কষ্ট। তুমিতো অন্তর্যামী, সব জানতে। সত্যি বল সখা , আমি কি তোমায় প্রলুব্ধ করেছি?  বারবার আমার দরজায় এসেছ তুমি , আমি দরজা বন্ধ করে কানে হাত চাপা দিয়ে থাকতাম, তুমি ডেকেই যেতে। কেন সখা?আমার মত এক সামান্য নারীর হৃদয় নিয়ে খেলে , সখা তুমি কি পেলে?
আজো মাঠে রাখাল বাঁশি বাজালে আমি ছুটে যাই প্রিয়, মিথ্যা ভ্রমে, যদি তুমি আসো! রাখালরাজা, তুমি যে খেলার ছলে ভাঙলে আমার মন, সে মন আমি আজো খুঁজে বেড়াই? আজো গোধুলির সময় মাঠের দিকে তাকিয়ে থাকি নির্ণিমেষ নয়ণে, সূর্যের রক্তরাগে গোরুগুলোর ক্ষুরের ধুলোয় মিলে মিশে সেই ক্ষনে যে মোহের সৃষ্টি হয় মনে হয় যদি দেখা পাই তোমার। না পাইনি রাখালরাজা তোমার দেখা।


শাশুড়িমা এর গঞ্জনা, স্বামীর ঘৃণা, সবার আড়চোখে তাকানো, ফিসফিস সমালোচনা, প্রকাশ্যে অপমান, সব সহ্য করেছি। আমি আজ কলঙ্কিনী, কুলটা। পাগলের প্রলাপ ভাবছ তাই না? মনে আছে সখা যেদিন তুমি সর্বসমক্ষে আমায় আবির মাখিয়েছিলে, লজ্জায় লাল হয়ে ঘরে দোর দিয়েছিলুম। সকলে বলেছিল
---ওতো আমাদের ঘরের ছেলে, লজ্জা কিসের?
বসন্ত পূর্ণিমায় যখন চুপিচুপি ঘর থেকে বেরিয়ে একসাথে দুলেছি, কখন দুই দেহ মিশে গেছিল বুঝিনি। সে কি লজ্জা, মা গো! যৌবনের ডালি নিবেদন করেছিলাম তোমার পায়ে, জাত কুল সব ভুলে। সর্বাঙ্গে তোমার স্পর্শ অনুভব করেছি, ভেসে গেছি এক অন্য জগতে।   তোমার অঙ্গের বিশেষ চিহ্ন সকল আমার যে ভীষণ চেনা। কত আদর করেছি। আমার শরীরে তোমার আদরের চিহ্ন সকলকে সযত্নে হাত বুলিয়েছি।
"রূপ লাগি আখি ঝুরে গুনে মন ভোর
প্রতি অঙ্গ লাগি কান্দে প্রতি অঙ্গ মোর।।"
তোমার মনে পড়ে সেসকল গোপন অভিসারের কথা?
হয়ত পড়ে না।
আজো যখন প্রত্যেক নীরব গভীর রাত্রিতে আমার স্বামী তার দৈহিক বাসনা কামনা পূরণ করে ,তার ঘৃণা মিশ্রিত আক্রোশের সাথে, তা যে কী কদর্য ,অসহনীয় তা তুমি জান না। আমি প্রাণপনে চেষ্টা করি চুপ করে থাকতে। শরীরি আদর যে এত যন্ত্রণাদায়ক সখা বুঝিনি। উনি যখন সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সঙ্গমে লিপ্ত থাকেন আমি নির্বিকার চিত্তে তাকিয়ে থাকি ঐ মসীলিপ্ত অন্ধকারের দিকে, তোমার প্রেমময় মুখখানাই ভেসে ওঠে। সে সময় সখা তুমি হয়ত তোমার স্ত্রী এর বাহুডোরে আবদ্ধ হয়ে নিদ্রামগ্ন । ভুলে গেছ তুমি আমায় সখা, আমি ভুলিনি, জীবন মরন, যৌবন সব সঁপেছি তোমার পায়েই।

আজ আমি নীল যমুনার তীরে বসে আবাহন করেছি মরণকে। মরণ যেন তোমার রূপে এসে শ্যাম, গ্রহণ করে আমায়। মনে আছে সখা প্রথমদিনে  তোমায় বলেছিলেম
" তুহুঁ নেহি বিসরবি,তুহুঁ নেহি ছোড়বি
রাধা হৃদয়তু কবহুঁ না তোড়বি,
হিয় হিয় রাখবি, অনুদিন অনুক্ষন
অতুলন তোঁহার লেহ।"
        প্রেমের বিষ পান করেছি আমি। সর্বাঙ্গ বিষের জ্বালায় নীল হয়ে গেছে সখা। ভালো থেকো সখা। আমি কলঙ্কের বোঝা মাথায় নিয়ে এ পৃথিবী হতে বিদায় নিলুম। ভাসিয়ে দিলুম এ পত্রখানি যমুনার জলে। প্রিয় আমার, পত্রখানি হয়ত পাবে না তুমি, কলঙ্কিনী রাধাকে পারোতো ঠাঁই দিও তোমার মনের এককোণায়, নীরব নিশীথে ফেলো একফোঁটা চোখের জল নাহয় আমার জন্য।
 বিদায় শ্যাম।
                                             ইতি
                                              কলঙ্কিনী রাধিকা।

উজান উপাধ্যায়


#মেঘপিয়নের #জন্য

ঋতুপর্ণ ঘোষ --এক রাজসিক রাণী

উজান উপাধ্যায়

কি ছিলো তোমার যৌন পরিচয় ?সমকামী ছিলে তুমি? ভালোবাসা শব্দের চিরায়ত ভ্রম , কি হবে শিকড় তার , কতটা দ্যোতনা !কামনা কি বিষম হতে পারে ?


লিঙ্গপরিচয়ের চূড়ান্ত বিভ্রান্ত চোখে আমাদের দেবীপক্ষ তোমাকে খুঁড়েছে রোজ , যে বাঁশি কেঁদেছে ধীরে -- রাধার ইশারা ধরে ,  হেঁটে গেছে বিমূঢ় বিপন্নতা  সুড়ঙ্গে ও চুল্লিতে পেতে রাখা স্নানঘরে , মানুষের শাশ্বত ঘৃণা।

এ ঘৃণার নখ,দাঁত  সংবেদনহীন।
হায়না-প্রয়াস এ শহরে ঝুঁকে থাকে চৌরাস্তায় , নাটুকে প্রগতিশীল এক দল বেতোরুগী তোমাকে বলেছে প্রিয় , অথচ নিয়ত ঋতবাক চোখে যে জ্যোতির্ময় আলো পার করে গেছে আবহমান জীবনের প্রতিটি প্রহর।

খুলে ফেলেছো মেকি বিষন্নতা , নিষ্ঠুর এপ্রিলে ঢেকে রাখা তমসা-আল্পনা।  



কে তুমি ?  পুরুষ নাকি উভচর--একটি পেশীতে রেখে যাওয়া বাহান্ন পর্বের দহনজাত ছাই , অন্তর্গত অসুখের  সমস্ত আদুরে উপন্যাসের পরতে পরতে সুন্দর মোহময়ী যে পবিত্র নারীর হাতে বেঁধেছিলে রাসপূর্ণিমার উজ্জ্বল আলোর তুমুল উৎসব--

হীরের আংটি পড়ে তুমি যে হঠাৎ দুর্দান্ত প্রেমে , মানুষের হৃদয়ের জংহীন উপত্যকায় জ্বেলে ফেলতে চেয়েছিলে অমিত জীবনের অনিঃসীম চারটি অধ্যায় , শিক্ষিত মগজের অদৃশ্য অকৃপণ ঘুণ --খোলসে খোলসে যে তীব্রতর অসাড়তা ছেয়ে উঠে আছড়ে নিঙড়ে দুমড়েমুচড়ে তছনছ করে গেছে কোমলমতি পুষ্পবৃষ্টির অ্যাসিড পোড়া নির্মলতা আর অবিরল পুঁজরক্ত ।

ঋতুপর্ণ তুমি কাল্পনিক নও , মিনমিনে শহরটা ম্যানহোলে ঢাকা--

ঋতুপর্ণ তুমি রাণী , আশ্চর্য পতাকায় তোমার রাজমুকুট উদ্ধত পাহাড়চূড়ায় আজও অনন্তের কাকচক্ষু জলে ছায়াপথ বুনে বুনে শীতল জলের অনিবার্যতায় নির্লিপ্ত করে এঁকে রাখা।

বুধবার, ২২ মে, ২০১৯

রাজীব ঘোষাল


অারাধ্য ঘটমান বর্তমান

রাজীব

কালকের কথা জলকে দিয়েছি
সর্বংসহা জলকে.........
জল গিলছে গোগ্রাসে......

শুরু করেছি পূজো
ফুল বেলপাতায় সাজিয়েছি অঙ্গসজ্জা
পাথরের থালায় রেখেছি নৈবেদ্য অার অামিষ অন্নভোগ
মেখেছি রক্তচন্দন অার সিঁদুরের গাঢ় ফোঁটা
পূজো হচ্ছে ......চামড়ার পূজো
টানটান সতেজ চামড়ার
ঝুলে যাওয়া চামড়ার
টিউলিপ অার ব্রহ্মকমল ফুলের মতো ফুলেল চামড়ার..................
স্নান করছি কনটিনিউয়াস
রক্তবর্ণ হচ্ছে চোখ....মন্ত্র পড়ছি—রক্তবর্ণং চতুর্মুখম্
জলে ভেসে যাচ্ছে চোখ—চোখ অার বুক!

