রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ২০



১. তুমি এসো //


অনুরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়


খরস্রতে এসো ব্যাস্ত দিনের ভিড়ের মতোই,চুল শুকিয়ে ভিজতে রাজি আমার বায়না ওড়না যত।

গ্রন্থিরা সব শুকিয়ে আছে, উপকাব্যের রঙ্গ রসে।ঝরুক তারা অশ্রু হয়ে মরুদান্যের কক্ষ তলে।এমনি তোমায় পাই না ছুঁতে, আবেগ গুলো বন্দি যত তোমার প্রানেই মুক্তি তত।



২. শ্রাবণ ধারায়//


অনুরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়


অবিরল শান্ত বারি, আমার নিভৃত কোনে মিশ্রিত সিক্ত আবেগ।

বিন্দু বিন্দু ফোটার বুকে অভিমানিনী স্তুপের ধ্বংসাবেশ।ঘনঘোর শব্দ সাঁতরে বেড়াই গভীর অতলান্তে চুম্বী চিত্রপট।

বজ্র সন্ধিস্থলে নিশ্চুপ,বিরহ  কনফারেন্স।


৩. বর্ষা//


অনুরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়


শিহরণ শীতল গর্ভে সিক্ত, একটি ফোটার বিন্দু।নব্য রূপে জাগরিত বর্ষা, মাতাল প্রেমে অনুরাগী। বাহানা করে স্পর্শ তোমার হৃদয় কম্পমান,

রঙ ঢেলেছ স্মৃতির পাতাই, সমাসক্তি চেতন স্থলে।





বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৯



বর্ষাকন্যা ও মৃত্যু-শিঙা'র সুর
..........................................

কয়েক'টি বাকল পড়া পুরাধুনিক মানুষ ঘিরে ধরেছে বর্ষাকন্যা'কে
হাতে তাদের মারাত্মক রাসায়নিক অস্ত্রশস্ত্র -
পুরাধুনিক না আদিম ?

বৃষ্টি'র ফোঁটা'রা কন্যা'র দেহ স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে পরিণত হচ্ছে
অ্যাসিডবাষ্পে ৷ আর তার দেহের তলায় লিটমাস কাগজের মতো
শুয়ে আছে বনদেবী ।

ওদিকে, আদমসন্তানেরা মৃতের স্তূপের উপর বসে বাঁশি বাজিয়েই
চলেছে ৷ সে সুর ধ্বংসের ৷

সে সুর মৃত্যু-শিঙা'র ৷


বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৮



১. কবিতা:

#চা_বাগানের_মেয়ে ।।
                 -----#অভিজিৎ দত্ত ।।

ছোটর থেকে বায়না যে তার রঙবেরঙের চুড়ি
বয়স বাড়ার সাথেতে চাই গয়না এবং শাড়ি ।
চা বাগানের রমলু মাঝির তিন লম্বর বিটি,
দেমাকী তার রূপের বাহার, পড়ছে যেন ফাটি।

এলেন হেথায় কুলকাত্তার, ছোকরা ম্যানেজার
কহেন তিনি পালাইকে চল, শাদী করি এইবার ।
রঙের আশায় রক্তে মাদল, নেশা জোগায় প্রাণে
কুলকাত্তায় ছুটল দুজন, বাবুর আমবাগানে ।

সেই বাগানে ছিল অনেক পলাশ বকুল ছায়া
এবং সেথা পড়েছিল এক নারী শীর্ণকায়া।
ঠোঁটের কষের দুপাশ বেয়ে ঝড়ছে লালার স্রোত
পিঁপড়ের দল সারি পেতেছে, জমিয়ে চলছে ভোজ।

বিদ্যুৎ হেথা ঝিলিক মারে, ওই মেয়েটির দেহে,
মধু যেটুকু বাকি ছিল, সবটা শুষে নিয়ে ।
ও অভাগী কেন রে তুই এসেছিলি হেথা
জীবন দিয়ে টের পেলি তো,
 কেমন শহর কুলকাত্তা ।


   
২. কবিতা:

 #বৃষ্টির_খোঁজে।
                           -----#অভিজিৎ_দত্ত ।।

বৃষ্টি তোমায় ডাকছি কতোই কেন যে ভাই আসছ না
সূয্যিমামা ঘষছে ঝামা, তোমার নাকে বুঝছ না ?
বৃষ্টি বৃষ্টি করছি সবাই বৃষ্টি তো ভাই  আসছে না
কান্নাকাটি করেও যে তার, মন ভেজাতে পারছি না।
মোমবাতি হাতে নিয়ে মানত দিলাম পীর মাজারে
যদি উনি আনতে পারেন সূয্যিমামার রথটা কেড়ে ;
সঙ্গে যদি হাজার গ্যালন জলটা উনি আনেন ভরে
দিব্যি দিচ্ছি হ্যাজাক বাতি জ্বালিয়ে দেব ওঁর মাজারে।

শিবঠাকুরের কাছেও আমি হত্যে দিলাম মন্দিরেতে
বরুণদেব কে ডাকছি সাথে, আসুন না ভাই বজ্র হাতে;
মাথাতে জল ঢালতে শিবের ছুট্টে গেলাম তালপুকুরে
সেটাও যে আজ বেহাল হলো ঘটিটাও তো ডুবছে নারে।
গাছ কেটে মোর ঘাট হয়েছে আর কোনও গাছ কাটব না
প্লাবন এসে ভাসিয়ে দিলেও কিচ্ছুটি আর বলবো না।
চারদিকে  আজ উড়ছে ধুলো দেশটা মোদের যাচ্ছে ভরে
কি করি আর পাই না ভেবে ডাকছি জোরে আল্লাহ রে ।

করছি কতোই আচ্চা মানত খাচ্ছি কতোই শপথ যে
বৃষ্টি তবু মামার বাড়ি মোদের পানে তাকায় না সে।
বৃষ্টি যখন আসবে তেড়ে ভাসবে শহর কোলকাতা
বৃষ্টির নাম ধরেই না হয় গড়িয়াহাটেই কিনব ছাতা।
এতো করে বলছি তবু বৃষ্টি পড়ার নামটি নেই
পণবন্দী করব এবার মেঘ দেখলে আকাশেতেই।
তখন কিন্তু ছাড়ব না আর প্রলয় কাণ্ড ঘটবে যে
সেই প্রলয়ে ছেঁড়া কাঁথায় থাকব শুয়ে  শান্তিতে।।
               

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৭



১.

প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটা আসলে

শুভঙ্কর দাস


আকাশ আর মাটির মাঝখানে যে দূরত্ব

তা একমাত্র নারীবুকব্যাকুলতা বলে পারাপার

হয়ে ওঠে,জন্মকালের প্রথমদিন থেকে।

আকাশ কামনায় ঘনকালো,আবেগে বজ্রবিদ্যুৎ

তার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে,

তৃষাতুর জলবিন্দু

চিতার বুকের মতো মাটিতে খুঁজে নেয় বীজধানের শ্বাস

প্রতিটি বৃক্ষের সূচনা,সিদ্ধি,সালংকরাময়

এমন জগৎ

যা একমাত্র কোনো প্রেমিকা হৃদয়াভিযানে

মাতৃমধুর হয়ে ওঠে,সহজিয়া সাধনায়!


সুউচ্চ পতন কি!না,এ তো পতন নয়

এ এক আশ্চর্য উড়ান,জন্মের,অমরত্বের

তা শুধু বারিধারা জানে


আসলে প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটায় নারীমুখ আঁকা আছে,নারীগর্ভও।

--------------++++++++++-----------+++++++


২.

রূপগাছি

শুভঙ্কর দাস

শরীর কি যেতে পারে শরীরের অতলে?


মেয়েটি রাস্তার জলে দাঁড়িয়ে আছে, না জল দাঁড়িয়ে গেছে রাস্তার মতো মেয়েটির


বুকে,নাভিতে,নরম প্রবেশরেখায়


সংযম,সাধনা,কামনা এবং প্রেম চারযুবা

শুরু করেছিল দৌড় দিগন্ত ছুঁয়ে


সব ধুয়ে

নিয়ে গেছে রূপকথার সত্যি রাক্ষস, প্রথম শ্বদন্ত দেখায়!


ফিরে গেছে জলে

নারী হলে স্তন্যাকার মেঘ ,আর পুরুষ হলে ফুটিফাটা গরম মাটি


প্রথম বৃষ্টির আয়নায়  চিনতে পারেনি বলে!

--------------------------+++++++--+-++++----




বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৬



১.

বর্ষা সকাল-২
অভিজিৎ দাসকর্মকার।

মেঘমল্লার থেকে তানসেন
নামায় ক্রন্দসী জলরাশি
শ্রুতিমধুর জল-তরঙ্গে
সুগন্ধি মেঠো পথ

হে 'অকূলের কূল'
প্রতিটি তানপুরা মেঘমিলনের তৃপ্তি জল খায়
শরীর ময় মঙ্গল মঙ্গল গন্ধ
ধুনোর সাথে মিশে যায়
পায়ের ছাপের কাদা

খেলে চলেছে কালো মেঘ
আর সমাজের কৃষক জীবনীর
জলজ সংসার
হুক খোলা খড়-চালা
পেট ভর্তি শ্যাওলা জমে
খিদে নেই বৃষ্টি নামের মেয়েটির।



২.

বর্ষা সকাল
অভিজিৎ দাসকর্মকার

আপেক্ষিক তাপের কম্পাঙ্ক  নিয়ে মালভূমি সংখ্যা
     জল লীনতাপ ছাড়ে শাড়ীর কোলাজ-কুচিতে
বিশ্বাস করা শব্দফেনায়
বাস্তব মাটি সত্যসময় গুলি কুড়িয়ে রাখে নিউটনের টেনে রাখা শক্তি

      মা তোমার শোলোক বলা মেয়েটি আজ বড়ো হয়েছে বাঁশবাগানের জোৎস্না-ছায়ায়
পাঁজরের ফাঁকে ক্যাটফিস ছোটে
অ্যাকুয়াফিনার জলে

            টোরিভোরের বিছানায় আড়মোড়া ভাঙে পর্ণমোচী আর্কিমিডিস
            বিসমিল্লাহর সানাই-এ অপসৃত জলমাটিতে অম্বুবাচীর বর্ষা-সকাল...


৩.

হয়তো জিরো
অভিজিৎ দাসকর্মকার।

শ্যাওলার ভিতরে যে শিকড় জল বুদবুদ খোঁজে
তার গায়ে পরিযায়ী পাখির ইচ্ছে ডানা
শান্ত বিকেলময় পটদীপের গোধূলী সা-পা ধরে
মেঘ বেহাগ ছায়ানটের সকাল
গরম চা আর খবর কাগজ পড়ে
জানালার পাশে রাতের লিপস্টিকের কান্না ছায়া
এস্রাজি শাড়িতে যোনপুরি পথ দেখায়
শরীরের রেয়ন কাপড়ে বাইকে চড়া
দক্ষিণ-বনলতা
পিছনে বসা সময়টির প্রাচীর ভাঙা দৃষ্টিদর্শন
'অখ্যাতনামায়' সাতটি তারার তিমির
হাতে 'ফিরে এসো চাকা...'



Butterscotch 2



১. রাজবৈদ্য
       সুখবিন্দর সরকার


তুমি রাজবৈদ্য
রাজার অসুক সারায়  তোমার
ঝাড়ফুঁক

তোমার ভীতি প্রদর্শন  তাণ্ডব
কঙ্কালের খুলি হাতের মুঠোয়

বেহিসাবি ইচ্ছেধারি স্বপ্নরাজ্য

তোমার নেই অরুচি অক্ষমতা
 মৃতার সহবাসে

আয়না তোমার ধুলজমানো
চশমাহীন  দুটো চোখ
ছানি জমানো

দিনে তোমার উপবাস আর
রাতের খাওয়ায় রক্তমেশানো

শ্মশানের জলন্ত আগুনে তুমি
ভাত রেধে খাও
কবরের নিচে তোমার ফুলশয্যার
খাট বিছানো



২. জবরদখল
       সুখবিন্দর সরকার
তাং- ০৩/০৫/২০১৮



মরুভূমী পথ ক্লান্তি সুখ
এক পশলা বৃষ্টি

হাত ছুঁয়ে থাকো অমর শহীদ
স্মৃতির দুয়ারে সব ইতিহাস

কালেব গৌরব সিংহরাজ

জবর দখল অন্ধকারে রাজমুকুট

আয়নায় মুখ ঢাকা যমজ ভাইয়ের
পুতুল নাচের ইতিকথা

সব নয়ছয় হিসেবে পোকাধরা চাল

ভূত ভবিষ্যৎ অকাল বোধন বর্তমান
ভরাট সুখ শূন্যস্থান



৩. কাল
       সুখবিন্দর সরকার
তাং- ২১/০৬/২০১৮


নদীর পাড়ের প্রেম শুধু
দূর্বা ঘাসের অনিশ্চিৎকাল ধর্মঘট

পুজোর ফুলে লুকোনো বিষাক্ত
ভ্রমরের হুল

চাঁদ অাছে রাত নেই

এক হাড়ি ফুটন্ত চোখের জলে
সত্যিকারের ঘোড়ার ডিম

ধূপের ধোঁয়ায় স্বর্গের সিঁড়ি বাজিমাৎ

চেনা চোখে গভীর প্রেমরোগ মলমহীন গোপন বুকে ধারালো নখের আঁচড়

আগাছায় ভরাট কুরুক্ষেত্রের মাঠ

ক্ষুধার্ত কৃষ্ণ আহারের প্রতীক্ষায়
বিবস্ত্রা দ্রৌপদীর আর্ত চিৎকার

Butterscotch 1



১.

........ # এমনই দিনে তারে বলা যায় #..........
                       *অরিজিৎ রায় *

চিলেকোঠার দেওয়াল ঘেঁষে ওঠা তুলসী-টা
আজ ও সাক্ষী -
হঠাৎ ই বইয়ের ভাঁজে রাখা শুকনো পাপড়িগুলো
ফিরে গেছে একুশের প্রথম আলোয়!
সদ্য ফোটা সর্ষে দানা দস্যি মেয়েটা, কখন যে
হলুদ বসন্ত হোল- কি জানি ছাদের কোন্ ,
বোধহয় বুঝে নিয়েছিল !
নখে নখ যখন জড়িয়ে, ভ্রু-পল্লবের "দাবীরা" -
দখলদারি তকমা সেঁটে এক্কেবারে বুকের কলজে
জুড়ে সাঁতার দিয়েছে - বালিহাঁস হয়ে ,
হ্যাঁ, মন ঠিক ধরা দিয়েছিল - চন্দ্রভূক অমাবস্যায়।

রাত্রিরা সেদিন নির্ঘুম হয়েছিল উশখুশ দোটানায়,
টেবিল ল্যাম্পের আলোয় খাতার পাতারা-
ভিজেছিল- অপরাধ বোধ, না কি ভালোবাসায় !
সিঁড়ির প্রতিটা ধাপ জুড়ে ছিল তোমার গায়ের গন্ধ,
চৌকাঠে নামানো চোখটা, চিবুক ধরে সন্তর্পণে
তুলে ধরেছিলাম আমার চোখের উপর -
যেমন করে ঝড়ের রাতে মা-পাখির ডানায় আশ্রয়
পায় ছানারা - আমার ঠোঁট ভরসা মেখেছিল
তোমার উষ্ণ ঠোঁটের প্রথম আলুথালু যতনে ,
বাকীটা ইতিহাস - তোমার মানবী হয়ে ওঠার
প্রথম অভিসার ।
সেদিন কোনো গোলাপ ছিলনা -আড়ম্বর ছিলনা,
 শুধু চিলেকোঠার "বনতুলসীটা" আমাদের দিকে
চেয়ে একটু  মুচকি হেসেছিল।



২.

....... # এ পথে আলপিন #.........
              * অরিজিৎ রায়*

সেফটি-পিনটা ঠিক একই জায়গায় বন্দী -
কতবার বলেছি - আমার জন্য না হোক,
তোমার নিজের জন্য - "হ্যাঁ খুলে রাখো" ।
ওলোট পালট সময় এখন, ভরা বুকে -
ভালোবাসারা শরীরী হয়, ভোর রাতে।

কাল রাত ভোর বৃষ্টি হয়েছে,
কবিতার খাতা সেই শূন্য রয়ে গেছে ,
খুনসুটি, কলম বেয়ে শরীরী হয়নি !
নিষ্পাপ প্রেম কতটা পথ হাঁটলে -
সেফটি-পিনটার প্রয়োজন ফুরায় ?
অনুভব কথা কয়-মন থেকে শরীর -
অবয়ব থেকে প্রকৃতি - একাত্ম হয়।

আজ আর প্রেম লিখতে পারছি না
এসময় চারিদিকে পিন ফোটা যন্ত্রণা,
চাপা লোকলজ্জা পুড়ছে - মিডিয়া টিআরপি!
সেফটিপিনের সেফ্ - ক্যাপটা খুলে গেছে,
নারকোটিক ভাবনায় বুঁদ - পিন ফুটছে শৈশবে!

তবুও টেনে পিনটা ছিঁড়ে নাও বুক থেকে
খোলা বুকে মুখ রেখে একটু কাঁদতে দাও
শিশু মুখ যেভাবে চুষে নেয় স্তনবৃন্ত
নির্ভরতা মেখে নেয় - মায়ের দেহ থেকে- মনে,
ঠিক সেই ভাবে আদর কর, চুমু দাও -
আজ খুব জ্বর - জলে ওডি কোলন মিশিয়ে
আরো একবার জলপট্টি দাও -  "মাথা-দের" !


বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৫



এক অন্য স্যাঁতসেতে বর্ষামঙ্গল।

অন্য বর্ষার ক্লেদাক্ত আকুলতা।

মানব রতন--

-- সৌগত রাণা কবিয়াল


ছেলেটার সুখ ছিল অনেক,

দুঃখও ছিল পাড়ার নেড়ি কুকুরটার মতো !

ভালোবাসা কদাচিৎ জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি দিয়ে

আবার ভিড়তো রংচটা বাড়ীটার স্যাঁতস্যাঁতে শরীর ঘেঁষে !

ছেলেটার কেও ছিল না,

পথের পাশে পড়ে থাকা বুড়োটার মতো,

শুধু ঐ একটুকু কৈশোরের স্মৃতি ছাড়া !

যে বয়সে লোকে আঁটকুড়ে অপবাদ পায়,

সেই বয়সে ছেলেটা শিশুর ঘ্রাণ পেয়েছিল নাকে,

সেই ক্ষয়ে যাওয়া বাড়ীটার উঠোন ঘেঁষে

পাড়ার ছেঁড়া কাপড়ের যুবতী পাগলিনী মেয়েটার বদৌলতে !

যৌবনের কিছু নেশা থাকে,

সেই নেশার বিষ হয়ে

মেয়েটার কাদামাখা সাদা উরুতে একদিন মন্দিরের সামনের পথটা লাল হয়েছিলো !

পাড়ার লোকে তখন ভীড় বাসে ট্রেনে অফিস ছুটছিলো !

কারো কিছু আসে যায়নি তাতে,

এমনকি মন্দিরের দেবতারও না !

ছেলেটা সেদিন মুখ লুকিয়ে মেয়েটার

রক্তে ভেজা নাড়ী স্পর্শ করেছিলো কেবল !

মানুষ কখনোই কারো জন্মের দায় নিয়ে চায় না,

পরের তো নয়ই !

মুখ থুবড়ে রাস্তার ধুলোবালিতে একাকার হয়ে

শিশুটি কেমন চিৎকার করে তার অভিশাপ দিয়ে যাচ্ছিল !

পকেটের দশ টাকার দুটো ময়লা নোটে

সেদিন ছেলেটার বুকে পুরুষের সাধ জেগেছিল !

পুরোনো সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনেক হিসেব নিকেশের পর,

ছেলেটা শিশুটির অধিকার পেয়েছিলো !

মেয়েটা এখনো সেই স্যাঁতসেঁতে বাড়ীটায় বাঁচে,

আজকাল গায়ে কাপড় থাকে না ঠিকমতো !

পাড়ার লোকেরাও এখন আর আগের মতো

আড়চোখে ওর শরীর দেখে না,

খোলা শরীরের পুরুষের নেশা ঠিক চড়েনা হয়তো !

ছেলেটা রোজ রবিবার করে

শেয়ালদহ যায়,

কিছু টুকরো খাবার আর লজেন্স নিয়ে !

এতিমখানার নোটবুকে বাবলুর স্বজন বলতে শুধু ছেলেটাই !

সারাদিন বাবলুকে নিয়ে কি ছটফট সময় কাটে সেদিন !

তারপর সপ্তাহের বাকি ছয়টা দিন

ছেলেটা পয়সা জমায়,

দশ টাকা,কুড়ি টাকার কিছু ময়লা কাগজ !

শুধুমাত্র একটা দিন বাঁচবে বলে,

ছেলেটা মুখ বুজে পাড়ার ধুলো ঝাড়ে হাসি হাসি মুখে !

ছেলেটার শুধুমাত্র ছুটির দিনটুকু ছাড়া

বলবার মতো আর কোন সুখ ছিলো না !

আর কোন সুখ ছিল না !

হয়তো আর কোন দুঃখও ছিল না,

শুধুমাত্র ছুটির দিনের সন্ধ্যাটায়

একা একা বাড়ী ফেরার সময়টুকু ছাড়া !

এছাড়া বলার মতো ছেলেটার আর কোন গল্প ছিল না,

কোন গল্প ছিল না !


রবিবার, ২২ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৪



বিষাদ
   সন্দীপ ভট্টাচার্য

সেদিন মাঝদুপুরে অভিযোগহীন সূর্য ডুবেছিল
দিন ঢেকেছিলো মেঘের মেখলায় ।
রাতের আসার মতো প্রথাগত না,
সে অন্ধকার ছিলো সূর্যের থেকেও উজ্বল

কামার্ত ষোড়শীর বুকে ,মুখের লালার মতো
ধুলোর উপর খেলা করে বৃষ্টির ফোঁটারা
কলাবতী শরীর জুড়ে সোহাগী পেলবতা

তারপর অন্ধকার আরও গাঢ় হলে
দৃশ্যের শব্দরা ছড়ায় কণা থেকে কণান্তরে
গাছের ভেজা গন্ধ তখন
কিশোরী শরীরে ক্লোরোফিল হয়ে যায়
আর মন ছোঁয়া জল উষ্ণতা খোঁজে

এরপর মাঝরাতে ব্যাঙ ডাকা জ্যোৎস্নায়
মেঘেরা বিরাম পেলে
অভিসারী মন জুড়ে বৈরাগী বাতাস
একাকী হৃদয় জাগে ঘুমহীন রাত
মোমবাতি গন্ধ জুড়ে
বেঁচে থাকে কিছু মনকেমনি বিষাদ।

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১৩



১. কবিতা-- শ্রাবণ বেলা
সৌরভ ঘোষ


প্রসূতি মেঘের বেদনার আড়ালে-
সূর্য কেতুর সাথে মেতে।
প্রথমে একফোঁটা-
তারপর কয়েক ফোঁটা-
তারপর ঝমঝমিয়ে,ভাঙা মেঘ...
বীজতলায় ধান চারার উল্লাসে মাথা নাড়া।

রক্তচোষা জোঁকের সাথে আগাছার সহবাস ,
অবলা দাঁড়িয়ে ভেজে...
সরকার দের ছাদে একটা লাল জামা,হাত নাড়ে
কয়েকটা দুলে ছেলে ঘুনি বসায় নালার মুখে
কালিতলার চাতালে আজও ছেলেগুলো তাস পিটছে
শালুক পাতা আহ্লাদে গদগদ,
স্থল শামুকের অনন্ত গতি,বেহিসাবি...

নোনা বাষ্পে কামিনী ফুলের গন্ধ,
বৃষ্টিধারার ভালোবাসায়  ইজ্জত স্খলন,
মাটিতে পাপড়ি চাদরের নন্দিত আস্তরণ...

উভচরের কামুক ডাক,প্রজননে মত্ত...
কাক ভেজা পায়রাগুলো গম্বুজের আড়ালে।
শত্রুর উঠোনের সরু জলধারা হাত ধরে-
সমান্তরাল পথে...
শালি মাঠ,উর্বর দোঁয়াশের সাদর অভ্যর্থনা,
আলিঙ্গন,মিলনোৎসব...
জীর্ণ কুঁড়ের স্থবির দৃষ্টি আকাশপটে আটকে...


২. কবিতা -- নৌকা বিহার
সৌরভ ঘোষ

তন্দ্রালু সন্ধ্যা।
প্রতিফলিত স্ট্রীট ল্যাম্পের কাঁপা কাঁপা ছায়াছবি বেয়ে,
নৌকার ছইয়ে সেঁধিয়ে যাই।
তোমার বুকে নিঃস্বার্থ মাথা রাখি
মেঘের গর্জনের অনুরনন ঢেউ হয়ে উপচায়
পাটাতন বারবার ভিজে যায় শরীরের মতন।

বাইরে বৃষ্টি আর নদীর শব্দ সঙ্গম
ছাউনির ভেতর আবেশ লোভী শ্রাবণ,
অন্তরের লেহন থরে থরে টের পাই,
ক্রমশ ডুবে যাই অথৈ শব্দ নক্সায়,

শেষ চক্ররেল চলে যাবার পর
আসকারার পর্দা ঠেলে বেরিয়ে দেখি-
তারাদের আড্ডা, মাঝির একগাল হাসি।
কূলের শীতল আবহে -
নাছোড়বান্দা সুরেলা প্রতিশ্রুতি,
'ভালোবাসি, খুব ভালোবাসি... '


অন্যরকম বর্ষা:


৩. কবিতা-- বৃষ্টিপ্রেমী
সৌরভ ঘোষ

অবাধ্য মরা মাঝির গায়ে আঁশটে গন্ধ
পাঁচমাথায় কথার জোট,বাংলা প্রোটিন
অচল রেডিও বাক্সে ইলেকট্রিক বিল।
তেল শেষ,সেঁকা পাঁপড়ের গন্ধ গমগম।
অবিশ্রান্ত শ্রাবণ টিপটিপ থেকে ঝমঝম...
বাদল পোকার সুড়সুড়ি আর সৌম্য ঝাপটা।
চার্জার আলোর সঙ্গী ইস্কাবনের টেক্কা...
#
বান উপেক্ষিত,
মাঝির ছেলের নৌকা নিয়ে সাগর পাড়ি ...


৪. কবিতা-- ফোঁস
সৌরভ ঘোষ

বুনো কাশ আর কিউমুলাসের প্রত্নতাত্ত্বিক বন্ধুত্ব
বাঁধানো ঘাটে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি,পচা পাতার গন্ধ
মেঠো ঘাসে মেটুলির চুম
মোড়ে মোড়ে ত্রিফলা বাতির  রোশনি।
#
বাস স্টপেজ থেকে তিন কিমি হাঁটা প্রতিদিন
প্রথম বর্ষের ছাত্রী,ছাপনার- 'রোশনি সারমিন'।
গন্ধগ্রামের কাঠের গুদামে মাতাল গন্ধগোকুল
ওৎ পাতা জরিপের স্কেলার মাপ প্রতিকূল।
#
রোশনির গায়ে আলোর ছটা।অসুরদলনী।
ঘুড়ে দাঁড়াতেই-
বেসুরো মতালের ছুটোছুটি,পাগলামি...


বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১২



১. বর্ষামঙ্গল

---সবর্না চট্টোপাধ্যায়

মেঘের পেট চিরে দাঁড়িয়ে আছো মাকালীর মতো
দুপাশের গাল বেয়ে ঘন আকাশ
শ্রাবণের কারুকাজে আশ্বিনের
ঘোর কেটে বৃষ্টি নেমেছে বাদামী উপত্যকায় বর্ষার ঘ্রাণে ভেজা নিটোল স্তন.....
ফুটে আছে পদ্মের ঢঙে...
বিদ্যুত চেরা লকলকে জিভ দিয়ে
চেটে খাওয়া বেশ্যারাত,
যোনিসিক্ত
উপচে আসা ঢেউ,
বইতে বইতে....
নাভি ছুঁয়ে
ফাঁক হয়ে আসে তার ঠোঁট...
আর ক্রমশ ছোট হতে হতে
চকলেটের মন্ড
মিশে লীন উদ্দাম আকাশের বুকে।
চাপা পড়া লতাপাতা সরিয়ে সরিয়ে
রামধনু গেঁথে দেয় কাদারজঙ্গলে...
শ্রাবণের শৃঙ্গে তখন দারুণ গর্জন!
বাঁধ ভাঙা জলে ডুবে যাচ্ছে দুটো
হিসহিসে শরীর।
অবিশ্রান্ত ধারাবিবরণীর ঝাপসা রাত্রি বিছিয়ে
চাবুকপ্রেমিক এঁকে চলেছে বৃষ্টির গতিপথ..
ক্রমে, শান্ত হতে হতে,
আগুনের পাখি
মিলিয়ে যাচ্ছে ক্ষীণ, ঘনমেঘে।
সারা আকাশের বুকে
বেজে চলেছে...
মিয়ামল্লারে বর্ষার সন্তুর।


২. সুনতালেখোলার পথে

-----সবর্না চট্টোপাধ্যায়।

মেঘের সিঁড়ি ভেঙে
নেমে আসা আকাশ মস্করা করে
বেয়াদপ হাওয়ায়
গোলাপের ছবিঘরে রাখা ভালোবাসার ব্যথারা

ঘুম ছেড়ে ওঠে,
গা ঝাড়া দেয় ধুলো জমা বাদ্যযন্ত্র
কোন এক যান্ত্রিক অসাড়তায় ঝিমধরানো মধুকর প্রলাপ বকছে শরীরের ঘামে…
নাভিমূল খসে পড়া গোলাপের মতো ঠোঁট
ছুঁয়ে আছে পাথরের স্তনে ঝরনার জল হয়ে।
আমি তাকে চিনি।
বহুকাল আগে ফেলে আসা শীতের আঁচলে ঢাকা তার মুখ
কাঞ্চনজঙ্ঘায় বরফ গললে
তার বুক উপচে আসে দুধে
হাওয়াদের আদিখ্যেতায় সে লাস্যময়ী আলো ছড়িয়ে হাসে, কপালে লাল রডোডেনড্রন
আকাশ তাকে উড়িয়েছে খইয়ের হাওয়ায় পাহাড় থেকে পাদদেশে..
কমলালেবুর শাখায় তখন ভোরের আলাপ
সবুজ দিগন্ত জুড়ে ফুটে আছে
থোকাথোকা নীল মেঘ..
পাইনের জঙ্গল মারিয়ে শ-শ ঝিঁঝি
পাহাড় নামিয়ে এনেছে তরাইয়ের উঠোনে
আমার পা ছুঁয়ে সে পাগল ভালোবাসা
বিছিয়ে দেয়…
শরীর কাঁপতে থাকে আকস্মিক সঙ্গমে
নির্জনতায় ডুবতে ডুবতে আচমকা লাফিয়ে
দেখি, চারদিকে ভরে আছে মূর্তির ডাক আর একঝাঁক গোলাপি কৃষ্ণচূড়া…


বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১১



চ-র্-ম-জ প্রেম
         ও
 কলিঙ্গে সঞ্চয়
---------------------------
পলাশ চৌধুরী
---------------------------
দেবাতুর বর্ষার বর্ষাতি হারিয়ে
একটা ন্যাংটা জামার বোতামে
ক্যাসুয়াল বীর্যাতিক্রম দেখলাম।

নিঙড়ে নিচ্ছে যশ, ভার্জিন কোমোট,
স্নানে আতর দিয়ে দেখিয়ে গেল, কলিঙ্গে সঞ্চয়।

একঘর বিকল্পে একটাই কেজো কোমর
পশ্চাতঙ্গে আকাশী মদ, শূন্য ঢেকেছে,
সেমিকোলন গুনেও তার কাছে নিষ্কাম আসি না!
ড্রাগ-আউটের শেষ বিন্দুতে দুন্দুভি দুলিয়ে
শেষ রাতে বৃষ্টি আসে।
বৃষ্ যোগে তি এর বিয়োজন হয়।

হাঃ শয্যা! তেলেগু নৃত্যে মেতে ওঠে নাভির্ধ্ব স্তন,
গ্যারেজ মুখী গাড়ির সুর তুলেছে নিম্নাঙ্গের বন্যা
কয়েকশো ক্রোশ জুড়ে অবিরাম স্কিপিং, স্লিমিং।

ডেস্টিনেশনও একটা বৃহদায়তন ক্লান্তি আনে,
অতএব বৃষ্টি শেষে বাউটা তুলে কৈলাস ঘুরে আসি,
একটা সবুজ ক্লান্তি মুছায়, নিরুপদ্রব চুম্বনে।

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ১০



বৃষ্টির মাঝে তুমি
মৈনাক চক্রবর্ত্তী

সরাদিনের টিপটিপ শব্দে বৃষ্টির কড়া নাড়া।
যেন এক অবাঞ্চিত আগন্তুক
হঠাৎ-ই ঘরে ঢোকার আবদার জুড়েছে।
পাশে একটা তন্বী নদী বয়ে চলে।
বৃষ্টির ঔরসে তার শরীর জুড়ে যৌবনের প্লাবন।
এক যুবতীর উত্তাপ
সংক্রামিত হয় দেহের লোমকূপে।
তার সহস্র চুম্বনের লোভে,
ভোলা যায় পৃথিবীর দুর্গম রহস্য।


বৃষ্টিভেজা উপত্যকায় একদিন
মৈনাক চক্রবর্ত্তী

সবুজ ঘাসের জীর্ণ উপত্যকায়
সীমান্তের কাঁটাতারের সূচালো জট
নীল নভঃ অলিন্দে কালো মেঘের জাল
বৃষ্টির স্নিগ্ধতা মাখে শরীরের রোমকূপ।

সেই বৃষ্টির ধূষর উপত্যকাতে
বৃষ্টিভেজা নরীর উষ্ণ আলিঙ্গনে শ্বাস
ভেজা চুল, কাঁপা ঠোঁট, সিক্ত শরীর
ওষ্ঠ ভেজা জল, বুনে যায় শ্রাবনের যৌনতা।

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ৯



না সম্পর্কের সম্পর্ক
          ----নীলমেঘ

আষাঢ়ী আঁধারের বোবা চিৎকার গর্জে ওঠে রোষে...
রাতের রেটিনা রহস্য খোঁজে যুবতীর অন্তর্বাসে।

মনের বালিশে স্নেহের আশীষে পুত্র প্রবীরের বাস
জাহ্নবীর বুকে হাতড়ে দেখ্ তার বৃষ্টির মতো লাশ।

ধর্ষক ব্লেডে আজ রক্তাক্ত দেখ্ শত-সহস্র নারী
বশিষ্ঠপ্রেমে আলপিন গেঁথে তুলে নে অবাধ্য তরবারি।

শাপলা শ্রাবণে সাগর দেখেছে যৌবনা তন্বী তারা
নিষিদ্ধবেড়া পংক্তি ডিঙিয়ে সোমের পঙ্কিল অন্তরা।

হাজারো প্রবীর মুছে যায় রোজ পৃথিবীর নাট্যরঙ্গে...
ফসফরাস প্রেম অনন্ত আদি জোনাকির যৌনাঙ্গে।

Butterscotch,,,,Once more series.



(Butterscotch),,,, (I am just loving it)
(It is really tempting to taste).....
(Once more please)
(Favourite poem).....

Editor: Supriti Barman.

চন্দ্রমুখীর latest series হলো "Once more",,,,,,, কিছু লেখক যাদের লেখা আম্রমাধুরীতে প্রকাশিত হয়েছে কিন্তু তারপরেও এমন অনেক কবিতা তারা লিখেছেন যেটা গভীরভাবে তার ঐকান্তিক হৃদয়াঙ্গম স্পর্শ রেখে গেছে।
সেগুলোকেই randomly search করে পুনরায় মুষিক ভবন,,,,,, অর্থাৎ আবার প্রকাশ করা হল।
"Once more,, Once more,,,
কবিতাগুলির দ্বর্থ্যক চিন্তাভাবনার আড়ালে গূঢ় অর্থ মন ছুঁয়ে তরঙ্গে আনে হিন্দোল তাই দ্বিবীজপত্র মোড়কে আনলাম তার আত্মপ্রকাশ।

সুপ্রীতি বর্মন।

শনিবার, ২১ জুলাই, ২০১৮

রথযাত্রার ফ্লাশব্যাক সম্পাদকীয়



রথযাত্রায় অগ্রগতির চাকার তলায় পদপৃষ্ঠ হতদরিদ্র হাভাতে জনপ্লাবন। পশ্চাদগমনে এঁটো থালায় উপবাসী চাঁদের হাসি বামুনের নাগালের বাইরে। রাজপথ পায় আদুরে স্পর্শ সোনার ঝাঁটার পরিবর্তে ছাপোষা জুতোর তলার ধূলো।ভাবে বুঝি আমি আজ দেব।
ছুঁড়ে ছুঁড়ে অচ্ছুত কানাকড়ি পুষ্পাঞ্জলী জগন্নাথের হাত ধরে গা ঘেঁষাঘেষি তেলা চকচকে পুরোহিত ঐকান্তিক মন্ত্রের সঞ্জীবনী স্পর্শে হলো ক্ষুধা রথে চড়ে বোধহয় আজ আমিই সর্বেসর্বা।
ওদিকে মনে মনে হাসেন অন্তর্যামী যা আছে যা হচ্ছে সবটাই আমি। আমিই আদি অনন্ত আমিই সত্য সর্বেসর্বা মহাপ্রভু।
কচিকাচা ন্যাওটা দাদুর হাত ধরে মেলাপ্রাঙ্গনে দৌড় আগামী প্রজন্মের অগ্রগতির রথ চাকা ছোট ছোট পা।
এই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে ঠিক পৌঁছে যাবো,,,,, জগন্নাথ।
রথ ও রথের প্রাচীন ঐতিহ্য ঝমাঝম বৃষ্টিতে নোনা দেওয়ালে গা ঘেঁষে পাপড় ভাজা,,, কিংবা মিষ্টি গজা।
চলো লিখে উড়িয়ে দাও কৈশোর ও শৈশবের রথের নিশানা বিজয় পতাকা।
রথ যেন অগ্রগামী হয় রথী তোমার করপদ্মে আমাদের ছাইপাঁশ যেন মুক্ত মন হয়।
পরিশেষে জগন্নাথ মাসির বাড়ি থেকে ফিরে মানভঞ্জন পালা সারবে পরিতৃপ্তির হাসি হেসে হাড়িভর্তি রসগোল্লায় প্রেম নিয়ে লক্ষ্মীকে দেবে সংসারের সারমর্ম অলৌকিক মিলন পালা।

বিষয়: রথযাত্রা, প্রেম পরিনয়ের আবদার মেলায় কেনাকাটা, নতুন কচি প্রজন্মের হাত ধরে শৈশব কে ফিরে পাওয়া, মনুষ্যত্বের ও ঈশ্বরিক গোলকধাঁধা জটিল চিন্তন সাথে পশ্চাদগমন অর্থনৈতিক যাঁতাকলে নিষ্পেষন।

**কবিতা পাঠান ২ টি বা তিনটি উপরোক্ত বিষয়ে আর আমাকে মেল করুন।supritibarman769@yahoo.in

Last date of submission 10th August.

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা।



তোমার ছোঁয়া প্রথম বর্ষা।
সুপ্রীতি বর্মন।

অনাবিল বর্ষণের স্রোত বইয়ে দেয় অনাদেয় সদুত্তর
নির্বাক চাহনি বারিকণার শব্দহীন মিছিল
মুখচোরা গড্ডালিকা প্রবাহ নাকি প্রচ্ছদ নুড়ির টান
রৌদ্রদগ্ধ প্রদাহে অবসন্নের নিম্নচাপ উচ্ছ্বলিত স্রোতস্বিনী ঝর্ণা
কান পেতে শুনতে থেকে পাইনা খুঁজে অস্তিত্ব।
যেন ধোয়া তরঙ্গায়িত সাদা ধবধবে
দুগ্ধফেনিল মৈথুন শেষে এক সুগন্ধী সাবানে আত্মগোপন।
ইতরের উগ্র অযাচিত গন্ধ লুকায়
কোটরে কোটরে বহ্ণিধারায়
সহস্রকাল পরে বানভাসি বন্যা।


আমার একরত্তি চিলেকোঠা
বৃষ্টি চুপিসারে দেওয়ালের কোল ঘেঁষে লুকায়
নিঃসঙ্গ সহবাসে মুখচোরা মাটিতে গড়ায়।
যৌবন প্রেমের গভীর মূলোচ্ছেদ ব্যতিরেকে
আরো খানিকটা পুষ্টিরসে জবুথুবু হয়ে
নরম মাটির গভীরে প্রোথিত হয়।
আরো খানিকটা জড়িয়ে ধরতে চায় এলোপাথারি
রন্ধ্রে তোলে সোহাগের ঝড়।
চোখের কোণে বালির কামড়
তপ্ত গাল বেয়ে অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে
চলে অতল সাগরের তলে সেথা বর্ণবিভেদে উদাসীন।


কুলকুল বর্ষণ টিনের মাথার ছাদে ছিদ্র
সকল পূর্ণতা যতি চিহ্ণে অচিরেই গুছানো পরিপাটী সংসার।
গুঞ্জনে সরব অজুহাতের চশমায় ঝাপসা জলের ঝাপটা
দোষ গুন এক বিরাট রঙমিলান্তি কার্পেটের
জৌলুসে উচ্ছ্বসিত ফোয়ারা এক বিশাল সমুদ্র।
ছোট নদী অপাংক্তেয় তাই অবুঝ শিশুদের
স্কুলের পাতায় শিলেবাসের প্রচ্ছদ নেয়।
"আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে।"
স্কুল বন্ধের শামিয়ানা গুরুগম্ভীর বজ্রপাতে বর্ষণ কিংবা বানভাসি গ্রামের নিরাপদ আশ্রয়
স্কুলের চাতাল মাথার উপর নিঃস্বার্থ দান ছাদ।
গর্ভবতী কুকুরের সন্তান প্রসব দেওয়ালের কোল ঘেঁষে
জারজ অঙ্কুরোদগম মহীরুহের বোঁটায়।
বানভাসি আশঙ্কিতে এঁটো করে
তুলে রাখে মুখগহ্বরে পাছে স্রোতের জোয়ারে পশ্চাদটানে সদ্যোজাতের মায়ের কুল হারায়।


দৈহিক অভিকর্ষের মূলোচ্ছেদে
সংস্পর্শের চুম্বনে জরায়ু সিক্ত টইটুম্বুর
কোন প্রচ্ছন্ন আগামীর হাত পা ছুঁড়ে গর্ভের মাটিতে জলকেলি
আস্পর্ধা সোহাগ স্বামীর ঐকান্তিক অকপট অনুরনন।
উচ্চৈস্বরে সানাইয়ের বেহাগ সুর
মাতাল নেশার ঘোরে চীৎকার এসো,,,,,,,,
গৃহস্থ হিসেবী কোলাব্যাঙ সহধর্মিনী কে কাছে পাবে বলে।
তাদের শব্দে গমগম মধ্যবিত্ত হিসেবী
চাদরের তলায় পা ছড়িয়ে
গাঢ় নিদ্রায় অভিভূত প্যাঁচালো সাপের দুঃশ্চিন্তার সাতকাহন ছেঁড়া কাঁথা।
শব্দহীন গা ছমছম অস্তরীভূত শিলা
বৃষ্টির নিঃসার ঝরঝর বহন দুূঃসাধ্য জগদ্দল চোখের পাতায় গুমড়ে মরা প্রাক্তন।
ছন্দপতন অঝোর বর্ষণ অস্তিত্ব খড়ের গুঁজো
নিরুদ্দেশ তিলোত্তমা সলিল সমাধি নেই ফেরার কোন কানাঘুষো।
জীবাশ্ম পরজীবি ঘুমের নিঃশ্বাস ঘনঘন উর্দ্ধগতি চরৈবেতি নৈব নৈব চ তোমার শারীরিক স্পর্শের অপকর্ষ টান।
আমার শরীর লাশ কাটা স্বপ্ন তোমাকে কাছে পাওয়া গুলতি মেরে দূরের আম হেঁচকা টান।
হামাগুড়ি শিশুর স্তনের বোঁটায় কামড় অমোঘ দুগ্ধের ফেনিল বর্ষণ মুখের লালায় স্নিগ্ধ সুধা ঋন মাতৃত্বের টান।


অন্যদিকে আয়েশে নবাব বাহাদুর উষ্ণ ওষ্ঠে ক্লাসিক শ্যুট কফি মাগে মনের মাধুরী চিনির গুড়োতে স্মৃতির ফ্ল্যাশব্যাক পুরানো ক্রাশ তাই যন্ত্রনা লুকিয়ে হিপ হিপ হুররে । আপডেট।
ফিনফিনে ব্র্যান্ডেড শার্টে গতিশীল মার্সিডিজের বিক্ষিপ্ত কাদার ছিটা হেলাচ্ছ্যেদা
কৃষ্ণা অপেক্ষমান স্যাঁতসেতে প্রেমিকের অবগাহন নতুন প্রেম প্রথম দেখা।
যন্ত্রনাক্লিষ্ট হাভাতে ভনভন অভিযোগের সাত সাতেরো নেই ওর জীবনে কোন সুখের আশ্রয়।তাই ঘর দোর ছেড়ে ছুটেছি ওর কাছে ফোনে ঝরঝর বৃষ্টি আমার মনে কাকের অশুভ কালোর অনাসৃষ্টি এঁচোড় পেকে কাঁঠাল।

জামের বীজ ছড়িয়ে ছিটিয়ে গাছের গুড়িতে শেকড়ের উপরে উঠে আসা ম্যানগ্রোভের শ্বাসমূল ধুঁকে ধুঁকে নিঃশ্বাসে পরকীয়া অক্সিজেনের অধিগ্রহন সুন্দরী অরণ্য।
লবনাক্ত প্রশ্বাসে জড়িয়ে হাম্বা তোমার স্বরূপে মাকে পরিব্যপ্তি আঙ্গিকে গ্রহন ফেনিল দুগ্ধ চোষন।
মৈথুন স্রোতে দলিয়ে এক পায়ে তালগাছ কুট্টুনী কামড়ে কাঁকড়া বৈরাগী সন্ন্যাস।

বর্ষাতির ফিনফিনে উড়ো চুলের ঝামট কৃষ্ণা তোমার চকমকি কুচকুচে কালো বক্ষের খন্ডচিত্রে মেঘরাজের স্নেহের আর্দ্রতা।

ছপাৎ ছপাৎ জল কাদায় ওয়াশিং মেশিনের বিজ্ঞপ্তি দাগ ভালো।ডিটেরজেন্টের বুদবুদ স্বপ্নিল আশার চালচুলোহীন দুলা বাগদীর ন্যাংটা ছেলে হাত তুলে এলোপাথারি ভিজছে তার সর্বাঙ্গ ।

তবুও নেই কোন গৃহস্থের আধমরা শুকনো কালো ছাতার পিছুটান।
 পিচ্ছিল অঙ্গে নীলকন্ঠের গঙ্গার স্রোত নেই ডুবে সলিলসমাধির ভয় শুধু দু হাত ধরে মাখো কালো মেঘের সাওয়ার।
কচুপাতায় টলটলে চোখের কোনে শ্রাবন মিলে মিশে সান্দ্র সংসারের শ্যাওলা পাঁকে পা দুঃসাহসী কৃষ্ণার।

ঝাপসা উইন্ডস্ক্রীনে দেদার বেগে সমৃদ্ধ অট্টালিকার গুমোট বাস্প অঙ্গুলীর স্পর্ধা আঁকে উল্কি তোমার নামে।
খরস্রোতার বেগ ফুঁসলিয়ে অতলে বানের আছাড় আমাদের বৈতরিনী টালমাটাল আশঙ্কা ঘূর্নিপাকে অতন্দ্র প্রহরায় রাত জাগা আঁখি।

কুলুঙ্গি আমার অনিশ্চিত কুলকুল কানাগলি পেরিয়ে সমুদ্র ঘরে বাইরে আমার সোনা কুকুর হয়েছে পোয়াতী বছর ঘুরে নিরাশ্রয় বাচ্ছা কাচ্ছা নিয়ে পাড়ে উঠে ছল ছল চোখে প্রকৃতি মা তোমায় খোঁজে তোমার ঔদাসিন্যতার করালগ্রাসে জগৎ সংসারে কি হাহাকার।

খন্ডচিত্রে মেঘরাজের বুকে কৃষ্ণার উনুনের ধোঁয়ার কালির গুমোট চিত্র চাপ চাপ হতে চাইছি কি আমি অন্য কারোর পরকীয়া।
ঔদাসিন্য কর্ণপাত
শেষভোরে সবকিছু সাঙ্গ হলে তাদের নতুন করে শুরুয়াত।
প্রদাহে ক্ষত অভিমানী মেঘবালিকা দিবারাত্রি স্নাত।
অনুরননে ঝমঝম বৃষ্টি স্বস্তির চোরাবালিপথে সমুদ্র স্তব্ধ।অভিযোগের উত্তাপ।

জলে ভেসে যেতে থাকে অনর্গল বিদ্বেষ গরল
সমাধিস্থ বল্কল ঋষির উচ্চারিত ওঁমে তৃষ্ণার্ত দূর্বায় বৃষ্টির চুম্বন অরুন্ধুতীর স্বামীর উষ্ণ আঁচে মেঘরাজের বুকে খন্ডনাভির অকালবর্ষন
পাহাড়প্রতিম উঁচু স্তনযুগলে অনর্গল ঝর্ণার নাব্যতার খরস্রোতে সহজিয়া দূর্গম কান্তার।

কান ধরে ক্ষমা অশ্রুজলে মেঘদূত উড়ো চিঠি প্রতিশ্রুতির পরের বার অতি শীঘ্র আসবো প্রিয়া।
আমাদের আলাপনে একঘেঁয়েমির শ্যাওলা যতিচিহ্ণের ছেদ আত্মগোপন তোমাতেই আমার মিশ্রিত মার্জার তবুও মাখনি দুগ্ধে পিচ্ছিল।
আমার বক্ষকোটরে তোমার প্রতীক্ষায় অখিল বর্ষণ শক্তপোক্ত পুরুষত্বের চাতাল নিষ্প্রান।
আজ এই খরায় বৃষ্টি তুমি সব মলিনতা ধুইয়ে দাও যতিচিহ্ণের নিঃশ্চুপ মান অভিযোগ।

বর্ষণের অর্ধেক পুকুরে দাঁড়িয়ে অনিশ্চয়তার ঘাম কপালে চাষিবাসির
নষ্ট হবে জরায়ুর ক্ষিধের যোগান হাভাতে হবে শুকিয়ে কাঠ
বর্ষণ হলো চিতাভস্মের কাঠ না ডালে না ঝোলে
শুধু নির্বাক অপদার্থ তার অস্তিত্ব।
একহাত সিঁদুরে টকটকে রাঙানো দীর্ঘায়িত সিঁথি কামরাঙার আঁচল ঝনঝন বাসনকোষন গৃহস্থালীর দৈনন্দিন কর্মে যোগিনী।
মাথা তুলে ঔদাসিন্য দৃষ্টিপাত রোম্যান্টিকতা নিছক এখন বাক্সবন্দী ঘুন সংসার
বর্ষণ এখন শুধু গুরুচন্ডালী ভোগ নয় দূর্ভোগ কাজকর্ম বানচাল।
হারিয়ে গেছে কিশোরীর শত ব্যস্ততার মাঝে কুসুম কাকলি।
বৃষ্টি শুধু বক্ষের নীরস আত্মরক্ষা ছাটে বর্ষাতির আড়াল সজীবতা ক্রোশখানেক দূরে।

স্কুলফেরত পড়ুয়ার বস্তাবন্দী চিত্রনাট্য থেকে আজ উধাও আমি
স্কুলকেসে ছাপোষা গুমোট অগ্রগতি
আজ ধোয়া বানে জলে থৈ থৈ আগামী দুঃশ্চিন্তার মেঘ।
আজ আমার অজ্ঞাতবাস অরণ্যের গহীনে অকাল বর্ষণ নিষ্প্রান ছোঁয়াচে ঘুম সঙ্গম।
এই বয়সে অবৈধ সময়ের মাপনযোগ্যতায় আমার বিয়োগ অস্তিত্বকথারা পেতে চায় সংযোগ কিশোরীর রিহার্সালে হলে ক্ষতি নেই
কতিপয় দিনের জন্য ভেজা প্রেমিক ধরাধরি তোমার আঁচল।
সিকোয়েন্সে অভিভাবকত্বের শ্লেষাত্মক মুখঝামটা পেট টিপলে দুধ বেরোয় ছোরা
এখন থেকেই তোমার ছ্যাবলামো হিরোগিরি।
আবহসঙ্গীতে মোক্ষম মূর্চ্ছনায় ঘূর্নায়মান নৃত্যে আমিই হতে চাই আজীবন তোমার শেহেজাদা।

মেঘের চোখরাঙানি পরবাসে বিদ্যুতের ঝলকানি
উচাটন গুরুগম্ভীর আওয়াজ মানতে একান্তই নারাজ
চলছে শ্যামরাধার মানভঞ্জন হে হরি।
অমৃতসুধা অক্লান্ত পরিশ্রমে আদ্যোপ্রান্ত গড়ায়ে নাভি স্তন কন্ঠশীষে অনর্গল চুম্বন
সকল প্রস্ফুটিত কুসুম বোঁটায় সংক্রমন তোমার ছোঁয়াচ
সুমিষ্ট আধোভেজা মনন আগামী আমার গর্ভের প্রজনন।
ওদিকে নাক সিটকানো সাবধানী ছাপোষা
এড়িয়ে চলা দু পায়ের জন্তু এসব মানে দিনশেষে ঝক্কি ঝামেলা
জল ঠেলে অফিস কাছাড়ি না হলে জুটাবো কি করে শুষ্ক জীবন আটপৌরে ভাত।
অভিযোগের নোংরা পুটুলী কর্দমাক্তের সুর অপছন্দের সকলে মিলেই তো নিরাকার যতিচিহ্ণ সাময়িক বিরাম স্তব্ধ জীবন বিরাজ।
হামলে পড়ে যে যা পারে সঞ্চিত মালকোঁচে ভাগ বসায়।
তারপরেই তো ক্ষনিকের আরাম শেষে রুদ্ধ জীবনপ্রপাত।
হিসেবে কষা মাজা পরিমার্জন ভারী কালো কুচকুচ অফিসের ব্যাগ
বৃষ্টি উপেক্ষা শুধু চায় গলগলে পচা ঘাম রুদ্ধ বাতাসে গুটিয়ে থাকা সংক্রমক ছারপোকা।
শরীরের স্পর্শে চাকদা ঘা নিরুত্তর স্পর্শ সতেজতা।
বৃষ্টি তোমার এখানে পোড়া কপাল কপোলে তার চেয়ে ভালো রাত্রিশেষে স্বামী সোহাগের বর্ষার জলে ঘ্যাঁটা সিঁদুরের টিপ এয়োস্ত্রীর
দেখো আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি।
তোমার শরীরে শরীর আজো ভেজে।

দুমড়ে মুচড়ে কাঙাল সোহাগী অপটকা হাড়গোড়ে প্রেমিক
বুকে আছড়ে স্নিগ্ধ সুলোচনা সোহাগে পড়িমরি ঝাপটে মৈথুন স্রোতে একলা ভেজে কুমারী
নতুন সংলাপে ঠায় দাঁড়িয়ে একপায়ে তালগাছ
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নিম্নগামী পিচ্ছিল কুচকুচে অরন্য ঠায় দশা অকালবোধন
১০৮ পদ্মে তিলোত্তমার আহ্বান নবকুমারের উদগ্র তেজে স্বেচ্ছায় আঁখি বিসর্জন
তোমার কালবৈশাখীর উত্তাল আলুথালু কেশে হারিয়ে আমার অন্ধত্বে
তোমার সলিলে নিশ্চুপ আম্রমাধুরীর রাত
কৌমার্য্যে অবগাহন।
সোহাগশেষে বধূর চুলের ঘ্রাণ স্নিগ্ধ সোঁদা গন্ধ।
এঁটো করতে থাকে নিঃশব্দে অঙ্গুরীমাল
সন্তর্পনে অগ্রসর মননে একচিন্তা
ছিটেফোঁটা জলের তুলনায় ইঁদোরার তোলা হিসেবী জল বরং অনেক মিষ্টি।
ওদিকে দ য়ের মধ্যভাগ কামড়ে কামড়ে অযাচকের অনর্গল ক্ষুধা মিটানোর ব্যর্থ প্রয়াসে
ঝুপ ঝাপ পাড় ভেঙে নিশ্চিত আশ্রয় গর্ভগৃহে গর্হিত অপরাধ অন্ধকার গহ্বরে অবিশ্রান্ত ধারা
কুল মান বিসর্জনে আটপৌরে আঁচল।
এক ছাতার আড়ালে সুখী নিশ্চিত চুম্বন বিনিময়ে দ্রাব্য ও দ্রাবকের সম্মোহনী দ্রবনের দ্রবনের তেজস্ক্রিয়তায় একপশলা মহার্ঘ্য মিলন বর্ষন।।
অসাবধানী ঈষৎ সরন বস্ত্র বিচ্ছেদে
কাল মেঘের ঘ্যাঁনর ঘ্যাঁনর অভিকর্ষীয় বর্গীয় জ এর মধ্যদেশ স্পর্শক।
দৃষ্টিনিবন্ধ শূন্য সরন নির্বাক জগদ্দল আমি
তোমার রূপ হেরি নিহারুলু
অজন্তার সাক্ষাত ভেজা নগ্ন চিত্রপট দর্শন।


বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ১৩



১. কবিতা: । সুখ।

আর্যতীর্থ।


সুখ বেচে সে  ঘুপচি ঘরে দুঃখ শুধু জোটায়
পাপড়ি মুড়ে ব্যস্ত সবাই ফুলের মধু লোটায়।
ফুলের মধু  সস্তা খুবই ঘন্টা পিছু রেটে,
পয়সা দিলে সব মাছিরাই দেখতে পারে চেটে।
চেটেপুটে মধু খেয়ে ফিরলে মাছি বাসায়,
গেরস্থালি বসে থাকে সঙ্গ পাবার আশায়।
সঙ্গ মানে আর কিছু নয়,খাবার দেওয়া বেড়ে,
বাইরে মধু খেয়ে মাছি শোবার ঘরে ফেরে।
শোবার ঘরে পুরুষই সব, নারীর মৌনব্রত,
অনিচ্ছেতেও মাছির কামড় সর্বদা স্বাগত।
স্বাগত না হলোই যদি, চড়চাপাটির দাগ,
আইনবলে বেআইনি নয় জোর করে সোহাগ।
সকালবেলায় গেরস্থালির চেনা যাপনগীতি
সিঁথির সিঁদুর , রাতের ব্যাপার যদি বলে দিতি...

