মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০১৯

পল্লব রায়

রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



কা‌লো সূ‌র্যের দিন

পল্লব রায়

বেদরদি গ্রী‌ষ্মের দাবদা‌হে পুড়‌তে পুড়‌তে
আজ এ হৃদয় এতটাই মরুময় হ‌য়ে গে‌ছে
‌যেন বু‌কের উপর দি‌য়ে এক‌শো একটা নীল নদ ব‌য়ে গে‌লেও
আমার একটুও তৃষ্ণা মিট‌বে না ,
সাত‌টি আকাশ বৃ‌ষ্টি উপুড় ক‌রে ঢে‌লে দি‌লেও
আ‌মি এক চুমু‌কে সাবাড় ক‌রে নেব ন‌স্যি প্রমাণ!
‌কিছু‌তেও বু‌কের পাষাণ গল‌বে না,
ওঙ্কা‌রে মাথা তুল‌বে না এক‌টিও শস্যের অঙ্কুর!

আমার হৃৎ‌পিণ্ড জ্বলে ও‌ঠে দাউদাউ ক‌রে
যখন দে‌খি
এক মহাকা‌ল বিষা‌দের চিতায় চিৎ হ‌য়ে উলঙ্গ শু‌য়ে আ‌ছে মানু‌ষের সভ্যতা !
স্বপ্নহীন, প্রশ্রয়হারা দুটি চো‌খ
অসহা‌য়ের ম‌তো জ‌লের দাবান‌লে পু‌ড়ে পু‌ড়ে ছাই-ভস্ম হ‌য়ে উ‌ড়ে যায়!
অনন্ত অন্ধকার থে‌কে ধে‌য়ে আসা এক দমকা বাতা‌স
আচমকা নি‌ভি‌য়ে দেয় সুখবা‌তি,
আ‌মি মু‌ঠোয় চে‌পে ধ‌রি বি‌ম্বিশার ধূসর আঁচল!

আমার শিরদাঁড়া বে‌য়ে ব্রহ্মতালু‌তে উ‌ঠে আ‌সে দুঃসময়ের বিষ
মৃত্যু আমার উশকো-খুশকো চু‌লে সান্ত্বনার আঙুল খেলায়,
‌প্রণ‌য়ের বিছানায় জ‌মে ও‌ঠে বির‌হের কানামা‌ছি
সু‌খের না‌মে এই  প্রশস্ত বু‌কের ক‌ফি‌নে জ‌ড়ো হয় ভ্রূণ হত্যার দায়!
আ‌মি অ‌ক্লে‌শে হে‌সে উ‌ঠি
যখন দে‌খি
ঈশ্বরও প্রার্থনার অজুহা‌তে মানু‌ষের ম‌তো
রাত এ‌লেই বিশ্বা‌সের পিদিম নি‌ভি‌য়ে পাগ‌লের ম‌তো গ‌ণিকাল‌য়ে ছু‌টে যায়!

‌অথচ তু‌মি বল‌ছো ভা‌লোবাসা, তুমুল ভা‌লোবাসা চাই
হাসনা ফু‌লের গ‌ন্ধে শঙ্খ লাগা যুগল সা‌পের ম‌তো বেপ‌রোয়া ভা‌লোবাসা!
জীব‌নের মরুকা‌বেলায় মিল‌নের শ্রমজ‌লে নবা‌ন্নের আঘ্রাণ রচনা
বড্ডবে‌শি দুঃস্ব‌প্নের ম‌তো ম‌নে হয়!

‌প্রিয়তমা,
তোমার বু‌কের গন্ধমাদনে আ‌ছে কি এমন কো‌নো বিশল্যকরণী
যা খে‌লে ভা‌লোবাসার তৃষ্ণায় জর্জ‌রিত আমার আসমুদ্র হিমাচল
আবার সবুজ হ‌য়ে ও‌ঠে ফু‌লে ফস‌লে
অথবা আমার বিশ্বাসী হৃদয় দুই‌ঞ্চি নির্ভরতার উর্বর মা‌টি পায়
তার দু‌টি পা‌য়ের তলায়?
এখন কা‌লো সূ‌র্যের আ‌লোয় ফো‌টে নতুন সকাল
সম‌য়ের গর্ভবতী কলম
আমার মৃত্যুর চিরকুট লি‌খে দেয় রক্তশূন্য কৃষ্ণচূড়ায়
আর আমার শরী‌রের ভা‌ঁজে ভা‌ঁজে জন্ম নেওয়া স্ব‌প্নের শাখা-প্রশাখায়!