তনুমধ্যে জেগে উঠছে ৫ টি সাপ!
কত্তোদিন পর.....দীর্ঘ ১দশক পর
জেগে উঠছে ১টি বায়ুসাপ ১টি অগ্নিসাপ ১টি বালিসাপ ১টি মাটিসাপ অার ১টি ফেনা ফেনা জলসাপ.......ফনা তুলছে ভিসুভিয়াসি হলকায়!

এসো না অামার কাছে ৷ ছুঁয়ো না অামাকে ৷ নীল হয়ে যাবে বিষে বিষে গরলে ৷ ঝলসে যাবে অাগুনে অাগুনে অনলে!

হাঁটছি অামি ৷ এষার জন্য ১টি লাল রঙ্গি অাইসক্রিম কিনে হাঁটছি ৷ অামার ডাইনে নরক বাঁয়ে স্বর্গ ৷ থামলাম একবার , দেখলাম একবার ডাইনে-বাঁয়ে ৷ তারপর অাইসক্রিমটাকে সজোরে হাতে চেপে ধরে এগিয়ে গেলাম সোজা  —এষার কাছে ৷

চুষছে চুষছে,এষা অাশ্লেষে অার কাতরতায় চুষছে সেই লাল রঙ্গি অাইসক্রিমটা
চুষতে চুষতে এষা ভুলে যাচ্ছে কর্কটের দংশন
এষা ভুলে যাচ্ছে কেমোথেরাপির যন্ত্রনা.........

অামিই এ দুনিয়ার সেরা পূজারী—ঘটমান বর্তমানের পূজারী!

জানি অামি ৷ কাল একটাই ৷ অামার অাজীবনের অারাধ্য ঘটমান বর্তমান ৷ চেতনে অার সোহাগে মাখামাখি বর্তমান!
অতীত অার ভবিষ্যত সোনার পাথরবাটির মতো কাল ৷ বকওয়াশ একদম! ও দুটো কাল আসলে একটা করে পার্চমেন্ট মাত্র —অা থিন পার্চমেন্ট!

বুধবার, ১৫ মে, ২০১৯

রাহুল গাঙ্গুলী


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা :

রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন


রাহুল গাঙ্গুলী

প্রণয় ও রঙের কবিতাগুচ্ছের সিরিজ,,,,

সিরিজ,,,,,,,


অপা ~ ১ অদৃশ্য দৃশ্যকল্প
---------------------------------------------------------
[১] জতুগৃহ সমাকলন _____

তোমারই গভীরতা
মাথা গুঁজে ঘুমিয়ে পড়তে চায় সে

তোমারিই : অহংকার।অলংকার
                  যাবতীয় ব-দ্বীপের আড়াল

বেলুনের স্তন : গিলে ফেলে গোলাপি অজগর



[২] ইথারের বিছানায় _______

যতোটা শয়তান ভাবো।ততোটা ঈশ্বরীয়
কৃষ্ণপক্ষের জানলায় : চাঁদবীত ক্ষত

আঘাত।লাঙল।নোঙর।ডাকটিকিট

বেসামাল পর্দা তুললে : নিষিদ্ধ অনুপ্রবেশ

কবরীয় যোনিপথে জমাই : সোঁদাগন্ধের মাটি



[৩] অকালবৃষ্টি _______

কালো কাপড়ে ঢাকা ছিল : সামুদ্রিক শৃঙ্গার
অবিকল ঝিনুকের মেঘ

বিদ্যুৎ চমকায়।রেখাচিত্রে কম্পনের সংকেত

সংবেগী ঠোঁট : তিরতিরে জলময়

কাগজের চৌকাঠ পেরিয়ে : অশ্লীল ঘূর্ণাবর্ত

এলোভিজে চুল তোমার : মাখাচ্ছে চশমার গতিপথ



[৪] বিচ্যুতিরেখা _______

অবশেষে পশমি নখের আঁচড়
লালপাড় শাড়ি : রেলগাড়ি মুছে ফেলে

শীৎকারে কে বেশী ঘন : রাত বড়ো।দুপুর ছোটো

কম্পাস মাখামাখি লালায়

লালায় মাখামাখি কম্পাস

জ্যামিতিবাক্সে দেখি প্রজাপতির হিমদেহ

নষ্ট ফাঁকতালে : তুমি আদরের চিঠি লেখা শেখাও



শব্দরূপ : রাহুল

মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০১৯

পঙ্কজ কুমার সরকার


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:

রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন


আহ্লাদিত আগুনে ঊনিশ,,,,, কিশোরী,,,

সিঁদুর বিশল্যকরণীর ছোঁয়ায় ছাইচাপা আগুন,,,,,বধূ


স্বাভিমান  // পঙ্কজ কুমার সরকার

বিপ্লব দেখেনি  ;
পড়েনি ফিদেল কাস্ত্র ,
তাকায়নি চে গুয়েভারার সাহসী চোখের দিকেও ...
তবু ,  ওরই চোখে আজ উদ্ধত অভিমান !

