বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

তুলসী দাস ভট্টাচার্যের কবিতা।



অকপট কথনের আঙ্গিকে সৈনিক কলম।

(আপনি তো অনিচ্ছুক ব্লগজিনে লেখা প্রকাশ করতে তবুও আপনার পাঠানো কবিতায় গন্ধ পেলাম মাটির তাই দিলাম।)



একটি যুদ্ধ বিরোধী কবিতা//



চারদিক হতে ধেয়ে আসে হিংসার ফলা

ফালাফালা রাতের আকাশ ।

যে চোখে এতদিন দেখেছি পৃথিবী

সে চোখেই আজ কুষ্ঠ  চাঁদের শিলালিপি।

বিষাক্ত ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে ব্যালকনির একফালি বুকের সবুজ প্রান্তর ।

রেকর্ডেড সংলাপে ধরা পড়ে না যুদ্ধের পূর্বাভাস ।

বিকেলের সব রঙ মুছে যাওয়ার আগেই

দীর্ঘ অন্ধকার নিয়ে নেমে আসে রাত্রি।

নৈশকালীন যুদ্ধের জন্য আমাদের

সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয় ।

একটি যুদ্ধ-বিরোধী কবিতা

ভোরের আকাশে লাল হয়ে ওঠে।

-----------------------------------------------


রাহুল গাঙ্গুলীর কবিতা।



প্রেমের রসায়ন আঙ্গিকে অভিনব রূপান্তরিত কলম।



সঙ্গমরত : ঘুড়ি & আকাশ (কফিহাউস থেকে)

------------------------------------------------------------------




আপাতত ১কাপ কফির রং ~ মেরুন

আগমনী কফিন : আপাত মেরুন > ৪র্থ সর্বনাম

?-চিহ্নগুলো উবে গেছে [কে।কবে।কোথায়।কখন]

শুধু সিঁড়িভাঙ্গা বিকেল ~ সান্ধ্য তেজস্ক্রিয়তা






পেয়ালা-য় চলকে ওঠা ঝড়।সুখীসুখ ঝড়

আলগা হাত ~ খসে পড়া তারাখসা দাবি

জানি : এই দেহ নশ্বরী [আজন্মকাল]

বাড়াবাড়ি রাত-জড়ুলের চাঁদ ~ বিশেষ যৌনখেলা






ক্রমশঃ কফিরঙের শূন্যস্থান।ছুঁলেই কাফের

মাখামাখি টপটপ্ ~ ওম মাখানো চেয়ার

মুখোমুখি হলেই বা।না হলেই ______

অবশিষ্ট গ্রহণ < পরজীবী চতুর্ভুজ >

ভাজক সংখ্যা দখলদারি মানছে না




শব্দরূপ : রাহুল



সৌমেন গুহ রায়ের কবিতা।



সহজ জীবনের চেনা জানা উপপাদ্য।


১. কবিতা:

জ্যৈষ্ঠের দুপুরে ছাদে গয়না বড়ি দিতে দিতে ঠাকুমা ছুঁয়ে যেতেন সব আলাপচারিতায়
সিঁদুর গলে গলে পড়তো
তার নথ ছুঁইয়ে চিবুকে
ক্রমশ হয়ে উঠতেন ঈশ্বরী
তাকে ঘিরে তখন মা কাকিমাদের সব নিভৃত দীর্ঘশ্বাস
আলতো করে ছুঁয়ে দিতেই ভেঙে পড়ত পাঁচিল

ঠাকুমা গল্প শোনাতেন বারদূয়ারীর চৌকাঠ ডিঙনোর
জল এসে ভিজিয়েছে গোড়ালি কতবার
কেঁপে উঠতো সবাই
কলকল করে কুয়োতলায় গা ধোয়ার হিড়িক

আঙুলে আঙুলে গয়নাবড়ি তখন সারা ছাদ জুড়ে




২. কবিতা:


সম্ভবত বাদুরেরা জানেনা
কটা ক্যামেরা তাক করা আছে
আকাশের দিকে উড়লেই
ফ্লাশ ঝলসে উঠবে
পথ হারিয়ে ফলের কাছে যাওয়া হবে না আর

পলেস্তরা খসা দেওয়ালে তখন কচি পাতা মেলছে বট

চতুর্দশীর সন্ধ্যায়
একটা ছেনাল মেঘ এসে চাঁদকে আড়াল করতেই
রোহিনীদির আঁচল খসে পড়ল
বালক ঠুকরে যাচ্ছে জোড়া বেল

চাদমারিতে তখন ব্যাধেদের বিতর্ক সভা




৩. কবিতা:


কত কত সর্বনাশ নিয়ে বসে আছি আজ ও
শিথিল শ্বাস অসাড় প্রত্যঙ্গ ক্ষয়ে পড়া
প্রাচীন ফটক গুহালিপির অচেনা সংকেতে
যে যার নিজস্বতায়
বেঁচে থাকে
হিমশৈল গলে যায় গার্হস্তের করুন উত্তাপে

ভেঙে পড়ে দেওয়াল পাঁজরের শেষ পর্দাটুকু
শূন্যতাকে ঘাড়ে করে তখন ও প্রেমিক
করে মাণ্ডবীর খোঁজ

এ বসন্তেও অনাথ পাতার মত হলুদ সর্বনাশে ভরে ওঠে আমার উঠোন
আমি তাই দেখি

সুব্রত মন্ডলের কবিতা।



সহজিয়া প্রেমের নাব্যতার রাজপাট ছন্নছাড়া

 প্রেমিকের বাউন্ডুলে ঘরদোর আঙ্গিকে কলম।



১. ঢেউ।
------

দেওয়ালের গা বেয়ে গান নামতে নামতে
পাঁজর চিরে বেরিয়ে আসে গাছ ,
চারপাশে কামাক্ত জল,অস্পষ্ট লবন উচ্ছ্বাসে
পাড়ের মতো নিস্তব্ধতা নিয়ে শীত আসে মৃত শামুকের মতো,
ফড়িংয়ের ডানা থেকে ঝরে পড়ে কবেকার বিকেলের ক্ষোভ ।

ঠিক যেভাবে প্রকৃতি বুকে ক্রমশ ডুবে যেতে থাকি
পারাপার, ঘুম , নিঃস্ব মাটির মতো মাঝরাতে নদী ভালোবেসে
অজানা শহরের বাঁকে,ক্লান্ত জনপথে...

শব সম্পর্ক ডিপ ফ্রিজে সাজানো থাকে ,
প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ফুরিয়ে এলে একদিন ভেসে উঠে তারা ;
নামহীন প্রতিবাদ হীন অন্ধকার পাথরের গায়
অজস্র কালো কালো ধূপ, ছায়াহীন সঙ্গীনিকে সদ্য পুড়িয়ে এসে ,অভিমানে ,তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ...

হে জন্মান্ধ প্রেমিক !
তবে কেন তোমাকেও হেরে যেতে দেখি ;
রঙবেরঙের ছন্দহীন সারি সারি সম্পর্কের ভিড়ে ?



২. সহযাত্রী।
_______

চলে যাওয়াটা আসলে বাহানা মাত্র ।স্টেশনে বসে থাকা যে সহপাঠী তার চুল খুলে প্রথমবার খোলা আকাশে একটা প্রজাপতি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল সে 'মুক্ত',সেই সহপাঠী এখনও পর্যন্ত চলে গিয়েও যেতে পারেনি। তারপর থেকে যাকে কোনদিনের জন্যও অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি স্টেশন চত্বরে ।
বাইপাস থেকে দশ পা দূরে কমলা-লাল বাড়িটার কার্নিশের গা ঘেঁষে সেদিন হলুদ শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে ভীষন রকম মেঘ করেছিল, মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বৃষ্টি নেমে এসেছিল সমগ্র উঠোন জুড়ে।

চারপাশে এত কোলাহল, নিয়মমাফিক ট্রাফিক জ্যাম কিংবা মৃত সিগন্যালের মতো তার প্রতিটি স্মৃতি জ্বলে ওঠে শিরায় শিরায়।ফুলে ওঠে রাত্রি এবং ঘাম।গ্রাম ছাড়িয়ে শহরে ঢুকে পড়ে অজস্র পায়ের ছাপ,ফেলে আসা দুপুরের ঘুম, ক্লান্তি জড়ানো কালো কালো ছায়া।

যাকে ইচ্ছে না হলেও মাড়িয়ে যেতে হয় ।বৃষ্টিস্নাত পাথরের বুক কিংবা শ্যাওলা জড়ানো প্রেমিকার শেষ হাসির মতো।যেভাবে প্রতিনিয়ত ভালো আছি বলে অপেক্ষায় থাকে শেষ ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকা প্রতিটি সহযাত্রী।


অপূর্ব অধিকারীর কবিতা।




ঝারাঝাপটা গূঢ় তাত্ত্বিক বিশ্লেষনী অঙ্গরাগ

সুধা প্রেমের স্পর্শ ও উন্মাদনার আঙ্গিকে কলম।


১. "সাক্ষ্য-প্রমাণ"।


বিশ্বাস করো- আমি তোমাকেই ভালোবাসি;
সাক্ষী তোমার বাড়ির দারোয়ানের বক্রদৃষ্টি।
তোমার ছোট ছোট পাড়াতো ভায়েরাও তা জানে;
চকলেটের বিনিময়ে কতবার তোমার খবর নিয়েছি।
বিশ্বাস করো- আমি তোমাকেই ভালোবাসি;
সাক্ষী আমার মায়ের বকুনি আর তোমার দিদির ভ্রুকুটি।
নির্ঘুম দীঘল রজনীরা কি অস্বীকার করবে...?
একাকী বসে তোমায় ভেবে কাটানো সব রাত!!
রাত জেগে লেখা অজস্র কবিতা সাক্ষী-
আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
সাক্ষী সেইসব বাতাসের সাথে আমার হিংসেমি'
যে বাতাস তোমার সুরভিত শরীর ছুঁয়ে যায়।
কিংবা সাক্ষী ঐ ফটকি নদীর প্রতি আমার রাগ...
স্নানের ছলে যে তোমার সাথে খেলা করার ফন্দি আঁটে।
ভরা পূর্ণিমার চাঁদ (যে আলো ছড়ানোর বাহানায়)-
তোমার অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণ করার স্পর্ধা দেখায়!
বিশ্বাস করো সেই চাঁদের সাথে আমার শত্রুতা সাক্ষী-
আমি তোমাকেই ভালোবাসি!
সাক্ষী আমার প্রতিদিনের মেঘলা আকাশ'
যেখানে অবহেলার মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে নামে।
হ্যাঁ, আমি তোমাকেই ভালোবাসি....!
ডাইরির পাতায় সংরক্ষিত অনুভূতিরা তার প্রমাণ;
তার প্রমাণ তোমার নেশায় আমার সব পাগলামি!
এবং তোমায় ঘিরে রচনা করা ব্যর্থ স্বপ্নের হাহাকার!
আর প্রমাণ প্রতিটি রাতের জ্বলন্ত নিকোটিন শলাকা;
তোমার দেওয়া কষ্টে যারা 'ডোন্ট কেয়ার' ভাব আনে।
বুকের পাঁজরে জমা পুঁজ আর সেখানে ওড়া মাছিরাও প্রমাণ;
হাসির আবরণে ঢাকা মর্মভেদী যন্ত্রণা কিংবা
তোমার দাদার তর্জনীও একই সাক্ষ্য দেবে-
আমি তোমায়...হ্যাঁ, কেবলই তোমায় ভালোবাসি।।


     
 ২. অনভিপ্রেত।
         

অযত্নে বেড়ে ওঠা এক নিষ্ফলা গাছ আমি'
গোড়ায় জল ঢালার সাহস কেউ দেখায় নি।
সবাই ভাবে আমি মানুষখেকো রাক্ষুসে গাছ'
ভুল করে বেখেয়ালি বৃষ্টিরা আমাকে বাঁচায়'
এই মৃত্তিকাও আমার ঘোরতর বিরোধী।
তাই আমি বহুরন্ধ্রী হলেও নেই রস টানার জো'
নইলে হয়তো আমিও হতাম সুমিষ্ট ফলের পিতা।
দেখ- আগাছাগুলো আমাকে জাপটে ধরেছে-
ভালোবেসে নয়, ওরা নিজেরা বাঁচবে বলে।
ঝড় উঠলেই সকল আগাছা আমার হয়ে যায়'
তারপর আবার লেপে দেয় কলঙ্কের প্রলেপ'
ভরা কলঙ্কে মনে হয় নিজেকে উপড়ে ফেলি!
কিন্তু আমার শিকড় আজ বহুদূর বিস্তৃত...
মায়ার জালে আর স্বার্থপর হওয়া হলো না।
কী আছে না হয় সবাই-ই অস্বীকার করুক
ওদের কাছে আমার নিত্যকার প্রয়োজন-টুকু।
না হয় ভাঙুক আমার ডাল, ছিঁড়ুক কিছু পাতা
কিংবা অস্ত্রাঘাতে হোক শরীর বর্ণহীন রক্তাভ!
তবু জানতে তো পেরেছি এ তেজস্বী রাহুকালে
"ঠিক ততক্ষণই প্রিয়জন, যতক্ষণ প্রয়োজন"।



সুপ্রীতি বর্মন।



কবিতা: গোলাপ প্রিয়তমা।
নাম: সুপ্রীতি বর্মন।

হে অপরূপ রজঃস্বলা কামাগ্নির রসস্রোতে
কি হেন রয়েছে অমৃতসুধাভোগ পদ্মবৃন্তে
মদনের তীক্ষ্ণ বাণের পরশে উন্মিল কোজাগরী শশীর অর্ধউন্মুক্ত খাঁজকাটা বৃন্ত উন্মুখ ক্ষীরোদ সাগরে
চোঁ চোঁ ক্ষুধার অনশনে হাতড়ায় বন্ধ্যা দু বিঘা জমিন।
প্রাক্তন চারদেওয়ালের হা করা ঋণ পলেস্তারার প্রেম ঝুরো ঝুরো খোলস উন্মোচনে নিরাভরন তিলোত্তমার আবরন পেটিকোট ষষ্ঠীর বোধন
পায়ের তলায় হুমড়ি খেয়ে পরম নৈষ্ঠিক প্রেমের মহলা।
কটিদেশ জড়িয়ে আশ্লেষে স্নিগ্ধ খরস্রোতার দূর্বার শঙ্খনাদে আরোহন আরাবল্লীর বল্কল উঁচু চূড়া।
নাভিতটে ঘুসঘুস প্রেমের যোগনিদ্রা
রিখটার স্কেলে উষ্ণিক তাকত ভূকম্পনের শৈলরেখায় ঊমার জাগ্রত আঁখি
চুম্বনে ভ্রূপল্লব সংযমী পুরুষকথা অন্ধ সুড়ঙ্গে অকপট প্রবেশ সাহসী স্পর্ধায় কামাক্ষ্যা যোনি প্রসিদ্ধি বীতশ্রদ্ধ
অশোকের কলিঙ্গ জয়।
মৌসিনরামে পিচ্ছিল বর্ষনে অবগাহনে নগ্ন ধরাশায়ী সৈকত ইচ্ছামৃত্যুর বিষে সলিল সমাধি স্রোতের কৈশোর প্রেমিক দন্ডে।
প্রস্ফুটিত লাজে রাঙা টুকটুক গোলাপ
তোমার আঙ্গিক বিশ্লেষনে ছাড়ানো পত্রে পত্রে গুমোড় সৌন্দর্যের কামড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অঙ্গ পাপড়ির শিকড় ছড়িয়ে মাটিতে গ্রন্থিমূল।
নিরাবরন নগ্ন তনুর কায়াপলট মৃদু উষ্ণ অঙ্গুলীর ছোঁয়াচে লজ্জাবতী পাতার নাচন বজ্রদন্ডে সিংহী কেশরে অস্থির উন্মাদনার অক্ষি প্লাবন।
ডুবে অপমৃত্যু শূন্য গহ্বরে বাসা চাতক সুন্দরী।
উত্থিত খুঁটির গোঁজে দুগ্ধবৎসল গাভীর কন্টকময় আবেশে দুর্বার চাদর
দূর্বলতায় শীৎকার কুয়াশার স্নান।
পুরুষালী সমুদ্রে হাড়ভাঙা গর্জন ফেনিল বীর্যে মহাপ্রলয় নোঙ্গরে ছাপোষা বৈতরিনীর সংসারে হেঁচকা টান ফোঁটায় ফোঁটায় প্রনয়ীর নষ্ট নীড়ের হুংকার প্রত্যাবর্তন আড়িমারি দীর্ঘশ্বাস কার্ণিশে ঘরকুণো চাতাল।
কেশরে অঙ্গুলীর নাড়াচাড়া চুম্বকীয় ঘর্ষণে অতলে উত্থিত যৌবন রাখঢাক
পরাভূত উদ্বায়ী পরাগরেণু।
পেন্ডুলামের দোদুল্যমান দন্ডে হস্তে পরিমেয় সময় মৈথুনস্রোতে ইচ্ছার গলনাঙ্ক বরফে জমাট তঞ্চন
মানসচক্ষে গোলাপ সুন্দরী অন্ধ হ্রদে ডুবে ডুবে মরি আমি অপোগন্ড অর্বাচীন কান্ডারী খুচরো আধুলীর স্তনকৌটোর সঞ্চয়ের শোকে।
বৃন্তের কন্টকের ঘামে হাঁকডাক প্রনয়ীর অর্ধোস্ফুট প্রসব কুসুম ভ্রূনজাত পৌরুষের অঙ্গীকারে।
গোলাপ সুন্দরী আহ্লাদে গটমট ফুটে উঠো অলৌকিক জীয়ন কাঠি দুগ্ধবৎসল বজ্রদন্ডে।


বুধবার, ২০ জুন, ২০১৮

শ্যামলতরুর কবিতা।



অরণ্যানী ধামসা মাদল আদিবাসী প্রেম অসুর

 রাগিনীর জাফরানী রঙের আসন্ন সঙ্গম।



১. নিছক প্রেম গান।


স্তনবৃন্তে ছিল শিরকাবাদ পাহাড়ের

শালের আঘ্রাণ ।

উন্মাদ সে রাতে ছিল মাদলের বোল

ঝুমুরের মেঠো আস্বাদ !

মিলিত হবার গানে জেগে উঠেছিল অরণ্য জলসা ।

তখন তোমার চোখের কোনায় প্রথম দেখি

হীরের দ্যুতি !

ঠোঁটে ছিল শিশুদের ছড়াগান !



 আজ ভেসে  গেছি সময়ের চোরাটানে

বলিরেখা বলে দেয় সময় হয়েছে ঢের ।

ব্যালকনি জুড়ে খেলা করে আগামীর শালতরু

ক্ষয়িষ্ণু হাঁটু  জবাব দেয়  আজ অরণ্যকেও !

প্রশ্ন তো ছিল একটাই এখনও , এখনও কি

শাল অরণ্যে প্রবল বর্ষায় তোমার চোখের কোনায় , জেগে ওঠে হীরের দ্যুতি ?

যদি আবার দেখা হয় হঠাৎ উত্তরটা

বলো কানে কানে তোমার আরণ্যকে।





২. অপেক্ষমাণ সঙ্গম।


যে অতলান্ত গভীরে

তোমার এস্রজের সুর বাজে

বোমারু বিমানের শব্দ সেখানে অবান্তর ।


পোড়া বারুদের গন্ধে শরীর ভেসে যায়

আমার

তখন কালাশনিকভ অসুর রাগিণী তোলে ।

তবু আজ দুটি বসন্ত পরে যে জাফরান রঙের আলো খেলা করে তোমার বাথটবে,ঝরনাতলায়

সে কী খবর এনেছে আমাদের

আসন্ন সঙ্গমের ?

দেখ পলাশ খবর দিল

ফিরে আসছি আজ ।

তোমার কৃষ্ণগহ্বরে  প্রেমের

আদিরূপে স্নাত হব বলে !

প্রিয়তমার উষ্ণপ্রস্রবণ কী মুছে দিতে পারবে

বারুদের পোড়া ক্লান্ত গন্ধ ?


মঙ্গলবার, ১৯ জুন, ২০১৮

শাহানূর রহমানের কবিতা।



নারী আঙ্গিকে অজন্তার শিল্প সৌকর্য্যে

 প্রস্ফুটিত কমলা,,,,,,,,আঙ্গিকে কলম।



আমি সেই মিথ মানবী
শাহানূর রহমান

আমি সেই মিথ মানবী
জন্ম দেবতায়,জন্ম মানবে,জন্ম অসূরে
পৌরাণিক ইতিহাসের নষ্ট পাতায় পাতায়
মমতা ত্যাগী সাহসী যোদ্ধা আগ্রাসী বলিয়ান
মর্তলোকের দেবতার ধ্যান ভঙ্গকারিনী
আমি ক্রমান্বয়ে গ্রাস করি বলবান পুরুষের অহংকার
আমি সেই মিথ মানবী
আমি বজ্র,আমি বৃষ্টি,আমি করি কত শত সৃষ্টি
আমি জয়,আমি ক্ষয়,আমি অভিশাপ মানবের
আমাতে জন্ম দেবতার,মানব আর অসূরের...
আমি ধারন করি জীবের জীবন
আমি সেই মিথ মানবী
নিভৃতে নির্গত করেছি কষ্টের অগ্নি লাভা
যুগে যুগে ভূগোলের ন্যায় হয়েছি খন্ডিত
অভিশপ্ত এটলাসের চেয়ে কঠিন ভার বহন কারিনী
আমি সেই মিথ মানবী
প্রাচীন সভ্যতার রূপরেখা আর নগরীর পর নগরী
হয়েছে রক্তাক্ত, জ্বলেছে লেলিহান আগুনে
ট্রয় নগরীর জলন্ত শীখাও ছিল ম্রিয়মাণ
এই মিথ মানবীর উত্ত্বাপ ভরা যৌবনে...
অভিশপ্ত হয়ে যুগে যুগে পাইনি আজও মুক্তি
আমি সেই মিথ মানবী
নগ্ন দেহ শিল্প হয়েছে পাথরের কারুকার্য
বিমূর্ত মানবী হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছি অজন্তায়
মনন,দহন, সহন,সঁপে সব চরনে
দেবীর আসনে বসিয়ে নিয়েছো বস্র হরণে
আমি বিবাধ আমি আবাদ আমার জন্ম বিস্তর
কূহেলিকার আবরণে ঢাকা সংস্কার
আমি সেই মিথ মানবী
শতাব্দী পর শতাব্দী আমি বিস্ময়কারীনি
হয়েছি কুমারী মাতা শত প্রশ্নের ইন্দ্রজালে
দিয়েছি জন্ম আমি সেই দেবতার...
অন্তপুরের অন্তঃসার রক্তকরবী হয়েছি
আমি সেই মিথ মানবী
অতঃপর সতীদাহের সঙ্গে সতীসঙ্গী হয়ে
নরক বাসীর স্বর্গীয় সঙ্গীনি হতে হয়, এই আমি
খাঁজকাটা অঙ্গ শোভিত আমি গজগামিনী
বীরের বির্য তির্য নষ্ট কারীনি
আমি সেই মিথ মানবী।


সৌরভ ঘোষের কবিতা।



গনতন্ত্রের হাহাকার নৈরাশ্যের ছেঁড়া কাঁথায়

 ঘাপটি মেরে সংসার সুখ বিভ্রম।



১. কবিতা- গনতন্ত্রের পূজারী।


সেদিন, মাঝরাতে কৃশাঙ্গী হাওয়ার খোঁজে

নদীর পাড়ে বসে পরি মখমলি সোহিনী ঘাসে।

হাঁসুলি চাঁদ আহ্লাদে হাসে,

কালো প্যাঁচা উড়ে যায় কু ডেকে.....

ছায়া ঢেউ গুনতে গুনতে দেখি -

একদল কৃষ্ণাভ পরী,সাঁতড়ে আসছে-

পায়ের কাছে থামে,গায়ে সোঁদা মাটির গন্ধ,

ধরা গলায় বলতে থাকে-

"আমি তাপসী,আমি নির্ভয়া,লিপিকা,আরুষি,

আমি বৃদ্ধা,আমি মেধাবী ছাত্রী,আমি আসিফা আমরা ক্ষতবিক্ষত নির্জিত ধর্ষিতা"।

সুদীর্ঘ লাইন- বিদেহী'দের কানফাটা শ্লোগান--

আমরা বাঁচতে চাই,আমাদের বাঁচতে দাও.......


হায়! চির লাঞ্ছিতা,নির্যাতিতা নারী.....

আমি, বীর গনতন্ত্রের নিষ্ঠাবান পূজারী

শ্লীল মোমবাতি মিছিলে ভিড়তে পারি।

মোরগের ডাকে তন্দ্রা ভাঙে-

চোখের প্রশ্নোত্তর পর্দা সরিয়ে দেখি-

আকাশে হাজার হাজার আদ্যাশক্তি

পেঁজা মেঘে ভাসছে আর মিলিয়ে যাচ্ছে।




২. কবিতা-- সংসার পথ।


মহাভারত---সংসার কুরুক্ষেত্র


আঠারো >শৈশবের আদর

একুশ>বিএসসি অনার্স<বেকার<প্রেম

আঠাশ<বিয়ে>প্রাইভেট টিউটর


ব্যাকরণ বহির্ভূত অশান্তি

সমাধান = ম্যালথামাস<ক্যালকুলাস =ফেল


মেনিনজেস আবৃত মস্তিষ্কের অবসাদ

মানিব্যাগে ডিসপ্রিন,অ্যালপালজোলাম

অবৈধ ঘুমে মুক্ত, চুনি,ক্যাটস আই,

স্বর্ণপদক প্রাপ্ত জ্যোতিষীরা -স্নায়ুপথে,

বলে- কত রতি চাই!!


স্বরূপ সিংহ রায়ের কবিতা।




নৈঃশব্দ্যের কলতান আঙ্গিকে ঘুঘুর ঘরছাড়া

 অন্ধ পতন,,,,,, আঙ্গিকে কলম।


নৈঃশব্দ্য - স্বরূপ সিংহ রায়

একটা নৈঃশব্দ্য থাকুক আজ
একটা নৈঃশব্দ্য ---॥
শিশিরের শব্দপতন নিস্তব্ধতা
কিংবা শুক্তির বুকে মুক্তো
লালনের মতো ভালোবাসা
মাখামাখি একটা নৈঃশব্দ্য থাকুক ---॥
হাতে হাত রেখে দূরের নীলিমা
দেখি যে ক্লান্ত চোখ জোড়ায় --,
সেখানে এক আকাশ ভালোবাসার নৈঃশব্দ্য থাকুক ---॥

লালসার লালা লালায়িত আজ
লিপস্টিক-লালিমা লেহনের জন্যে---
সম্মোহক সাপের ধীর নিশ্চিত আগ্রাসন
ভেকধারী ভালোবাসার ----
নিশ্চিত দহন জেনেও পতঙ্গের ধাবমানতা ----॥

কঠোর কঠিন সময় এ এক
কবিরা পরাস্ত প্রতিদিন ---,
প্রমত্ত উল্লাসের চক্রব্যূহে
অভিমন্যুর মৃত্যু বারংবার ---॥

তাই অনাবিল শান্তির সেই হাতদুটি
সেই শান্ত দিঘির টলটলে চোখদুটি
ক্রমশ দূরে সরে যায় -- টেনে নেয়
চক্রব্যূহের চাতুরতা ---
জয় হয় নারী-মাংস লোভীর
আর বাজতে থাকে উল্লাসের ঢক্কানিনাদ ---॥

কবিরা বধির হতে থাকে

"পাখি-নীড়" চোখ দুটির প্রতি ব্যাধের অলংঘ্য লক্ষ্য,
কবির আকুতি মাথা কোটে বধ্যভুমির বন্ধ দ্বারে
"তফাৎ যাও! তফাৎ যাও!" কবির আর্ত চিৎকার
অনুরণিত হয় --- ফিরে ফিরে আসে কবির নিজের কানেই
কবি বধির থেকে বধিরতর হতে থাকে ---॥
ভালোবাসার প্রাণভোমরা বন্ধ হয়, বন্দী হয়
কোনো মায়া-সিন্দুকে
দহন - মন্থনের চিরন্তন নাগপাশে ---॥

কবির জীবনে এখন বড় অসময়
একটা নৈঃশব্দ্য দাও,
মা নিষাদ -- একটা অন্ধ-বধির নৈঃশব্দ্য দাও ---॥

মানস সবুজ নিয়োগীর কবিতা।



প্রানভ্রোমরায় অধিকন্তু অবান্তর বোলচাল

 গুজগুজ অনতিক্রম্য প্রেমের বালিয়াড়ি।


১. #কলসপত্রী।

সকলি বিলুপ্ত হবে ৷
মস্তিষ্কে মেদের মতো মোহ জমে এলে
চাঁদও আকর্ষিত হয় ; আমার জানালায় ৷

যতই লুকিয়ে রাখি খেজুরের দেহের মতো
মিষ্টতার প্রলেপে কঠিন প্রাণবীজ,
ততই অনাবৃত বুকে জমে ওঠে অবান্তর কিছু ঘাস !

মাটি খুঁড়ে খুঁড়ে জীবনের সবটুকু সায়াহ্ন অতিক্রান্ত হলে
জলপ্রাপ্তির দিনে হাত কাটা পড়ে যায় ৷

বিলুপ্ত সকলই হয়, জেনেও
সময়ের জংধরা হাড়গোড় নিয়ে হেঁটে চলে
দাসত্বপ্রাপ্তির পর মৃত কিছু মানুষের দল—

পৃথিবী মৃতদের দেশ ৷
তার মধ্যে প্রাণ খুঁজে ফিরে আমার আজন্ম কেটে গেলে দেখি
নিজেই জীবিত ছিলাম না কোনো কালে !

বলো কলসপত্রী—
লুকানো মধুর লোভে এ দন্ডিত নিষ্পেষণের কাল কবে শেষ হবে?


২. #সীমানায়।



একশতাব্দী পথচলা বাকি আছে জেনে
রাস্তার পাশে রেখে যাও অঙ্কুরিত বীজ !
এভাবেই সামলে চলো বিধ্বস্ত ফাটলময় কানাঘুঁজিগলি ৷

সীমানার কাছে গিয়ে দাঁড়াও !
যেখানের পর আর কোনো অতিক্রাম্যতা নেই,
নেই কোনো ভয়াতুর শেষ !

তোমার জানালার কাঁচ বাষ্পাকূল হলে
মাঝরাতে কবিতা লিখতে বসি, কম্পমান !
ভিজে যায় কলমের অনাহারী শরীর ৷
আঙুল দিয়ে চোখে নদী এঁকে নিলে
আমার ডায়রীতে জোয়ার আছড়ে পড়ে ৷

শোনো
কখনো চোখের কাছে মেঘ নেমে এলে
পাঠিয়ে দিও এই মরুভূমির বাড়ি ৷




দুলাল বর্মনের কবিতা।



উড়ো মন চাতক পিপাসা মাধুর্য্যে তোমার

 প্রেয়সীর অখিল স্পন্দন,,,,,, আঙ্গিকে কলম।


১. তট।
         

গন্ডদেশ থেকে নেমে পরি নাভীদেশ

চুবিয়ে নেয়া মনটা মন্তব্য করে

খাতটা আরও বাড়ে, চলে যাই অনেকে অনেক গভীরে

পঁচা ভাতে জিভ ঢুকিয়ে দেয় ভাইরাস

আর কোৎ দূর,নড়ে ওঠে জীবাত্মা

অদ্ভুত একটা ব্যাপার আধুনিক খোলসের

বাইরের ভিতরের সত্ত্বা আলাদা আলাদা

জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে সম্পর্কটা।


২. হৃৎপিণ্ড।
       

রক্ত করবী বোঁটায় ঝুলছে

পিচ রাক্ষস রাস্তার হঠাৎ বাঁক

মুড়িয়ে নিচ্ছে কেবল বিশ্বস্ত অনুভূতি

দূরে সরে যেতে থাকে চেনা মুখ

বাড়ানো বাহুটা কেঁন্নোর স্বভাবে গুটিয়ে পড়ে

ঝাপসা হতে থাকে বুড়ো হৃৎপিণ্ড

কালকূট একচ্ছত্র শামুকের পদচিহ্ন

কোঁকাতে থাকে মৃত স্মৃতির ঘোষণা

সার্জারি হতে চায় বুড়ো হৃৎপিণ্ডটা।


৩. আড়ালে আবডালে।
                   

হাতে আসে জলঘর

ফড়িংয়ের মাথায় মাথায় বন

সুর ওঠে ব্যবহৃত রাতের ডানায়

কার্পেটে শুয়ে পড়ে রাত

বাদুড়ের গলায় অন্ধকারের ওড়না

কালো বিড়ালের চোখ তাকিয়ে থাকে

সূর্য্য নিরবধি নিঃশব্দ তলানিতে

আলোর নীতিমালা প্রণয়ের প্রান্তরে

নব প্রজননের আশাহুত নিরাশার ঢেউ

আড়ালে থাকে প্রগতি, আবডালে দুর্মতি।

টিপু রহমানের কবিতা।



প্রিয়তমা কোল বালিশ,,,, স্বপ্নে প্রেয়সীর

 অঙ্গীকার আবদ্ধ আমার সমর্পন ইচ্ছাপূর্তি।



১. প্রিয়তমা কোল বালিশ।


নরম তুলতুলে শিমূল তুলোর প্রিয়তমা কোল বালিশ আমার
কতো রাত-বিরাতের শয্যাসঙ্গিনী!
কতো দিবা নিদ্রারও বিনম্র বিশ্বস্ত প্রেয়সী
প্রিয় নারীর চেয়েও অধিক সময় পাশে থেকেছো তুমি!
প্রিয় নারীর সামান্য স্পর্শ যখন ঘুম কেড়ে নেয় বড্ড অসময়ে
তুমিই ফিরিয়ে এনে দাও সে ঘুম নিদারুণ আস্থার অর্জনে
বুকের-দেহের সাথে লেপ্টে পিষ্ঠে জড়িয়ে থাকো
কি বিশুদ্ধ মমতায় অমোঘ জমাট বিশ্বাসে...
যা প্রিয় কোন নারী পারেনি কোনদিন দিতে
এতো দীর্ঘ সময় এমন করে পাশে থাকতে,ধরে রাখতে!

আমি আমার ঘুমকে ভীষন ভয় পাই,কেননা ঘুমন্ত আমি
আর মৃত আমি এক! আমার ঘুম ও অপ্রতিরোধ্য অঘটনের
মৌলিক সিদ্ধ সাক্ষীও হবে তুমি জানি!
চলতি বাসে-ট্রেনে-বিমানে কখনো ঘুমোতে পারি না তাই
সেখানে আমার ঘুমের প্রহরী কোল বালিশ যে নাই!
ঘুমকে মৃতের সমতূল্য ভেবে কখনই ঘুমোতে পারিনা ওভাবে!

আমার প্রিয় কোল বালিশ আমার আজন্ম প্রেমিকা!
আমার তপ্ত যৌবন কেটে যায় তার পরশ শীতলতায়...




২. তোমাকে ভালোবেসে।

তোমাকে ভালবেসে ভীষণ দুঃসাহসে
আকাশ থেকে পেড়ে এনে
রূপালি চাঁদকে দেবো পড়িয়ে
তোমার সু-উন্নত পেলব কপালে...

মুঠো মুঠো তারাদের বাক্সবন্দি
করে রাখবো সুবোধ জোনাকি!
তোমাকে ভালবেসে অসম্ভবের
দরোজায় এভাবে দাঁড়াবো বারবার!

তোমার ভালোবাসা পেয়ে অযত্নে লেখা অকবিতাগুলো
চির অমর কবিতার রূপ পরিগ্রহ করে
বিশ্ব সাহিত্যে শ্রেষ্ঠ আসন দখল করে নিবে দেখো
একদিন মানুষের মুখে মুখে ফিরবে এ কথা
কে বেশি সুন্দর তুমি না তোমাকে নিয়ে লেখা যতো কবিতা...

তোমাকে ভালবেসে নিঃশ্বাস হবো তোমার, বিপুল বিশ্বাস নিয়ে প্রতি সেকেণ্ডে ঘুরে আসবো তোমার দেহাভ্যন্তরে...

তোমাকে ভালোবেসে আল্পস-আলাস্কার
হাজার বছরের জমাট বরফগুলোকে
সুস্বাদু চকোলেট,ভ্যানিলা আর স্ট্রবেরি আইসক্রীম আকারে
পরিবেশন করবো তোমার মুখের সামনে...

তোমাকে ভালবেসে মেঘ হবো
অত্যাচারী রোদে ছায়া হবো
আকাশ ভেঙ্গে রূপালি বৃষ্টি হবো
তোমার চোখের জলের কান্না হবো...

তোমাকে ভালবেসে কবিতার ঈশ্বর হবো
প্রতিদিন তোমাকে ভাঙবো আবার বানাবো
ভাস্কর রাশার কারু হাতে গড়বো তোমার অবয়ব
পিকাসোর ইজেল ক্যানভাস নিয়ে বসবো
প্রতিদিন নতুন করে তোমাকে আঁকবো...

তোমাকে ভালবেসে ক্রিকেটের সব শাখায়
দ্রুততম সেঞ্চুরীগুলো আমার করে নিবো দ্যাখো
ম্যারাডোনা মেসির চেয়েও অনেক
ভাল ফুটবল খেলে ফেলবো আগামী যে কোন দিন!

তোমাকে ভালোবসে দিগ্বিজয়ী আলেকজান্ডার হবো
সুলতান সুলেমান হবো দেখে নিয়ো আমাদের সাম্রাজ্যে ভালোবাসার সূর্যাস্ত যাবে না কোনদিন...

তোমাকে ভালবেসে কাব্যের ঈশ্বর হবো
তুমি শুধু পাশে থেকো আর ভালোবেসো...


সৌমেন সাহার কবিতা।



প্রেয়সী সুড়ঙ্গের ইচ্ছেবিষে দেওয়াল লিখনে

 অভিমানী আলপনা তোমার বুকের খাঁজে।


১. ইচ্ছেবিষ।


আমার বাড়ির উঠোন বৃষ্টিতে ভেজার ভয়ে সানসেট চায়
নারকেলের পাতায় পাতায় জমে ওঠে অভিমান


আমার পায়ে নূপুরের মতো শিকড় জড়ানো থাকে ... শিকড়ে শিকড়ে আটকে থাকি আমি ফুলগাছেরা চার দেয়ালের পাঁচালী পড়ে শোনায়

আমার বাড়িতে বিকেল এসে

চাঁদনি আলোর লোভ দেখিয়ে যায়...

জোৎস্না নাকি উপত্যকা বেয়ে শরীরে শরীরে  নামে !

আমিও নামি

আমিও নামি ততটা

যতটা নামলে ওঠার রাস্তা থাকে

যেখান থেকে আবার কোনো নদী হওয়া যায়


ফুলের মাটিতে  ইচ্ছেবিষ জেগে থাকে

পোড়া মাটির গায়ে লেখা থাকে শ্রাবনের গান




২. দেওয়াল লিখন।


বুকের মাঝে উল্কাপাতের মতো

টুপটাপ বৃষ্টি এলেই

অদূরের উষ্ণতা এসে আস্ত গিলে খায়

খাঁজে খাঁজে জমে থাকা

অনন্ত নির্বাক অক্ষর সংলাপ


আগুনে আগুন জ্বলে ছাই


দহনে দহনে খাঁটি হয়

তোমার ভিতর নিজেকে হারিয়ে

অবিরাম তোমাকে চেনা

দহনে দহনে দামী হয় বিষ


ততক্ষণে

খামখেয়ালী তোমার বুকে

অন্ধকারের আলপনা আঁকা শেষ


ততক্ষণে দাঁত দিয়ে যাপনের দাগ কাটা শুরু

সুড়ঙ্গের দেওয়াল জুড়ে দেওয়াল লিখন...




সোনালী মন্ডল আইচের কবিতা।



ছন্দপতন ধ্রুপদী রাগে প্রনয়ের আস্ফালন।

১. ধ্বংসের পর ফের।

চাঁদের পিঠে যখন ঘন জ্যোৎস্না
 আস্তাবলের ঘোড়াগুলো জ্যান্ত হয়ে
মুক্ত ভালোবাসার বোঝাপড়ায় নামে

আশ্চর্য প্রবল ধারণ ক্ষমতার
পরিমিত আঘাতে যত্ন ঝরায়

শুধু সামান্য কিছু শব্দ
 সেসব ছেনি হাতুড়ির কথকতা

মূর্তির পেলবতায় আঙুল ডুবিয়ে
 সামান্য ত্রুটিগুলো নিটোল ও মসৃন

বোধহয় সেজন্যই স্বতঃস্ফূর্ততার
চিবুক ছুঁয়ে উন্মুক্ত এই সম্ভাষণ

 আদি গুহামুখে কী নিগূঢ়
পাঁজর ছোঁয়া অনিবার্য শিল্প প্রণয়  ...



২. তিলক তর্জনীতে যখন  মেজরাব।

গণতন্ত্রের ছাড়পত্র আর ডারউইনের মতবাদ
কপটতার বেহিসেবি ওজন

কেউ কুনকে দিয়ে
কেউ এক-দুই-হাজার ক্রোড়ে মাপছে

ভৌগোলিক মধ্যাকর্ষণে আমরা অটল
অক্ষাংশে কাঁটাতারের দাবি আমার তোমার

মাটির দাওয়ায় আলপনা আঁকে যে বউটি
তার সিঁথিপথ ধরে বেশরম রসিক  কল্পনায় মেতে

চিত্রকর ডেকে ঘোড়া সাজিয়ে ফেলে
আঁকিয়ে ফেলে তলদেশের সিঁথির রেখা

ঋতুমতীর বস্ত্রহরণ নাটকটি
কোজাগরী রাতে চাঁদ জাগলে ...



৩. একটা ত্রিভুজ।

কবিতা ও অকবিতার মাঝের দেয়ালে
অসুখ বাসা বাঁধলে প্রাণহীন জড়তায়
ক্রমে না বলা কথার ঘুণ

নখ ও ঠোঁটের হিমোগ্লোবিন সেড পাল্টায়

দমসম বল্গাহীন দুঃখ পাঁজর নাড়ায়
চিবুক জুড়ে উলঙ্গ স্নানপর্বের সে স্ফটিক ঝর্ণায়
পরিকল্পিতভাবে সুতোর তোয়াক্কা করেনা

তবু একটা রুমাল এসময় দরকার

আবহাওয়ায় পূর্বাভাস না থাকলেও জলোচ্ছাসে
চিকুর মুকুর সিঁদুর সীমন্ত-সীমা বরাবর
শব্দরা এলোমেলো অনাদর ধ্রুপদী

সে রাগ-এ বর্ণান্ধ হয় ভালোবাসা ...

সোমবার, ১৮ জুন, ২০১৮

অনিমেষ দন্ডপাটের কবিতা।



চেনা বাস্তব প্রেক্ষাপটে অচেনা বিবেকের

 আঙ্গিকে কলম।


১. পাশের বাড়ির ছেলেটাই হোক ক্ষুদিরাম।


খেয়েপরে তুই বেঁচে থাক বাবা যাসনে ঘরের বার।
চারিদিকে দেখ হানাহানি ভরা আদিম হিংস্রতার।
সাম্প্রদায়িক গরল ভরা ভ্রষ্টাচারের ঝড়,
তারি মাঝে তুই যাসনে যেন নিজের জীবন গড়।
পড়ালেখা করে ডিগ্রী অনেক নিয়ে আয় তুই ঘরে,
রাজনীতি থেকে ছোট ঝামেলার শত ক্রোশ থাক দুরে।
কি বা এসে যায় কে মরে কে বাঁচে,
হিংসা ছড়ানো আনাচে কানাচে,
অনেকে রয়েছে দেশোদ্ধারের তরে।
তুই মোর বাপ বসে থাক তুই ঘরে।
শুনেছি সে পথ সুকঠিন খুব, প্রতি পদে পদে ফাঁদ,
তুই তো আমার বাছাধন ওরে আমার আকাশে চাঁদ।


কিন্তু যে মা ওরা বলে গেল দেশকে বাঁচাতে হলে,
জীবন খানাও অতি তুচ্ছ আমরা দেশের ছেলে।
শত্রু আজিকে ঘিরেছে মোদের লুকোবার নাই পথ,
আমরা যদি না বাহির হইবো কে টানিবে সেথা রথ।
নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থের তরে দেশটারে দেবো বলি,
তার চেয়ে মাগো ভালো নয় কি নিজের স্বপ্ন দলি।


নেতাজী হয়ে ঘর ছাড়বে দু:সাহসী কোন ছেলে?
ভগত সিংহের পরবে ফাঁসি কে সে অবহেলে?
বিনয় বাদল দীনেশ হয়ে জীবন দেবে দান,
পাঁচজন কোন বাঘা যতিনের দল লড়াইয়ে হারাবে প্রান?
আমরা শুধুই বিপ্লবী নিয়ে রচনা লেখার দলে।
যাবো মুক্ত স্বদেশে গড়গড় করে জাতীয়সঙ্গীত বলে।
দেশের মুক্তি প্রাণের মুল্যে কিনুক নাহয় তারা ,
ওদের ছেলেটা ক্ষুদিরাম হোক, তোর চাই ঘরে ফেরা।।




২.বাঙালিয়ানা।

কবিতায় খুঁজি জীবনের মানে কবিতায় প্রাণ পাই,
মনের গভীর অতল সাগরে ডুবে ভাষা হাতড়াই।
প্রকৃতি দিয়েছে কতো রূপ রঙ সূর্য দিয়েছে আলো,
তবু যেন আজ মানব জীবনে কিছু নেই শুধু কালো।
রাজনন্দিনী রূপ যতো আজ বাজারে বিকোয় হেলায়,
গ্রন্থাগারের গারদ খানায় কিতাবেরা শেষ বেলায়।
ভাষার যতেক মিষ্টতা আজ পরবাসে গেছে চুরি,
মিশ্রিত হয়ে কে কোথায় কবে কখনো যায় বা ঝরি।
আমি কে ছিলাম কি বা পরিচয় সে সব গিয়েছি ভুলে,
নজরুল কবি রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন নাকি মূলে,
বিদেশি দরদে নকল খেয়ালে সহজে করেছি কপি,
বন্ধ করেছি বাঙালিয়ানার সেই সুমধুর ঝাঁপি।
আজো মনে পড়ে দুই বিঘে জমি বাঙলার সেই রূপ,
শরত বাবুর মহেশে গফুরের আঁখিজল টুপটুপ।
কোথায় চলেছি কোন পারে ধেয়ে পিছু রেখে পরিচয়,
নব নব রূপে কাহারে মিলিতে নিজেকে না চেনা হয়।
সত্যজিতের চলচ্চিত্র কতো দেশ দিতো পাড়ি,
আজকে দখিনা নকলের গতি, অস্তিত্ব নিয়েছে কাড়ি।
কথায় কথায় রবীন্দ্রনাথ মুখে নজরুল বাণী,
অথচ শিক্ষা সাহিত্য প্রসারে রাজনীতি নিয়েছি টানি,
ওঠো তুমি জেগে ওগো নুতন কবি কলম শানিয়ে আজি,
অস্তিত্বের সংগ্রামে আজ বাঙালিয়ানার পূঁজি।।


রবিবার, ১৭ জুন, ২০১৮

অনিমেষ সরকারের কবিতা।



উত্তরীয় শুদ্ধ প্রেমে অবগাহনে আত্মার

 যুগ্মসন্ধিক্ষন,,,,,আঙ্গিকে কলম।


১. ফুলসজ্যার অ্যলবাম।


ফুলসজ্যার ঘরে আলো বন্ধ রাখা সৌহার্দের প্রতীক
অন্ধকাপড়ে ঢাকা পড়ে যায় শরীরের সমস্ত নগ্নতা
আলোর চাবিকাঠি আঁচলে আর বেঁধে রাখা হয়না
 বিছানার বেডশিটে লাল রক্তে ভেসে যাওয়া
সেভকের পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া মিস্টি জল
ফ্যামিলি অ্যালবামের মুখোশে সাদা
ফিনফিনে সলতে দেয় টাঙিয়ে
অন্তর্বাস খুলে ফেলতেই সুডৌল পাহাড়ের বৃন্তদেশে
ডুব দিতে দিতে ভোরের উত্তেজনায় রস সমস্ত শুষে নেয়
যৌনতার গুহোয় প্রবেশের প্রবল দৈবাৎবাণী
''খুলজা সিম  সিম''
খুলে যায় কাটাকুটি খেলার ছক৷


২. ফেলে যাওয়া দিন।


পুর্ব প্রেমিকার রেখে যাওয়া লিপস্টিকের দাগ থেকে,
জমা হতে থাকে লাল ঘ্রাণ;
কন্ঠস্বরে ক্লান্তি,
ঝিমিয়ে যায় দিন;
সাজ আর টিশার্টে রাঙানো ঠোঁটের ছাপ
জন্ম দেয়
উত্তর প্রেমিকার৷

ঘুমের ওষুধ,
বাক্স বদল গয়না! অক্লেষে নিয়ে যায়
নুইয়ে পড়া দ্বীপ,

.গানের আসরে
স্যাড সঙ নিরাকার অন্তর্বাসের জলচ্ছবি;

কবিতার আকার,
ডায়েরির সাদা পৃষ্ঠায় ঘুরে ফিরে একই বর্ণ;
ফিকে যায় হয়ে নখের আঁচড়....

হৃদয় কুটিরে আশ্রয় খোঁজে,
থেমে থাকা উত্তরীয় প্রেম;

প্রশ্নের ছিপে উত্তর সহকারী,
গড়পড়তা শান্ত হয়ে আসা দিনলিপি;

একটি একটি করে কেটে যায় ,
ফেলে আসা দিন!

উত্তর,প্রেমিকার  মধুর আলাপ,
থেকে যায় শুধু পুর্বের ভাষাহীন সংলাপ...

সঞ্জয় কীর্ত্তনীয়ার কবিতা।



তোমার আবাল্য কিশোরী প্রেম শুধু আমি,,,,

 তোমার নির্লিপ্ত নয়নের ভোগ আমি শকুন্তলা।


১. কাম কামানা।

         
অপরূপ দৃশ্য কামনা লিপ্ত নয়ন;

বাসনা ভরা মনে,তোমারে চয়ন।

ভেজা কেশ,অর্ধনগ্ন কায়া বৃত্ত;

প্রভাতে স্নান বেলা,দেখি নিত্য।।


চিত্ত ভরে ওঠে,খোপাতে  ফুল;

দীপ্ত কায়া তোমার,কানেতে দুল।

এলোমেলো কেশ,বিকশিত বক্ষ;

কেমনে করি উপভোগ,ঐ দুপক্ষ।।


আলতা পায়ে রাঙিয়ে পথ চলা;

স্বপ্ন লাগেযে সব,কথা না বলা।

অপরূপ দৃশ্য গ্রাম্য যুবতী কন্যা;

যেন যৌবন নদীতে উঠেছে বন্যা।।


নগ্নকায়া নিত্য প্রভাতে হয় দর্শন ;

কখনো ঝড়ে পড়ে,কামের বর্ষণ।

শুধুই দেখেছি তারে উপভোগ নয়;

মনে সাধ ছিল,কামনা করতে জয়।।


2)   উন্মুক্ত কায়াপদ্ম   --

           
গ্রাম্য যুবতী কন্যা নিধিতে অবগাহন রত;

কালো কেশ গুচ্ছ জলে সিক্তকরণ।

বিকশিত বক্ষ,জলে নিমজ্জিত মধ্যদেশ;

কায়াতে জড়ানো হালকা আবরণ।।


বদন জুড়ে হাসি, বিরাজমান মৃদুমন্দ;

নিধিতে দীপ্ত কায়াপদ্ম প্রষ্ফুটিত ।

কায়াপদ্ম মধু খেতে সাধ জেগেছিল;

লালসা আবেগ রেখেছিলাম গুপ্ত।।


প্রভাতে উন্মুক্ত যুবতী কন্যা দর্শন ;

বিচলিত করেছিল,দীপ্ত কায়াপদ্ম।

কামক্ষুধায় মন,চেয়েছিল ছুটে গিয়ে;

একত্রিত ভাবে রতিক্রিয়ায় হতে লিপ্ত।।



শাল্যদানীর কবিতা।



কবিতাগুচ্ছ:

বিশ্লেষনী রজঃগুনে পুরুষালী জাফরানি

 প্রেমের আঙ্গিকে ছলাকলা কলাম।


১. চিত্রলেখা ১৬*

কামকলার নৈপুণ্য আঁচর বুকেপিঠে বইছে ভাটশালিক
নোনতা পুকুরে গানের তমিস্রপক্ষ
নব্বই যুগের সমাপ্তিজ্ঞাপক অন্তমিল
একশতম নাইটিংগেল গাঁথন

হেচকা টানে অন্তঃ সমীকরণ
তুমিকে আমি দিয়ে গুন করে পত্রিকা দিয়ে ভাগ করে কবিতা পেলুম

কবিতা?
একটা মেয়ের ডাক নাম।
ভালো নাম কাজলা
কাজলা একটা পত্রিকার নাম
তারা কালো শব্দে ছাপে

বুকেরপাটা হারকিউলিসের ছাতি
বাড়তে বাড়তে চৌত্রিশ হয়েছে
ক্লিভেজে হাতছানি সম্পাদকের দপ্তর

এ চরিত্রহীন হলেও কাপুরুষ নয়।




২. *কবিতা ৭*

যদি চমকেদি মাঝ রাতেতে তারা
মনের মধ্যে সাইরেনখানা বাজুক
নষ্ট প্রেমের জাঁতি কাঁটুক ধান
আমি কি আর এমনি দেব ফাঁকি?
সবটুকুই বাকি

এরকমভাবে রাতের পর দিন
কলঙ্ক ফুলে এলাচি ঘ্রাণ
পাথরচুন খান খান
খয়ের হবে বলে।
সুপারি  যখন  পয়সা
পানের ডিপো ব্যবসা

তবু মুখতো করেছি লাল।
ঠোঁটে জমেছে জাফরান চুমু
সাগর পার করবো হনু
মানুষ মোটেই নয়তো মনু
আসলে উভচর।
ভুতেতে দিয়েছে বর

পুরুষ পুরুষ খেলনাবাঁটি
চুমুতে চুমুতে লাল
সমপ্রেমে বিষুবরেখা
ভীষণ জঞ্জাল।
আহা আমিও পেকেছি তাল




৩. *কবিতা ২৩*

এক অন্ধবেগ অমসৃণ পথ
সঙ্গতা খোঁজে একবিন্দু বসতি প্রেম
নয়নতারা হাওয়াকল জানান দেয়
সে যেন আসছে।
ব্রহ্মপিশাচ দেখছি দোলানো আয়নায়

মানানসই সম্পর্কগুলো একঘেয়ে ফর্মাল
জমাটি প্রেমে ফণা তোলা চচ্চড়ি
কই বেঁচেছে ডাঙায় উঠে
মরণপণ জন্ম জন্ম খেলা।
কই সে আজতো এলো না

আসতে লাগে মোমপথ
ভাবতে ভাবতে রাত
গাইতে গাইতে সংলাপি মন
হঠাৎ কুপোকাত

লবঙ্গলতিকা অভ্যাসে আজ কু এর ছাপ
মন্বন্তর ভস্মাধার সমাধি বৃক্ষের কোটরে
ও সব জানে।

ও জানে উজান বইতে।
একা পথে ঝড়ের রাতে -
সেইতো কবির ভয়নাশিনী হেম

আরিয়ান প্রিয়স পালের কবিতা।



অন্য বসন্ত সিরিজে একরাশ গোলাপের

 প্রস্ফুটিত প্রেম তোমার আঁচলের স্নিগ্ধ পরশে।



১. *অন্য বসন্ত -৩*


শাল বনে বনলতা পাতা কেটে ছবি আঁকে

সূর্যটা চাঁদ মেখে আঁধারেতে ঠোঁট সেঁকে।

দোয়াতের কালি তবে আচমকা পেতে চায়

যদি তোর পিঠ ঘেষে আঙুলটা ছুঁয়ে যায়!


এই ভাবে কতদিন চোখ বুজে স্মৃতি দেখা

কালসিটে চোখ মুছে তবু জমে বলিরেখা।

বিছানায় তোকে দেখি বালিশেতে তবু খুঁজি,

শেষ খেয়া চলে গেলে আমি হই শেষ মাঝি।।


পাখিদের সাথী হই ঘুম ভাঙে তোর যেই

সেরা কিছু হতে যাই মিশে যাই বালিশেই

এ মনও তো আশা হয় যদি ঠোঁট ভাষা পায়

শেষ রাতে ঘটনাটি জোছনারা দেখে যায়।।


ফাগুনের বাতাসেতে যেন কিছু ভেসে যায়

জলপরী তারারা ক্লান্তিটা খুঁটে খায়

এমনত দিন এলে যদি তুমি পেতে চাও

কয়েকটা কোকিলের কুহু ডাক শিখে নাও






২. *অন্য বসন্ত -৪*


কমুন্ডোলের জল ছেটাতে ছেটাতে

পা ফেলি বসন্ত রোদে।

বহু পাখিদের কলরবে চারিদিকে রামধনুর রূপটান।

কাশফুলে জমা বালুচরে ভূমন্ডল লুকিয়ে রেখে,

সমুদ্রের জল হয়ে ফিরবে বলেছে তারা।

যেখানে রং হাতে অপেক্ষা করবে ভীত কাঁকড়ার দল।

আমি সে পথে দিয়ে গেলে

তারা দু-পায়ে রং মাখিয়ে দেবে নোনা জল দিয়ে,

ওখানেই চাঁদ নেমে এসে মাটিকে চুমু খাবে।

তখন জ্যোৎস্না আলো ফেলে

যাবে স্মৃতিময় অনুতাপ।

কেবল অভিমানগুলো কাঁকড়ার মত মাটির খুরে

লুকোবে গভীর থেকে আরো গভীরে।

আর আমি বাতাসের বুকে পা ফেলে আবির ছড়াবো ভূমিকার সব পথে. . . .



৩. *অন্য বসন্ত*


তারাদের মিছিলেতে ধ্রুবতারা নেতা হতো

কানাঘুষো শোনা যায় কোকিল তো নিরুপায়

তবুও ঈশান কোনে মেঘ জমে কুয়াশাতে

কানে কানে বলে ওঠে ফাগুন তো এসে গেছে.....


সুখ ঘরে বুক ভাসে মাঝ রাতে

চাঁদ ওঠে

তবুও অমৃত সুধা ধেয়ে আসে চেনা নেশা

বিছানাতে খুঁজি তোকে হারিয়েছি

চেনা শোকে

তবুও তো কাছ পেলে হৃদয় যে বলে ওঠে...

ফাগুন এখনো আছে...


রাত জেগে ছাদ ভেজা বিছানাতে চোখ মোছা!

ওড়না তো চারুলতা, হৃদয়েতে উষ্ণতা,

আলগোছে মদ খাবা, ঠোঁট চুষে মন পাওয়া ,

এসবতো পুরোনো হয়ে সব চলে গেছে,

তবুও কেন চোখ মুছে হৃদয় আজ বলে ফেলে

ফাগুনতো চলে গেছে....



শুক্রবার, ১৫ জুন, ২০১৮

মৈনাক চক্রবর্তীর কবিতা।


চোরাকুঠুরীর সংসার,,,, তোমার আমার মুক্ত প্রেমের আলিঙ্গন।


১. জানালার অন্ধকারে।

জানালায় অন্ধকারে একটা ছন্দ পতন থাকে--
কারা যেনো উকি দেয় জানালার অন্ধকারে...
জীবনানন্দ কি ভেবে 'উঁটের গ্রীবার' প্রসঙ্গ এনেছিলেন,
তা আমার জানা নেই--
তবে জানালার অন্ধকারে,
আমি প্রতিনিয়ত এক ছায়া মূর্তি দেখি....
এক অশরীরীর ছায়া মূর্তি......
অসম্পৃক্ত কামনার জ্বলনে,
প্রতি জানালার অন্ধকারে উকি দেয় সে.....
অতৃপ্ত যৌনতা তৃপ্ত হবার কামনায়
সঙ্গম চায়, শরীরহীন যৌনসসত্তা।
শরীরের পূর্ণ সঙ্গমের কামনায়,
রাত দুপুরের ঠান্ডা হাওয়ার গতিতে,
নিশাচর পতঙ্গের মতো
এক জানালা থেকে অন্য জানালা
পুরুষের মাংস খোঁজে অশরীরী......

রাত্রি সরে, চাঁদ ফিকে হলে,
আকাশের তারারা যখন শেষ বারের মতো জ্বলে ওঠে;
ফিকে হওয়া কালো অন্ধকারে--
সমস্ত জানালায় সঙ্গব্দ শরীরের গন্ধ পেয়ে,
শরীরহীন যৌনতার অতৃপ্ততায়...সে ফিরে যায়....
তারপর, সমস্ত দিন কেটে গেলে
আবার রাতের স্যাতস্যাঁতে বাতাসে
সঙ্গমের তৃপ্ততার খুজতে.....ফিরে আসে সে.....
ফিরে আসে.....প্রত্যেক জানালার অন্ধকারে.....


২. সমুদ্র আর তুমি।

অভিমানী সমুদ্রের কোন ভাষা হয়না
নীল জলের গভীরতায় পুষ্ট সমুদ্রের
ব্যাখ্যা-গভীরতা-চঞ্চলতা প্রকাশ করার নয়
অনেকটা আমার সঙ্গীনির ভেজা চুলের মতো
অনেকটা আমার সঙ্গীনির চেরা ঠোঁটের মতো
যার অভিব্যক্তি আছে, কিন্তু তার প্রকাশ নেই

মৌসুমী সমুদ্রের উত্তাল উন্মাদনা
হয়তো তোমার উন্মাদনা থেকেই সৃষ্টি
স্ফীত সমুদ্রের উন্মত্ততা, আমার সঙ্গীনির
সঙ্গবদ্ধ উন্মত্ততাকে ছাপাতে পারেনি

সমুদ্র তুমি বৃহৎ-বৃহতর-বৃহতম হতে পারো
কিন্তু তোমার শরীরে আমার সঙ্গীনির গন্ধ নেই
আকাঙ্খা-কামনা-অভিব্যাক্তি কিছুতেই
তুমি আমার সঙ্গীনির মতো নও
তুমি স্থূল, তুমি বৃহৎ,
তবুও তুমি বড় ফাঁপা....
বড্ড বোশী এলোমেলো
একগুচ্ছ অপরিণত উন্মাদনার সমষ্টি তুমি সমুদ্র..

পল্লব রায়ের কবিতা।


শষ্য শ্যামলাং সুন্দরম,,,, অন্তরের গহীনে প্রেমের সাম্রাজ্য।


১. অনন্ত অসুখ।

গা‌ছের বু‌কে দুঃখ বা‌রোমাস নিঃশ্ব‌া‌সে তাই বাড়‌ছে বিষাদ বিষ
ফুলগু‌লো ভুল জ্বালার উপখ্যান কা‌লের দো‌য়েল দি‌চ্ছে বু‌কে শিস,
‌দি‌নের শে‌ষে যে যার ম‌তো হায় সকাল খোঁজে অস্তাচ‌লের ঠোঁ‌টে
‌কেউ রা‌খে না আমার কো‌নো খোঁজ ভ্রমরগু‌লো নতুন ফু‌লে ছো‌টে !

প্রা‌ণের ভি‌টেয় ঘূণ পোকা‌দের বাস দু‌চোখ পোড়া আকাশ খসা তারা
আজও ধর্ম মা‌নেই রক্ত ই‌তিহাস ধৃ-ধাতু‌তে যাজক দিশাহারা ,
অদৃশ্য জিহ্ব চাট‌লে লা‌গে সুখ বুক প‌কে‌টের খাটে ঘুমায় পাপ
ভা‌লোবা‌সি ভাব‌তে গে‌লেই তো‌রে  যা‌চ্ছে বে‌ড়ে বিষম মনস্তাপ।

অন্ধকা‌রের ঘোমটা টে‌নে চাঁদ লু‌টি‌য়ে গে‌ছে অন্য দে‌হের ভা‌জে
জীবন ভু‌লে তোমরা খোঁজ প্রেম কান্না খোদাই পাষাণ মমতা‌জে,
বু‌কের কাঁপন কেউ দে‌খে না মে‌পে কাহার প্র‌তি নোঙর ছেঁড়া টান
বৃথাই বনে প্রণয় কু‌টির গড়া জল পিপাসায় ভুগ‌ছে গা‌ভিন ধান।

কপাল জু‌ড়ে তোমার চু‌মোর দাগা কেশর দোলায় রক্তজবার ডাল
অন্ত‌রে সেই  বরফ গলা নদী ফল্গু হাওয়ায় উড়ায় ঘ‌রের চাল,
আ‌মি হয়‌তো অ‌তি তুচ্ছ তোমার কা‌ছে হৃদয় থে‌কে নাম দি‌য়েছ কে‌টে
নিভু অন্ধকা‌রে আজও তো সেই একা যা‌চ্ছি প্রে‌মিক জোনাক হ‌য়ে হেঁ‌টে।


২. নষ্ট প্রে‌মের শস্যদানা।

খোঁজ পে‌য়ে‌ছি কোথায় গুপ্তধন কোথায় সু‌খের নদীর উৎসমুখ
তু‌মি ফু‌লের গ‌ন্ধে বি‌ভোল মন  উত্থাল পাথাল কাঁপ‌ছে মরু বুক,
আকাশ জু‌ড়ে শ্যামলা মে‌ঘের দল প্রণয় শিঙায় তুল‌ছে মাতাল ধ্ব‌নি
তৃষ্ণা কাতর চাতক সম মন দাও ভ‌রে প্রেম আ‌লোয় চো‌খের ম‌ণি।

হৃদয় ফু‌ড়ে বৃক্ষ তুলুক শির পা‌খির গা‌নে মাতুক বসুন্ধরা
কৃষাণ হৃদয় মা‌টির সোঁদা ঘ্রাণে হয় য‌দি হোক  আজ‌কে দি‌শেহারা,
উষর বু‌কে আসুক বতর কাল বী‌র্যে ভরুক মা‌টির শুষ্ক যো‌নি
দুঃ‌খে পোড়া বাগান ভরুক ফু‌লে প্রা‌ণের দুকূল উপ‌ছে পড়ুক পা‌নি।

‌ঢেউ খে‌লে যাক আ‌লিঙ্গ‌নের ঝড় দে‌হের খোদাই করুক রাখাল হাত
তোমার নাভীর ঘাস বিছা‌নো প‌থে  ধূল উ‌ড়ি‌য়ে পার ক‌রিব রাত ,
‌নিত্য তোমার ঠোঁ‌টের সরাইখানায় মাতাল হ‌য়ে থাক‌বো না হয় প‌ড়ে
তোমার বু‌কের বাম ভূ‌গো‌লে কোথাও আমার প্রে‌মের ব-দ্বীপ নেব গ‌ড়ে।

জাপ‌টে ধ‌রো আগুন বাহুপা‌শে সর্বনা‌শের টনক উঠুক ন‌ড়ে
পাপ পু‌ড়ে যাক প্রে‌মের দাবান‌লে দুঃখ জাগাও পাষাণ হৃদয় খুঁ‌ড়ে,
‌খোঁজ পে‌য়ে‌ছি কোথায় নিরাকার নি‌জেও গে‌ছে প‌থের দিশা ভু‌লে
কাহার টা‌নে আগল ভাঙা ঢেউ অস্তাচ‌লের বসন দিল খু‌লে।


সুমনা পাল ভট্টাচার্যের কবিতা।


মধুযামিনীর নিশিছন্দে অপ্সরা রাগিনীর কলম।


১. মোনোলগ।
---------------

রাতগুলো আজকাল বড় পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে আমায়, ওর সর্পিল হড়হড়ে শরীরের ভেতর যে বিষ-দাঁত লোকানো আছে তার দাগ ফুটে ওঠে ভয়ার্ত চাদরে।
 জটপাকানো সেরিব্রামের গা থেকে বেরিয়ে আসা লিকলিকে হাত পা গুলো আমার স্বপ্নের গলা টিপে ধরার আগেই আমি খুব সাবধানে ওর তেল চকচকে ন্যাড়া মাথাটা বের করে এনে ঘুমের পাশে রেখে দিই রোজ, তারপর আটপৌরে ধামসানো মোচড়ানো পাঁজরের রাত্রিবাস পরে  নিশ্চিন্তে  মিশে যাই  তোমার নিরুদ্দেশ গন্ধের সাথে।
:
ঘুম গাঢ হয়ে যখন মৃত্যুর মন্ত্রপাঠ করে তখন তুমি চুপটি করে বাধ্য শিশুর মতো আমার কোলে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ো ধ্যানমগ্ন সমর্পণে।
আমার চারপাশে আরোহণ জেগে ওঠে..
সেই উত্তরণে নি:শব্দে খুব সাবধানে পা টিপে টিপে  শহর থেকে বহু বহুদূরে এক প্রত্যন্ত গভীর জঙ্গলে সবার চোখ এড়িয়ে আমি ফেলে আসি তোমার বাসি খোলশখানা।
:
স্বপ্নের প্রজননী রন্ধ্রে এভাবেই লেগে থাকে তোমার নিরন্তর জন্মকথা ...
---------------------



২. অকাল- বর্ষণ।

--------------------


বৃষ্টির গন্ধ ভেসে এলেই, কস্তুরী মৃগের মত মেঘের পালক হাতড়াই

বাতাসের গায়ে লেগে থাকা বারুদের দাগ রগড়ে তুলে দিতে ইচ্ছে করে, দু-হাত শূন্যে তুলে চাতকের মত ছুঁয়ে নিতে চাই নেশাতুর প্রেম..

:

আচমকা অনুভব করি বুকের অলিন্দের বাঁকানো পথটা তোমার পায়ের জলছাপে ভরে গেছে...

নিলয়ের আগুন আছড়ে পড়লে আলপনার শরীর জুড়ে শুধু সর্পিল ধোঁয়া

চোখের কোটোরে ততক্ষণে ফণা তুলেছে শ্রাবণ

:

 এমন বাষ্পীয় সুখে তুমিময় হয়ে থাকার নামই কি তবে অকাল-বর্ষণ?



৩. এক-পশলা...
------------------
রেললাইনের সরে যাওয়া হাতদুটোর মুঠোয়  ভরাট জল..
মাঝের পথটুকু বড় ধুলোময়, বিস্বাদ, নুনে-পোড়া
ভেজা আঁচলে সদ্য-স্নাত জোছনা, চাঁদের শরীর আমার বিছানায়..
রাত বাড়লেই জানলায় রেখে যেও গোপন ডাক
ঠোঁটের কোষে আসন্ন বিভাজন
গর্ভবতী মেঘের দশমাস দশদিন পার হলে, বৃষ্টির আলনায় পরিপাটি সাজিয়ে দিও বাঁধভাঙা চুমুর অনুরণিত আকাশ
:
ধুয়ে যাক, ধুয়ে যাক.....
                                 

হুমায়ূন কবীর মন্ডলের কবিতা।


শিব পার্বতীর যুগল মিলন আঙ্গিকে কলম।


* প্রবঞ্চক *
                          -------
                 হুমায়ূন কবীর মন্ডল          

প্রত্যেক সূর্যোদয়ের অছিলায়, আমার চরমতম ভান
একটু একটু করে নগ্ন হতে দেখি,
পৃথিবীর সহস্র ক্ষতের সামনে আমার
আমার মৃত্যুকে ভেঙে ফেলে মুহূর্তের অঙ্গীকার।

-----------------------------------

অমানিশার কৌতুকে ক্ষিপ্র এখন বল্লমের বুক
মন্দ্রসপ্তকে উঠে আসে উপত্যকার ক্রন্দন
পৃথিবী এগিয়ে চলে ,এগিয়ে চলে সর্বংসহা
অবগুন্ঠনে ঢেকে থাকে তোমার সংহারী প্রতিমূর্তি।

-----------------------------------

মহাকালের অমোঘ বার্তাকে কুর্নিশ করে
তোমার জটা ঢেকে দেয় দুগ্ধ ফেননিভ জলরাশি
সকল প্রাণের রক্ত ধূমায়িত হলে
তবু - তবুও তুমি অবিচল, প্রত্যাঘাতের উল্লাসে
তার প্রলম্বিত ধ্বংস অভিমুখের উৎসপথে।

-----------------------------------

তোমাকে মুক্তি দেব বলে
এই অবনত গ্রীবায়, হে প্রিয় -
আমি ধারণ করেছি তোমার গরল।

-----------------------------------

এই অনন্ত বীর্যের আস্ফালনে -
যখন পরাভূত তোমার কন্ঠবাণী
পতিব্রতার ক্ষীণ গন্ধ তখনও -
আমার পর্ণকূটিরে উড্ডিয়মান।

-----------------------------------

হে মাধুকরী যামিনীর শক্তিস্থল হতে
আমার অনন্তলোকের মহাযাত্রায়
শপথ হেনেছে বারবার ,,,,,,
আদ্যঋতু হতে আবাহনের মন্ত্রনায়, -
বিরামহীন অস্তোদয়ের সেই যাত্রালগ্নে
বহুরূপে পেয়েছি তোমায় লীলাবতী ।

-----------------------------------

তোমার ইন্দ্রতুলের সুকঠোর বন্ধনে
কালে কালে প্রশস্থ হয়েছে -
শত শত অহীশ্বরের নীলাভ সংকেত ।

-----------------------------------

তুমি দূর্জয়, তুমি দূর্গম, তুমি দর্পিনী ।।

                   ........................

পলাশ চৌধুরীর কবিতা।


ওমরস সিক্ত সঙ্গম আঙ্গিকে কলম।


১. প্রেম আর সালফিউরিক সঙ্গম।
----------------------------------------
ভেবে দেখো যদি প্রেম হয় মারিয়ানা আন্দিজে,
মহীরুহ -ক্যাকটাসে,
রি -রি করছে ফুটন্ত সালফিউরিক সঙ্গম,
চিবিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে,
মাথা নোয়াতে অক্ষম আন্দিজ।

ভেবে দেখো সকালের শিশিরভেজা শরীরের গন্ধ নেওয়ার ইচ্ছায়, মাথা নুইয়েছে প্রেম,মহীরুহ।
জৈব যৌবন পেতে পেতে তীব্র যন্ত্রণা,
কাঁটা নয় উদ্দাম যৌনতায় কামড় দিয়ে গেছে ব্ল্যাকম্যাম্বা।

ভেবে দেখো তোমার বাড়ির পাশেই লণ্ডন,
আমার সাঁওতাল পল্লি,
দু-এ, দু-এ দ্রবীভূত হওয়ার ইচ্ছে,
বিক্রিয়া শেষে একটা বিস্ফোরণ।
পাশাপাশি বসা দুটো ছাই ছাই মুখ।।



২. #ওমরসে #সিক্তসঙ্গম।
---------------------------------
প্রেমের দিকে আমি খুব একটা আড় মুড়ি না
স্বল্প নির্যাস, ওমরসসিক্ত বেলেল্লা হতে দেয় কম।
গৈরিক ভদ্রতায় সঙ্গত সঙ্গীধারী সঙ্গম হয় না
অতএব আমি থেকে প্রেমে অনির্দিষ্ট বৈরাগ্য চলে।

দণ্ডি কেটে কেটে দু-এক বার র‍্যাম রম-এর উথালপাতাল গভীরতা মাপিনি তা নয়!
এতখানি সতাতিদীর্ঘ পথ যাপণে কিউনিফর্ম বা হায়রোগ্লিফিক লিপিও ছুঁয়ে দেখেছি,
একবার এককার্থে বা দুয়ে দুয়ে চার করেছি অনেক
প্রেম থেকে নয়, সমন্বয়ে সঙ্গম গিলেছি গলগল।

গালচে ভর্তি মধুগোলকে চুমুক দিয়েছি,
বা গোপনে খনিজ খুঁজেছি অনেকবার,
তাতেও দেখেছি প্রেমাকড়সি না গিলেও ---
উলম্ব মোমবাতি আর নাতিদীর্ঘ খাদে সংগম হয়েই হয়েই যায়।

বুধবার, ১৩ জুন, ২০১৮

সমর্পন ভট্টাচার্যের কবিতা।


দমবন্ধ শ্বাস রুখতে আমার খোলা জানালা চাই,,,,,,,,,,


১. রংপুরের সন্ধানে।
   
মন হারানো মফঃস্বলী এক আকাশ,
হেমন্তের চায়ের কাপে নতুন ডাল,
চারপাশের সব যেন আজ এলোমেলো
বাস্তবের সব হিসেবেই বেসামাল।

সকাল শুরু বৌ এর হাতের সবজী ডালে,
সংসারে সব বোঝা নিয়ে খোঁড়ায় রোজ,
 শরীরে উতাল ঢেউ পেঁচিয়ে জড়িয়ে ধরি,
রাত্রি হলেই নিথর দেহে আদর-খোঁজ।

প্রতি মাসের টার্গেটেতেই জীবন শেষ
নিজের ইচ্ছে কোথায় যেন হারিয়ে যায়,
পুরোনো সেই গেলাস জলের একটু রেশ...
এখন আবার নতুন করে কোথায় পায়?

আজকে তাই হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি খুব
পাশের ঘরের ব্যালকনিতে সবুজ হাত!
নিষিদ্ধ প্রেম মন চঞ্চল রাস্তা চুপ,
সারাদিনের ক্লান্তি শেষে হাসবে রাত।



২. আমি হারিয়ে।
 
ছেঁড়া জামার মোড়কে নতুন হাসি যেন মিয়ানো বিস্কুট।
একটা বয়স্ক মলাট ছিঁড়ে খায় উপস্হাপনা।
আমি আজ আমি কালের সাপেক্ষে নীল।
সকালে হেসে ওঠে জানালা,
আমি এক তাকে দেখে হাসি।
দুপুরে লাল মাটি ঘষে আমি দুই রক্তাক্ত হই...
আমি তিন বিকেলের ঘরে ফেরা শেষে বিরক্ত চোখে আকাশ খুঁজি...
আমি চার রাতের গোধূলিতে মেকি ভাষা দিয়ে জাল বুনি শখ মেটাতে।
বারবার পাল্টায় মুখোশমালা।
আমি এক দুই তিন চার ....অসীম অবধি সংখ্যাটা বেড়ে চলে আপোষের চাদরে ।
শেষমেশ বেলা শেষে আমি টা আর খুঁজে পাই না  যতক্ষণ না ধ্যানবিন্দুতে চঞ্চল আলোগুলো স্হির হয়।
এক দুই তিন চারেরা এভাবেই ঘোরাফেরা করে আয়নার ধংস্বস্তূপে ।


মোহাম্মদ জসিমের কবিতা।


অসুখের আগুনে প্রদীপ্ত প্রেমের শিখার কলম,,,,,


১. আগুন, আগুন! ||

দু'ঠোঁটে দিয়েছো লিপে আগুনের আঁচ—মূহুর্তের চুমুকে আকন্ঠ পান করি মায়াবী আরক!

গলিত রোদ্দুরে গড়েছি মামুলি গহনা কিছু—পাখা ও পেখমে রহস্যের রঙ মেখে বিভঙ্গ নাচের মুদ্রায় ওড়ো; এমন ভঙ্গিতে রাখো আঙুলের ডগা—আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে পৃথিবীর গাল গোলাপী রুমাল যেভাবে পাখি হয়ে যায়! সর্বাংশে সত্য নয়—খোলাচোখে দেখেছো যতটা, এখনো নখের কোনে ছোপ ছোপ লাল দেখে খুলে দেই দেহলিপি—আপাদমন্তক আগুনের হল্কায় ধীরলয়ে গলে যেতে থাকি...

বিঁধে আছি কে কার শরীরে আজ—এইসব সাদামাটা প্রশ্নের সাঁকো এড়িয়ে এসো শুয়ে থাকি শুনশান রাতের প্রাসাদে।


২. অসুখ বিসুখ ||

তোমার নিমন্ত্রণ পেয়ে ছুটে আসে তীঁর ও তরবারি— রাতভর ভাঙা ভাঙা উচ্চারণে আবৃত্তি করে বিষমাখা ঠোঁটের বিলাপ!

তুমি কি শুয়ে পড়েছো এখনই—ক্ষনপ্রভা চাঁদের দূর্বোধ্য আলোকরশ্মি পৃথিবীর শিরায় প্রবেশের আগেই? তোমার ভেতর থেকে একটা একটা করে সমস্ত আসবাব সরিয়ে নিচ্ছে সুচতুর যাদুকরী হাত—পাথর ভাঙার শব্দে চাপা পড়ে গেছে আকস্মিক কান্নার সুর।

পাহাড়ের ঢাল ধরে উঁচুতে উঠে যাচ্ছ তুমি। শাঁওতাল কিশোরীটব চিৎকার করে বলছে এখনও—শরীরে আগুণ নিয়ে সূর্যের দিকে চলে যেতে দেখেছি দেবীকে।

আজ অব্দি সাঁওতাল পল্লীতে কারো জ্বর হলেই তোমাকে দেখতে পায়। আমার অসুখ বিসুখ নেই, তোমাকে দেখবো বলে যজ্ঞে বসেছি অথচ জ্বরজারি আমাকে ধরে না...


প্রসেনজিৎ মন্ডলের কবিতা।


শৈশব মনের নির্ভেজাল স্পর্শের আঙ্গিকে কলম,,,,


কবিতা: শুক্রচোখে চাঁদভাসি।

শাঁখ বাজা সন্ধ্যায়
জোনাকীমুখের স্বপ্ন দেখে ঘুমপাপড়ি
সূর্যডোবা চাঁদ
           আড়াল করে বনঝাউ
কঙ্কালতন্ত্রের অস্থিমজ্জা
             ঝিনুকের পৃষ্ঠটান
ধিতাং ধিতাং মাদল বাজছে
মহুয়ার গায়ে ঘামের আতর
বিপ্রতীপ কোনে কোনে দুলছে
পায়ের নুপুর রোদচিকচিকে গাল
দ্রাঘিমায় ঢলে পড়ে
             ফুটফুটে কোমর জোছনা
অক্ষাংশ কাঁপছে
          ছায়াআলো পাপড়িজল
ভাঙামেঘ বৃষ্টি
                 হাঁড়িয়ার নাচ
এখন থামা যাবে না
         পিয়াসীর চোখ মাসকারা
কৃষ্ণচূড়ার বুকে গভীর নিম্নচাপ।



কবিতা: হারিয়ে যায়নি শৈশবসন্ধ্যা।

খোলা মাঠের মতো বাড়ির উঠানেও সন্ধ্যা নামে।
আবছা হয়ে আসে সবকিছু।
তুলুসি মন্দিরে  জ্বলে উঠে রাত্রির প্রথম আলো।
উল্লসিত শাঁখের আওয়াজ...
 একটি দিনের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
ঝিঁঝির ডাক বাতাসে মেশে।
সব জায়গায় একটা গা ছমছমে ভাব।
বাড়ির কচি কাঁচারাও স্লেট পেনসিল নিয়ে
বসে পরে উঠানে পড়ে থাকা মাদুরটার উপর।
সামনে হ্যারিকেন টা দপ দপ করে জ্বলতে থাকে।
বর্ণপরিচয়ের অ এ অজগর সজীব হওয়ার চেষ্টা করে।
অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা পতঙ্গগুলোও আলো খোঁজে ।
চারদিক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে।
মায়ের হাতের তালপাতার পাখাটা সজোরে মাথার উপর ঘুরতে থাকে।
আর ইঁদুর ছানা ঈগল পাখির ভয়ে মরতে থাকে।


কবিতা: মেঘমল্লার।

প্রেম হাসছে
হাটে বাজারে শপিং মলে
ভালোবাসার অভিযোজন প্রেম প্রেম খেলা
প্রেম কাঁদছে
দুপুর বেলা বাড়ির এক কোন
আবেশে ধোঁয়া ধোঁয়া নেশা
কোনো নিষিদ্ধ শহর
কাছে ডেকে নেয় আদর করে
একটা গোলক ধাঁধা
যদি মন্ত্র জানো
নিশ্চিন্তে ঢুকে পরো কাঠ গোলাপ
অথবা না
দূর থেকে দেখো অজানা প্রত্যুষ
কোনো মেঘমল্লার দেশ
অথিত পাখির বাড়ি সাইবেরিয়া
পিনটেল এর ঝাঁক ভাবজমায় মতিঝিল
কখনো ফেরার রাস্তা ভেবেছো কি?


সোমবার, ১১ জুন, ২০১৮

বিধান শীলের কবিতা।


সনাতনী উন্মাদিনী প্রেম বাউলের একতারার আঙ্গিকে কলম।


১. কাব্যপ্রেম

যে মেয়েটি একদিন কবিতার জন্য ছেলেটির প্রেমে পড়েছিল । গোধূলির লাল রং মাথায় মাখার পর একটা শব্দার্থের মানে পারে না । তার চোখের ভিতর এখন উনুনের ধোঁয়া ।

যে ছেলেটি কবিতা লেখার জন্য পেয়েছিল তার প্রেমিকাকে । সে আজ একটাও কবিতা লিখে না । নিজেকে গতিশীল করে একমুঠো রাত নিয়ে বাড়ি ফেরে ।

সংসারের বিমর্ষ জলে ডুবে মরেছে তাদের কাব্য প্রেম । দু'জনেই আস্ত একটা জটিল কবিতা হয়ে উঠেছে ।



২. শান্তিনিকেতন


কোন এক জোনাক রাত্রে আলপথ ভেঙে , শালবন পেরিয়ে

গোপনে তোমার সঙ্গে চাঁদ দেখতে গিয়েছিলাম উঁচু পাহাড়ে

ঝর্ণার ঘুঙুর জল ধুকপুকানির হলুদ শব্দ খেয়ে প্রতিধ্বনি করছিল মুহূর্মুহ


#

চোখের নরম পাতার গভীরে তিরতির করে কেঁপেছিল যুবতী ধানের শীষ

সুরভী ফুলের রেণু গ্রাম , জনপদ ছুঁয়ে উড়তে উড়তে বন্য পাখির মতন নিরুদ্দেশ

আমি আর তুমি এক লহমায় পান করেছিলাম এক বাটি তরল অরণ্য  ।


#

বয়সের নদীতে ঝাঁপ দেয় জবাফুলের মতো রঙিন পলকা বাতাস

ঝাউপাতা মেখে ডুব দিয়ে উঠতেই গোটা শরীরে সঞ্চয়িতার সাদা সাদা জ্যোৎস্নায় প্লাবিত

গঞ্জের হাটের মতো নক্ষত্র গুলো বেচে আনাজপাতি , নৌকো


#

সেই নৌকার ভেলায় ভেসে প্রেমিক চাষাপড়ে সহজ পাঠ

চোখ খুলে দ্যাখি , প্রেমগুলো অবাধে সুরের ঘন আলোয় গীতবিতানের পৃষ্ঠায়

চলো রাই , ছাতিমতলায় বাঁশি বাজিয়ে তৈরি করি আবার একটা শান্তিনিকেতন ।









সোমবার, ৪ জুন, ২০১৮

কৃষ্ণেন্দু দাস ঠাকুরের কবিতা।


ভিন্নধর্মী চিন্তনে প্রেমালাপ আঙ্গিকে কলম।


১. গজানো সে প্রথম মুকুলে
কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর

খোলা লোমশ বুকের উপর বর্ণপরিচয়
কালারফুল জার্নির লং এপিসোড
মাথার মধ্যে গজানো বটের ঝুড়ি ক্রমশ
চোখের ঢাকনা খুলে নিন্মগামী
ভিক্টোরিয়ায় হাওয়া খেতে গিয়ে--
কমলালেবুর কোঁয়া চুষে ফেলার দিন শেষ
দুটো নরম তুলতুলে বেড়ালছানা,হাওয়ার মধ্যে ঢুকে---
হাত...।বুকের...।মুখে...
ঘড়ির কাঁটাটা বড্ড দ্রুত ঘুড়ছে
নিস্তব্ধ চারপাশ।সারা ঘরে লু খেলা করে
একটা...একটা...একটা।না...আর না...।ব্যাস

আজ আর সন্ধ্যে নই।...রাত
এক গাছের শিকড় আর একটা শিকড়ের
ভেতর ক্রমশ চালান হয়ে যাচ্ছে
ঢুকে যাচ্ছে মাটির গভীর থেকে গভীরে রাত বাড়ছে

হঠাৎ বাঁধ ভাঙা তীব্র জলোচ্ছ্বাসে বিছানা...