পলাশ মজুমদার


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



ওহ্ পুরুষ

পলাশ মজুমদার

ওহ্ পুরুষ, তোমাকে ডাকছি, এসো
আমাকে সম্পূর্ণ নিরাভরণ করো,
শুইয়ে দাও সবুজ নরম ঘাসের উপর!

ভয় পেয়ো না, এসো
দেখে নাও কোথায় কতটা গভীর, কতটা সমান্তরাল, কতটা বন্ধুর এ ভূমি!
গোপন কালো তিল, ঊরুর দিকটায় নির্বাক জন্মদাগ ইত্যাদি দেখে নাও সব!

এসো, ঠোঁটে ঠোঁট রাখো আমার। কামড়ে ধরো অনুত্তরে।
চমকে উঠলে!

শীতল দুই ঠোঁট থেকে নেমে যাচ্ছে দুটো বিষধর সাপ
মুখ থেকে গড়িয়ে পড়ছে ভয়াল মূর্তি কালিদহ
স্তন দুটো ক্রমশ পাহাড় হয়ে যাচ্ছে
নাভিদেশে জেগে উঠছে নবজাতক সূর্য
যোনিগর্ভে আশ্রিতা চাঁদ ক্রমশ আন্দোলিত হচ্ছে নষ্ট উল্লাসে

ভয় পেয়ো না, এসো
আনাচ কানাচ তন্নতন্ন করে লুফে নাও অনাদায়ী সুখ। বীরভোগ্যা বসুধার বুকে শৌর্যের দামামা বাজাও।
নিজ হাতে এঁকে দাও সৃষ্টির বোধন!

যদি না পারো,
আমার স্তন থেকে চুষে নাও অনিঃশেষ বাৎসল্য। তোমার নিঃসঙ্গ কান্না আমাকে যেন ' মা...মা ' বলে ডাকে !

---------------------------------

মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০১৯

সোমাশ্রী সাহা


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----

(১)   আয়নায় চিবুকের হরিৎ শোভা

সোমাশ্রী সাহা

 
এই দ্যাখো , আমি আবার রঙিন হয়েছি
তোমার দেয়া সব রং ধারণ করে
সমগ্র শরীরে ঠিকরে বেরুচ্ছে সৌন্দর্য
আর প্রতিটি অঙ্গে ছড়িয়ে নিয়েছি লাল আবীর

##
দ্যাখো আমার কপালের রক্তিম আলপনা
অধরের গোলাপী আয়নায় চিবুকের হরিৎ শোভা

##
এই যে পাগল হিয়ার উচ্ছ্বাস
প্রসারিত টানটান যুগল বক্ষের অস্থিরতা
রঙিন রসের ধারা গাল বেয়ে নেমে এসেছে বুকের তলদেশ থেকে নাভির খাঁজে ...
##

জানি , এইসব চরম মুহূর্তে অজান্তেই ঘোর সৃষ্টি হয়
তোমার ভেতরে , ঢেউ ও স্রোত পাশাপাশি ধেয়ে আসে ক্রমশ
আমাকে খনন করবে বলে ...
             _____________


(২)ভাঁজ , অপেক্ষা , অতৃপ্ত নদী

দ্যাখো আমার সারা শরীরে অস্থির শিহরণ
রঙিন স্বপ্নগুলিকে বাস্তবের আঙিনায়
নামিয়ে নিয়ে আসবো বলেই তো আজ এখানে উপনীত ...
তোমার স্পর্শে লজ্জা -রাঙা আমার গাল
তোমার স্পর্শে অস্থির এই শরীর
                                        দুমড়ে গেল ...

##

এখন শিরার মধ্যে রক্তের দৌড় -ঝাঁপ
আর অনিয়ন্ত্রিত হৃদস্পন্দন , তোমার অন্দরগুলি
                                              দু-হাতে খামচে ধরেছে

##

এইভাবে হয়তো আরও একটিবার
তোমার স্পর্শের জন্যে আমি ক্ষিপ্র হয়ে উঠছি
সমৃদ্ধ হতে চাইছি , তোমার মাখিয়ে দেয়া
                                           রং ও রসে ...

##

অপেক্ষা করছি , তোমার দেয়া উপহার
আমার এই নদীর মতো দেহে ধারণ করব বলেই তো
                    _____________


                   (৩)আবিষ্কার

আমি স্থির বিশ্বাসে উপনীত হলাম
এই অস্থির আমি তোমার শরীরের প্রত্যেক কোষে
নিজেকে ভেঙেচুরে পুনরায় আবিষ্কার করি
এবং অনুভব করি , তোমার ওই নির্লোম বুকের
বাম পাশটিতে আমার-ই জন্যে জন্ম নেয়া হৃদস্পন্দন

##

এইভাবে খুব যত্ন করে
তোমার প্রত্যেকটি লোমকূপে আমি প্রোথিত হই
প্রতিনিয়তই তোমার আত্মায় খুঁজি , আমার তীব্র- উপস্থিতি

##

এমনই করে তোমার নিঃশ্বাসের ওঠা -নামায়
আমিও ওই আদিগন্ত মাঠটিতে এ-পাশ ও-পাশ করি
প্রতিটি ধাক্কায় মিশে যাই একে -অপরের মধ্যে
                   _____________

বিনায়ক বন্দোপাধ্যায়


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



নীল গ্রহের জ্বলন্ত আগুন

বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।।


এই প্রায়ান্ধকারে বুকে এসো মোর,
ওগো মোর প্রিয়া।
এক এক করে খুলে যাক সব অলংকার, পোশাক তোমার গা থেকে।
সামনে এসে দাঁড়াও, লজ্জায় নয়, লোভে নয়, প্ররোচনায় নয়।
স্বগৌরবে এসে দাঁড়াও আমার সামনে, সম্পূর্ণ নিরাভরণ হয়ে।
দেখতে থাকি তোমায়।
পা থেকে মাথা পর্যন্ত ভালোবাসার চাদরে মুড়ে দিয়ে দেখতে থাকি ওই আজানুলম্বিত কেশবতী কন্যেকে।
দেখছি, পূর্ণিমার রক্তিম আভা এসে পড়ছে তোমার গায়ে, আর সেই আভা মেখে একটু একটু করে পরিবর্তন হচ্ছে তোমার বর্ণ।
ক্রমশই তুমি পরিবর্তিত হতে হতে নীলপরীর রূপ পেয়েছো।
তুমি এখন মানবী নও, আমার নীলপরী।
তোমার ওই পীনোন্নত শৃঙ্গ দুটি অহরহ অর্জুনের গাণ্ডিবের মত নিক্ষেপ করছে কামশেল।
চোখ থেকে  ঝরে পড়ছে
মোহ মায়া , আহ্বানের দুর্নিবার আকর্ষণ,
যোনি দেশ থেকে উষ্ণ প্রস্রবণ।
আর আমি?
আমি  তোমাতে নিমজ্জিত হতে হতে সম্পূর্ণ ভাবে সুখসাগরে প্রবেশ করেছি।
তোমাকেও নিয়ে চলেছি এক অন্য জগতে।
সুখের আবেশে তরলীভূত এক বেহেশতের পরী যেন তুমি।
আমি এখন সম্পূর্ণ নতুন উষ্ণ এক  সর্বগ্রাসী কামনার আগুনে পুড়তে পুড়তে, পোড়াতে পোড়াতে ভেসে যেতে যেতে মেতে উঠেছে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে। নতুন উদ্যমে।
লাল নয়, নীল মঙ্গলে হয়তো।
সেই নীল আগুনে ঝাঁপ দিতে নয়, জ্বলতে ও জ্বালাতে ।
আমাদের এই মিলন কোনো গ্রহে নয়, তোমার আমার বানানো রেশম গুটিতে।

সন্দীপ ভট্টাচার্য


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



তছনছ

        সন্দীপ ভট্টাচার্য

মৎসকন্যার ডুব সাঁতার
হৃৎপিণ্ডের টগবগ খনিজ জলে
একটা নির্ভরতার কাঁধ, হাত মেলায় নিরুত্তাপের সাথে
আর অকস্মাৎ বদলে যায় অধম পায়ের বোকা বোকা হাঁটা
সৃষ্টির প্রথম রাতের চুক্তি মতো
মারণরোগের জীবাণু বেঁচে থাকে হায়রাটিক দুঃখ হয়ে
চোখের কোনে বসে ফিঙেপাখি তখন সমুদ্রপ্রহরী
কলসী ভরা ইউরেনিয়ামে
উষ্ণতা ছোটে বিস্ফোরণের দিকে
রক্ত পোড়ার ক্ষার গন্ধ উগরে দেয়
এক পৃথিবী আগুন জ্বলা শিউলী ফুল।
ঘুমোবার জন্য প্রয়োজন যতটুকু  বুকের কোনা
সেটুকুও ঢেকে দিলে চৈতি বিকেলের মেঘ দিয়ে
আর অগ্নিপরীক্ষার জন্য রেখে গেলে
ছায়াপথ ভরা নক্ষত্র গালিচা
মুছতে চাইলেই যদি মুছে দেওয়া যায় সব দাগ
তবে আরও একবার হিরোশিমা হবো
ফিরে এসো না হয় ঝাঁঝালো অন্ধকার হয়ে

সোমবার, ২২ এপ্রিল, ২০১৯

উজান উপাধ্যায়

রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



বাধক

উজান উপাধ্যায়


রাত্রির চতুর্থ রঙে মুড়ে গেছে প্রিয়ার বিছানা, বেশ কটি স্তরে ওর বিপর্যস্ত স্তন ও আঁচিলহীন দেওয়ালেরা ভেঙে পড়ে আছে। ঠোঁট থেকে ভ্রুভঙ্গী হয়ে টানেলের পিঠ চিরে  অন্ধকার যেভাবে গড়িয়ে গেল, প্রিয়ার চিবুক তার কতটুকু খোঁজ রাখে !

রাত্রি গভীর হলে, চন্দ্রাহত বাদামী জঙ্গলে সুন্দরী তরুণীর মতো, দুরন্ত যুবতি নদী আসা দরকার-
নিশি কুহকের অসান্দ্র্য ডাকে ঢুকে পড়ে যদি!  পাহাড়ের হাঁটু ছুঁয়ে অবলা বিধবার মতো, অসংযত খিদে চুরমার করে খুলে ফেলে বাইরের জামা, ভিজে অন্তর্বাস!

যদিও এখনই তাকে দেখা যাচ্ছে না।

মিষ্টি ঘামের সাথে আরও কত বিচিত্র ওষধি উপোষী পুরোহিতের তলপেটে ঘুরে ফিরে কামুক বিছের মতো ঝাঁপিয়েছে হলদেটে ছোপ পড়া দাঁতে।

প্রিয়াকে ঘুমোতে দেখে খুলে যায় রাত্রির রকমারি ভাঁজ, একটু কুচকুচে ঘন কালো রাত হলে, শয্যায় ক্রুশকাঠ রেখে আমাদের শিকারী হৃদয়, কখনও যে বিকল্প শৈশবের সাদামাটা ছাপ এনে বিছানার প্রতিটি কোণায় রুদ্ধশ্বাস সরীসৃপ-পরিত্রাণের স্বচ্ছতা বোনে। চাঁদটাও সুযোগের মাপমতো কালোবোরখায়-

এখন সকাল যদি তীক্ষ্ণ শয়তানী দাঁতে মৃতকল্প-নাবিকের পুনরুদ্ধার অভিযানে সেলাই কেটে কেটে অন্তর্বর্তী ছায়ার দেহছাল বার করে আনে-

রাত্রি উলঙ্গ হলে ঠিক কোন বিভেদ পর্দা জুড়ে দিবানিশি সংগমের বাঁশিধ্বনি ওঠে-

একটি নদীকে ছাড়া সে উত্তর খোঁজা অর্থহীন।

অপেক্ষাই বরং আরও কিছু মুহূর্ত জুড়ে অবলোহিত  বলয়ে ছুরিকাঁচি চালাতে থাকুক-

বিপরীতে নীল ঘোড়া আর অতিবেগুনি পাহাড়ের মুদ্রাবিহঙ্গেরা অনুবন্ধী লড়াকু স্টপার।
ভরসা রাখতেই হবে।

নদী আসবেই-

প্রথম নারীটির জন্মদিনেই পৃথিবীর প্রথম কবিতাটিও জন্ম নিয়েছিল‌। এ প্রত্যয়ে নদীদের দায়বদ্ধ থাকা সুনিশ্চিত।

সুতনু হালদার


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



সমর্থন

সুতনু হালদার


ঘুমন্ত কণ্ঠস্বরে যখন তোমার আলিঙ্গন
আমার মোবাইল থেকে ধীরে সুস্থে
পারদের অতৃপ্তিতে বিছানায় উঠে এসেছিল
ঠিক তখনই আমরা বিছানার
প্রান্তভেদ করে বক্ষলগ্না

মেঘ রঙা ঠোঁট গা ঘেঁষে
খুঁজে চলে ইলশেগুঁড়ি
তখন আমরা বৃষ্টিস্নাত
পুনরুক্তি দোষে দুষ্ট

আমাদের শরীরে অমৃতধারা

কিছুটা তফাতের অভিব্যক্তি
আজকে আর বিবর্তনবাদকে সমর্থন করল না



নিজস্বতা

সুতনু হালদার


কয়েকবার মাত্র কয়েকবার
নিষিক্ত বায়বীয় জটিলতা
মেতে ওঠে ক্রমশ...
প্রতিশোধস্পৃহায় জেগে থাকে
কাঁচপোকা থেকে ঘুণধরা যৌবন

সেই আলো আঁধারীর দুধে আলতা শাড়িতে
প্রথম কবিতার পঙক্তি জেগে উঠতে উঠতেও
মেরুপ্রভার বিজাতীয় শীৎকার
বসন্তের প্রথম দিনের গর্ভযন্ত্রণা

মোবাইল অ্যাপসের ব্যবহারিক মানবতা
ক্লিটোরিসের মতো ক্রমশ
তুলতুলে করে তোলে শিরদাঁড়া

আসহবেনীকলা-র নিজস্বতা ঘিরে
রাধা-কৃষ্ণের রং মাখে
কোনো এক কালকেতু-ফুল্লরা



বিক্ষোভ

সুতনু হালদার



বিছানার ব্যাকরণে
মিশে থাকা মুদ্রাদোষগুলো
চিরটাকাল প্রচণ্ড প্রেমিক
           ।।
রাতজাগা জ্যামিতিতে
হাবুডুবু কুয়াশার
তর্জনীনির্দেশ ~ ঠোঁটের উষ্ণতাকে
সালোকসংশ্লেষীয়  নৈকট্য
          ।।
মেঘমালায় বিশ্বরূপের হাতছানি
          ।।
দিনের প্লাজমায়
প্রেমপত্রের বিক্ষোভ

আবদুস সালাম

রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



নতুন সংস্করণ

আবদুস সালাম

সন্দিগ্ধ  স্রোতে ভাসে টানটান সঙ্গম
বাঁকে বাঁকে জমে আছে অজস্র ব্যাভিচার
জ্যোৎস্নারাও সঙ্গমের ডানা মেলে
অবগুন্ঠনে শুনতে পায় বিষাদের দীর্ঘশ্বাস

নিরাপদ বিশ্বাসে ঢুকে পড়ে শয়তানের ঈশ্বর
আমাদের পাঠশালায় নামে ঘুম
আকাশের ঘাটে ঘাটে খুঁজে পায় সমাজের মৃতদেহ

সন্দিগ্ধ বিদায়ের বাগানে যমেদের উল্লাস
পাশে ঘুমোয় পুতুল বৌ
উল্লাসের মাঝে খুঁজে পায় আজকাল পরশুর নতুন সংস্করণ



নীল বারান্দায় টুপটাপ  -দুই

 আবদুস সালাম

শূন্য ঘরে খেলা করছে হ‍্যাঙলা চাঁদ
প্রেমের হাতছানিতে লুটোপুটি করছ নিদ্রাহীন সংকট
গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে ঝরে কবিতার শব্দ

কালবৈশাখীর মতো আসে  প্রেমিক,
     ওঠে ঝড়,
লন্ডভন্ড হয় শারীরিক ভূগোল
 চুঁইয়ে নামে ভিজে যাওয়া সোঁদা গন্ধ
ধুয়ে যায় পৃথিবীর নিরবিচ্ছিন্ন সংলাপ


বিকেল রঙের প্রণয়

আবদুস সালাম

বিকেলের আকাশ ঢেলে দেয় মেঘ
গুরুগুরু গর্জনে প্রসব যন্ত্রণা বাজে
প্রেমের শরীরে খেলা করে ময়ূর
হরিকীর্তনে নেচে ওঠে নন্দনপুর

রাঙা বসনে নেচে ওঠে মৈথুনের চাঁদ

কানাকানি করে রাতের তারারা
নিন্দুকেরা উড়িয়ে দেয় তর্ক
সর্বনাশের ঘরে ছায়া ফ‍্যালে মায়াবী প্রহর
অপরূপ নির্জনতায় খুলে যায় বসন
মায়াবী শরীর জুড়ে খেলা করে ছন্দময় সম্ভোগ

বেহায়া পুরুষ চেটে নেয় যৌনতা
মোম গড়িয়ে পড়ে শরীরে
অজান্তেই চোখ বন্ধ হয়ে আসে
এলিয়ে পড়ে রঙ্গনের বিছানায়



সুধা সঙ্গ

আবদুস সালাম 

যুবতি দেহে খেলা করে অজস্র সাহিত্য
 কামাতুর পুরুষ গন্ধ পায় উচ্ছ্বাসের
বালিকা দেহে ঝুলে আছে রমনসুধাআদর

 ভ্রষ্টতা ভেসে যায় চুম্বনের স্রোতে
ক্রমশ ডুবে যায় যুবতি শরীরে
  ভেঙে যায় বাঁধ 

আবদ্ধ হয় প্রশান্তির বাহুমুলোই
শরীরের সামিয়ানায়  টাঙানো উথাল পাথাল আদর

একটা ইতিহাস হবে বলে বার বার  নির্মাণ
ভাঙি ।



উপত্যকায় রঙিন মেঘ

 আবদুস সালাম 

 ভালোবাসার তুমুল বন্ধনে জোছনা  গড়াগড়ি খায়
ভেঙে যায় সন্ন্যাসী ব্রত
 লুটে পুটে  নেবো বিনিদ্র যৌবন

শরীরের সুঢৌল উপত্যকা বেয়ে নামুক জোছনা
চন্দ্রাকার নাভিতে উপচে পড়ছে আদর
ভেসে যায় খাট বিছানা চাদর


কুমারেশ তেওয়ারী

রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



নির্মাণের ভেতরে

কুমারেশ তেওয়ারী


প্রণয় প্রকৃত অর্থে নির্মাণের খেলা

নির্মাণের কত রূপ, জড়ানোর চূড়ান্ত বিশ্বাস
ঢেউয়ের ভেতরে, তার ব্রেকারের কাছে
মোমের দহনে আর মোমের  গলনে

নির্মাণের কত রং, মিলান্তির খেলা
নিহারিকা থেকে ছিটকে আসা আলোতে
খুঁজে পায় কেউ কেউ রাইরঙা পাখি
কেউ বা আবার কৃষ্ণগহ্বরের দিকে চেয়ে দেখে
বাজিয়ে বাঁশি বেঁধে রাখছে গাভীদের সম্মোহন
কালোরঙা রাখালবালক

স্বপ্নের ভেতরে গড়ে উঠতে উঠতে কোনো সে নির্মাণ
হঠাৎ চেঁচিয়ে ওঠে, বাতিল বাতিল
ভেঙে পড়ে পাহাড়ের চূড়ো
স্রোতেরও অভিমুখ বদলে যেতে যেতে সাঁতার
ক্রমশ এগিয়ে যায় কিনারার দিকে
জেগে ওঠে কোনোখানে গোপন নজর

নির্মাণের গোপন ভেতরে বিভাজিকা গড়ে আর
ভেঙে দেয় উড়াল রঙের এক পাখি




প্রবালকথা

কুমারেশ তেওয়ারী


মনের ভেতরে থাকে প্রবালের দ্বীপ
যেখানে ছোট ছোট জলজ পলিপেরা
ক্রমাগত মরে যেতে থাকে সারাবছর ধরেই
তাদের শরীরে চুন জমে জমে তৈরি হয়
ভীষণ সুদৃশ্য এক প্রবাল পাথর
রূপ দেখে তার সবাই অশ্চর্য হয়
আর সেকি রঙের বাহার
নীল সাদা কালো গোলাপী আবার
কোনোটা গাঢ় মাংসরঙা
প্রবালের টুকরো কেটে একে ওকে উপহার দিই

