শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৩



১. কবিতা:

উৎসমুখে দাঁড়াও

শুভঙ্কর দাস

উৎসমুখে দাঁড়াও,নরম জঙ্গল পেরিয়ে খাদ
যে খাদের পারাপারে ঈশ্বর থেকে মানুষ আর
মানুষ থেকে ঈশ্বর হওয়ার যাত্রাপথ।
জন্মদ্বার, যেকোনো মন্দির বা মসজিদের গর্ভগৃহের চেয়ে সহস্রগুণ সুন্দর,প্রশ্নহীন অলৌকিক।
পাথরের জন্য ধূপ-ফুল-পাতা,তসবি-তাবিজ,মোমবাতি আনতে পারো,
অথচ যার উন্মোচন ও প্রসারণের জন্য
এই ঈশ্বর, জগৎ,সন্তান এবং অসংখ্য আমির প্রবেশ
যার সামনে মাথা নত করা উচিত,চিরকাল
সেখানে করছ জমা,কুঠার,দা,করাত ও কোদাল!

মৃত্যুকে হারাতে চাও,একহাতে বা বহুহাতে,হারাও
তার আগে উৎসমুখে দাঁড়াও,

সেখানে কেউ নেই,আকাল।
----------------+-------------------+-------

২. কবিতা:

নকশিকাঁথা

শুভঙ্কর দাস

মুগ্ধতারর কোনো বয়স হয় না।

যে চোখে নিজের আয়না খুঁজে পেয়েছিলে,
সেই চোখের নদীতে করতে পারনি,পারাপার!
এ তো নয় অবতারের গল্প,জন্মান্তর,উদ্ধার।

যে হাতকে বৃক্ষের ছায়া ভেবে শরীরের নৌকার
বেঁধেছিলে নোঙর,খরস্রোতাকে পাওনি ভয়,
প্রেমের পায়ে চলা পথে কোথাও নেই বরাভয়!

যে পায়ের চিহ্নকে ভেবেছিলে গৃহের আলপনা
যার প্রতিটি শব্দ ছিল বিনত অনুসরণকারী
আসলে পশুত্ব,সকলেই কমবেশি গোপন শিকারী!

মুগ্ধতার কোনো বয়স হয় না সত্য
কিন্তু বয়স কি ইচ্ছেমত মুগ্ধ হতে পারে!
-----------------+-------------+----------


৩. কবিতা:

উনচল্লিশ বয়সের কোনো এক রবিবার

শুভঙ্কর দাস

দরজাকে আমার সবসময় আলিদিনের আশ্চর্য প্রদীপ মনে হয়,
খুললেই দিনরাত এত বেশি মুখ,মুখোশ,হাসি-কান্না ঘষেমেজে নেয় যে,নিজেকে মনে হয় বন্দী কোনো জিন
যার কোনো জন্মে মুক্তি নেই!
এই তো নরম হাতের ওপর হাত,অথচ আমার কেন সেই হাতে আগুন কম লাগে!
এই তো ঠোঁটের প্রতিঘরে পৌঁছাতে পেরেছি চুম্বনের দাগ,আমার কেন সেই দাগ মনে হয় অনুরাগহীন!
এই তো ফুলের শয্যায় নিজেকে উপুড় করে দেখেছি সন্তানের চিরসুন্দর মুখ,আমার কেন মনে হয়,সন্তান কি শুধু মিলনের উপহার!

দরজা খুলে দাও,
প্রিয় বান্ধবীরা আসুক,যাদের আমি কল্পনায় মেঘদূতম্ শুনিয়েছি,শেষের কবিতা পড়েয়েছি,আর কপালকুণ্ডলার পরিণতি জানিয়েছি

এত পরেও বসয়টা সহসা রবিবার হয়ে যায়!
এবং কোনো এক সকালে নিজের শরীরে হাত দিলে মনে হয়,এতো পরকীয়া

আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুতেই ফিরে যাবে না!

-+++-----------------------++++++--------


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন