মধুযামিনীর নিশিছন্দে অপ্সরা রাগিনীর কলম।
১. মোনোলগ।
---------------
রাতগুলো আজকাল বড় পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে ধরে আমায়, ওর সর্পিল হড়হড়ে শরীরের ভেতর যে বিষ-দাঁত লোকানো আছে তার দাগ ফুটে ওঠে ভয়ার্ত চাদরে।
জটপাকানো সেরিব্রামের গা থেকে বেরিয়ে আসা লিকলিকে হাত পা গুলো আমার স্বপ্নের গলা টিপে ধরার আগেই আমি খুব সাবধানে ওর তেল চকচকে ন্যাড়া মাথাটা বের করে এনে ঘুমের পাশে রেখে দিই রোজ, তারপর আটপৌরে ধামসানো মোচড়ানো পাঁজরের রাত্রিবাস পরে নিশ্চিন্তে মিশে যাই তোমার নিরুদ্দেশ গন্ধের সাথে।
:
ঘুম গাঢ হয়ে যখন মৃত্যুর মন্ত্রপাঠ করে তখন তুমি চুপটি করে বাধ্য শিশুর মতো আমার কোলে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ো ধ্যানমগ্ন সমর্পণে।
আমার চারপাশে আরোহণ জেগে ওঠে..
সেই উত্তরণে নি:শব্দে খুব সাবধানে পা টিপে টিপে শহর থেকে বহু বহুদূরে এক প্রত্যন্ত গভীর জঙ্গলে সবার চোখ এড়িয়ে আমি ফেলে আসি তোমার বাসি খোলশখানা।
:
স্বপ্নের প্রজননী রন্ধ্রে এভাবেই লেগে থাকে তোমার নিরন্তর জন্মকথা ...
---------------------
২. অকাল- বর্ষণ।
--------------------
বৃষ্টির গন্ধ ভেসে এলেই, কস্তুরী মৃগের মত মেঘের পালক হাতড়াই
বাতাসের গায়ে লেগে থাকা বারুদের দাগ রগড়ে তুলে দিতে ইচ্ছে করে, দু-হাত শূন্যে তুলে চাতকের মত ছুঁয়ে নিতে চাই নেশাতুর প্রেম..
:
আচমকা অনুভব করি বুকের অলিন্দের বাঁকানো পথটা তোমার পায়ের জলছাপে ভরে গেছে...
নিলয়ের আগুন আছড়ে পড়লে আলপনার শরীর জুড়ে শুধু সর্পিল ধোঁয়া
চোখের কোটোরে ততক্ষণে ফণা তুলেছে শ্রাবণ
:
এমন বাষ্পীয় সুখে তুমিময় হয়ে থাকার নামই কি তবে অকাল-বর্ষণ?
৩. এক-পশলা...
------------------
রেললাইনের সরে যাওয়া হাতদুটোর মুঠোয় ভরাট জল..
মাঝের পথটুকু বড় ধুলোময়, বিস্বাদ, নুনে-পোড়া
ভেজা আঁচলে সদ্য-স্নাত জোছনা, চাঁদের শরীর আমার বিছানায়..
রাত বাড়লেই জানলায় রেখে যেও গোপন ডাক
ঠোঁটের কোষে আসন্ন বিভাজন
গর্ভবতী মেঘের দশমাস দশদিন পার হলে, বৃষ্টির আলনায় পরিপাটি সাজিয়ে দিও বাঁধভাঙা চুমুর অনুরণিত আকাশ
:
ধুয়ে যাক, ধুয়ে যাক.....
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন