মঙ্গলবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৯

নাগরের দোলনা


16. মাশকারা,,,,

নাগরের দোলনা,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

নাগরের দোলনায় চেপেছিল কিশোরী পরম সুখে
"দোল দোল দুলুনি, রাঙা মাথায় সহনশীলতার চিরুণী"-
তবুও নির্ভরতার রষা দড়ি কষাকষি সম্পর্কের পিছু টানে
কখন ছিঁড়ে ঘাড়ে পড়ে দোদুল্যমান
সোহাগের ঝারবাতি----

এখনো বোধহয় তোমার হুকুমের ঔদ্ধত্যের হুঁকোর টানে
কিশোরীর নৃত্য ঝংকারে
কামবিলাসী উর্বশী হতে কিছুটা বাকি।।


Practice makes a man perfect


15. মাশকারা,,,,

"Practice makes a man perfect"-----

সুপ্রীতি বর্মন

যদি তাই হবে তাহলে তো সবকিছু ছেড়ে বসে থেকেছি দিন প্রতিদিন পন্ডশ্রমে,

জাগাবো তোমার অষ্টপ্রহর দিবানিদ্রায় থাকা চৈতন্য
তাতে তো প্রচেষ্টার (ঢাকঢোল) ‌অক্লান্তভাবে পিটিয়ে ----
একচুল তুমি সরোনি তোমার নিদির্ষ্ট স্থানাঙ্ক থেকে
বরং হতে লেগেছো স্বভাবের মুদ্রাদোষে
জীবনি শক্তির বৃত্তকে ছুঁয়ে স্পর্শক অনাসক্তির----

কবে যে তোমার ঘুম ভাঙবে কে জানে---
আমি বরং ততক্ষণে এপাশ ওপাশ একটু
পরমসুখে ঘুরে আসি---

যাতে কম সে কম পরিশ্রমের ঘাম শুষে----
নিজস্ব আলাদা একটা বৃত্ত গড়া যায় নিজের হাতে।।
তাতে একটু হলেও হতে পারবো 100 percent perfect,,,,
থাকবে না কোন শোক আর একচুল তফাতে।।


বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী


14. মাশকারা,,,,

বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী,,,,

সুপ্রীতি বর্মন


বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী কিন্তু তুমি কেমন যেন হয়ে থাকো অস্থিরমতি। তোমাকে নিজের হাতের মুঠোয় করতে হিমশিম পুঁজিবাদী শক্তি।।

কালঘাম মহাজনী ঋণ তোমার মৃন্ময়ী সোনার অঙ্গে
পিচ্ছিল হলেই একটু গৃহবাসী হয় দেউলিয়া--

তুমি কারোর একার ন‌ও---
যার হাতের কব্জায় তার প্রেমে তার হাড়মজ্জায়---
তবুও অন্ধকানাই ডুব ডুব ঘোরে মাতাল----
সকাল সকাল সাইকেল পোদে তোমার‌ই দিকে ছোটে
একটু হেসে সামনে এসে বল দিকি একবার,
আমি আছি আমার মতন আর থাকবো
আমাকে বশীকরণ বিদ্যায় করা যায় না পগার পার----
তাই ক্ষণকাল তিষ্ঠ বৎস, ভাবো দিকি আরেকবার
কি তোমার আসল সম্পদ----
যা পেলে রাত হবে দিন-----
আর না পেলে অঘোরতান্ত্রিক শোকে----
দিন হয়ে যাবে রাত চোখের পাতার ওপারে,,,,
সেটা হল জ্ঞান, জ্ঞান‌ই হল মুক্তি,
এখনো তুই বুঝলি না,,,, জেনেশুনে তাকে দিতে চাস ফাঁকি
তবে তাই হোক,,, তোর ইচ্ছে যা খুশি তাই করগে মনের সুখে ----
তখন যেন বলিস না যে বলিনি
তোকে সাবধান হতে, প‌ই প‌ই করে----

যখন বুঝবি একেবারে শেষে
কোনটা তোর আসল সোনা আর কোনটা নকল
তখন যেন ঢাকঢোল পিটিয়ে বছর শেষে
উচ্চকন্ঠের শোকে
ডাকিস না আর রামছাগল মা মা করে
এবার একটু ভেবে বুঝে বিচক্ষণতায় নিজে থেকে
পার হ‌ও বাপু তোমার জীবন সমুদ্র।।


সময়ের রাজপথ


13. মাশকারা,,,,

সময়ের রাজপথ,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

সময়ের রাজপথে বেকার দিন যায় বছর ঘোরে

আমার মৃতবৎ শরীর তখন পরম সুখে
তোমার একপাশে পড়ে থাকে, তোমার আঙুলের ছোঁয়ায় কখন রাজ্ঞীকায়া জাগবে

আবার তোমার ইচ্ছেমতন পুতুল নাচ নাচবে
না না পুতুল হবার ইচ্ছা নেই আর

তুমি বলবে হেসে তখন এখনো তুমি ছেলেমানুষ আছো
আমি বরং হতে চাই তোমার সালংকারা পূর্ণ প্রতিমা
যার অঞ্জলি শুরু হবে তোমার হাতজোড় ক্ষমার করপদ্মে।।


প্রথাগত শিক্ষা


12. মাশকারা,,,,

প্রথাগত শিক্ষা,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

প্রথাগত শিক্ষায় বিদ্যালয়ে ব্লাকবোর্ডের ঘন চটচটে অন্ধকারে চকের আঁচড়ে বহু কষ্টে ও যত্নে ফুটে উঠেছিল প্রথম প্রথম আদ্যাক্ষর,,,,
ঠিক যেন তোমার স্বপ্নীল ভবিষ্যতের পদ্মাক্ষর,,,,

আজ যখন সে প্রকাশ্যে উন্মুক্ত সামাজিক প্রাঙ্গনে আউরায় নিজের তর্কের বুলি,,, তখন তাকে এক ঠাপে চর মেরে ভদ্র সভ্যতার,,, বোঝানো হয়,,,,সব জায়গায় সব কথা বলা শোভনীয় নয়,,, যেন সেটা এক গলদঘর্ম পাপ শ্রম ক্ষয়,,,

কখনো সখনো পিঠে কষাঘাতে বোঝানো হয়,,,, বেশী বকিস না শুধু খালি তোর মুখেই লেকচার,,,

কড়িহীন বোলচাল ঔদ্ধত্য অন্তঃসারশূন্যতা---
তার থেকে তোর মুখে দে তালা,,,
শিক্ষিত হয়েও থেকে যা নির্বোধ জবুথুবু নিশ্চুপ কোন পাথর-----
এতেই তোর সবদিক থেকে মঙ্গল,,,,,



মানভঞ্জন


11. মাশকারা,,,,

মানভঞ্জন,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

এক অষ্টাদশী কুমারী বহু কষ্টে ও আক্রোশে খন্ডিত মুখের টুকরোগুলো সামনে থাকা দর্পণে লক্ষ্য করে
আর হতোদ্যম শোকে সে তখন মূর্চ্ছাপ্রায়,,,
 বলে উঠে নিজের সাথে একান্ত সংলাপে,,,
এ আমি কেমন আমি,,, কে আমি,,,,
এ তুমি কেমন তুমি চোখের তারায় আয়না ধরো,,,
আর আমি মগ্নচৈতন্যে আবার বলে ওঠি আমায় আরেকটু আদর করো,,,

ওদিকে রগড়ারগড়ির মানভঞ্জন খেলায়
 যখন গুমোড় ভেঙে রিরংসা মেটাতে মুখের মেঝের ফাটা চাতালে
 শুদ্ধিকরণ ক্রীমের সৌজন্য উপাচারে মেজে ঘষে,,,
 ফিরে পাওয়ার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় উঠে পড়ে লেগে,,,,
সোহাগ মুখশ্রী ফিরে পাবার যেন এক অক্লান্ত আত্মসমর,,,,,
ধুন্ধুমার আত্মসম্মান রক্ষায় চলছে,,,
তখন কে যেন বলে সেটা তো পাগল ওর কাছেই গচ্ছিত আছে,,,
তুই ফিরে পাবি কি করে,,,
তখন মনে মনে ভেবে বলে মেয়েটি,,,
সত্যিই তো এতদিন ধরে তো আমার খেয়াল করাই হয়নি,,,,
"তাহলে কি পার হয়ে যাবে না তো আমার সোহাগ করার সমর",,,,


প্রাণপুরুষ


10. মাশকারা,,,,

প্রাণপুরুষ,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

কবিতার প্রাণপুরুষ কে মেরে ধরে কেলিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ঝুলিয়ে দিয়েছো
কোন বোধিবৃক্ষের ক্ষীণকায় মৃতপ্রায় ডালে,,,,
আর তার ফাঁকফোকড়ে গুঁজে দিতে লেগেছো শব্দ উপমা কেটেছেটে
 টুপটুপ উপর থেকে ঝরে পড়া অর্ধবিকশিত জ্যোৎস্নার আধুনিক চামর তার এখন চমকপ্রদ লক্ষ্যনীয় শোভা,,,
শুধু উপর উপর ষোলোআনা,,,,,,
 তাতে মহাজনী ঔদ্ধত্যে আবেগ নিষ্প্রাণ,,,,

এখন তর্জণী তুলে আবিষ্কারের উত্তুঙ্গ মোহে নেশার ঘোরে বলতে লেগেছো
ঐ দেখো সোহাগ লাল টুকটুকে আপেল কেমন ঝুলন্ত,,, পেড়ে নাও দিকি,,,বোধি,,,

তাতে হয়ত একজন অবোধ বালক ছুটে এসে খাবে বলে নিল পেড়ে
 ঐ দীর্ঘ প্রতিশ্রুতির জারিত রসের সোহাগ ফল,,,,
কিন্তু মুখে দিতেই বলে যত‌ই হোক উপকারী কিন্তু জিহ্বার প্রশংসা প্রশস্তির অত্যাধিক ঘর্ষণে ও চাটুকারিতার লেহনে,,,,
আপেলের গতরে জমেছে জরা চর্বির,,,,
হয়ে গেছে একেবারে কোন মেডিসিনের মতন বিস্বাদ,,,
বিষাদ যে মিষ্টতার আবেগ এখানে একেবারে শূন্য,,,,
যেন কোন ঠনঠন গোপাল,,,,
বিষ নেই তার কুলোপাণা চক্র,,,,,


কৌশলী তস্কর


9. মাশকারা,,,,

কৌশলী তস্কর,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

তুমি যেন ছিলে কোন শান্তশিষ্ট ক্ষণকাল তিষ্ঠ বুদ্ধিজীবী সৌম্যকান্ত পুরুষ,,,,
যার মনের ঘরে সিঁদ কেটে ঢুকে
 চুরি করে নিয়ে গেছে তার মন তার একান্ত প্রিয়তমা,,,,
যেন কোন তস্কর সম তার আচরণ,,,,

এখন যদি কোন চোর গার্হস্থ্য আশ্রমে পরম যত্নে চুরি করে নিয়ে যায়
আভিজাত্য এর আলোয়ান ঠেসে মুখভার করে ক্লান্ত অবসন্ন দেহে
একের পিঠে আরেক পরম সুখে থাকা ব‌ই সন্তর্পণে কাউকে না বুঝতে দিয়ে,,,,

তখন তুমি সেখানে এক বুদ্ধিজীবী জ্ঞানপাপী যে সব জেনেও না বোঝার ভান করে পড়ে থাকবে,,,
অন্তর্যামীর মতন মুখ টিপে ঈষৎ হাসবে আর বলবে,,,,
ভালোই হয়েছে তুই আমার চোখের আড়ালে সব ব‌ই নিয়ে গেছিস,,,,

কিন্তু তুই তো একপ্রকার অন্ধকানাই ডুব সাঁতার,,,
 তাই ব‌ইয়ের ভেতর মুখগোঁজা দমবন্ধ অক্ষর তোর কাছে কালো মোষের মতন
কারণ যত‌ই হোক দিনশেষে তো তুই অশিক্ষিত,,,
 তাই এর পাঠোদ্ধার করা তোর সাহসে কুলাবে না কোনদিন,,,,,,

আর আমি তো দীর্ঘকাল অধ্যাবসায়ে
 অনেক আগেই ওগুলো পাঠোদ্ধার করে মস্তিষ্কে ধারণ করে আছি বোধিবৃক্ষের সুপ্ত বীজ,,,,
একদিন না একদিন ঠিক সেটা মহীরুহ হবে,,, শুধু সময়ের অপেক্ষা,,,,
আর কোন চিন্তা নেই,,,,


কাজের কাজ


8. মাশকারা,,,,

কাজের কাজ,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

তুমি  please  সোনা কিছু কাজের কাজ করো,,,,
কি সব তোমার অবান্তর প্রলাপ খোয়াইশ
যো হোগি একদিন বিলকুল সাচ,,,
মেরি মর্জি কা হকিকত মেরা খাব
এক সালোনি সপনা,,,,

মগর তুমি লোগ কো তো কোই,,,,
খেয়ে দেয়ে কাজ নেই,,,
শুধু উৎসুক্য অমোঘ ঋণ জ্যোতির,,,,
জানতে চাও খালি চোখ পাকিয়ে উঁচু লম্বা উদগ্রীব কন্ঠে
 যেন কোন অনুসন্ধিৎসায় পোষ্য লাউডগা,,,,
 ছেলে কি করে,,, কি তার কাজ,,, কেমন তার প্রতিষ্ঠা,,,,

আচ্ছা একটা কথা বলো কোন গ্যারান্টি আছে
যেটার শঙ্খলাগা অদম্য ইচ্ছায় সঙ্গমদোষে গা ঘেঁষটে দিনরাত পড়ে থাকো,,,,
ঐটা কি আদৌ তোমাকে কিছু দিতে পারবে ওটা তো শিল্প সাহচর্য এ পার্শ্ববর্তী আঙ্গিক অবস্থান,,,,
যাকে চলতি কথায় ভেতো বাঙালী প্রায়‌ই বলে ওঠে,,,
দেখ দেখ কেমন "পেটে ভাত নেই কিন্তু কোটে সিঁদুর",,,,
Crucial point এই উঠতি বয়সে লাগামছাড়া হয়ে যাবে,,,,
থাকবে না কোন লক্ষ্য তোমার,,,,

সেরকম হঠাৎ আমার প্রতিষ্ঠানিক সত্য পরিশ্রমে ক্লান্ত আখরবিনিদ্রযাম নেই,,,
 সকাল সকাল ভানুমতীর খেলের মতন ম্যাজিশিয়ানের ছোঁয়ায়
পেয়ে যেতে পারবো না ভুঁইফোড় প্রশংসা কিংবা নাম ধাম প্রতিপত্তি,,,প্রগতিশীল যৌবন,,,

তবে কেন পড়ে রয়েছো ওকে তোমার প্রিয় প্রথম বৌ করে,,,
অন্য লোকের মতন তো পাশাপাশি ওকে করে রাখতে পারো
 ছিনালি স্বভাবের মুদ্রাদোষে কোন রংঢঙসঙ করা উর্বশী,,,
 তোমার যাপনমুদ্রার ঘোরে,,,,

আমি তখন চিল শকুনের চীৎকারে গলা ফাটিয়ে বলে উঠি,,,
আমি ওকে প্রচন্ড ভালোবাসি,,,,
তাই পারবো না ওকে ছাড়তে,,,,
কেবলমাত্র ঐ এক এবং অদ্বিতীয়ম,,,
 আমার চিরকাঙ্ক্ষিত সাধনা,,,,
তাই অন্য কোন দোসর নিতে ন‌ই রাজী,,,
 ঐ ছিল আর ঐ আমার এখনো আছে চরমতম প্রণয় শিল্পসৌকর্যের শিশমহল,,,
তখন নিয়তি অসীম ধৈর্য এর পরীক্ষা নিয়ে
বলে উঠে হেসে বৎস তবে তাই হোক,,,,


আমি সেই মেয়ে


7. মাশকারা,,,,

আমি সেই মেয়ে,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

আমি সেই মেয়ে যাকে দিন প্রতিদিন কানে কামড়ে বোঝানো হয়েছিল
যে পড়াশোনা শেষ করে যেদিন অর্থ রোজগার করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারবি,,,
আত্মনির্ভর ঠিক সেদিন হতে পারবি,,,

রোজগার করতে থাকলাম যান্ত্রিকতার ঘূর্ণায়মান চক্রে
 যেখানে স্থির হয়ে নিজের কথা নির্লিপ্ত ক্ষণে একটু ভাববো,,
তা হল শোচনীয় অপরাধ,,,
কারণ এইসব এখন শোভনীয় একদম নয়,,,,
সহায় সম্বলহীন আপনজনের ভার ও দায়িত্ব কর্তব্য কাঁধে তোলাই
একমাত্র বাঞ্ছনীয়,,,,

অন্যদিকে তখন কুমারী রোদ্দুর অপহরণের ভয়,,,
বুকের মধ্যে সবসময় ঢেঁকির পাড় ভাঙে কি হয় কি হয়,,,,
কারণ বসে আছে তখন পথে ঘাটে চায়ের ঠেকে আড্ডা মারা উচ্ছন্নে বিলাসী হাওয়ার কতিপয় চ্যাংড়ার দল,,,
 পরম সুখে ইভটিজিং এ ডাকে,,,
 "এ ছম্মকছল্লো ইধার দেখ যারে,,, উফ ক্যায় মস্ত চীজ হ্যায় য়্যার",,,
 হিংস্র লোলুপ হায়না,,,
 তোমাকে লুটেপুটে খেতে চায়,,,
আর তখনি প্রতিবন্ধকতার প্রাচীর আরো শক্তপোক্ত ভাবে তোমার চারপাশে গজিয়ে ওঠে,,,
তোমাকে আড়ালে আবডালে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয়
 যে যত তোমার‌ই স্বভাবদোষ,,,
কেন পুরুষের প্রলোভন বাড়াতে
পড়ো ছোট ছোট জামা,,,
যাক তাহলে এখানেও আত্মনির্ভর হয়ে উঠা আর হলোনা,,,,

তারপরেও সে আত্মনির্ভর হতে পারলো না,,, বুকের মধ্যে কেমন যেন একটা দমচাপা কষ্ট,,, ক্ষোভেকাতর যন্ত্রণা,,,
 সামাজিক চাপ,,,
অনেক তো বড় হলো এবার একটা হিল্লে হলে ভালো হয়,,,
 না হলে বাবা মা গত হলে হবে কি,,,
তখন ইচ্ছে করে জেনে শুনে চারধার থেকে বাঁধলাম ভালো রাখার মরণপন প্রয়াসে
 স্বামী পুত্র সংসারের একচ্ছত্র নাগপাশ,,, শুধুমাত্র আমার আমিকে ছেড়ে
এক প্রগাঢ় চাপের কেন্দ্রের আকর্ষণে টানে,,, তাই আর নিজের মতন করে সংসার ছেড়ে আমাকে কোনদিন তিষ্ঠতে দেয় না,,,
সর্বক্ষণ যেন কি হয় কি হচ্ছে সংসারে অস্থিরমতি পাগলপারা,,,,
এক আমিত্ববন্ধ্যা রমণী,,,,

তারপরেও বহু কষ্টে বুক বেঁধে আত্মনির্ভর হ‌ওয়ার চেষ্টায় মেতে উঠেছিল মেয়েটি
আর ঠিক তখন মাতৃত্ব পোড়ামাটির স্বত্তা একরাশ চক্ষুলজ্জার আত্মগ্লানির চাপ নিয়ে,,,জাঁকিয়ে বসে মেয়েলী স্বত্তায়,,,
আর বলে ওঠে লোকে,,,
 কি বলবে দেখো,,,,যতদোষ মায়ের,,, ছেলেকে মানুষের মতন মানুষ করতে এতটুকুও সময় দেয় না,,,,

তারপর,,, ইতি মৃণালিনী না না আরো কিছুটা রেশ এখনো বাকি,,,
যদি ছেলে বৌ না দেখে কেয়ার করে তখন আগাছা লতা আশ্রয় নেবে বৃদ্ধাশ্রমে
তখনো ভয়ে ভয়ে থাকে আর আত্মনির্ভর হতে বার্ধক্য এর কোঁচকানো চামড়া স্পর্ধা দেখাতে চায় না,,,
ভাবে আর কটা দিন বা বাঁচবো,,,
তিনকাল গিয়ে এককালে ঠেকেছে,,,
এখন শান্তিতে দুচোখ বুজতে পারলেই বাঁচি,,,ঐটুকুতেই আমার আনন্দ এই শেষ বয়সে এসে,,,,,,

তাই আর বোধহয় উপসংহারে কুমারী রোদ্দুরে পড়ে অকাল যতি,,,
 আমি সেই মেয়ে,,,
তাই আমার আর সখ করে আত্মনির্ভর
হয়ে ওঠা হলো না,,,,


সোহাগীর উপবেশন


6. মাশকারা,,,,

সোহাগীর উপবেশন,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি তুমি দেখে নিও আর কোনদিন তোমাকে নিঃস্বার্থ নিঃসঙ্গ প্রেমিকার মতন বলবো না,,,,
ঐখানটা করে বসো,,,
আর আমি তোমার কোলে একটু শান্তি করে বসি,,,
আর তুমি সবকিছু বৈরাগী অভিমানের খোলস ত্যাগে আমাকে কাছে টেনে নাও তোমার,,,
আর আমাকে একটু আদর করো,,,
আমি বড় ক্লান্ত,,,,
কারণ সেটা তখন অতীতের মতন শুনতে লাগবে,,,
যেটা বিগত শতাধিক লাঞ্ছনায় নৈব নৈব চ,,,,

বরং আমি চাই তোমার চৈতন্যে তুমি নতজানু ভিখারীর ঝুলি পেতে
ঠিক ঐখানে নিজের অহং ঐশ্বর্য ত্যাগে হরিশ্চন্দ্র হয়ে,,,
  আমাকে ডাকো দেওয়ালে পিঠ ঠেকে কোণঠাসা হয়ে সত্যিকারের ভালোবাসার উপলব্ধির শানিত খড়্গাঘাতে
 যে এসো লক্ষ্মীটি আর রাগ করে থাকে না,,, কোলে বসো,,, আদর করি একটু,,,
 আর দুজনে মিলে হাত ধরে নেমে পড়ি ভবিষ্যত পুনরুদ্ধারের খোঁজে,,,,,


জাহ্নবীর পুণ্যতোয়া স্রোত


5. মাশকারা,,,,

জাহ্নবীর পুণ্যতোয়া স্রোত,,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

পুণ্যতোয়া প্রসবিনী গঙ্গা দূরে দাঁড়িয়ে তোমার এক পাড়ে,,,,
অবাক হয়ে দেখছিলাম তোমার শ্রীময়ী রূপ,,,,

কিন্তু মনে উঠছিল অনবরত সোহাগের উচ্ছ্বাস নয় অনাসক্তির প্রবল ঢেউ,,,,

তখন সিঁড়ি ভেঙে অজ্ঞাতবাসে থাকা অশ্রুজলে ভেসে যাওয়া সিঁথি নিয়ে স্ত্রী আচারে,,,
 আর ডুব দিতে পারিনি প্রখর অক্ষমতার শোকে মুহ্যমান অস্তিত্ব,,,,