বলবে না সে সিঁদুর কথা, নিরুক্ত লজ্জায়,
মাছির কাছে ফুলেরা এক যে কোনো শয্যায়
কোনটা যে সুখ কোনটা অসুখ ভগবানই জানে,
ফুলেরা সব সহ্য করে শান্তি রাখার ভানে...


২. কবিতা:। সন্ধি।

আর্যতীর্থ।


অথচ তোমাকে জানানোই যেতো একলা থাকতে শিখিনি এখনো
জানানোই যেতো তোমার চুমুর স্মৃতিতে কখনো মরচে পড়েনি,
সন্ধির কিছু প্রলেপ পড়লে স্তিমিত হতো এ রোজের দহনও
তবু সূচাগ্র ভূমি ছেড়ে দিতে এশর্মা দেখো একপা সরে নি।

নিয়তিকে নিয়ে ছেলেখেলা করা বোধহয় প্রেমের নিত্যকর্ম,
খুলে বললেই গোল মিটে যেতো তবুও ঠোঁটেরা মৌন থাকবে,
উহ্য কথারা আন্দাজী বাণে ফোঁড়ে ভরসার ঠুনকো বর্ম,
ঘনিষ্ঠ কিছু মুহূর্ত দিতে সময় ক্রমশ চওড়া হাঁকবে।

অথচ তোমার হাসিতে এখনো বুকে উপচায় হাজার পদ্ম,
কপালের কাছে ঝুঁকে আসা চুল সরাতে আঙুল নিশপিশ করে
শব্দরা নিজে কবিতায় সাজে স্নান করে যেই বেরোলে সদ্য,
সম্বিত ফেরে যুদ্ধের ক্ষতে বর্তমানের কামড়ে আঁচড়ে।

গোপনে সিঁদুর সিঁথিতে ছুঁইয়ে তুমিও হেসেছো জানি আয়নায়
বার্ষিকী দুলে আজও ঝিকিমিকি কানের লতির ললিত সখ্যে,
তবুও দুজনে হাতড়ে চলেছি কাছেদূরে যদি কথা পাওয়া যায়,
খামতির যত খতিয়ান নিয়ে জরিপ করছি একে অপরকে।

অথচ তোমাকে জানাতে চাইছি এসব যুগের গোপন চালাকি,
সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধু হয়না, বালুচর গড়ে  ভেঙে দেয় ফের,
যে নাম তোমার শুধু আমি জানি ভাবছি তাকেই সন্ধিতে ডাকি,
মুঠোফোন দুটো হিংসায় জ্বলে দেখুক যুগল মুহূর্তদের।

নতজানু হয়ে দুহাত বাড়িয়ে প্রতীক্ষা করি উষ্ণ ঠোঁটের...


আম্রমাধুরী- ১২



চন্দ্রাহত
.................

কৌস্তভীয় গঙ্গোপাধ্যায়


পৌরাণিক মাস-চরে চাঁদ খুঁজে পেল নারী
ভ্রষ্ট যুবকের ত্বক ধরে নানাবিধ বিকার সৌষ্ঠব

আমাদের কাল ক্ষতযোগ মেয়েদের চোঁয়ানো পাঁজর
হে নাতিদীর্ঘ, সমুদ্র সমীপে ঘাসজল খেয়ে যোগগৃহে চেতনায় থাক অর্ধ জাতিস্মর

বজ্রবৃক্ষ বীজ পুং ধাত্রীকরে দান
মায়ের জীবিত পিতার কবন্ধখোল জল গাঢ় ছাপ

যোনি আসো হাত খাও, নাও ছায়াপাত
আশরীর মদে স্তন শান্ত বরাভয়
শঙ্খ বাজবে ধীর— কোমল নিখাদ

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ১১



মনোলগ..
-------------
সুমনা পাল ভট্টাচার্য্য


এক একটা রাতে মা'কে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখেছি..
মুখে নুনের পুঁটলি প্রাণপণ চেপে ধরে, আঁশবটিতে নিজের মুড়ো আর ল্যাজাকে নিপুণভাবে মা দুভাগ করে নিতো রোজ..
:
আমি তখনও কলমিডগায় ফুল খুঁজে বেড়ানো কাল্পনিক চোখ,
প্রশ্নের বিভাজনী রেখা পেরোতে পেরোতে বুকের ভেতরে শীত নেমে আসা পরিযায়ী পাখি,
ডানায় ভরা আলোস্নানের তৃষ্ণা..

তবু, শুধু একটা হাত আস্তে করে রাখতাম মায়ের ভেজা পাঁজরের পর্দায়...
সেই অস্থির ফাঁপরের সরগম তাল ছিটকোচ্ছে বুঝে আমার শিরায় মোচড় দিতো যে কতোবার সে কথা জানতো, মশারির দীর্ঘ রাত্রিবাস।
:
তারপর নদীর বাঁকে বাঁকে পলি জমলো, গর্ভবতী হল মেঘ, আমিও কোল জুড়ে বৃষ্টির জন্ম দিতে দিতে একদিন বাবার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বুঝেছিলাম, এই ক্ষত বিক্ষত পেরেক ঠোকা ছাদটা  আমার মায়ের 'পুরুষ'..

যতোই বুঝলাম, ঠিক ততোই এক শতচ্ছিন্ন শাড়ির মতো মায়ের  অবয়ব কাঠামো ছাপিয়ে রক্তমাংসের দলা হয়ে গলায় আটকে গেলো. ..

সে বিষ গিলতে গিলতে আজও মশারির রাতগুলো বড় নীল হয়ে ওঠে, চোখের নীচে বিসর্জন হতে দেখি জন্ম আর জন্মান্তরের

নিজের হাঁটু দুটো জড়িয়ে বুকের কাছে গুটিয়ে নিতে নিতে চিবুকের জানলায় বড় মেঘ জমে....

রাতভোর বৃষ্টি, আর বৃষ্টি....
                                            @সুমনা।।

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ১০



১.  #সোনার_মেয়ে_হিমা।।
                      ----#অভিজিৎ দত্ত ।।

হিমা তুই মেয়ে হিমালয় হয়ে ওঠ,
ছেঁড়া জুতোটাকে ছুঁড়ে দে এবার মা,
ওই ইংরেজী বলা কালো সাহেবের মুখে
ব্রেড টোষ্ট খেয়ে, স্যুট টাই পড়ে
জীবন কাটায় যে সুখে।

ক্ষমতার আফিং খেয়ে বুঁদ হয়ে আছে যাঁরা
বিদেশে যখন টিম নিয়ে যায়,
হোটেল চাই পাঁচতারা,
বুঝবে না তারা ধানচাষী বাপ
কেমনে পালিছে তোরে
একজোড়া জুতো বুকে ধরে রাখে,
পাছে যায় ওটা ছিঁড়ে ।

জানতো সে মেয়ে দৌড়ুতে হবে,
জানত না বাকি কথা
ফিনিশ ভাষাটা জানলে হয়তো
লাগত না প্রাণে ব্যথা ;
যত মেয়েগুলো দৌঁড়েছে সাথে,
জানত কি তারা সবে,
ছুটতে গেলেই ইংরেজীতেও
সড়গড় হতে হবে ?

কেন তবে এই মানসিকতা,
স্পোর্টসটা যাঁদের তাঁবে,
ভুলে গেছে তারা ইংরেজী নয়,
খেলাই আসল হবে।
ছেঁড়া জুতো পড়া সেই মেয়ে
যদি বিশ্বে প্রথম হয়,
তারেই রাখিব হৃদয় মাঝারে,
আধিকারিককে নয়।

                         *******

২. #বিজয়_রথ।।
               -----অভিজিৎ দত্ত ।।

রথ ছুটেছে বিষম জোরে---- জগন্নাথের রথ,
তফাৎ যাও বিধর্মীদের দল,
তফাৎ যাও বেজন্মার দল,
এ'রথ আমাদের বিজয়রথ,
পৌঁছে দেবে রামের দেশে,
ওরে, তোরা জয়ধ্বনি কর।

রথ ছুটেছে রথ। প্রগতির ভারতীয়  রথ,
সরব মোদীর নীরব রথ,
চাপা পড়ে যায়-----
আমাদের রাষ্ট্রীয় কোষাগার,
 বিজাতীয় ব্যাঙ্কে,
ওরে তোরা জয়ধ্বনি কর।

রথ ছুটেছে বিষম জোরে পূর্ব দিশায়
দুহাতে হিংসা ছড়াতে ছড়াতে,
জাকির নাইকের প্রগতির রথ,
আরও রক্ত আরও আরও রক্ত চাই
ওরে তোরা জয়ধ্বনি কর।

রথ ছুটেছে বিষম জোরে,
চাকাটা তার জাঁতাকলের,
পেষাই হচ্ছে মধ্যবিত্তের দল,
দলিত মথিত হচ্ছে গরীব-গুর্বোর দল;
অাচ্ছে দিন আ গয়ে,
ওরে তোরা জয়ধ্বনি কর।

রথ ছুটেছে রথ, ভারতের প্রগতির রথ
গঙ্গাতীরের প্যলিউশনের মধ্যে দিয়ে
তৈরী হচ্ছে রাস্তা বুলেট ট্রেন চলবার;
ভারতের বিজয়রথ
বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে,
এটুকু স্যাক্রিফাইস তো করতেই হবে ভাই সব।

                 *******


রবিবার, ১৫ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৯




বেডরুম
________________
                      - সৌরভ বর্ধন

বেডরুম মানেই পরিষ্কার বিছানা নরম আলো শান্ত রসালো
গন্ধ   নিস্তব্ধতার পেলবতায় শুদ্ধ খুনসুটিতে কিছুটা গোপন
অন্ধকার ঢেলে দেওয়া    তারপর কাঠচেরা কাচের ভেতরে
তাদের একটা একটা করে সাজিয়ে দেওয়াই শুধু নয়  বরং

বরং
        বায়ু দ্বারা পূর্ণ শূন্যস্থানটুকুও উড়িয়ে দেওয়া ফার্নিচারে,
মেঘ নিয়ে ঢোকা বারণ তাই অনেকটা বিশুদ্ধ চিন্তাভাবনা
কিছুটা কৌশল কালকের জন্য পকেটে গুঁজে রাখা
তারপর যা বলার হাঁ করা বইয়ের তাকেরা বলে  
আমি তো রাস্তার ঝুল ধরে ঝুলে থাকি
                                                           তালার কথায়
                                                            চাবির কথায়

আর যতটা বাকি থাকে লিখে রাখি বেডশিটে :
গোপন লকারে জমিয়ে রাখা দুরন্ত বাস্তবতা আর জেদ
একাকীত্বের বৈয়াকরণে জলপটি দেওয়া আঙুল
                      --  দন্ত প্রানে ণ আনে

রোমকূপে জেগে ওঠে প্রবল শিশ্নোদরপরায়ণ সৈন্যদল :
মনকে ভার্চুয়াল যোনির থেকে সরিয়ে    কখনও কখনও
বেশ আলাদা রকমের বৃষ্টি নেমে আসে বেডরুমে
নির্মিত সুখ থেকে কিছুটা ছাতা খানিকটা রুমাল
পরিমাণ মতো বজ্রপাত নিয়ে তুমি নাচতেই পারো দুহাত তুলে

হাসি পেলেও আমি হাসবো না........। কারন

বেডরুম মানেই পরিষ্কার বিছানা নরম আলো শান্ত রসালো
গন্ধ   নিস্তব্ধতার পেলবতায় শুদ্ধ খুনসুটিতে কিছুটা গোপন
অন্ধকার ঢেলে দেওয়াই শুধু নয়  'বরং'    কাঠচেরা কাচের
ভেতরে তাদের একটা একটা করে ভিজিয়ে দেওয়া।

                       ___________________


বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ৮



বর্ষার মাঝামাঝি
_______________
               - সৌরভ বর্ধন

বর্ষার মাঝামাঝি সংখ্যা বিনিময় করতে করতে
মাগধী অপভ্রংশ থেকে তোমাকে পেয়েছি নিতান্ত শুকনো
আগাছার ভিড়ে রেললাইনের পাজরের ফাঁকে

এই বর্ষার আরও কয়েক বর্ষ আগে -
যখন আকাশের রং এলোমেলো শীততাপ নিয়ন্ত্রিত
আমি মুখে করে কাঠকুটো সুতোনাতা আকর্ষ
কুড়িয়ে আনতাম মাটির গোড়ালি

ঘাড় তুলে ধরা বহুতল, ফেরীঘাট
ফোঁটা জল সঞ্চিত হও বুকের খাঁজে
বাষ্পবেলার দিনে রণক্লান্ত প্রেমিকার পায়ে রাখো বেলফুল

উষ্ণ দুধের গন্ধে ছুটে আসা আরতির স্পন্দন
( না তখন সন্ধ্যা নয়,
                      বন্ধ্যা রাত্রির বৃষ্টিপাতে মুখরিতা!
কাঁপতে কাঁপতে কিছুটা টিউবের আলো
আমার মশারির পাশে এসে দাঁড়ায় মন্থরগতি
উত্তেজনাহীন পল্লীজীবন - 'তাড়াতাড়ি ত্রিপল ফেলে দে'

এরকম বৃষ্টি হলেই গাছেরা মারা যায়
রাত গভীর হলে পাখিরা অনির্বান জোনাকির ডানায়
জেগে ওঠে নাইক্রোম তারের রোধ

সামাজিকভাবে
সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্লান্ত হয়ে পড়ে মফস্বল
ধীরেধীরে ঘাসেরা নেমে আসে মাটির কাছে
সমুদ্রের কোমরে পেন্ডুলাম
অগত্যা দুলতে দুলতে ভাটার মাঠে বিছিয়ে দেয় অভিমান

                        _________________

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ৭



কবিতা: ১

*জাফরান চুমু*

প্রেমে নৈপুন্য অন্ধবেগ
একে একে প্রকাশ করতে
শুরু করলে,
অনেক কর্কট রাতেও
মধুচন্দ্রিমার আলো চারিদিক
উজ্জ্বল করে তোলা,

পেজা তুলোর মতো শিরা উপশিরাগুলোয় রক্তচাপ বাড়াতে শুরু করে. . .
ব্রহ্মপিশাচের মতো নিংড়ে নেয় শরীরের সমস্ত সুখটুকু।

বর্ষারাতে ভিজে শরীরে রক্ত মাখিয়ে তা চেটে চেটে খায়. .

বুকেপিঠে জাফরান চুমু দিয়ে
অমসৃণ পথ ধরে বসতি প্রেমে খোঁজ ডুব দেয় সাগরের জলে. . .

#আরিয়ান প্রিয়স(পাল)


কবিতা: ২

*দ্বিতীয় অমরত্ব*

বুকের ভেতর জমে ওঠা কামইচ্ছে,
একে একে প্রকাশ হচ্ছে ক্যানভাসের ফ্রেমে।
আমার রাত জাগা রজনী প্রেম ঝিকিমিকি করছে রঙের আদতে।
ক্লান্ত ঠোঁটে অমরত্বের আসায় জমে থাকা শেষ লালাটুকু।

ইচ্ছা জাগে,
পুরুষ পুরুষ চুমু ভরিয়ে দেবো
তার শরীরে।
কামকলার আশ্চর্য উত্তেজনায়
নিজেকে সংযত রাখার চেষ্টা করবো অনবরত,
যা অপ্রকাশ্য প্রেমে মত্ত তখন।।

এবার হারকিউলিস বুকের ছাতি বেড়ে ত্রিশ ছুঁতে ফেলেছে,
শুধু তোমার শরীর থেকে ওড়না সড়ার অপেক্ষা. .

দেখবে সামান্য সময়ে পৃথিবীর সমস্ত সুখ আছরে ফেলবো বিছানায়।
অমরত্ব সুখের আশায়. . .

#আরিয়ান প্রিয়স(পাল)

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৮



কবিতা: শ্রী।

-সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য


নিজেকে দেখতে বিচ্ছিরি ভেবে ছোটো চুল কাটেনি

মেয়েটি বিনুনী করতে ভালোবাসতো, অভিমানী,

নিজের নাকটা ভোঁতা ভেবে কষ্ট পেত মনে,

স্বামীর টিকালো নাকটা দেখিয়ে বলত,

ছেলের নাকটা তোমার মতোই যেন হয়,

তার গালটা ফোলা ফোলা ঠিক তার বাবার মত,

আয়নায় বাবার মুখটা ভেসে ওঠে,

কপালটা যে তার মায়ের মত,

স্বামীর মতের সাথে মেলেনা মতে।

দক্ষিনের খোলা জানলার ধারে ভাংগা কাঁচে

সিঁদুরের লাল টিপ পরে কপালের মাঝে,

দুপুরের রোদ শুধু বারান্দা অবধি আসে,

তবু মুখপানে চায় না,

পোয়াতি অবস্থায় যখন সে চলতে ফিরতে

হাঁপিয়ে যেত, মুখটা কেমন মলিন ঝাপ্সা দেখতে

লাগছিল, জঠরে সদ্য প্রস্ফুটিত ভ্রূন তার দেহে ছিল,

আয়নার ওপারে মুখটা আরো শুকনো মনে হয়,

দেহ নয়,

মুখটা তার শ্রীময়ী।




কবিতা: নেমন্তন্নের কার্ড।

-সুদীপ্ত ভট্টাচার্য্য


বিভাস বাবু যাচ্ছিলেন মেয়ের বিয়ের

নিমন্ত্রন করতে তাদেরই কুটুম বাড়ি।

বেশ প্রানবন্ত তার হাসি হেসেই বেড়িয়ে ছিলেন

জানলার ধারে সিট, মুর্শিদাবাদ যাবার গাড়ি।

বাসে বসে দেখছিলেন স্বপ্ন গুটিকতক,

সামনে তার মেয়ের শুভ পরিণয়,

ব্যাগে এক গুচ্ছ বিয়ের কার্ড,

অল্প তার আয়, তবু এ বিয়ে

তার বহু দিনের জমানো টাকায়,

অল্প অল্প করে গড়া গয়না গুলো

মেয়েকে বিয়েতে দেবে ভেবেছিলো।

এখন একটু তৃপ্ত

ধার দেনা করেইবা, বিয়েটা তো হচ্ছে,

খুব ভাল ছেলে দিপ্ত।

হঠাৎ, ছিটকে পড়লেন কাঁচে,

বাসটা উলটে যাচ্ছে, পুল টা ভেঙ্গে

লাগলো কাঁচে মাথা, পুলটা গেলো ধ্বসে,

বাসটা মিশে গেলো নিচের পাঁক জলের সঙ্গে,

পাঁক জলে ভেসে উঠলো চটি জোড়া

আর কিছু কার্ড, অপর্ণা ও দিপ্তের বিয়ের কার্ড।

ক্ষনিকেই রক্তে ভেসে গেল নালা,

লাল রঙে রাঙিয়ে মুর্শিদাবাদগামী বাস।

মোবাইল জলের তলায় হাবুডুবু খাচ্ছে,

রিং বাজবে না আর, ভেসে উঠছে কিছু লাশ

ঘন্টা খানেক এভাবেই আটকে সড়ক,  ভাঙা সেই পুল।

গ্রামের মানুষ ছুটে এলো মোবাইল নিয়ে

ভিডিও করতে হবে যে, মানুষ মরেছে।

এদিকে মেয়ে চিন্তায়, ফোনে রিং হচ্ছেনা

বাবাকে সে ফোনে পাচ্ছে না।

সকালের সেই হাসি মুখ ভেসে ওঠে চোখে

মেয়ে তো! চোখের কোনায় জল ছেপে ওঠে,

প্রেসের ভিড় জমেছে,

বাস ডুবেছে, পাশের ঘরে নিউজ হেডলাইন

ভেসে ওঠে, মৃতের সংখ্যা ঊনত্রিশ,

নালার জলে ভাসছে বিয়ের কার্ড।



আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৭



১..

গরিব গরিব

---সবর্না চট্টোপাধ্যায়




শুকনো গাছের মুঠো হাত

চেয়ে আছে জ্যোৎস্নার দিকে...
করাতের মুখে বোবাদের আর্তনাদ
গরিবের পেটে খিদে।

পাতার ঘরে বন্ধ সালোকসংশ্লেষ
রেশনের চালে পোকাদের চড়ুইভাতি
দিনবোজা আলোয় পথে নামে
রামরমিহের অভাগী মা...

মিছিলে মিছিলে ঢেউ
থিকথিকে মাঠ...হাততালি
মিটিংয়ের পর একে একে বাড়ি ফিরে

যায় ভাতডাল খাওয়া হাওয়া।
শুধু কবেকার মত ট্রাফিক সিগনালে
দাঁড়ানো গাড়ির দিকে,
হাত বাড়িয়ে থাকে অভুক্ত ভারত।

রোজকার নিয়মে সন্ধ্যার চাঁদ মাখোমাখো
মুখে পেট টান....
মার্কাকারা হোটেলে লিপস্টিক চোষে আর
বুলবুলি নাচ দেখে
ফ্রিতে দিয়ে যায় কাঁচাগালি বেশ্যাকে...

বস্তির মানুষ না স্যানিটারি প্যাড?
কিচ্ছু এসে যায় না নোটবন্দী হলেও..
পাশাপাশি বেড়ে ওঠা খিদে
চিবোনোর লড়াই , দুমুঠো দুবেলায়
হাভাতের ঝাড় বিইয়ে চলেছে
জাতপাতহীণ গরিব বংশপরম্পরায়...


২....


বাগদীর সোহাগী বউ

---সবর্না চট্টোপাধ্যায়


পাথর শরীরে শ্রমের খোদাই
কালো মিশমিশে পেটাই পেটে মোটাচালের
ভাত কেটে কেটে
স্বরলিপি লিখছে বাগদী বউ।
কালো পিঠ ফেটে লালপাড় শাড়ি
উঁচুদুটো বুক ঢেকে তালপাতার উনুন জ্বালে।
কয়লা লেপতে লেপতে কড়াইয়ের তলা
ঘষছে কালোবেড়াল।
মরদের সারাগায়ে খোয়াইয়ের ঢেউ
মাথায় শালপাতার মুকুট...
তীর ধনুকের ছিলা টেনে শিকার করছে
হরিণীর তীক্ষ্ণ চোখ।
পাথরকাটা শরীরে ছেনি চালিয়ে দেওয়া খিদে
ফলিয়ে নেয় রোজকার জ্যোৎস্নার চাঁদ।
দুবেলা নিজে হাতে লাঙল চালিয়ে সংসার জ্বালে বাগদী বরবউ...
গাছতলা দুপুরে খোলা টিফিনক্যারিয়ারে
সুখের ডালরুটি তুলে দেয় দীনে বাগদীর নিটোল
সোহাগী বউ...



৩.....


এমনভাবে দেখোনা প্লিজ

---সবর্না চট্টোপাধ্যায়



এমনভাবে দেখছো যেন ব্লাউজের ফাঁকে লুকিয়ে রেখেছি একটা ব্রহ্মান্ড...
রহস্যের আড়াল থেকে এখুনি ছুটে বেরোবে একঝাঁক জোনাক..
বলিহারি তোমায় পুরুষ। সবেতেই ছড়িয়ে ফেলছ চটচটে নিঃশ্বাস।

আমার বয়স যখন চার,
বটগাছ পুঁতবে বলে পিসিরছেলে মাটি কুপিয়েছিল।
হাসি পায় জানো,  তুমি এখনও নিজেকে পুরুষ মনে করো?

আমার বুকে তো কোনও এভারেস্ট নেই...
যে দুহাত ছড়িয়ে চেঁচিয়ে উঠবে বিজয়ীর মত...
কিংবা কোন নিশান গেঁথে দিয়ে বলবে, 'কেড়ে নিলাম সব অহংকার'।
অহংকার বুঝি তোমার শিশ্নে গাঁথা ধুতরোরফুল?

আমি আমি তোমার জন্মদাত্রী, তোমার স্ত্রী,
ভালোবাসতে পারি।

আবার, ছিঁড়ে নিতে পারি ঐ শিশ্নসর্বস্বঅহংকার।

তুমি যতই নিজেকে সাধু বলো না কেন, আমার আড়ালে কি একবারও চিরে দেখোনি ঘামে ভেজা পিঠ, কিংবা কোমরের ভাঁজ ?
তাকাওনি কি  উঁকি দেওয়া অন্তর্বাসে?
কিংবা ক্লিভেজের বেড়া ডিঙিয়ে গভীর গিরিখাতে...

তুমি যদি বিকিয়ে দিতে পারো সমস্ত পুরুষত্ব বীর্যের সস্তা বাজারে, তবে আর যাই হোক এবার থেকে নিজেকে পুরুষ বলো না আর.....

তবে যে কোন এক সময় ঘুমন্ত সন্তানের মুখও আঠালো খাবার মনে হবে...!

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা - ৬



সম্মোহন আজ শুধু আলিঙ্গন চায়

    তৈমুর খান

ঢেউ দিচ্ছে শুধু অনুভূতির ঢেউ
আমার বিপন্ন তরী ভেসে যায়
দুর্যোগের স্রোতে তীর ভাঙে
কোথায় চলেছি লক্ষ্যহীন  ?

বিমর্ষ আঁধার লেপ্টে ধরে
বজ্র কাঁপায় এসে শাসনআলোয়
ধাঁধা লাগে
পথভ্রষ্ট হই বারবার
বৃষ্টিবীর্য পুলক জাগায়
শীৎকারের মগ্নতায় স্বরলিপি বাজে
কোন্ দ্বীপে চুম্বন অপেক্ষা করে আছে ?


তোমার ভ্রুর তীক্ষ্ণ তিরে
হৃদয় ক্ষরণ হয় আজও
স্পর্শরা ফিরে আসে ভেজা বাতাসে
সম্মোহন আজ শুধু আলিঙ্গন চায়

তোমার কুন্তলে জল ঝরে
তোমার বুকের চূড়া বেয়ে নামে জল
আমার কাতর পিয়াস এগিয়ে যায়
ওড়না সরাও দেখি
মেঘের আড়ালে ডাকে কোন্ পাখি!

আজ সব সমর্পণ নিয়ে ভেসে যাই
এই মগ্ন বর্ষায়….


শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৬



১. ভাইরাস /  বিধান শীল

স্মার্ট ফোনের ভয়ানক অ্যাপসগুলো মাথা তুলে গ্রাস করছে মূল্যবান সময়
নৈতিক বোধের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নানান শিষ্টাচার
প্রতি মুহূর্তে ভাইরাসে নীল হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড  জীবন

 মসৃণ আয়নায় যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শারীরিক
কোন অ্যান্টি ভাইরাস কাজে দেয় না প্রাত্যহিক কাজ কর্ম ।

আনলিমিটেডে প্যাকের আড়ালে যৌনতার সুড়সুড়ি
ফোর জি স্পিডে  ডাউনলোড হয় যাবতীয় কৌতূহল ।

প্রবল বঞ্চনায় সিদ্ধ হয় রান্নাঘরে প্রবঞ্চনার ভাত
আমিষ ছাড়া গলা দিয়ে পার হয় না দুপুরের খাবার

বিশাল যজ্ঞের হোমে নিজেকে ফোকাস করে ধর্মগুরু
আমিও পাকা ডুবুরির মতো জলতলে খুঁজি ঝিনুকে  মুক্তো ।

আমার গোটা শরীরে পাক দিয়ে থাকে বিষধর সাপ
বিষে বিষ কাটে ;  লোহাতে লোহা
ফুলের সুগন্ধে জ্যোৎস্নারা চুমু দেয় পদ্মের বোঁটায় ।

ভাইরাসের বিপুল আয়োজনে আক্রান্ত কোষ অসাড়
হাত-পা বেঁধে আমরা ঝুলছি অদৃশ্য হাওয়ায় ।



২. দর্শন  / বিধান শীল

কোন এক গভীর রাত্রে চাঁদ দেখতে গিয়ে গলা অবধি আগুন খেয়েছিলাম । সময়ের প্রতি মুহূর্ত আজ পুড়িয়ে মারে আমায় । কী অলুক্ষণে জ্যোৎস্নার নেশা মাতাল করেছিল অরণ্য । বেঘোরে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজেছিল রাস্তা ।

কবিতার নেশা মদ , গাঁজা , হেরোইন এর চেয়ে বেশি । বিছানায় নিদ্রা যাবার আগে এক গ্লাস শব্দ পান না করলে তৃপ্তি আসে না কবির । কাঁটাছেঁড়া চালায় দক্ষ ডাক্তার মতো । সূচ সুতোয় সেলাই করে তৈরি করে বর্ণময় পোশাক । মুক্তির আনন্দে  বিজন বাতাসে ডানা মেলে উড়ে পাখি ।

কোন একদিন প্রেমপত্রে বানান ভুল ধরার জন্য প্রেমিকা রাগে কুটিকুটি করে ছিঁড়ে মুখে উপর ছুঁড়ে মেরেছিল প্রেমপত্র । মুখে একটুও আঘাত লাগে নি , লেগেছিল হৃৎপিন্ডে । আঠা দিয়ে জড়াতে চেয়েছিলাম টুকরো টুকরো কাগজ । অলুক্ষণে বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে দূরত্বের দেশে ।

কোন এক গভীর রাত্রে চাঁদ দেখতে গিয়ে গলা অবধি আগুন খেয়েছিলাম । এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে অরণ্যের ভিতর । হাজার লিটার জল ঢেলেও নিভে না বনে লাগানো আগুন । দমকল আসে , ফিরে যায় ।

ধীরে ধীরে অলসতা গ্রাস করছে কবিমন ।  দুর্দিনের কুটিরে নেমে আসছে অভাবী মেঘ । কালো আকাশ দেখে ভীত হয়ে পড়ছে ব্যক্তি স্বাধীনতা । কবি প্রতিজ্ঞা করে আর কখনো সে চাঁদ দেখবে না । অন্ধকার কুটিরে আবদ্ধ থাকতে পারবে কি কবি ?

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৫



১. কবিতা: ◆ উপেক্ষিত ঝড় ◆
                   **পল্লব কর্মকার।

ছুঁয়ে দেখার আগ্রহে
বামনের হাত লম্বা হতে থাকে চাঁদের দিকে,
ভুল করে সেও,
   স্পর্শকে ভালোবাসা ভেবে।

সেকাল থেকে একাল...
চন্দ্রের প্রতি আকর্ষণটা বামনের'ই হয়তো
সবচেয়ে বেশি।

মাসভক্ষনকারী কিলবিলে পোকাগুলো
ছড়িয়ে আছে গোটা দেহেজুড়ে
ভালোবাসা হয়ে।

 মেন্সট্রাল সাইকেল পূর্ন করে ঝড়ে যায় কৃষ্ণচূড়া,
বোরখা পড়া গৌর মুখখানিতে
রহস্য হয়ে থেকে যায় প্রেম...

তপ্ত কাঞ্চন ডুবে নাইট্রিক অ্যাসিডে
হয় খাঁটি, তবে সে অ্যাসিডে কাঞ্চন ফুলের দশা...

ফালতু চঞ্চু নিবেশ
ঝড় থামলেই আকাশ আবার ঝাঁ চকচকে...


২. কবিতা:
     ভাম
পল্লব কর্মকার।

তখন আমি চাঁদ অন্ধকারে ভিজছি,
ভাই বললো দাদা বাইরে ভাম বেরিয়েছে
এই ভাম টা যে আদেও কি!
অন্ধকারে পুরুষত্বের হায়না হাসি
সেভ করেনা বোধয় খুব ভয়ানক দেখতে
নাকটা নাকি মানুষের থেকেও তীব্র
শরীরের গন্ধ খোঁজে ব্যাস্ত রাজপথে
রাজভোগের লোভে ছানাবড়া চোখ
আর লকলকে জিভ কাঁপে লালাস্রোত সাথে
আমরা কেউই ভাম দেখিনি কোনোদিন
তবু বুড়ো ভাম দেখি প্রতিদিন…



৩. কবিতা: *অগোছালো*
পল্লব কর্মকার।

তুমি আসার পর থেকে অনেকটা অগোছালো হয়ে গেছি আমি
আগে বাঁশিটা থাকত দেওয়াল আলমারিতে
এখন সে ছলেবলে আমার বিছানায় করেছে স্থান
জামাগুলো মার্চ করতো আগে
আলমারির তাকে
এখন যুদ্ধ মিটে গেছে বোধহয়
তাই মার্চপাস্ট ছেড়ে আলনায় বানর ঝোলা ঝুলছে
হারমোনিয়ামটা টেবিলে খোলাই পড়ে থাকে
হঠাৎ হঠাৎ তার বুকের রিডে হাতের ছোঁয়া দিতেই
মধুর আর্তনাদে বলে ওঠে তোর নাম নিস্তব্ধ ঘরে
বইখাতা গুলো বুক সেল্ফের শীতঘুমের পরিবর্তে
বাঁকাচোরা ঢঙে শুয়ে আছে টেবিলে
টেবিল ল্যাম্পটার রেগে মাথা গরম হয়ে আছে
হবেনা! প্রায় তিন মাস একভাবে হাসছে সে
এত কি কেউ হাসতে পারে!
পরিপাটি সেই ছেলেটা এক ঝলক স্বর্গ দেখতে
আলুথালু পোশাকেই ছুট দেয় পাড়ার মোড়ে
কলারটা উপরে তুলে উড়নচন্ডী হয়ে
চুমু খায় অপেক্ষারা চায়ের ভাঁড়ে
তুমি এসে কালারটা ঠিক করে দিয়ে বলবে
"কী হচ্ছে তোমার একটু ঠিক করে থাকতে পারো না?"
হয়তো ওটা শোনার জন্যই…
অগোছালো হতে ভালোবাসি খুব।


আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৪



কবিতা:১
সজল রায়।

ভাঙ্গা সাইকেল চেপে অনুপম/
পাহাড়তলির দিকে চলে গেছে/
কে তাকে থামাবে, কার অধিকার/


ভুঁইপিঁপড়ের মতো বালকের দল/
ভেল্কি দেখায় গাঁয়ে-ঘরে/
মুঠো হাত ছুঁড়ে দিলে
ধুলো আঁকে নিসর্গের ছবি/
বাগানবাড়ির দিকে/
বিনিদ্র ব্যাধির মতো ঝিঁঝিঁ ডাকে/
কে তাকে থামাবে, কোন জাদুকর/


ভুল দশমিকে শুধু ব্যবধান দীর্ঘতর হয়/
বারান্দায় ঝুঁকে পড়ে প্রকান্ড শহর/
সিলিং পাখার মতো /
গুমোট সন্ধ্যায় ঘোরে চাকা/
পাহাড়তলির দিকে নেমে যায়/


কে তাকে ফেরাবে , শূন্য ঘর
আর ভাঙ্গা বুকের পাঁজর ।


কবিতা:২
সজল রায়।

দানাপানি অনন্তখামার/
কোচোয়ান জানে/
আছে তার বুদ্ধিমেধাবোধ/
ছলনায় তীক্ষ্ণধার সুস্থিত লাগাম/


বিপন্ন ঘোড়াটি বাতাসবিহারী/
আস্তাবলে ইন্দ্রজাল বোনে/
স্বর্ণচাঁপার মতো কেশদাম/
ফুলে ফুলে ওঠে
                  সংকল্পে,সাহসে/
নির্বিকার ছুটে যায়
                 সম্মোহনে, ধ্যানে/
অগ্নি যেমন ছোটে
               মহামন্ত্রে বোধিদ্রুম/
ঘৃতাহুতি যজ্ঞের কাঠে/


হতবাক কোচোয়ান , ধবল জ্যোৎস্নায়/
প্রজ্ঞার ওপারে দ্যাখে , হ্রেষা নয়/
পারমিতা পুড়ে যায় প্রেমের রেকাবে।

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৩



১. কবিতা:

উৎসমুখে দাঁড়াও

শুভঙ্কর দাস

উৎসমুখে দাঁড়াও,নরম জঙ্গল পেরিয়ে খাদ
যে খাদের পারাপারে ঈশ্বর থেকে মানুষ আর
মানুষ থেকে ঈশ্বর হওয়ার যাত্রাপথ।
জন্মদ্বার, যেকোনো মন্দির বা মসজিদের গর্ভগৃহের চেয়ে সহস্রগুণ সুন্দর,প্রশ্নহীন অলৌকিক।
পাথরের জন্য ধূপ-ফুল-পাতা,তসবি-তাবিজ,মোমবাতি আনতে পারো,
অথচ যার উন্মোচন ও প্রসারণের জন্য
এই ঈশ্বর, জগৎ,সন্তান এবং অসংখ্য আমির প্রবেশ
যার সামনে মাথা নত করা উচিত,চিরকাল
সেখানে করছ জমা,কুঠার,দা,করাত ও কোদাল!

মৃত্যুকে হারাতে চাও,একহাতে বা বহুহাতে,হারাও
তার আগে উৎসমুখে দাঁড়াও,

সেখানে কেউ নেই,আকাল।
----------------+-------------------+-------

২. কবিতা:

নকশিকাঁথা

শুভঙ্কর দাস

মুগ্ধতারর কোনো বয়স হয় না।

যে চোখে নিজের আয়না খুঁজে পেয়েছিলে,
সেই চোখের নদীতে করতে পারনি,পারাপার!
এ তো নয় অবতারের গল্প,জন্মান্তর,উদ্ধার।

যে হাতকে বৃক্ষের ছায়া ভেবে শরীরের নৌকার
বেঁধেছিলে নোঙর,খরস্রোতাকে পাওনি ভয়,
প্রেমের পায়ে চলা পথে কোথাও নেই বরাভয়!

যে পায়ের চিহ্নকে ভেবেছিলে গৃহের আলপনা
যার প্রতিটি শব্দ ছিল বিনত অনুসরণকারী
আসলে পশুত্ব,সকলেই কমবেশি গোপন শিকারী!

মুগ্ধতার কোনো বয়স হয় না সত্য
কিন্তু বয়স কি ইচ্ছেমত মুগ্ধ হতে পারে!
-----------------+-------------+----------


৩. কবিতা:

উনচল্লিশ বয়সের কোনো এক রবিবার

শুভঙ্কর দাস

দরজাকে আমার সবসময় আলিদিনের আশ্চর্য প্রদীপ মনে হয়,
খুললেই দিনরাত এত বেশি মুখ,মুখোশ,হাসি-কান্না ঘষেমেজে নেয় যে,নিজেকে মনে হয় বন্দী কোনো জিন
যার কোনো জন্মে মুক্তি নেই!
এই তো নরম হাতের ওপর হাত,অথচ আমার কেন সেই হাতে আগুন কম লাগে!
এই তো ঠোঁটের প্রতিঘরে পৌঁছাতে পেরেছি চুম্বনের দাগ,আমার কেন সেই দাগ মনে হয় অনুরাগহীন!
এই তো ফুলের শয্যায় নিজেকে উপুড় করে দেখেছি সন্তানের চিরসুন্দর মুখ,আমার কেন মনে হয়,সন্তান কি শুধু মিলনের উপহার!

দরজা খুলে দাও,
প্রিয় বান্ধবীরা আসুক,যাদের আমি কল্পনায় মেঘদূতম্ শুনিয়েছি,শেষের কবিতা পড়েয়েছি,আর কপালকুণ্ডলার পরিণতি জানিয়েছি

এত পরেও বসয়টা সহসা রবিবার হয়ে যায়!
এবং কোনো এক সকালে নিজের শরীরে হাত দিলে মনে হয়,এতো পরকীয়া

আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুতেই ফিরে যাবে না!

-+++-----------------------++++++--------


আম্রমাধুরী সংখ্যা- ২



অযৌক্তিক
             অন্তরা চ্যাটার্জী

পৃথিবী ভাঁজ হলে রিক্ত দোয়াতে
পুড়ে যায় কিছু আলো-বীজ।
বাস্তবতায় চাবুক বসায়
দলছুট সত্যেরা।

সত্তম পঙক্তি, কম্পন...মানেনা কখনো।
ভেজা চামড়ায় ডুবে থাকে
নিষাদের কালো ঘ্রাণ।

ভেবে দেখো একবার,
মুক্তির প্রস্তাবে
রীতি নিভে গেছে ঠিক কতবার!
আরো কতবার,
ঈশ্বর হয়েছে মুহ্যমান
মাটির তলায়!

নখে নখে পোষা যত
অবুঝ অভ্রান্ত অনিয়ম,
মুক্তির আঙুলে বিঁধে যায়
লুকানো দস্তুর;
গোড়ায় গোড়ায় গোপন গোঁড়ামি।

এবং বাকিটা....
ইতিহাস জানে সব।



বিশ্বাসঘাতক
        অন্তরা চ্যাটার্জী

উল্টানো থালায় সাজানো গরল
আমি প্রেম ভেবে খেয়েছি, বিশ্বাসে।
আরো কতবার কৌতুহলে
আঙুল দিয়েছি, হিসেব রাখিনি।
নির্লজ্জ মন ভ্রূণের ভেতর করেছে
আত্মহত্যা,
ঘোলাটে কুয়াশা তবু
ঈশ্বর দেখাতে পারেনি কখনো।

আমি ভুলে যায় বারবার,
এক রেখায় মানুষ হাঁটেনা কখনো।
তাই, বিষ খেতে ভালোবাসি
আমরা প্রত্যেকে।

ঘুম ভাঙলেই শুনি
আধুনিক খিলখিল সংলাপ।
সরলে জটিল মেশে
শ্রেণীভাগ কষ্ট পায় ভীষণ।
অন্ধকারে চোখ পোষে
মৃত সান্ধ্যভাষা;
আর পৃথিবী তখন মিথ্যেকথার আসর।

আম্রমাধুরী সংখ্যা-১



এলকোলাহল

বিশ্বজিৎ সাহু



আমার এলকোহল চোখে সমস্তই দৃষ্টিনন্দন ।

ইচ্ছে-ছবি রং চড়ে ক্যানভাসে
মনে জাগে ধূসর পাণ্ডুলিপির মতো সমস্ত
নিটোল সার্থক , হয়তো বা নিশ্চিত জেনে
শারীরিক মনে জেগে ওঠে নিছক পাগলামি

শুভারম্ভ সুর অসুরের মন-শরীরের লড়াই
নিশিযুদ্ধ ...

কিংবা জেগেও জাগরণ বৃথা
অথবা আমার কিছু ছিল অবশেষ ?
অথবা রাত্রি ছিল বাকি !

উপসংহারে নিশ্চিন্ত হই
মন তো কেবল শরীরের নয় , মনেরও !

-------/////////--------

অনুতাপ
© বিশ্বজিৎ সাহু

তোমায় নিঙড়ে খেতে খেতে
কবেই ডুবে গেছি একবুক গভীরে
অম্ল ক্ষার মেশা সে এক অসম্ভব প্রেত সমুদ্র
সাঁতার দিচ্ছি তুলে রাখতে চাইছি চিবুক

আমার শ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে
স্ত্রী সন্তান আরো যারা কাছের
আবছা হয়ে আসছে শক্তি

কেবল দাঁতের মতো গুরুত্বহীন স্মৃতিই
বিদ্যুতের চকমকি হয়ে হাসছে মগজে
নিরুপায় দুর্বল আমি...
-----------------------------////--------------------------

.অন্তরার কৌতূহল
© বিশ্বজিৎ সাহু

অন্তরার কৌতূহল ব্যাপক , টানটান
মায়াবী জিজ্ঞাসার মাস্তুল পূর্ণতার পথ ফুরোতে
সর্ষে অভিসারে দ্রুতযান

ঘামের মোহে স্বেদ , লালার রসনায় ঠোঁট
সর্পিল চলন পেলে মনভোগে তৃপ্ত চাতক

দীর্ঘ পিপাসা অমন চরিতার্থ হলে পর
পলস্তারা খুলে ফ্যালে নির্মোক

সেভাবেই উদ্বায়ী সকল রোদ-ভালোবাসা
অন্তরার কৌতূহল থাকে যেভাবে !
----/------------/////;------------////-------------//;;---


আম্রমাধুরী সংখ্যা



সম্পাদকীয়:

বৈশাখ জৈষ্ঠ্যের আম্রমাধুরী অম্লান থেকে যায় আমাদের হালফিল আপকামিং ফ্যাশানেবল জগতে কোল্ডড্রিংকসে। এ যেন দুধের সাধ ঘোলে মেটানো। তবুও তার মাধুর্য্যে আমাদের অন্তর্লীন উপলব্ধি অক্ষুণ্ণ থাকে।

ঠিক তেমনি এমন অনেক কবি ও লেখক আছেন তাদের লেখনী এরকম মিষ্টতা আমাদের স্বাদকোরকে রাখতে সক্ষম। তাই অনেক সময় তাদের নিজেদের দেওয়া বা তাদের টাইমলাইন থেকে সংগৃহীত লেখনী "আম্রমাধুরী" সংখ্যায় সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসাবে তুলে ধরা হল। যা পাঠক মন চুরি করতে সর্বোপরি সক্ষম হবে এই আশা করি।

সুপ্রীতি বর্মন।


শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা-৫



চাণক্য বাড়ৈ


১. মনমিতি

জ্যামিতির জ্ঞান নেই, তাই জানতে পারিনি
কতটা পরিধি বিস্তৃত করে আছ চোখের গোলকে।
অথচ উপলব্ধির অতীত কোনো বিস্ময় নিয়ে
তোমার চোখের দিকেই তাকিয়ে আছি
অনির্ণীত কাল।

আর বলো, ত্রিকোণমিতি বুঝি না বলে
কত দিন পড়ে থাকব বহুকৌণিক দৃষ্টির ভ্রমে?
কিছুই যে জানি না, তবু
উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জেনেছি—
কতখানি বেগ নিয়ে এলে দীর্ঘ ব্যাকুল চুলগুলো
ডানা মেলে হাওয়ায়—
আর (রোদ্দুরে মেলে দেওয়া)
বাবুই পাখির বাসা হয়ে ঝুলতে থাকা
অন্তর্বাস দেখে জেনেছি, নিতম্ব আর স্তনের মাপ।

তোমাকে একবার
মধ্য আষাঢ়ের উজ্জ্বল দিনের উপমা দিতে চেয়েছিলাম,
তুমি কেঁদেই ফেলেছিলে—

অথচ, পৃথিবীতে নির্ভুল কোনো মনমিতি নেই...



 ২. বৃষ্টি :  আজও

আজও তোমার চুম্বনের কথা মনে পড়ে
বৃষ্টির ছাঁটে
আমার বিছানা একটু একটু করে ভেজে
তবুও খুলে রাখি জানালার কপাট।

এমনই বৃষ্টি ছিল সেদিন
তোমার চুলে
বৃষ্টির ছাঁটের গুড়িগুড়ি বিন্দুগুলো
ছড়াচ্ছিল ঝলমলে গৌরবের জ্যোতি
যেন মুক্তোর দানা--

আজও তোমার অন্তর্বাস
আমার দিকে অপলক থাকে চেয়ে ।

তোমার কবোষ্ণ ছোঁয়া আজও অনুভব করি আমি
শুধু তুমি নেই আজ…
আর আছে সব।
তোমার ঠোট, বাহু, নিতম্ব নাভি
আলতো ছোঁয়া
এমনকি
রমণের আহ্বানে তোমার রাঙা মুখের স্মৃতি
তা-ও মোছেনি আজও।

এমনই বৃষ্টি ছিল সেদিন
তোমার কোমরে আমার হাত ছিল
সেই হাত আছে আজও
চুম্বনের শিহরণ, সেও আছে আজ
আর আছে
এই বৃষ্টি…

আজও।

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা-৪




নাসির ওয়াদেন এর  দুটি কবিতা
                        ১
          জলের শব্দে ঘুম ভাঙে

ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ বয়ে যায় গভীর গাঙে
মনের কোণে ভালবাসা উথালপাতাল
বিজলি প্রেমিক বর্ষারাণীর ঠোঁট রাঙিয়ে
প্রেম ছড়ালো, এলো বুঝি বৃষ্টি মাতাল

গভীর রাতে খাটের ছায়া লাফিয়ে উঠে
ছায়ায় ছায়া জড়িয়ে ধরে নেশারঘোরে
আলোক মাঝে জড়িয়ে ধরে জানু ঠোঁটে
মাটি বুঝি গর্ভবতী, রজঃপাতে বৃষ্টি পড়ে ।

কুমারী তুই গর্ভে কারে দিলি বাসা, মত্ত নেশায়
শিল ঝরা মেঘ ক্লান্ত চাষীর তাই আশা জাগায় ।।
                          ----''----
                          ২
             লেহনে লেহনে বর্ষার রাত

একটু ছুঁতে চেয়েছিলে বর্ষা বুকের উপত্যকা
মাঝে মাঝে ছোঁয়াছুঁয়ি
ছোঁয়াচে  শোঁয়াপোকার রতিসম্ভোগে
বড্ড এক কদমচাল

ভাঙা কুঁড়েঘর একাকী দাঁড়িয়ে
বজ্রপাতেও ভয় নেই
মূর্তি যুগলের, ছায়াযুদ্ধ উপভোগ করে

ঝিরঝির বৃষ্টির শব্দ কোলাহলে
আবছা নড়াচড়া শীৎকার
বিজলির আলোয়  ধুয়ে মুছে যায়

এবার তোমরা পরস্পর পরস্পরের রক্তে মিশে
লেহনে লেহনে ভোগ করো  বর্ষার রাত ।
                      ----------

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা-৩




[১] ১ম বর্ষাতি-র কবিতা
----------------------------------------
###

(ক্রমশঃ-ক্রমশঃ) ~ ১মুঠো মুথোজল
মুখোমুখি ফসল : পেরোচ্ছে রেললাইন চড়ুইভাতি
বৃত্ত - অতিভুজ ~ একেকটা চাঁদ-জ্যা-মিতি
উপগ্রহ শরীর : গলনশীল বরফে (ক্রমশঃ-ক্রমশঃ)

###

তারপরেও (ঘষটে-ঘষটে) আগামী ঘাস
চুঁইয়ে পড়ছে %ঘাম।প্রতিটি প্রতিবিম্ব বিদ্রোহী
আকাশ - জ্বর - স্বপ্ন ~ মাটিঘাত প্রকৃত গুণিতক
ইথারফলা ~ মেঘ-তড়িৎ পরিবেশন (ঘষটে-ঘষটে)

###

হ্যালোশিনেশন ~ (মাপতে-মাপতে) ঘোর চুম্বক
চারপাশ ঘোর কৃষ্ণকায়।ডাহুক প্রতিবেশী
(মাপতে-মাপতে)-ই : ঝোড়োবোবা মৃতঝড়
চুম্বকীয় পৃথিবী ছেড়ে ~ জলীয় পূর্বাভাষ


শব্দরূপ : রাহুল গাঙ্গুলী


বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা-2



১. কবিতা

*যদি মেঘ হয়ে যাই*

পায়েল খাঁড়া।

আচ্ছা, যদি মেঘ হয়ে যাই কোনো আষাঢ়ের বিকেলে

আর এক পশলা বৃষ্টি নিয়ে হাজির হই

তোমার ওই দখিনমুখো ঝুল-বারান্দায়,

তুমি তখন দার্জিলিং চায়ের সুগন্ধী ধোঁয়ায়

একের পর এক শব্দ সাজাচ্ছো ঝরনা কলমের ঠোঁটে।

তোমার সদ্য একুশ বয়স,

এলোমেলো চুল আর আদুল বুক

আর সেই খামখেয়ালী বহেমিয়ান সুর—

জানি প্লাবন ডাকবে আমার অষ্টাদশী স্নায়ুতন্ত্রে।

কদমের গন্ধে ভেজা এক আঁচলা জল ছিটিয়ে দেবো গায়

চমকে তাকাবে তুমি

আলসেতে তখন বৃষ্টিফোঁটার কথাকলি,

মেঘলা হাওয়ায় ভাসছে ‘আসরের’ নামাজ।

শহরটা তখনও আগলাবে দৈনিক ক্লান্তি

টেলিগ্রাফের তারে একজোড়া পায়রা

মেখে নেবে অন্তিম লগ্নের কিছু একান্ত আপন উষ্ণতা;

তুমি হাত বাড়িয়ে দিও অন্তহীন শুন্যতায়

ছুঁয়ে দিও গলে পড়া মেঘ,

যদি অকারনেই একচিলতে হাসি ফোটে তোমার ঠোঁটের কোনে

তবে জেনো—

চুপুসাড়ে কখন যেন

বলে গেছি কানে কানে—ভালোবাসি!


২.কবিতা

*ইতি মনীষা*

প্রিয় অতনু,

নয় নয় ক’রে কাটল আবারও বছর খানেক

আছিস কেমন, তোর পরবাসী দিনযাপনে?

সে দেশে শুনেছি নাকি ঋতুর নেই ফের

দিন আসে দিন যায়—শীতের আওতায় একরঙা গ্রাফিতি

বৃষ্টি ভেজায়, পাতা ঝরায়, ছড়ায় দু-মুঠো রঙিন উত্তাপ বসন্তের

পারদের নিরুত্তাপ সমলেখ জ্যামিতি!

সবটাতেই কী ভীষন মাখামাখি

একটা যেন নিখুঁত ফাঁকি আর—

যাক্‌ গে, সে কথা ছাড়;

তোর ভালো থাকাটাই তো একান্ত প্রয়োজন।

জানিস, আমাদের শহরে ভরা শ্রাবণ এখন।

কাকভেজা শরীরে তার মন কেমনের গন্ধ

রাস্তারা বানভাসী, খানা-খন্দ টইটুম্বুর

জল ঠেঙিয়ে নিত্য যাতায়াত

করতে হবেই কাজ, জোটাতে হবে তো ভাত,

তবু গরম খিচুড়ি আর ইলিশের ভুরভুর গন্ধে

দুপুর-সংসারগুলো ঠিক মেতে ওঠে সেই চেনা ছন্দে।

ফুটপাতের ওই খাপরা ছাওয়া রোজনামচাগুলো

এবারও সঁপেছে নিজেদের অদৃষ্টের হেপাজতে

মনে মনে গোনে গথ—

ফুটো চাল আর ফাঁকা হাঁড়িতে এবারটাও কেটে যাক কোনোমতে।

আকাশের নীল পাঁজরে কৃষ্ণকলি মেঘ

ক্ষণে ক্ষণে মুদ্রা বদলায়

ধোঁয়ার ভেজাল আর বহুতলের কাটাকুটি খেলায়

মুষড়ে পড়ে সে বারবার; তবু বৃষ্টি ঝরায়

ভিজিয়ে যায়, এঁদো গলি থেকে বুক চেতানো রাজপথ।

দেখি আরেক প্রস্থ সবুজের শোভাযাত্রা

যান্ত্রিক শহরের পাথুরে পলেস্তরায়।

থমকে দাঁড়ায় ট্রাফিক—

এ বর্ষা’ই তো জিরেন দেয় তাকে—অনর্গল অজুহাত

একানে ছাতার নীচে কত প্রেম আর্দ্র উষ্ণতা মাখে!

আচ্ছা দেখি বল—মনে কি পড়ে তোর আর,

নামলেই অঝোর ধার—

জুড়তিস কেমন আমার কাছে গান শোনবার আবদার।

এখন আর গাওয়া হয় না রে তেমন ক’রে

গলায় খেলে না সুর, স্বরলিপিতেও জমেছে ধুলো

শ্রোতাই বা কই তোর মতো আজ আর এই মেঘলা শহরে!

বৃষ্টি নামলে তাই গিয়ে দাঁড়াই

খোলা বারান্দায় চোখ বুজে;

রেলিঙে ফোঁটার ভিড় তোর কথা বলে

ভেজে শরীর ভেজে চুল ভিজে ওঠে দৃষ্টি

নাছোড় বৃষ্টি—এ শহরে ভেজায় না শুধু কংক্রিট

ভিজিয়ে যায় অনুভূতি স্মৃতির কোলাহলে।

জানি তুইও ভিজিস;

তোর অচেনা আকাশের বাদলা মেটায় কি মনের তৃষা!

জানি’না—পারলে জবাব দিস

                      ইতি তোর মনীষা...