                     ----০০----


২. লালরঙের গুটিটা
কৃষ্ণেন্দু দাসঠাকুর

স্যারের সেই হাতের যাদু
অনায়াসে স্ট্রাইকারকে স্পিন করে
রেডগুটিকে নিজের কোলের কাছে নিয়ে
গর্তের দিকে আস্তে করে ঠেলে দিত

উনার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলাম আমিও
খেলা শিখিয়েছিলেন হাতে ধরে
ঠিক পিছনে দাঁড়াতেন থুতনিটা কাঁধে
পেছনের ঢিবিতে সেটে যেত গোপনীয়তা

সেদিন বোর্ডের কিস্তিমাত করতেই হবে
আমার হাতের উপর স্যারের পুরুষ্টু হাত
অপর হাত একবার আমার চওড়া অংশে
কখনোবা আমার নরম দেহজ সম্পদে
নামছে আবার নিচে; স্যার বোর্ডের সামনে
আমি পিছনে,খেলা চলছে, জিতেও গেছি

এবার মুখোমুখি, হুকে আঁটকে পাখিটা
তিরতির করে কাঁপছে, লাল রঙের সে
দ্বীপ দুটো কালো রঙের পাড়ের সাথে
ঘামে শুষে বের হতে চাই,আজ খোলা আকাশ, নির্বিকার ষোল বছর, শিৎকার

উপরে লোমশ চওড়া বুকের আশ্বাস
নিচের কারখানায় হাপরের ওঠানামা

জয়ন্তী কর্মকারের কবিতা।


সহজ সরল নিরিবিলি দৃষ্টিভঙ্গীর আঙ্গিকে কলম।


 ১) আগমন
________________
এ  শহরে কেউ প্রেম খোঁজে
কেউ খোঁজে চুমু
কেউ খোঁজে গলি -পথ
কেউ শান্তির ঘুমু॥

এ শহরে কেউ ঘুমোয় ফুটপাতে
কেউ বা  চিলেকোঠায়
কেউ ঘুলঘুলি জানলা কোণায়
কেউ পুরোনো দালান আ়ঁকড়ায়॥

এ শহরে কেউ  ব্ল্যাকপোষ্ট হয়
কেউ হয় মাটির হাঁড়ি
কেউ অনাথ শিশুর হাতের পাউরুটি
কেউ বা হয় নোংরা জলে ভরে যাওয়া ওই ধর্ষিতাদের বাড়ি ॥

এ শহরে কেউ বৃষ্টি  ভেজে
কেউ ভেজে রক্তে
কেউ চোখের জলে ভেজে
কেউ ঘামের লবনাক্তে॥

এ শহরে কেউ পেতে আসে
কেউ বিনা মানে
এ শহরে কেউ হারিয়ে আসে
কেউ ভিটের টানে॥
                           


২) রক্ষীতার কুঠুরি
______________________
এই ছেলেটা,
প্রতিশোধের খেলায় মেতেছিস যে,
আর তো মাত্র দু'দিন ,
সেই তো ফিরবি -পুরোনো ডেরা
পুরোনো কাঁচের বাসন
ছেঁড়া চেয়ারে বসা হেলানো বারান্দার স্মৃতিতে
যেখানে অমলিন হয়ে আছে
তোদের হাসি কান্নার কুচো স্মৃতি
প্রতিটি দরজার পাশে।
এই ছেলেটা,
হিংসায় বুক ভরেছিস যে,
সেই তো সোহাগ করবি -টান টান করা বিছানায়
খোলা মাঠের বুক ভর্তি ঘাসে
এলিয়ে দেওয়া একফালি কাঁধের ওপর ভর করে
ফিরবি যখন নামহীন বাড়িটাতে।
এই ছেলেটা ,
আজ মুখ ঘুরিয়েছিস যে,
সেই তো মুখ লুকোবি -ওই আঁচলেই
খুঁজবি নতুন সুখ
বাড়ির পুরোনো ব‌উটিকে ফেলে আসবি
পুরোনো আসবাবদের সাথে।
সেই তো পুরোনো প্রেম
আবার নতুন হবে কোনো এক ভবিষ্যতের রাতে।
তবে কেন মিছে প্রতিশোধ নামক অভিমান?
তবে কেন অভিমান ,নাম বদলে আজ হিংসা?
কেন তবে মঞ্চে নতুন নাটকের অভিনয়?
রক্ষীতার কুঠুরি যে আজ‌ও খোলা -
তোর অপেক্ষায়।


রবিবার, ৩ জুন, ২০১৮

জয়জিৎ রীতের কবিতা।



মানুষের জীবদ্দশায় উঠানামার চিত্র পরিস্ফুটের

আঙ্গিকে কলম।



১. ●প্রলাপ পরবর্তী●

তারপর মনের অতল গহ্বর থেকে

এক একটা পর্ব ভুস ভুসিয়ে প্যারাসুট এর মতো,
ঊর্ধগামী হয় ভিন্ন স্বাদের আকাশ ছুঁতে--

জায়গায় জায়গায় নিরবিচ্ছিন্ন কোরক ছাতা বাধ সাধে
ছোট ছোট সাইক্লোন পথ দেয় ঘুরের পদক্ষেপে....
জেগে ওঠে প্রেম উথলানো উত্তেজিত ভোর

টাল মাটাল হয়ে মেখে নেয় অন্তিম দিনের সুখ ।
ত্রস্ত তাপের বাষ্প মাখা মুখমন্ডল

ছায়ার রুমাল ভিড়তেই ছিট ছিট বৃষ্টির আলিঙ্গন--
শব্দ বাজির মতো ধেয়ে আসা ঘুষঘুষে ,
হাওয়ার মতো বৈকালিক তোতা পাখিগুলো

আল পটকা আলাপে জমিয়ে দেয় সন্ধিক্ষন।

এবং সে আসে ঝগড়া র অভিরুচিতে
সাজানো গোছানো মাপা নিয়ন সংসারে .....
ছলকা ছলকা প্রহর এগিয়ে চলে ,

ডামাডোলের দাম্পত্য রোলার কোস্টারে ।
সুরা ছড়ানো গন্ধ স্বস্তি জুগায়
আটলান্টিক ধোঁয়া ওঠা চায়ের ভারে,

আরেকটা নতুন আগ্রহ জাগানো উদ্দীপক...
বেদনা কমানোর ক্যাপসুলে ফেটে যায়
তিতকুটে চিনির প্রলেপ মায়ায়।




২. ●হাতছানি●


বাড়িয়ে দেওয়া হাত দুখানে অনেক খানি টান যে আছে
অসীম তার দেওয়া নেওয়ায় পেরোতে হবে বাঁধার ডোর,
কমলা ওই পথ যে গেছে এঁকেবেঁকে নদীর ধারে

ঝাউ বনের সাথে সাথে বাতাস খেলে পাগল বশে
অজুহাতের মন্দ বাসায় মদন দেবের আ ড় চোখ,
ফুলের বানে নতুন সুরে বাঁধবে মন সোনার তারে।
রাধাচূড়া র কৃষ্ণ সুখ রঙের মায়ায় জাগায় প্রভা
সুবাসিত ধূপের ছা ই  রসকলি আঁকে তাই,

বাঁকের ধারে চিরতরে ঘনীভূত সুখের পারদ---

নিম্নগামী শীতলতা নতুন করে মাপতে শেখায়
ডুপসাঁতরে রূপনগর খুঁজে পেতে ভাবনা কিসে?

একতারাতে বাঁধন যখন সুরে সুরে একাত্মতার

খড়ের বিছানা নিবিড় তাঁবুর রাত
শিহরণে উন্মাদনা সৃষ্টি সুখের আসন্নতায়,

কুলকুল ঝর্না বয়ে ধুইয়ে দেয় মলিনতা
প্রাত্কালীন ভ্রমণেই গজিয়ে যাক ভালোবাসা।




৩. ●ক্রস ওয়ার্ড পাজল●


ঘুম এলেই

অবচেতন মনে তারা হানা দেয়,
জঙ্গল-রাস্তা-পাহাড়!

আর একটা প্রতিশ্রুতির রোদ চিঠি আসে বৃষ্টি আর ছায়া নিয়ে,

দাবিটা কি? কিছু নতুন আবিষ্কার না নোনতা বিস্ফোরণ।

গুটি গুটি ছাপ ফেলে এগিয়ে আসে বরফের কুঁচি গুলো
স্পর্ধার হাসিতে খানিক হুল্লোড় ওঠে,

মিলিটারি মার্চের নীরব অবিরাম গতিতে।

তারপর কি আবার গভীর বিশ্রাম ঘুমের উপত্যকায়?
মুঠো মুঠো তুলো ওড়ে,

জলগর্ভ মেঘ ছুঁয়ে যায় -

সৌভাগ্য অঙ্কিত হয় গুপ্তধনের বাক্সে ।
খাগের পাতায় কোমল আঙুলে

কেউ রঙিন করে চলে ক্ষীপ্ত গতিতে,

জুঁই ফুল গন্ধে  পরম্পরা এলোমেলো হয় ।

এক মিষ্টি নদীর শীতল গল্পে,

ধরফর করে উঠে বসে,

বিচ্ছিন্ন ভাবনার ক্রস ওয়ার্ড পাজল নিয়ে।







দয়াময় পোদ্দারের কবিতা।



দীঘা ভ্রমণ

অবিরাম ঝিরঝিরে বৃষ্টি মেখে সমুদ্র উথাল
নিগূঢ় শ্রাবণে একলাটি অভিঘাতে ভাঙে ঢেউ !
কুটির বানাবে বলে চাষী কেটে নিযে় গেছে কাশ
ঝাউবনে রুপালি বেদনার ঝিলিক ঝরে পডে়
হলদি পাতারা-আরও সবুজ হয় গুঢ়তর,
ঋতুস্নান শেষে সমুদ্র থেকে উঠে আসছো -তুমি,
মীনরাশির জাতক | কামনার হিন্দোল দোলানো
সুবাতাসে, বুকের প্রস্রবনে জাগা আলোঝুরি
দুই হাতে তুলে নিতে থাকি-ভ্রমনের উষ্ণতাপ,
সুখ-বৃষ্টিতে ভরাট ঠোঁট আহ্বানে ঈষৎ ফাঁকা
লালকাঁকডা়র অভিসারে এইমন প্রজাপতি-
তাকে ঠোঁটে বসতে দিযে়ছো তুমি বিনীত প্রশ্রযে়,
সমুদ্রের ঢেউ এসে ভিজিযে় দিযে়ছে আলিঙ্গন
ভিজবো বলেই এ ভ্রমণ ডুবুরির বাসনায়

দুখানি তুলতুলে চান্দসা পিঠের ভিতরে সঁপে
দেওযা় বালিযা়রি খুঁডি় - উত্তাল সংকেত লেখায়....
শুক্তো কনিকা জমে মুক্তোটি - ঝিনুক ফেরায় সত্য
এখানে মরতে পারি আমি, কোথাও যাবনা, আর
একবার মরে যাওযা়য় জানি, কোন সুখ নাই
তাই প্রতিদিন তিলবর্ণ , তিলবর্ণ ভালোবাসি !


অর্ক বন্দোপাধ্যায়ের কবিতা।



ইচ্ছে

অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়

পথের পাশে ওভাবে দাঁড়িয়ে থেকো না পথিক,
দুই পাড় ভারসাম্যে, নাসাগ্র সোজা রেখে
এগিয়ে আসো...
প্রয়োজনে তৃষ্ণার্ত কাকের মতো ঝগড়া করো
তবু তুমি চুপ থেকো না, তোমার নিরবতা
অবসাদের আঁশটে গন্ধ বয়ে আনে।

হাত তোলো। উঠে বল, বটবৃক্ষের ছায়া
আমি ফেরত চাই। ফেরত চাই
হাটের সন্ধ্যা, তার পরে মুছে যাওয়া গ্রাম...

নাগরিক অসভ্যতার মেদ চিরে বের হয়ে এসো
হুঙ্কারে বল, আমি স্তম্ভ জাত!
নখরে চিরে ফেল অশুভের পেট।

ভৈরবীর রক্তাভ চোখের মতো লাল
আকাশের কোন ছিনিয়ে এনো কালের
পাত্র থেকে

তোমার সুদীর্ঘ ইতিহাস ভুলে যেও না।
ইচ্ছের গোড়ায় জল দাও, রোদ দাও
রাতে দাও স্বপ্নিল চাঁদের আলো।


তাপস দাসের কবিতা।



সহজিয়া প্রেমের নাব্যতা আঙ্গিকে শৈশব মনের প্রেম।

১. তুমি স্পর্শে।

যখন ঠোঁটের পাশে ঝুমকো বাড়ি
আমি তোমায় চিনতে পারি

বাড়ি গড়িয়ে আবার পাড়া
কুচকুচে চুল স্রোত পাহারা
   আমি তখন বসতে পারি।

বসার পরেও বিশাল মাঠে
আয়না রোদের গল্পে হাটে
তোমার হাসি, বুঝতে পারি।

সবুজ ঘাসে  ছড়িয়ে আছ স্পর্শ নিয়ে
সুড়সুড়ি হই, ইচ্ছে করে এবার শুয়ে...

শূন্য মাঠে শব্দ তুলে নাবিক হব
হাটাচলা আর আর না এবার শোব....



২. নিন্দুক।

তোমাকে বুকে তুলে অতিকায় আকাশের দিকে
তাকাবো , নয়তো একটুকরো ভাঙা কাচ গিলে খাব---

অনেকেই সমীহ করে প্রেমিকার উরুর দিকে তাকিয়ে থাকাটাকে, কিন্তু নষ্ট হওয়া ভেবে
চাদর পড়ে নেয় স্নানের পরে, ওরা ভালোই বাসেনা লাফিয়ে পরার শৃঙ্খলাকে
ঝুলিয়ে দেয় সচক্ষে দেখার বারান্দায়।

লজ্জা সেভাবে আসে না
কাতর চোখে তাকিয়ে থেকে ক্রমশ রোগা হয়ে যায় তারা। হোক, আমরা ভালোবাসই
ঢিলে পোশাক পরে।


শৌনক দত্তের কবিতা।



অজ্ঞাতপরিচয় প্রেম ঠিকানা নিরুদ্দেশ আঙ্গিকে কলম।


১. প্রেমের স্বাদ।


নাগরিক নদীদের রাত ফিরে আসে, ঢেকে দেয় বিষন্ন স্থাপত্য।মহাকাশের মধ্যে, আমরা এখনো জড়াজড়ি করেই আছি,বন্ধী গাছ শ্বাস নেয়। আমাদের শরীর ঢেকে থাকে অক্ষরলতার শব্দে। আমি তোর চোখের ভিতর হারিয়ে যাই,হারিয়ে গিয়ে দেখি,তুই আমার ভেতর চোখে। পুড়ে যায় আমাদের নাম,উড়ে যায় শরীর।
শুধু চৌম্বকীয় কেন্দ্রের মধ্যে –

আমার স্পর্শ আর কথা দিয়ে তোর শরীরে আমি লিখে রাখি দুনিয়ার ধর্মশাস্ত্র। নামহীন জ্ঞান : প্রেমের স্বাদ।



২. তোমার মাঝে আমি বৃষ্টিগাছ....

তোমার কণ্ঠে বেজে ওঠে বৃষ্টিগাছের সমূহ উচ্ছ্বাস,ষ্টেশনবেলার দুপুর
রেলগাড়ির ব্যস্ত মৌ-মাছির গুঞ্জন!
হালকা নীল আকাশ বুকে, গ্রামীণ ডাকপিওনের গেয়ে-ওঠা টেলিগ্রাম হাত,ডাকবাক্সের ওপর ঝুঁকে কথা বলে,
আর ওই ওখানে, দুটো মরা গাছের সবুজ মৃত্যুর মাঝখানে, নিঃশব্দে হেঁটে যায় ভোর।

আমার  নাগরিক রোদ নেই, নেই কান্না,
নেই কোনো তীক্ষ্ণ অভিপ্রায় অথবা বিশুদ্ধ চাওয়া ,
ঠোঁট নেই,ভেঁপু নেই, আছে শুধু হাতে লেখা চিঠির ঝিরঝিরে কথা। আমার
আছ নিখুঁত তুমি, তোমার সিঁড়ি,স্নানঘরের গান, তোমার মৃদু, চঞ্চল চাউনি,
রোপন, সেলাই,তুমির মাঝে আমি, যখন তুমি নেই পাশে, এখানে তখন হাফলং স্তব্ধতা নেমে আসে।


জীবনদীপ বৈঠার কবিতা।



উড়ো প্রেমের চিঠির প্রেক্ষাপটে কলম।


১. ###__প্রেম_টান__###


      সকরুণ জিজ্ঞাস্য!

  মায়াময় যন্ত্রনার বিভূতি,

  মরীচিকার মাঝে বিচিত্র সাজে

           রূপসী কন্যা তুমি।

  পতঙ্গ উড়ুক তোমার সূক্ষ্ম চুলে।


  পদানত গ্রীষ্ম,আকাশমন্ডলে সাদাফুল;

  হৃদয়কমলে গোলাপ ছড়ানো মন্দাকিনী,

  সমীকরনে অসম্ভব খেলা-

      প্রতিযোগী দুই জোড়া চোখ।

  ঢুলু ঢুলু শরীর অমায়িক প্রেমে মত্ত!

  ধূমকেতু ছোটে সুন্দরের খোঁজে।



  লোকান্তরে তুমি আর অসম্ভব মুহূর্ত,

  দূরন্ত মেয়ের মতো প্রেম সাঁতার,

  চারদিক গোলাপ গাঁথা;

  টোপর মাথায় নিশানা-বিয়ে।

  সহস্র শতাব্দী ধরে পরিচিত তুমি....

______________________________



২. ••••• আন্ִফর্ִচুনেট্ִলি ••••

         
অনির্বাচিত সংলাপ,

 তুই, আমি এবং মালদা,

 কতকটা শূন্যস্থান…

 তারপর, পরিমার্জিত অস্ফুটতা…

 বিকেলের ঘাড়ে চেপেই ফেরৎ-

    তোর স্মৃতিমাখা কোলে.…


 ডাকছে তোর বন্ধুসংকলন-

 রেল গেট, ইউনিভার্সিটি, জার্নালিসম চ্যাপ্টার,

  ফুট্ִবল ময়দান, কিছু দৌড়, আর কিছু ফুট্ִপাত…

 লাইব্রেরী খুলছে গোপনীয়তা;

 বাঁধের ধার ঘেঁষে লেগে আছে-

  তোর চুম্বন মাখা প্রোপোজাল ডি-অ্যাক্ִটিভ।

 ___________________________________





শঙ্খচূড় ইমামের গুচ্ছ কবিতা।



Shortcut love theory আঙ্গিকে কলম।


১. যন্ত্রণা।


দৃশ্যের কথাই ধরো—

লুপ্ত উদ্ভিদের পাতাজ্বর

জামার ভেতর থেকে

এখনো আছে দীর্ঘ


পাশফেরা বোতাম

মনোহর পুরুষপাখির মতোন

চোখ রাখে গমে

যারা কেবল ব্যবহৃত

তবু তারা প্রতিনিয়ত বহন করছে

দৃশ্যের ভেতর দৃশ্য

.....................................


২. বিয়োগ।


দিন-রাতের মিলনের মাঝে

আমরা একসঙ্গে দেখেছিলাম—

একজোড়া পানকৌড়ি

জলের বিছানা ছেড়ে

পৃথকভাবে উড়ে যাচ্ছে

দুই দিকে

...................................


৩. আকুল আবেদন।


ব্যস্ত ভূগোল থেকে কি এনেছো?

ক্ষুধায় ক্ষুধায় আমার কলমটি

অনেকদিন নড়ছে না

অন্তত একটি রাতের সাদা পৃষ্ঠা দাও

লিখে দেই দু’চারটি

ম্যাচবাক্সের কাঠিগল্প

.................................


৪. বঞ্চিত।


তোমার সোনালী ব্লাউজ

আমার রাষ্ট্র

অথচ দ্যাখো—

সেই রাষ্ট্র থেকে আমি

কতটা দূরে


স্বাধীনতা এতটা নির্মম!

...................................




৫. গল্পেরা।


তারপর রঙবাহক

নদী রেখে অবশিষ্ট চিৎকারে

ফেঁসে গেছে পরিযায়ী মোমে


আকাশমুখী আপেল

সেও এক দ্বি-দেশ

আমাদের গল্পেরা

এসব লুফতে গিয়ে

ভুল করে ভেঙে ফেলে

সাঁকো

...............................


কুহেলী কর্মকারের কবিতা।



বন্য পাশবিক প্রেমের হুঙ্কার আঙ্গিকে কলম।


#রূক্ষ_বসন্ত

ঘুনধরা রাতে ভাবতে চাইনা আর তোকে...
শব্দের চোরাগলি বেয়ে কুকুরের ডাক,
বিভীষিকা জ্বলে তরঙ্গ মেলে
আমার নখের ডগায় চিড় ধরে ঘুম।
একটা নিটোল বুকে ঠাঁই গেঁড়ে সুখ, আবেগের ধূলীখেলা চিকন আঁখিতে।
তুই বুঝি তুই নস, সাঁঝের বেলায় শুকতারা যেনো... যে কোণে পাশ সুখ ছুটে চলে যাস,
নুনের স্বাদ ভুলিস মিষ্টি গুড়ের পাকে।
একদিন গায়ে মেখে আলকাতরার রঙ,
পিচ ঢালা রাস্তায় মিশে যাবো অবয়ব ছেড়ে।
অগোছালো একলা নীড় ভেঙে বহুতল তুলে, উঁচু থেকে থুথু ছুড়ে জিভ ভ্যাঙাবো....


হাজার চেনার ভিড়ে খুঁজছি যে কাকে...
হাতড়ে বেড়িয়ে বুক পেলাম এক অচেনা নিজেকে।
কূলহীন-জাতহীন এক স্থূল কায়া,
শরীরের আহ্বানে হিংস্র হায়না যেন...
ভাঙা আয়নাময় হানা দিয়ে বেড়ায়, লালচে চোখের এক অমানব কোনো।
নীলচে রঙের আলো দিগন্ত পেরিয়ে ফুরোয়, সাগরের অতলে তলিয়েছি গভীর কালোয়।
পৃথিবীর বুকে গহ্বর খুঁড়ে লাভা,
তোকে ভাসিয়েছি তাতে এখন তপ্ত দুহাত।
সুপ্ত অধিকার জেনো আমারও আছে,
বিলীন করতে তোকে এক ফুয়ে এ বুকের ওম্ ও বুকেও যে ঠেকে।


নিশি শিশির ভেজা আঁখি মেলে,
রূক্ষ ঠোঁটের গোড়ায় কুয়াশা নামে নরম।
বুড়ো আঙ্গুলের ডগায় ওদের একচেটিয়া অধিকার যত, আমায় পাইনি ছুঁতে আক্ষেপ তত।
সত্ত্বা বিকোয় নি সস্তা দোকানে,
তাই চূড়া হতে দিয়েছি ঝাঁপ তবু ভাঙেনি যে বুক, শ্বাস ভরে একগাল ডুব দিয়েছি যাযাবরের এঁটো ঠোঁটে, তবু বাসী হয়নি যে সুখ।
চাইনা মুক্ত হতে ঝিনুকে বন্দি হয়ে,
ধূলোকণা হয়ে আমি এই বেশ ভালো আছি। পাঁকের পদ্ম হয়ে ওরাই ফুটে উঠুক....



অর্ঘ্যদীপ পানিগ্রাহীর কবিতা।



মন বিভাজিকা

-------------------

দলছুট মুক্ত শীতের শিশির ভেজা উত্তুরে আবেশ,

দীর্ঘশ্বাসের আড়ালে মৌনতা মাখানো সুশীতল স্মৃতি..

ধীরে ধীরে আলমারির বুক ভেদে সেই এক গন্ধ,

ঘিরে ফেলল আমার শরীরের প্রতি প্রান্ত

এ যেন কল্পনাপ্রবন যৌনতা..

কিংকর্তব্যবিমূঢ়,

তোমার শরীরের গুপ্ত তিলেরা অমানিশার সবটুকু পর্দা সরিয়ে ,

উন্মাদনায় মাতিয়ে দিয়ে গেল আর একবার

আমি ঘামছি বরফের ন্যায় বাতানুকুল কামরায়,

আরও কাছে , অনুভব করছি স্পষ্ট ..

পথ বদলানো নদীর বুক বেয়ে আবার অসম্পৃক্ত অদম্য যৌবন ধারা,

ক্লিভেজ ছুঁয়ে ফের বাষ্পীভূত আমার কামনারা,

অনেক দিনের না দেখা শরীরটা ঠিক একই রয়ে গেছে,

শুধু বদলেছে চাওয়া পাওয়ার ইচ্ছেগুলো,

দূরে থেকে ওরাও বাড়িয়েছে ভালবাসার মূল্য-

নতুনত্বের ধরা ছোঁয়ার আকাশ ছুঁয়ে..

আবিষ্ট হলাম

পালাতে চাইছি , আরও দূরে নীহারিকার দুর্লভ প্রান্তরে,

পারছি না এ বাঁধন, সমস্ত শক্তিরা অসাঢ়

ততক্ষণে দৃষ্টি আরও নীচে ..

নিঃস্তব্ধ নাভির পাড় কুন্ডলীর অভ্যন্তরে চূর্ণ হয়েই চলল ,

কামের দুর্বোধ্য ঢেউ একে একে,

পালাতে চাইছি এসব ছেড়ে ,আবার এক ভুলে.. না,
পারছি না কেমন যেন কামাক্ত নাগপাশে..,

আরও নামছি তলপেট, নিতম্ব অযৌক্তিক চিন্তার আদলে,

ছুঁয়ে দিলাম, তুমি লেপটে গেছ আমার অন্তর জুড়ে,
গ্রাস করলে আমায়, আর আমিও বাকি পুরুষের ন্যায় আমার অধিকারের বীজ বপন করে গেলাম- তোমার উষর প্রানের বুকে,

বোটকা গন্ধ এতক্ষণে আমাদের ছাড়িয়ে, ল্যাম্পপোস্টের মৃদু আলোর জোনাকির ঠেকে, কিছু গুপ্ত বীজ উপড়ে নিল পথ ঘাটের স্বচ্ছল লোক-কথা,

একা হয়ে গেলাম আমরা.. বড্ড একা,

পালাতে চাইছি, আবার পারছি না..

উন্মুক্ত কড়িকাঠ l সফেদ আভরণ l চার কাঁধের স্বর্গরথ l থেমে গেছি আমরা লাখ টাকার মূল্যবোধে,

ন্যায় বিচারে দাঁড়িপাল্লার জোর তো স্নায়ুর মত প্রাপ্ত নয়..!

কবর l একরাশ সুখ l উফঃ ঘুমটা আবার ভেঙে গেল,

সেই এক গন্ধ আমি পালাতে চাইছি সব ছেড়ে- মেঘেদের অচিনপুরে,
পারছি না..

আলমারিতে তোমার স্মৃতিরা আজও আমার শরীর আসবাবে-

মৃগনাভির ন্যায় সে গন্ধ, আমি পারছি না.. ক্লান্ত..


--------------------------------------