হয়ত মগ্নচৈতন্যে আশঙ্কায় প্রহর গুনে ভেবেছিলাম যে
 তোমার বাহন অহংকারী কুমীর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রখর আক্রোশের করালগ্রাসে হরণ করে নেবে আমার অন্তরাত্মা,,,,
আমার সত্য,,, আমার আজন্মলালিত শোক,,, আমার অশ্রু,,,,
আর তারপর পাপ পুণ্যের দাঁড়িপাল্লার সাম্যতার  সূচকে আমাকে বসিয়ে দেবে
আর আমি স্থির হবার গৌরচন্দ্রিকার ভানে টলমল করতে থাকবো,,,,

ওদিকে এসব সাতপাঁচের মধ্যে ঘটে যায় এক কান্ড চিত্ত আকর্ষনীয়,,,
তোমার ঐ পাড় থেকে ভেসে আসে আমার সোহাগের ডাক,,,
বলে কেমন আছো আর তুমি এখন কোথায় আছো,,,
কখন ফিরবে বলো,,,
 তখন যেন বিমূর্ষ আত্মচেতনা যেটা বিষাদে একদিন দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া একটা হাড়কঙ্কাল ছিল এতদিন ধরে,,,
হঠাৎ তোমার গলা একবার শুনতে পেয়ে সম্বিৎ ফিরে পায়,,,
 আর পাপ পুণ্যের পুন্ডরীকাক্ষং স্তুতিমন্ত্র যাপন তাকে তুলে রেখে
 আরো একবার তোমার সোহাগ সমুদ্রের জারিত মৈথুন স্রোতে
 ডুব দিয়ে নব কলেবরে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শ্রেয়সী হয়ে উঠতে চায় নতুন করে,,,



প্রমাণ সাপেক্ষ


4. মাশকারা,,,,,

প্রমাণ সাপেক্ষ,,,,

প্রতীক্ষায় প্রহর,,,

সুপ্রীতি বর্মন

তুমি সেই কতকাল ধরে ঘরদোর ছেড়ে
 উদ্বাস্তু হয়ে গতিশীলতার ট্রেন থামিয়ে

 চুপ করে বসে আছো সন্ন্যাসিনীর উদগ্র তেজে আলুথালু অবিন্যস্ত কেশে
 কোন অজানা প্রতীক্ষায়,,,,
পাছে ট্রেন যদি অন্য কোন রুটে নেমে
পথভ্রষ্ট হয়ে চলতে শুরু করে
 তখন জিদের বশে ট্রেনের চেন কেটে থামিয়ে দিতে পারবে না,,, সেটা সত্যিই লজ্জাকর,,,

তাই বলে তুমি আর কতকাল ট্রেনের জানলা দিয়ে
অলস কচ্ছপের মাথা ঝুপ করে বের করে বলবে নতুন উৎসাহ নিয়ে
এই দেখো আমি গন্তব্যের দিকে ছুটে চলেছি গতিশীল আছি,,,
স্পষ্ট প্রতীয়মান এই ঘটনা অবশ্যই আজ
তবে সবটাই স্বত্তাধিকারী প্রমাণ সাপেক্ষ,,,,
লোকলাজ,,,,


গুরুদক্ষিণা


3. মাশকারা,,,,

গুরুদক্ষিণা,,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

নিজেই যেন তিসমার খান শতাধিক আত্ম‌অহং এ তালগাছের একাই মাথা,,,,

 কাউকে ভ্রূক্ষেপ করতে চাও না,,,,
 ধার ধারো না,,,
শুধু ক্ষীণকায় দেওয়াল ঝোলা বাদুড় হ‌ও
 যে রাত জাগে আর দিনে দুচোখে স্বপ্ন নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে,,,,

নিজেকে গুরুর শ্রেষ্ঠ চ্যালা বলে মনে করো আর অন্যদিকে গুরুর ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে
ধৈর্য ধরে দিনরাত এক করে অথচ গুরুর অন্তরাত্মার সত্য বোঝা থেকে সাতক্রোশ দূরে,,,,
সত্যিই এ তোমার কেমন যেন এক প্রহসন,,,, তোমার নিজের তৈরী করা আলো,,,,,

আবার তুমি যেন এক বর্ণচোরা নীল শৃগাল যে এক লাফে স্বঘোষিত রাজাধিরাজ হয়ে একলাফে সিংহাসনের গদিতে উঠে বসো,,, অথচ তুমি জানো না আসল সত্য
ধরা তো তুমি নিশ্চয়ই একদিন পড়বে
 যখন তোমার গোষ্ঠীর সঙ্গদোষে এক শৃগাল শীৎকার ডাকে চেঁচিয়ে উঠবে উল্লাসে স্বভাবদোষে,,,,

কারণ আর যাই হোক দিনশেষে এই সত্য অলঙ্ঘ্য,,, অখন্ডিত
যে এক গাছের ছাল কখনোই অন্য গাছে লাগেনা,,, সে তুমি যত‌ই চেষ্টা করো না কেন,,,,


মনের ঘরে খিল এঁটে


2. মাশকারা,,,,,,

মনের ঘরে খিল এঁটে,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

ঘরে খিল এঁটে যে শব্দ ব্যবহার করা হয়,,,
তা সৌজন্য উপাচারে ঈশ্বরীকে প্রদত্ত নৈবেদ্য সুখ,,,,

কিন্তু প্রকাশ্যে সেই শব্দ আজন্মপালিত পাপ,,,
সৌজন্য উপাচারে লোকালয়ে ছি ছি,,,,

বুঝি না বাপু তর্কালংকার,,,,,
তুমি একটু বুঝিয়ে বলো শাস্ত্র ঘেঁটে দেখি,,,,,
তোমার চোখের আড়ালে কিন্তু স্পষ্ট বিদ্যমান,,,,,
এই সমান্তরাল সহাবস্থান,,,, সামঝোতা,,,,
তাই সবকিছু গুলিয়ে এখন এক ক্ষীরপাক বিধি,,,,
না তোমার না আমার সহজাত এই অস্তিত্ব,,,,
বিভাজন নীতি,,,,,


Divide and rule policy


1. মাশকারা,,,

"Divide and Rule Policy ",,,,,,

সুপ্রীতি বর্মন

এই কথাটা তো সকলের‌ই ভালো করে জানা,,, কিন্তু  actually  এটা ঠিক তখন খাটে ,,,
যখন  Opposite party  সুঝবুঝে ক্ষমতায় হবে বিচক্ষণ ও দাপটে,,,,
কিন্তু যদি সে হয় বোকাসোকা অন্তর থেকে ছেলেমানুষ নিষ্পাপ কিংবা খুব বেশী নরম,,,,

তখন হয়তো তোমার তাকে বোঝানো যে তুমি এই কাজটা যদি করো তাহলে হয়ত তোমার ভালো হতে পারে,,, তখন হয়ে যেতে পারে বিপরীত চক্রে হিতে বিপরীত কোন ভুল বোঝাবুঝি,,,,
তোমাকেই তখন মুদ্রাদোষে বুঝে নিতে পারে বা নেবে নিজের মঙ্গল সাধনের হন্তারক,,,

তখন না জেনে না বুঝে তোমার কাঁধে চাপিয়ে দিতে পারে নিজের নির্বুদ্ধিতার বহর কিংবা গর্দভের মতন ব‌ইতে থাকা তার গার্হস্থ্য এর ঝুলি,,,,

তখন হয়ত চুনকালি তোমার নিজের মুখে ঘষে হতে হবে গাধার পিঠে চেপে অবান্তর অন্ধ গ্রাম হন্যে হয়ে ঘুরতে থাকা,,,
 মুন্সিয়ানাহীন কোন শাস্ত্রজ্ঞ বাদর,,,,