কেউ কি ওর পায়ের নীচে গড়িয়ে দিয়েছে জল ?
না কি কেউ অবাঞ্ছিত হাওয়ায় ধুলোয়
ঢেকেছে  ওর  আহ্লাদিত আগুন ঊনিশ ...

 ও কেন তির্যক দেখছে -- পরিযায়ী পাখিদের
                               আবির গন্ধ সকল কুর্নিশ !



জন্মান্তর   //    পঙ্কজ কুমার সরকার

দ্বিরাগমনের গন্ধ এখনও গায়,
এখনও  রপ্ত হয়নি ,
কোন্  চাবি কোন্  তালায়  ;
সন্ধ্যা প্রদীপে
তেল জবজবে সলতে সাজিয়ে,
ভাত কাপড়ের শাড়ির আঁচলে
                            পিঠ ঢেকে --
       তুলসি তলায় এসে বধূ --
           পড়েছে ভীষণ ভাবনায় ;                      
                                       
ইচ্ছে , না আগুন !                                            
         এখনি  তার কী প্রয়োজন  !

যদি ইচ্ছে,
কোন ইচ্ছে !
যে ইচ্ছে মরতে মরতে বেঁচে গেছে ,
সিঁদুর নামক এক,
 বিশল্যকরণীর  হঠাৎ ছোঁয়ায় !

নাকি এ বাড়িতে আসার আগে,
যে সব ইচ্ছের শিওরে
           রাশি রাশি প্রত্যাশা রেখে,
সে  ঘুম পাড়িয়ে এসেছে
                    ও বাড়ির বিছানায় !

নাকি  যাদের অভাবে,
             সে পায়নি নদীর  শরীর ;
   আর মহুয়া ম্যাডাম ,
                        মনের মাটি !

না কি,  সেই  ইচ্ছে ,
যা তাকে করেছে  --
বান্ধবীদের ঈর্ষাকাতর -- সৌভাগ্যবতী !
               
কিংবা ;
যে ইচ্ছে গুলোকে হত্যা করার পর,
সে পেয়েছে
      পুণর্জন্মের  কাঙ্ক্ষিত  আহ্লাদ ;
পেয়েছে পাখির বাসার মতো
                         এক গর্বিত গৃহ !

যে গৃহে  তার বর এখনও  বন্ধুই  !

কেননা,  যখন চালের কিলো চল্লিশ,
অতি কষ্টে জোটানো --
দু' পাঁচ হাজার মাস মাইনের চাকরিতে --
ছেলেরা, বড়োজোর
 ফুচকা খাওয়ানো প্রেমিক,
কিংবা বন্ধুই হতে পারে,
                       তার বেশি কিছু নয় !

তবু দীর্ঘ বন্ধুত্ব যে দাম্পত্যে গড়ালো !
একটা জন্মান্তর হল জীবনে ,
নিজের করে পেল প্রণয়ী পুরুষ..!

তার জন্যে -- মনের খাঁচা থেকে,
যে সব পোষ্য ইচ্ছেকে,
সে  মুক্ত করে এসেছে,
মধুপুর  জ্যোৎস্না ডাঙায় ;
                                     
                             সেই সব ইচ্ছে...

কিংবা যদি আগুন !
কোন আগুন  ?
যা সে নিবিয়ে এসেছে ---
                 ছাদনা তলার মঙ্গলঘটে !
নাকি মনে মনে জমে ওঠা --
 যে সব উপসমহীন অসন্তোষ জ্বরে ,
            এখনো পুড়ছে বন্ধু বান্ধবীরা...?

পুড়ে গেছে মেঘ মাসিদের পাখিগ্রাম !

কিংবা যে আগুন একটু বাদে,
প্রদীপের সলতে পোড়া গন্ধে  ;
অস্থির করে তুলবে --
এই আধা বস্তির সিধা গলি !
অথচ কেউ কিচ্ছুটি বলবে না !
মেনে নেবে,
যুগলে আত্মহত্যার খবরের মতো
নিতান্তই সয়ে যাওয়া এক
             গন্ধ হিসাবে !
                     সেই আগুন !

না কি,
এই প্রদীপের  মৃদু আলো হয়ে
                              জ্বলে উঠে --

যে আগুন  ;
দুজনের মাঝে  দুজনকে  খুঁজে দেবে,
                             এক অমূল্য হৃদয়
                                    সেই আগুন !
                                             
                                    সেই আগুন !

উদয় শংকর দুর্জয়


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:

রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



পরাবাস্তব জোনাকদল

উদয় শংকর দুর্জয়


দহন নিভিয়ে সূর্য-পরাগ।
এ বর্ষা পেরুলেই হিমকাঠ বোঝাই হাওয়ারথ দাঁড়িয়ে থাকবে ত্রিনেত্রে; এক চোখে স্নাত রয়েল-ডক, অন্যাকাশে ধূপজ্বলা শিউলির আধো-গোলাপী ঠোঁট। বিধুর অয়ন ছেড়ে লবঙ্গ বোঝাই জাহাজ এসে ঘ্রাণ কুড়িয়ে নিতেই, বিহ্বলে লেখা একশ'টা অষ্টোক সুর ভেঙে যখন উড়ে যাবে রহস্যময়ী খমক, তখন তপ্ত পারদে ঢালা প্রপঞ্জের রঙ, মিশে যাবে দগ্ধ অভ্রের গলিত ঘ্রাণে। এরপর স্বর্ণকুচি মাখা শরত যেন, পরাবাস্তব মায়ার টানে স্টারলিঙের ডানায় লুকিয়ে পাড়ি দেবে ভৈরবের কোলাহলে।

সপ্তসুর-দগ্ধ-স্নাত-সাতী।
সন্ধ্যাকুমারীসেঁতার হেঁটে এলে জলের পাহাড়, এক অবিরাম ঠুমরি নেমে পড়ে রাত্রি বক্ষে। কতবার খুলে পড়েছে সে উদ্যানের গোপন বাক্সে জমা মাস্তুলের ঘুড়ি! তবু উড্ডয়নের প্যারাশুট সংগীত, অচেনা ভেবে পাড়ি দ্যায় আরেকটি মহাকাল।

অকারণ কোলাহল বোহেমিয়ান।
পাথরের উপর পাথর ব'সে, জমাট বরফ খুলে রাখে কপাট; অযুত লহরী ভেঙে, অতিথি হয়ে ওঠে রাক্ষসীর সবুজ চোখ; কর্নিয়ার ফাঁকে পাঁচতারা বিকেল তাড়িয়ে আনে জুনিপার গ্রাম। শরত তখন হরিদ্রাভ আগুন মেখে সবে ভোরের বাদ্য শুনিয়েছে বাকলের কর্ণকূহরে। হিম-রিম-হিম যেন পিয়ানোর রিড থেকে তুলে নিয়েছে আগমনী ট্রাম, হুইসেলের লোকালয়ে বনোহরিণী, পাতার অরণ্যঝোপ থেকে জোনাকদল আলো কুড়িয়ে এনে, কালভ্রমণে প্রহর রেখেছে বাজি।

মহাম্মদ আরিফ


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



কালরাত্রির এলোকেশে দংশন প্রণয়রাগ,,,

রক্তরাঙা আবীর আভরণ তন্বী এলার,,,,,

কবিতা: সম্পর্ক
নাম: মহাম্মদ আরিফ


তোমার কৃপার ব্যথা সন্দর্ভে গা এলিয়ে

দেখি চলমান দুপুর নিদাঘ।

রাতের মৌনতাগ্রাসী নিশাচরের ডাক

স্বপ্নগুলোকে ভেঙ্গে চুরচুর করে।

এখন যদি বা কাঠঠোকরার চঞ্চু দংশন

আমাদের ফেলে আসা শ্রান্ত বিছানাকে

শতচ্ছিন্ন করতে যাই,

তুমি এসে বাধা দাও।

চায়ের শেষ চুমুক দেবার পর‌ও

তলদেশে লেপ্টে থাকার মতন কিছু টুকরো ভালোবাসা-

সংবাহিত বুঝি তোমার অভিমান ক্ষুদ্ধ মৌন দিন যাপনে।

সূর্যের কথা তোমায় বলব না আর

বীর পুঙ্গবদের মতো।

পারলে স্বনির্বাসন থেকে বেরিয়ে এসে

দেখো ঝাউয়ের মাথায় দাঁড়িয়ে থাকা সদ্য পূর্ণিমার চাঁদ।

কেমন খোলস ছাড়ে এক রঙ থেকে আর এক রঙে।

ঠিক তোমার মতো - আপাত অচঞ্চল

তবে ভেতরের সংক্ষোভ বেশ বুঝি।

স্তর্বাহ আত্মগরিমায় আমরা সতত যুযুধান-

কান্না চাপি, তোমাকে কাঁদাই , তোমাকে হারাই

নিজেও হারিয়ে গেছি কতবার!

এই সংকট সংসর্গে হুল্লোড়ের হাওয়ায়

তোমার হারিয়ে যাওয়া কুন্তল

রাত্রি যাপন করে সুদৃশ্য অট্টালিকায়

আঙুলের পাঁচটি ডগায় অর্থকরী মত্ততায়,

হিসাব বুঝি ষোলোআনা।

এই দহন ভালোবাসায় চুম্বনের সব রাগ

দু-জনার অধরে প্রমত্ত।

মস্তিষ্কের ছেঁড়া ছেঁড়া বার্তায় এলাকে

আর চেনা হয়ে ওঠে না।

ভুলেও গেছি, কবে যেন হয়েছিল আমার

পলায়মান অন্তর্জলি যাত্রা।

মহাম্মদ আরিফ


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:

রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন




স্নিগ্ধ কলেবরে প্রেমিকের আদর,,, প্রণয়রাগ

কবিতা: প্রথম বৃষ্টির দিনে

মহাম্মদ আরিফ


বছরের প্রথম বৃষ্টির দিনে,

ভেজালো তোমাকে আমাকে

বর্ণনায় অকাল ধারা গুণে।



মেঘেরা উড়ে উড়ে,

চৈত্রের আলুলায়িত বেশে

পাঞ্চজন্য কলরবে,

কোকিলের অনিকেত সকাশে।

সংবহনের মন্দ্র শাস্ত্রীয় সুর

ছিঁড়ে যায় ঢিপিঢিপি মূর্চ্ছণায়।

ছিলাতে লাগে ভীষণ টান

জীবনের ব্যর্থ নমস্কার

তালুদ্বয়ে বিদ্রোহ হয়ে ফেরে।



আকাশের চকিত বিস্ফার

তোমাকে বিকশিত করে আবার।

কপোলে বিন্দু বিন্দু ঘামে

মেঘেদের চুম্বন এসে থামে।

কুন্তল ছড়িয়ে দিয়ে বুকে

বললে আমার কানে কানে,

গৃহীদের প্রহর গোনা শেষে

ধরিত্রীয় উপ্ত আশ্বাস।

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০১৯

শৈলেন দাস


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



যজ্ঞক্ষণ

শৈলেন দাস

   আসলে কারো সাহস নেই সামনে নগ্নকায়ায় দাঁড়ানোর, নামাবলী দিয়ে জন্ম কুণ্ডলিনী লুকোতে ব্যস্ত সবাই ।
কালো জন্মদাগে লেগে থাকা কয়েক পরত ঘৃণাচিহ্ন,
রঙের উপরে রঙ, তার উপর আবার রঙ---না   ঢাকতে চোখ ধাঁধানো শৈল্পিক আভরণ ।
ময়ূর-পুচ্ছি বেল্ট আঁটা নতুন শান্তিপুরি বরের ধুতি
নপুংসক অঙ্গের ক্লেদ ঢেকে রাখে । পার্লারি সুন্দরী পুকুরে নাইলে প্যাঁচির মা।
    পুঁজি ও পিস্তলে ছিনাথের বল। সাবালক হওয়ার
তেল মেখে রৌদ্রে দাঁড়িয়ে লণ্ঠন উসকে দেওয়ার লগ্ন
এখন । আয় হোম জ্বালাই, চিতা জ্বালাই----



আঁধার মন্থন

শৈলেন দাস


উচ্ছল মাঝনদীতে ভাসছি দুজনে, তুমি মাঝি আমি
যাত্রী।গলিয়ে দিলে বজ্র কঠিন প্রতিজ্ঞা,কুমারী তাপে পুড়িয়ে দিলে গৈরিকবেশ। পারানির বদলে দহিলে
আজন্মলালিত ব্রহ্মচর্য, মায়াবী জাদুতে হেরে গেল
হাজার বছরের কঠিন তপফল।দোদুল নৌকোয়
প্রথম বিপ্রতীপ বীজ বপন ,হল পদ্মযোনি লাভ ।
 পঙ্কিল পথ পেরিয়ে রাজ-বীর্যে  জন্ম নেয় স্বর্গভ্রষ্ট
দেবদূত; ভারতের প্রথম পুরুষ, তীব্র বেমানান
দেবত্বমন্ডিত মর্ত্যজন্মে দাগ দেয় ঋষি অভিশাপ।

এরপর মাঝরাতে মাত,শ্বেত শুভ্র  বাসরসজ্জায়   নিমীলিত প্রদীপ শিখায় উপোসি ভাদ্রবধূর  ঘরে
শোধ নিলে মাতৃঋণ । অবাধ্য হইনি তবে সলজ্জিত,
ভীত সন্ত্রস্ত অন্ধ হরিণী গর্ভ নষ্ট বীর্যে জন্ম দিল
তীব্র অনিচ্ছার, অনুতাপের কুঞ্চিত নষ্ট দুটি ফল ।
অনিচ্ছের বর অচিরেই কীটদ্রষ্ট ।ভ্রষ্ট দীপশিখা
তোমার অন্দরমহল ভেদি ছড়াল  সমগ্র ভারত ।

শতপুত্র শোকে কেন বিচলিতা?চোখের কৃষ্ণ বন্ধনী
উন্মুক্ত করে দেখনি  কোনোদিন পুত্রের স্বার্থগর্বিত
অহঙ্কার ।পঞ্চগ্রাম পরিবর্তে সসাগরা ভূমন্ডল !
সূচাগ্র মেদিনী প্রতি লোভ সম্বরণ শেখাওনি তুমি
অন্ধপুত্রে । স্নেহান্ধ আজীবন শুধু আপন পুত্র হেতু।

অথ আলোক সূত্র লিখন পূর্বে এই আঁধার মন্থন ।



ঊনবিংশতি দিবস

শৈলেন দাস


আলোসুত, এখানে প্রতিদিন লাল গোলাপ ফোটে,
তাজা রক্তলাল। গোলাপ সজ্জায় শুয়ে আছে
ভীষ্ম পিতামহ। প্রতিদিন চক্রবূহ্য রচনা নিপুণ,
পুন্যক্ষেত্রে বীর সপ্তরথী লজ্জাশরাঘাত ভয়ে
গামছা মুখ ঢাকে। খোলা থাকে পশু জন্মচিহ্ন।

এবুকে গোলাপ ফোটে প্রতিদিন ----- রক্তগোলাপ।
একবুক তৃষ্ণা নিয়ে উৎকন্ঠার বালিশে নিদ্রাহীন।
দূরে কোথাও কৃষ্ণনাম রাত জাগে ভয়ে ভয়ে,
ফজরের নামাজের আগে চোখে ভর করে ঘুম।
রাত কাটে আরেকটা গোলাপ ফোটার প্রতীক্ষায়।

গদাধর সেতু সন্নিকটে চিতার জ্যোতির্ময় তাপ
ছুঁয়ে যায় পরম শত্রুর হৃদয়। সূচাগ্র মেদিনী নয়-----
সসাগরা পৃথিবী পুড়তে পুড়তে নাইকুন্ডে বিলীন।
জল ঢেলে ঢেলে ঠান্ডা করে চিতার উষ্ণতা নাকি
আত্মদাহতাপ! কৌরব পান্ডব লাল নীল গেরুয়া----
নদীজল লিখে নেয় নাবালক মঞ্চ-যুদ্ধ-কথা।

অভিজিৎ দাস কর্মকার


রঙ ও প্রণয় সংখ্যার ক্যাপশন,,,,,

রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



যদি বৃষ্টি নামে ডাক

অভিজিৎ দাসকর্মকার।


অভিনয় নেই প্রতিসৃত জলে
যদি আসমানি বৃষ্টি নামে ডাকো
পূর্ণগ্রাস গ্রহন ঘরে আদুরে লোকজন সাদা - আয়নমুক্ত হবে আজ

কোথাও মৃত্যু কাতরাচ্ছে ভ্যামপায়ারি জ্যোৎস্নায়
পাশের ঘরে মেঘ করেছে
দু-এক পশলা গোমেদ রঙের বৃষ্টি...

কিছুটা
জাফরানি রঙের বালি-গহ্বরে মালকোশি রাত
ক্ষিদে চুঁইয়ে পড়ে শিশির কণা হয়ে,
তবুও-
পায়ের নিচে জামদানি প্রতীক্ষা...

নীল, নাকি বিবর্তনে নীলচে অবয়ব?



স্বপ্নছায়া

অভিজিৎ দাসকর্মকার


কতটা ঘুমের পরও
আদুরে শিবরঞ্জনী লেগে থাকে চাদরের গায়ে
      অসংখ্য স্বপ্নছায়ায় পোড়ে বসন্ত-
      আমার পিঠে কালচে আঁচড়
আর
      ঘামে ধূসর রং ধরেছে

পরদেশি মেঘ দাঁড়িয়ে মেহগনি রাস্তায়
কতটা দূরত্বের পর জাফরানি শব্দেরা
সেতু বাঁধে
তা তো লিখিনি!

অনেক বছরের সাধনায়
আজকের দিনটিও বাহারিরঙের নয়নতারা নামে ডাকে শূন্যাঙ্ককে-

শূন্য লেখা কোল বালিশে লালচে চাঁদের আলো
ডাকাতি রাতে উপোসি ঠোঁট অসীমে চুমু খায়

তখনও
মিলনের অপেক্ষায় নদীপথ অববাহিকা জড়িয়ে ধরে, সেইখানে
মোহনায় মিশে যাওয়া নুড়িজল খোঁজে পলকা পালক...


লাল পল্লীর জোনাকি সকাল

অভিজিৎ দাসকর্মকার


কতটা কালির আঁচড়ে শরীরের সংযমে ধূসর সংকেত লাগে,
শাড়ির অস্থির ঘামজলে বাৎসল্য পায়-
বসন্ত ছায়া

উঁকি দেওয়া কপাটের ফাঁকে হৃদয়ের ক্ষয়াটে গন্ধ।
নরম কথার সমান সাদা জানালা
মুগ্ধতাও নজর এড়িয়ে ডান দুয়ারে শুয়ে আছে
স্বাধীনতা,
    সেও টেরাকোটা রঙে সজীব এখনও...

ব্লাউজের ফাঁকে শালিকের সোঁতা কোল
    জিরিয়ে নেয় দশটি আঙুলের
                                 নীলচে সারাংশ।

ঘাসের লজ্জাস্পর্শে অন্ধকার মেতে চলেছে ঈর্ষার নীলে
    অন্তর্বাস ছেঁড়ার খেলায়,সন্ধ্যাটি হলুদ...

       প্রতিটি আজলায় শ্লীলতার খয়েরী
       আত্মোক্তি।

সম্পর্কের সামনে ম্যাকমোহন হয়ে দাঁড়ায় লাল পল্লী
আর, জোনাকি সকাল।

বুধবার, ১ মে, ২০১৯

পল্লব রায়


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন




ঈশ্বরী  তোমা‌কে বল‌ছি

পল্লব রায়

শী‌তের খাদ্য সঞ্চ‌য়ে যেমন পিপী‌লিকারা
দানা খু‌ঁটে খু‌ঁটে ঠোঁ‌টে ক‌রে টে‌নে নি‌য়ে যায় গ‌র্তের ভেতর
‌তেম‌নি এই  ছ‌ড়ি‌য়ে-ছি‌টি‌য়ে থাকা আমা‌কেও টে‌নে নাও
‌তোমার বু‌কের ভেতর
‌তোমার সত্ত্বার ভেতর!

‌সহস্র কো‌টি শতাব্দীর দীর্ঘশ্বাস বু‌কে নি‌য়ে
ক্ষ‌য়িষ্ণু সূ‌র্যের আ‌লোয় গতর ভি‌জি‌য়ে;
ব‌য়সী‌নি হ‌তে হ‌তে যে মা‌টির দুগ্ধশূন্য স্তন,
তা‌কে দুগ্ধবতী ক‌রো প্রে‌মে
তা‌কে দুগ্ধবতী ক‌রো আ‌লিঙ্গ‌নে!
এই ছড়া‌নো ছিটা‌নো আমা‌কেও টে‌নে নাও
তোমার বু‌কের ভেতর
‌তোমার সত্ত্বার ভেতর !

অন্ধকার আমা‌কে দুহা‌তে জাপ‌টে ধ‌রে টান‌ছে
আমার পা‌য়ের তলা থে‌কে মা‌টি কে‌ড়ে নি‌চ্ছে কৃষ্ণগহ্বর!
স্বপ্নহীন, ভা‌লোবাসাহীন এই মৃত্যুর উদ্যা‌নে
‌বি‌ভে‌দের তারকাঁটায় বিষণ্ন তেলকুচা লতার ম‌তো
‌নিরাপত্তাহীন বেঁ‌চে থাক‌তে থাক‌তে
আমা‌দের অ‌পেক্ষা বাড়‌ছে  মাথা উঁচু ক‌রে দাঁড়াবার
মানু‌ষের অ‌পেক্ষা বাড়‌ছে মাথা উঁচু ক‌রে দাঁড়াবার!

য‌দি ভা‌লোবা‌সো নারী!
য‌দি ভা‌লোবা‌সো ঈশ্বরী!
বিষাক্ত সা‌পের মাথার ম‌ণির ম‌তো চকচ‌কে মানু‌ষের শি‌শ্নের ডগায়
‌রোপন ক‌রে দাও দৈ‌বিক সভ্যতা!
‌তোমার হা‌তেই  রচনা হোক নতুন পৃ‌থিবীর কৃ‌ষি
তুমুল আদ‌রে মু‌ছে দাও মানু‌ষের ঘা‌মে ভেজা, মানু‌ষের র‌ক্তে ভেজা
বিধাতার জীর্ণ কপাল!

য‌দি মানুষ ভা‌লোবা‌সো ঈশ্বরী , ,
য‌দি ভা‌লোবা‌সো আমা‌কে, ,
এই  ছড়া‌নো ছিটা‌নো আমা‌কে টে‌নে নাও
তোমার বু‌কের ভেতর
‌তোমার সত্ত্বার ভেতর !
প্রত্য‌য়ে জ্বে‌লে দাও ব্যাথার কাজল
নবজাত‌কের স্ব‌প্নের কা‌লি দি‌য়ে লেখা হোক আগামীর ভাগ্য !

য‌দি আমা‌কে ভা‌লোবা‌সো, ,
য‌দি আকাশ ভা‌লোবা‌সো ঈশ্বরী!
খু‌লে দাও হৃদ‌য়ের যত জানালা,
সংশয় ভু‌লে যাও প্রে‌মে, খু‌লে দাও শরী‌রের যত ভাঁজ
হাওয়ায় উ‌ড়ি‌য়ে দাও ব‌ন্দী আঁচল
শ্র‌মের শি‌শি‌রে বাজুক সুখী মিল‌নের ওঙ্কার!
প্রা‌ণের গহী‌ন ত‌লে লুকা‌নো আঁধার য‌তো,
যতো বি‌চ্ছে‌দের বা‌জেয়াপ্ত নকশাপত্র
প্রে‌মের আগু‌নে পু‌ড়ে হোক ছারখার!

আমার প্র‌তি‌টি চুম্ব‌নে লি‌খে দিলাম তোমাকে ভা‌লোবাসার অ‌ঙ্গীকার!