মাশকারা,,(New thought and vision),,,,সুপ্রীতি বর্মন


মাশকারা

আমাদের অনিশ্চিত একপ্রকার আন্তরিকতার মেহগনি কাঠে আত্মদগ্ধ হবার মতন যন্ত্রণার ঘুণ যখন ধরে তখন পাঁজর ভাঙা অনর্গল দীর্ঘশ্বাসে সুখশয্যায় অজগরের গ্রাসে এগোনো লকলকে জিহ্বার দুশ্চিন্তা এড়াতে প্রিয়তমা কোল বালিশ কে আঁকড়ে ধরে পাশ ফিরে চোখ বুজে অজ্ঞানতার অন্ধকারের চাদরে নিজেকে মুড়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে চায় ম্রিয়মাণ শোকে,,,,মহার্ঘ মৃন্ময়ীর ঘামতেলের মাশকারা,,, জাহ্নবীর কচলানো আঁখির পদান্বয়ী শৃঙ্খলে,,,,আমি তোমাতে করিব বাস,,, দীর্ঘ দিবস রজনী,,, দীর্ঘ সন্ত্রাস,,,,,


Mascara (New style segment of Chandramukhi)

Flutterworthy magnetic lashes,,,,
By wisdom and knowledge expert,,,,
Or u can say supervision,,,,,

Enhance ur inner soul beauty,,,,

Brighten up ur vision not eye,,,, so that life will bloom like a lotus flower for ur mingled partner

Smudge proof and clump free,,, Deep rooted depression and sigh,,,

Ultra-creamy fibrous texture (Rough and rude struggle of life) not only an opportunity oriented gracious hunk to deep inhale into your warmth and cordial reception of ur heart with strong demand of only love,,,, Nothing else,,,,,

This is a special and unique segment of Chandramukhi,,,,,so that we can be strong like iron by wiping out all depression and unwillingness to take life in a smooth and relaxed way as an inspiration,,,,

So just go ahead with ur unique thought and never be lagged behind because life comes only once with its opportunity,,, so just celebrate it with Grandeur celebration,,,  just Enjoy,,,,

সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০১৯

বিশেষ আকর্ষণ: অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়

## বিশেষ আকর্ষণ: প্রথম ভাগ,,,,


বিবাহ রীতিতে তবে কি নবতম সংযোজন --ধর্না বিবাহ?

অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়


ব্রাহ্মো দৈবস্তথৈবার্ষঃ প্রাজপত্যস্তথাসুরঃ।
গান্ধর্ব্বো রাক্ষসশ্চৈব পৈশাচশ্চাষ্টমোহধমঃ।।

(মনুসংহিতা - তৃতীয় অধ্যায়, শ্লোক-২১)


ব্রাহ্ম,দৈব,আর্ষ,প্রাজপত্য,আসুর,গান্ধর্ব,
রাক্ষস এবং সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট পৈশাচ। বলা হয় এই আটরকম বিবাহের প্রচলন প্রাচীনকাল থেকে আর্য সমাজে চলে আসছে।  এখন এই প্রাচীনকাল বলতে কতখানি প্রাচীন তা একটু খুঁজে নেওয়া যেতে পারে। মহাভারতের উপাখ্যানগুলির মধ্যে একটি খুব বিখ্যাত ঋষি উদ্দালকের উপাখ্যান। তাঁর আসল নাম যদিও উদ্দালক ছিল না। তিনি ছিলেন ধৌম্য নামক এক ঋষির শিষ্য। পূর্বনাম আরুণি। আমরা যে সময়ের কথা বলছি তখন পড়াশুনো করা এতোটা সহজসাধ্য ও হেলাফেলার ব্যাপার ছিল না। গুরুগৃহে অধ্যয়ন ছিল রীতিমত কৃচ্ছ্রসাধন। গুরুগৃহে অধ্যয়ন ছাড়াও গুরু তার শিষ্যকে নিয়ে এটা ওটা করিয়ে নিতেন। এতে যেমন শিষ্যের গুরুনিষ্ঠার পরিচয় নেওয়া হতো সাথে সাথে শিষ্যের চরিত্রগঠন‌ও হয়ে যেত। ধৌম্য ঋষি একদিন শিষ্য আরুণিকে তার খেতের আল পরিচর্যা করতে পাঠান। আরুণি খেতে পৌঁছে দেখেন আল ভেঙে সব জল গলে চলে যাচ্ছে। হাজার চেষ্টা করেও আরুণি আল পুনরায় বাঁধতে পারলেন না। কিন্তু, গুরুর আদেশ বলে কথা। তাই শেষমেশ আরুণি খেতের মধ্যে শুয়ে পড়ে নিজের দেহ দিয়ে আলের জল আটকে রাখলেন। দীর্ঘক্ষণ আশ্রমে ফিরতে দেরী দেখে এদিকে ঋষি ধৌম্য‌ও তো শিষ্যের দুশ্চিন্তায় মাঠে এসে উপস্থিত। এসে শিষ্যের কান্ড দেখে গুরুর চক্ষুস্থির। শিষ্যের গুরুনিষ্ঠায় মুগ্ধ হয়ে গুরু তার কাছে যা যা জ্ঞান ছিল সকল‌ই প্রদান করলেন। এক‌ইসাথে আল থেকে উত্থিত হয়ে আত্মপ্রকাশ করবার জন্য আরুণির নতুন নাম হল "উদ্দালক"।

বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠানটি আর্য সমাজে স্থাপন করার পেছনে যে নামদুটি আসবে সেই দু'টি এই ঋষি উদ্দালক এবং তার পুত্র শ্বেতকেতু। একদিন শ্বেতকেতু আশ্রমে বসে রয়েছেন তার মাতা-পিতার সঙ্গে। এমন সময়ে কোত্থেকে এক ঋষি এসে তাঁর মাতাকে কামনা করে বসলেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাঁর মাতাকে যেতেই হল। শ্বেতকেতু রেগে প্রতিবাদ করে উঠলে সংযতচিত্ত পিতা বললেন, বৎস! ‌এই তো সংসারের দস্তুর। এই সংসারে কামাবিষ্ট হয়ে সকল প্রাণীই বিপরীত লিঙ্গকে কামনা করে থাকে‌। মানুষ‌ও এই প্রবৃত্তি থেকে মুক্ত নয়। শ্বেতকেতু আশ্বস্ত হলেন না। বরং মনে মনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন। এই শ্বেতকেতুই বড় হয়ে পন্ডিত হয়ে যখন গুরুগৃহ থেকে ফিরলেন, তিনিই নিয়ম বেঁধে দিলেন পতিভিন্ন অন্য পুরুষ সংসর্গ এবং পত্নীভিন্ন অন্য নারী সংসর্গ পাপ বলে মান্য হবে। এখন আজকের এই সমাজে দাঁড়িয়ে "পাপ বলে মান্য হবে" --- এই ব্যাপারটা খুব একটা কঠোর বলে মনে না হলেও সে যুগে পাপের একটা বড় ভূমিকা ছিল। মানুষ পাপ কাজ করে ইহলোকে সমাজচ্যুত হবার এবং পরলোকে নরকভোগের ভয় পেত।


এখন মানুষের মন থেকে এই পাপ নামক ভয়টাই সরে গেছে নাস্তিক্যবাদের প্রভাবে। মানুষ একমাত্র ভয় পায় আইন কে। সে জানে আইনের চোখে ধুলো দিয়ে যদি একবার বেরিয়ে আসতে পারি তাহলেই কেল্লাফতে। পাপ কাজ করে যদি টাকা ও ক্ষমতা হয় তো সমাজচ্যুত কেউ করবে না। আর পরলোকের ওপর তো বিশ্বাস‌ই নেই। আগে এই পরলোকের বিশ্বাসটাই ছিল মুখ্য। মানুষ বিশ্বাস করতো লোকসমাজের হাত থেকে রক্ষা পেলেও মৃত্যুর পর যে বিচার হবে সেখানে ফাঁকি নেই। যাইহোক, এভাবে বিয়ের প্রচলন হয়ে গেল। 

স্পষ্টত‌ই শ্বেতকেতুর মনে বিবাহ প্রচলনের উদ্দেশ্য পুরুষতান্ত্রিকতার প্রসার ছিল না। নারী ও পুরুষ উভয়কেই তিনি সামাজিক সুরক্ষা দান করেছিলেন। পরবর্তী কালে সামাজিক নিয়মগুলো আর‌ও সুশৃঙ্খলভাবে হতে লাগল স্মৃতির যুগে। ভারতবর্ষের স্মৃতিগুলির মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় ও সর্বাধিক বিতর্কিত অবশ্যই মনুসংহিতা। মনু এই নিয়মগুলোকেই আরেকটু সুবিন্যস্ত করে দিলেন। সেইসময় আর্য জনসংখ্যা বিস্তার প্রয়োজন ছিল। তাই অন্যান্য জনজাতির সঙ্গেও আর্যরা বৈবাহিক রীতিতে আবদ্ধ হোক --- ব্যাপারটাকে ধর্মীয় অনুমোদন দেওয়া জরুরী ছিল। কিন্তু, সবক্ষেত্রেই যে পরিবার ও আত্মীয়বর্গ মেনে নেবে এমন নয়। কোন‌ও ক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর পরিবার কে না জানিয়ে, কোন‌ও ক্ষেত্রে পাত্রীর বাড়ি থেকে পাত্রীকে প্রায় তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে হতো। এখন এসব বিবাহ কে মান্যতা না দিলে তারা আর্যসমাজ বহির্ভূত হয়ে যাবে। জনসংখ্যা আর বাড়বে কি? আবার অপরদিকে এভাবে বিয়ে গুলো যাতে অনাচার না হয়ে দাঁড়ায় সেইজন্য বিয়েগুলোর "ক্লাস" বেঁধে দেওয়া হল। এই এই ভাবে বিয়ে উচ্চবর্ণের লোকেরা করতে পারবে, এই এই ভাবে পারবে না। নিম্নশ্রেণির বিয়েগুলো মেনে নেওয়ার সাথে সাথে সেগুলো কে সেক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর সামাজিক নিরাপত্তার শর্ত‌ও চাপিয়ে দেওয়া হল। কাউকে বহিষ্কার নয় বদলে সবাইকে ধর্মের মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে আচারের নিয়মে বেঁধে ফেলা।


##বিশেষ আকর্ষণ: দ্বিতীয় ভাগ,,,,, 

ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে যদি আমরা আটরকমের বিবাহরীতি একটু আলোচনা করে নিই। 

আচ্ছাদ্য চার্চ্চ্যয়িত্বা চ শ্রুতিশীলবতে স্বয়ম্। 
আহূয় দানং কন্যায়া ব্রাহ্মো ধর্মঃ প্রকীর্তিতঃ।। 

( মনুসংহিতা - ৩/২৭)

"ব্রাহ্ম বিবাহ"
*************

শাস্ত্রজ্ঞান সম্পন্ন ও চরিত্রবান পাত্রকে কন্যাপক্ষরা স্বয়ং আহ্বান করে যথোচিত অভ্যর্থনা করে কন্যাকে সুচারুবস্ত্রে আচ্ছাদিত ও অলংকারে ভূষিত করে ঐ পাত্র কে যদি সম্প্রদান করে তাকে "ব্রাহ্ম বিবাহ" বলে। 

যজ্ঞে তু বিততে সম্যগৃত্বিজে কর্ম কুর্ব্বতে। 
অলঙ্কৃত্য সুতাদানং দৈবং ধর্ম্মং প্রচক্ষতে।। 

(মনুসংহিতা - ৩/২৮)


"আর্য বিবাহ"
**************

যজ্ঞের পুরোহিত কে সালঙ্কারা কন্যা দান করা হলে এইরকম বিবাহ কে বলা হত দৈব বিবাহ। পাত্রীপক্ষ আবার রীতি অনুযায়ী যৌতুক গ্রহণ করতেও পারতেন। গাভী ও বৃষকে একত্রে গো-মিথুন বলা হত। এইভাবে গো-মিথুন দান হিসাবে গ্রহণ করে পাত্রীপক্ষ যখন কন্যাকে বরের হাতে তুলে দিত সেই বিয়ের নাম ছিল আর্য বিবাহ। 


"প্রাজপত্য বিবাহ"
******************

"তোমরা একত্রে গার্হস্থ্য ধর্মের পালন করো" এই বলে অর্চনাপূর্বক কন্যা প্রদান করে যে বিয়ের প্রচলন তাকেই বলে প্রাজপত্য বিবাহ। বলাই বাহুল্য আজকের সমাজে তথাকথিত পুরোহিত ডেকে যে "আরেঞ্জ ম্যারেজ" তা আর কিছুই নয় প্রাজপত্য বিবাহ। 

এখন সমাজে সবচেয়ে উচ্চবর্ণ ব্রাহ্মণদের এই চার রকম বিবাহের বাইরে যাবার অনুমোদন ছিল না। বর্ণানুক্রমে নীচের দিকের নিয়মগুলো একটু ঢিলেঢালা। যেমন ক্ষত্রিয়রা আসুর ও গান্ধর্ব বিবাহ করতে পারতেন। এক্ষেত্রে পাত্র রীতিমত নিজের অর্থবল প্রদর্শন করে প্রচুর যৌতুক দিয়ে কন্যা ও কন্যার পিতামাতা কে সন্তুষ্ট করে কন্যাকে ঘরে নিয়ে আসতেন।

 গান্ধর্ব বিবাহ হল এখনকার লাভ ম্যারেজ। পাত্র-পাত্রীর একে অপরকে পছন্দ হলেই হয়ে গেল। কারোর অনুমতি লাগবে না। রাক্ষস বিবাহ হচ্ছে কন্যাকে অপহরণ করে বিবাহ। বৈশ্য ও শূদ্রের পক্ষেই এই বিবাহ উচিত ছিল। 

ক্ষত্রিয়ের পক্ষে তখন‌ই এই বিবাহ সম্ভব ছিল যখন এই অপহরণে কন্যার সম্মতি ষোলোআনা। এটা গান্ধর্ব আর রাক্ষস বিবাহের মিশ্রণ। মহাভারতে অর্জুন ও সুভদ্রার বিয়ে এই মতে হয়েছে। সবচেয়ে নিম্নমানের বিবাহ ছিল পৈশাচ বিবাহ। 

"পৈশাচ বিবাহ"
*****************

নিদ্রিতা, নেশাচ্ছন্না কিম্বা প্রমত্তা নারীতে উপগত হবার নাম পৈশাচ বিবাহ। প্রকৃতপক্ষে এটা ধর্ষণ। তবুও একে বিবাহের নাম কেন দেওয়া হল? তখনকার সমাজ ব্যবস্থার কথা চিন্তা করে, যাতে এমন ঘটনায় জন্মানো সন্তান পিতৃপরিচয় পায় আর ঘটনার শিকার নারীটির‌ও ভরণপোষণের দায়িত্ব যাতে পুরুষটি নেয় তাঁর বন্দোবস্ত করাই এক্ষেত্রে মূল লক্ষ্য। মনু বলেই দিচ্ছেন এ হচ্ছে পাপের বিবাহ। সবচেয়ে অধম। তবু, ঘটনা ঘটে গেলে তাকে স্ত্রী বলে অস্বীকার করাটা আর‌ও অধর্মের আচরণ হয়ে যাবে। 

খুব বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে রচনা এইসব নিয়ম। কালের নিয়মে ক্ষয়ে গেলেও এতগুলো বছরে কিছু একেবারে ভেঙে পড়তে পারেনি আমাদের হিন্দু বিবাহের রীতিনীতির ক্ষেত্রে।


## বিশেষ আকর্ষণ : তৃতীয় ভাগ,,,,,, 

এবারে একেবারে হাজির হয়ে যাবো হালের একটি ঘটনায়। একটি বিয়ের ঘটনা। পাত্রের নাম অনন্ত বর্মন। পাত্রীর নাম লিপিকা। স্থান জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি এলাকা। হ্যাঁ। কেউই ভোলেন নি জানি। কি ঘটেছিল ঠিক? দীর্ঘ আট বছর ধরে প্রেম দুজনের। তারপর মেয়েটির বাড়িতে মেনে নেয়নি। প্রেমিকার বিয়ে অন্য কোথাও হচ্ছে জানতে পেরে প্রিয়তমার বাড়ির সামনে ধর্নায় বসে পড়লেন প্রেমিক। হাতে প্লাকার্ড। দুজনের সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারে এমন বেশকিছু ছবি। সঙ্গে সঙ্গে লোক জড়ো হয়ে গেল। কেউ কেউ প্রেমিকের সমর্থনে। আর কেও নিছক মজা দেখতে। আর আমরা কি করলাম। নেট দুনিয়ায় দায়িত্ব নিয়ে ভাইরাল করলাম এই ধর্নার খবর। একটা সময়ে লিপিকা আর তার পরিবারের উপর মানসিক চাপ বাড়তে লাগল এইভাবে। সারা দেশ দেখছে। সম্মানের খাতিরে পরিবার রাজী হয়ে গেল। বিয়ে হল দুইজনের। সেই বিয়ের ভিডিও যথারীতি ভাইরাল হল। কিন্তু, আমরা কি দেখলাম সেই ভিডিও তে। পাত্রীর চোখেমুখে পরাজয়ের গ্লানি। অপমানের চিহ্ন তার মুখে। দীর্ঘ আটবছর প্রেম করেছে যে ছেলের সাথে তার হাতের সিঁদুর পড়তে গিয়েও যখন একজন নারীর মুখের অভিব্যক্তি এইরকম তখন কিছু প্রশ্ন থেকে যায় ব‌ইকি। যারা যারা এটাকে প্রেমের জয় হিসাবে দেখছেন প্রশ্নচিহ্নটা তাদের দিকে। আটবছরের প্রেমের পরেও একজন মেয়েকে যখন জোর করে বিয়ে করতে হল তখন প্রেম জিতল না হারল? প্রেমের কথা ছেড়ে দিন,সংসার সুখী হবে তো তাদের? বিয়ের যে পবিত্রতা সেটা আজ কোথাও কি আরো খানিকটা নেমে গেল না? 

আসলে আমাদের সমাজে প্রেম ফেল করে দেবদাস হয়ে যাওয়ার কিন্ত একটা আলাদা রোমান্টিসিজম আছে পাবলিকের মনে। এখন‌ও 'কবীর' এর মতন প্রেমে ধাক্কা খেয়ে নেশায় ডুবে যাওয়া চরিত্র কত কত প্রেমিক প্রেমিকার আইডল। কিন্তু, সত্যিকারের জীবন মানে এরকম হেরে যাওয়া নয়। সত্যিকারের প্রেম মানে স্বাধীনতা। জীবন আর প্রেম তখন‌ই সমার্থক হবে, যখন জয় আর স্বাধীনতাও সমার্থক। 

আগামীতে ছড়িয়ে পড়বে এই প্রবণতা। ইতিমধ্যেই বেশকিছু ঘটনা সামনে এসেছে। কারণ,আমরা দায়িত্ব নিয়ে বসে আছি এই সমস্ত ঘটনা ভাইরাল করতে। একটা প্রশ্ন তাই বারবার এসে যায়, হিন্দু বিবাহ রীতিতে কি তবে নবতম সংযোজন--- ধর্না বিবাহ?

সম্পাদকীয়: এক শিক্ষণীয় উপদেশ


এক শিক্ষণীয় রোমাঞ্চকর ঈশপের গল্প,,,,

(ঈশপের গল্পসমগ্র থেকে সংগৃহীত)



একটি লোকের একটি গাধা ছিল। গাধাটা সে বিক্রী করবার জন্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছে, ---সঙ্গে ছিল তার ছেলে। কিছুদূর যাবার পর দেখা গেল কতগুলো ছেলে পথে দাঁড়িয়ে জটলা করছে। এ দুজনকে এমনি করে গাধা নিয়ে যেতে দেখে তাদের একজন অমনি বলে উঠল, আরে, আরে দেখছিস-- ‌ওরা কি বোকা, অনায়াসে এদের কেউ না কেউ গাধায় চরে যেতে পারে, তা না করে দুইজন‌ই গাধার সঙ্গে হেঁটে যাচ্ছে।

চাষী ছেলেটির এই ব্যাঙ্গোক্তি শুনে লোকটি নিজের ছেলেকে গাধার পিঠে চড়িয়ে নিজে তাদের পিছন পিছন হেঁটে চললে।

কিছুদূর যাবার পর দেখা গেল কয়েকজন বৃদ্ধ পথের ধারে বসে কি নিয়ে বাদানুবাদ করছেন। তাঁদের একজন যখন দেখলেন চাষীর ছেলেটা দিব্যি আরামে গাধায় চড়ে যাচ্ছে আর তার বাপ যাচ্ছে পিছন পিছন হেঁটে, তখন অমনি বলে উঠলেন দেখ, দেখ আমি যা বলছিলাম, তা ঠিক কিনা: এ যুগের ছেলেরা তাদের বাপদের কোন সম্মান দেয় না, তাছাড়া তাদের উপর কোন মায়ামমতাও তাদের নেই, ন‌ইলে বাপকে হাঁটিয়ে ছেলে যায় গাধায় চড়ে? এ ছাড়া বৃদ্ধ চাষীর ছেলেটাকেও আচ্ছা করে বকলেন। --- লজ্জা করে না তোর বাপকে হাঁটিয়ে নিজে আরামে গাধায় চড়ে যেতে?

ছেলেটি এতে বিষম লজ্জা পেয়ে নিজে গাধা থেকে নেমে বাপকে তাতে চড়াল।

কিছুদূর যাবার পর তাদের সামনে পড়ল কয়েক জন স্ত্রীলোক,তারা তাদের এই অবস্থায় দেখে অমনি বলে উঠল, দেখেছিস,--মিন্সের কি আক্কেল, নিজে আরামে গাধার পিঠে বসে, আর ছেলেটাকে নিয়ে যাচ্ছে হাঁটিয়ে।

এবার চাষীর নিজের‌ই লজ্জা পাবার পালা। সে স্ত্রীলোকদের এই কথা শোনার পর ছেলেটাকেও গাধার পিঠে তুলে নিল।

বাপ বেটা দুজনেই এমনি গাধার পিঠে চড়ে কিছুদূর যাবার পর সামনে পড়ল তাদের আর একটি লোক। লোকটি ওদের এইভাবে যেতে দেখে চাষির দিকে বেশ একটু ক্রুর দৃষ্টিতে চেয়ে বললে, শোন, ভায়া শোন।
---কী?
----বলি ,এ গাধাটা কার?
----কেন? ‌এ তো আমার‌ই গাধা।
----দেখে ত তা মনে হচ্ছে না।
---কেন?
---তোমার গাধা হলে, এ অবলা জীবের উপর তোমার একটু মায়া-দয়া থাকত। এমন নিরীহ জীবের উপর তোমরা দুই জন চড়ে যাচ্ছ, এতে কষ্ট হয় না এর? যে কষ্ট তোমরা এতক্ষণ একে দিয়েছ তার জন্য তোমাদের উচিত এখন একেই কাঁধে করে নিয়ে যাওয়া।

লোকটার কথায় বাপবেটা দুইজনেই গাধা থেকে নেমে একটা দড়ি দিয়ে গাধার পা বেঁধে, পায়ের ভিতর বাঁশ চালিয়ে দিয়ে দুইজনে তাকে কাঁধে করে নিয়ে চললো।

বাজারের কাছে ছিল একটা খাল। তার উপর একটা পুল। বাপবেটা গাধা কাঁধে করে ঐ পুলের উপর উঠলেই বাজারের বহু লোক তাদের এই কান্ড দেখে এমন হাসি ঠাট্টা হট্টগোল শুরু করলো,যে তা শুনে গাধাটা ভয় পেয়ে পা ছুঁড়তে যাওয়ায় পায়ের দড়িটা গেল ছিঁড়ে, সঙ্গে সঙ্গে সে জলে পড়ে মারা গেল।

চাষী এতে কিছুক্ষণ হতবুদ্ধি হয়ে দাঁড়িয়ে র‌‌ইল। নিজেকে সামলে নেবার পর তার মুখ দিয়ে বেরুল, যে যা বলেছে তাই শুনে আমি তাকে সন্তুষ্ট করতে গেছি, কাউকে কিন্তু সন্তুষ্ট করতে পারলাম না, মাঝখান থেকে আমার গাধাটা গেল।


উপদেশ:

যে যা বলে তাই শুনে চলতে গেলে শেষে লোকের কি দশা হয় তাই এই গল্পে দেখানো হয়েছে।
সকলকে সন্তুষ্ট করতে গেলে কাউকেই সন্তুষ্ট করা যায় না।

তেমনি অনন্ত ও লিপিকার প্রণয় থেকে জিদের ধর্ণা আর তারপর পরিণয় ঘটে যাওয়াকে কেন্দ্র করে যত্রতত্র সোশাল মিডিয়ার দৌরাত্ম্য এ বিভিন্ন চেনা অচেনা লোকের মুখের অজস্র ভিড়,,, উঁকি মেরে কৌতূহল সূচক তির্যক কিংবা পরিপূরক মন্তব্যের ঘর্ষণে অন্তর্দহন বা বিদগ্ধ হবার কিছুই নেই,,,,তাহলে পরিণামে সকলের কথা কানে নিয়ে সকলকে সন্তুষ্ট করার চক্করে ঐ গাধাটার মতন হতবুদ্ধিকর অবস্থায় অকালে প্রাণ দেবে,,,, যদি অনন্তর সিদ্ধান্ত এ এই পরিণয় আগামী দিনে সুখকর হয়ে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে তাহলে হয়ত প্রেমে ব্যর্থ হেমলক বিষ কন্ঠে ধারণ করা নীলকন্ঠ প্রেমিক আর হুতাশনে না পুড়ে,,, আত্মহননে না এগিয়ে গিয়ে তার প্রেয়সীকে নিজের করে কাছে পাবার চেষ্টায়,,,,আর বেঁচে থাকার চেষ্টায় ব্রতী হবে,,, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।।।।


রবিবার, ১১ আগস্ট, ২০১৯

অজানা অচেনার কমেন্ট


অপরিচিত অন্দরমহল তীক্ষ্ণাগ্র মন্তব্য বিশ্লেষণের জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই,,, আমার ধূপগুড়ি পেজ এ প্রকাশিত অনন্ত ও লিপিকার বিভিন্ন সময়ে সংবাদ এর লিংক গুলোকে,,,,,

তবে নানা মুনির নানা মত,,,,যত মত তত পথ,,,,গাছে একজন খেজুর রসের পোয়াতি হাঁড়ির লোভ দেখিয়ে উপরে তোলে আবার একজন ম‌ই কেড়ে নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ভয় দেখিয়ে বলে এই নেমে আয় বলছি,,, না হলে তোর শনির সাড়ে সাতি,,,, সর্বনাশ হবে,,,, বেচারা আর কি করে তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে মগডালে পা ঝুলিয়ে বসে থাকে,,, ভালো করে জানে এখনি মটকে ডাল ভাঙবে আর তার আয়েশ করে দিবাস্বপ্নে যক্ষের ধন সামলানো একেবারে জন্মের মতন ঘুচে যাবে,,,, এখানে তাই অনন্ত কে টার্গেট করে যখন নিঃস্বার্থ জনহিতে ভীষ্মের শরশয্যার মতন অবলীলাক্রমে তীর ছোঁড়াছুড়ি হচ্ছে,,, তখন কি আর সেটা তাকে দগ্ধ করে যন্ত্রণা দিতে পারে,,,,
প্রেমের হাসিল পরিণয় বাণ আচ্ছা আচ্ছা বাণ কেও কামদেবের বাণে রূপান্তরকামী হিজাবে পরিণত করে দিতে পারে,,,,,

তাই কিছু কিছু মন্তব্য যখন পড়তে গিয়ে খুব খারাপ ভাবে আঘাত পেয়েছি,,, তখন সকলের প্রতি ভালোবাসা ও ঋণ স্বীকার করে সেগুলোকে রূপে গুণে ষোলকলায় সৌন্দর্যে হৃদকমলা প্রস্ফুটিত করতে চেয়েছি,,,, চন্দ্রমুখীর পুষ্করিণী তে,,,,,

কিছু খারাপ লাগলে দোষে গুণে ত্রুটিবিচ্যুতি মার্জনীয়,,,, সকলের শুধু আকর্ষণীয় মোহ ও ভালবাসা কাম্য,,,,,,

চন্দ্রমুখী,,,,
সুপ্রীতি বর্মন,,,,,


অজানা অচেনার কমেন্ট



ক্যাপশন,,,,

ভালোবাসার দীর্ঘজয়ী কালস্রোতে অনন্ত,,,,
ধর্ণায় বসে প্রিয়তমাকে হাসিল,,,, প্রেমিকের জিদের চৌম্বকীয় টান,,,,,

আমি ভালোবাসি তাই ভালো রাখার দায়িত্ব টা আমার ।এক জেদী প্রেমিকের স্বগতোক্তি কি অকপট দায়িত্বশীল তার বোধ,,, সত্যিই তার এই উপলব্ধি প্রতি প্রেমিকার কাছেই ঈশ্বর প্রেরিত আশীর্বাদ বলে মনে হবে,,,, Good congratulations,,,,



অজানা অচেনার কমেন্ট


ক্যাপশন,,,,

ব্যক্তিগত মালিকানা,,,,,

যাকে বলে চোখে হারায়,,,,,Possessiveness


সবাই শুধু মেয়েটাকেই দোষ দিচ্ছে। ভুলে যাবেন না এক হাতে কখনো তালি বাজে না। যদি মেয়েটা ছেলেটাকে ছেড়ে থাকে,,, ছেলেটার তাহলে নিশ্চয়ই কোন দোষ ছিল,,,, বা ওর সাথে মেয়েটার কোন ব্যাক্তিগত সমস্যা যেটা আমরা কিছুই জানি না,,,, আর সেই কারণে মেয়েটাও হয়ত মেনে নিতে পারতো না,,,,

যাই হোক জোর করে এইভাবে ধর্নায় বসে বিয়ে করা একদম উচিত হল না। কারণ কেউ যদি কাউকে সত্যিকারের ভালোবাসে তাকে তার মতন থাকতে দেওয়া উচিত। সত্যিকারের প্রেম হলে ঠিক থাকতে না পেরে তার কাছে ফিরে আসবে নিজে থেকে। জোর করা বা  pressure  দেওয়াকে আর যাই হোক ভালোবাসা বলে না  possessiveness বলে।।