তবে কখনোসখনো এমনটাও হয়
যতটা ঠাণ্ডা বা গরম থাকলে পলিপেরা গর্ভবতী হয়
তার চেয়ে কম বা বেশি গরম হয়ে পড়ে জল

তখন আর প্রজন্ম তৈরি হয় না কোনও
শুধু পড়ে থাকে প্রবাল স্তুপের শুকনো কঙ্কাল



পাণ্ডুলিপি

কুমারেশ তেওয়ারী


ক্রমশ পাণ্ডুলিপিটি নীল হয়ে পড়ছিল
প্রণয়ের সবুজ উত্তাপে
তবে বুঝি তার অক্ষরে অক্ষরে ছিল রামী-চণ্ডীদাস ?

প্রণয় অবৈধ হলে খুব ঘূর্ণাবর্ত ওঠে
জলস্তম্ভ থেকে বের হয়ে আসে
আগুনরঙা ঘোড়া আর বাতাসরঙা পাখি

পাণ্ডুলিপিটির ভেতরে একটি উটবোঝাই জাহাজ
বন্দরের থেকে তার চুম্বন দূরত্বে ভেসে ছিল
উটেদের কুঁজের ভেতরে এক-একটা মরুভূমি

সেইসব মরুভূমি জুড়ে কত তৃষ্ণার কোলাজ

রাজশ্রী বন্দোপাধ্যায়


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



বর্ষোপল

রাজশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়


উদভ্রান্ত জীবন থেকে চুঁইয়ে পরা অসংলগ্ন সূত্রেরা সমাধানের রাস্তা খোঁজে।চোরাবালি যখন গোগ্রাসে গিলতে থাকে অস্তিত্ব ,হতাশার ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয় ।ঘামে ভেজা শরীর ,লোনা ধরা দেওয়াল ,পরবাসী রাত ,সাক্ষী বেনামি মুহূর্তদের ।তুসের আগুনের মত ষড়যন্ত্র ধীরে ধীরে গুপ্ত গুহা থেকে ছড়িয়ে পরে পোষাকি মিথ্যেরা চিরাচরিত কৌশলে বদলে ফেলে অবয়ব ।সন্দেহের গাঢ় আতিশয্যের জালক ঘিরে ফেলে ক্রমে ।নিঃশ্বাস সংক্রমিত শরীরী বুদবুদ পার হয় গোপন আস্তানা ।জলীয় সম্পর্কের  আত্মমগ্ন ক্লেদ বারংবার রূপ থেকে রূপান্তরে ,এক আধার থেকে অন্য আধারের রূপ নেয় ।বীতাগ্নি প্রেম ,অন্ধকারের সান্নিধ্যে চায় ।অবিশ্বাসী ঘ্রানের স্রোত আপাদমস্তক গ্রাস করতে মরিয়া ।খুঁটে খাওয়া আত্মগ্লানি ,জমতে জমতে ভিসুভিয়াস ।তবু রামধনু দেখবো বলে  পা বাড়াই ।বর্ষোপল হয়ে ঝরে পরে জীবন ।

অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়

রঙ ও প্রণয় সংখ্যা


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----



স্নানকাল

অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়

পরিপার্শ্ব আড়াল করো।
আমার বাঁচোখে রাখো হাত,
ডানচোখে ভালোবাসা
মৃত্যুর দুয়ার আগলে রাখো,

নির্জন প্রপাতের সামনে
নির্গুণ তৃতীয় নেত্র মেলে
আজন্ম রমণ করি তোমাতে।

সজ্ঞানে দূরত্ব মেলি,
আলো থেকে এই যেন
যোজন যোজন,

পৌরাণিক দিন শেষে
শরীরের আঁধারখন্ড
তান্ত্রিক আয়োজনে ফেলে
যখন স্নান করতে নামি...।




রসায়ন

অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায়

ইস্কুলে রসায়নের স্যার শিখিয়েছিলেন, কিভাবে সমস্ত মিশ্রণই একটু তাপ বাড়ালেই আলাদা হয়ে যেতে পারে। এই বিচ্ছেদ, পাত্রে অধঃক্ষেপ ছাড়া
কিছুই রেখে যেতে পারে না।

বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রথম প্রেমিকা এই তত্ত্ব বুঝিয়ে দিল আরও গভীরে। বিকারের আকাশে
অধঃক্ষেপটুকু নিয়ে আমি ফিরে এলাম। কর্কশ সাইরেন গেয়ে উঠল, বসন্ত শেষের গান।

চড়কের প্রান্তরে রাঙা রোদ মাথায় করে আমি দোকানে দোকানে গেলাম। তারপর, সারাটা বৈশাখ শুধু কলসে-কলসে, গেলাসে-গেলাসে কতোনা রঙিন তরলে আমি দ্রবীভূত করতে চেয়েছি নিজেকে।

আসলে রঙ নয়। আকন্ঠ তৃষ্ণার তাড়নায়।

কিন্তু, পেয়েছি গুঁড়ো অধঃক্ষেপ।

লাল-নীল-হলদে-বেগুনি গুঁড়ো অধঃক্ষেপ।

আমার ক্যানভাসগুলোতে যত ছবি দেখছেন,
হে মহামান্য অতিথি! সেইসব রঙ দিয়ে
আমারই নগ্ন আঙুলে আঁকা। কেমন হয়েছে?

তন্ময় চৌধুরী


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন----

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা----

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন ----


হাস্য ও প্রণয়

তন্ময় চৌধুরী

অনুরক্ত ব্যক্তি,সরলের উত্তর তুলে দিই
ছোট্ট সেরের গায়ে লাল রঙ হাইফেন টানতে পারো, অমৃত তো আঙুল গোলানো মধুরডিবে
তাতে কী ?
গা জ্বলছো , পা চাটছো , উঠে যাচ্ছো
হাস্য ও প্রণয়ী

নির্দিষ্ট সূত্রবিহীন লঘিষ্ট আকারে প্রকাশ করতে গেলেই নামতা লুললুলি ধরে ঝুলে যায়

ভাবছো আমি জ্বলছে
উঁহু মোটেই না
সমাধানের গা ঘেঁষে নরম উত্তর টেনে ধরছি

হাস্য ও প্রণয়

চালিয়ে যাও ...........



রং ও প্রণয়

তন্ময় চৌধুরী


পিঙ্গলবর্ণ অঙ্গরাগে সম্পর্কশূন্য স্তোত্র

মধুচন্দ্রিমায় গাত্রস্পর্শে অর্ধোচ্চারিত বক্ষঃস্থলির পর্বতের আভরণ
অকিঞ্চিৎকর শরমের অভ্যর্থনায় দশমিকের পর খুলে যাচ্ছো

সুখাসক্ত ইন্দ্রিয়াচারণ স্বভাবসিদ্ধ - ভাবে স্বকণ্ঠস্থ চুম্বন ,
মনোরথে অবিষয় সন্ধি ব্যস্তবাগীশ যৌন রাঙা
শাসিয়ে দিচ্ছো ঘটনাক্রমে রঙ ও প্রণয় |

রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯

নারী সংখ্যা,,,,,,,সম্পাদকীয় কলম


কবিতা: স্বয়ংসিদ্ধা

নাম: সুপ্রীতি বর্মন

( সময় যখন,,,, সংবাদপত্রে প্রকাশিত "আন্তর্জাতিক নারী দিবসে",,,,,,,)


অভিশপ্ত বিভীষিকার করালগ্রাস কালো ভূত শাকচিন্নী কন্যে জুটলো রাজপুত্র ছেলে আমার, জীবনের ও যৌবনের মধ্যিখানে ভরাডুবি, তলানিতে ঠেকে বিবাহিত চন্দ্রিমা,
অমাবস্যা পূর্নতা খোঁজে জালবন্দী খুপচি কুটুরী আমি এয়োস্ত্রী।
উচ্ছিষ্ট পাতে মুখ দেখা পাপ শ্বাশুড়ীর গঞ্জনা।

ভরা ভরা কোটাল বানে আগামী প্রজন্মের পয়োধরা, গর্ভের নিশ্চিত শাখা প্রশাখার নাড়ি ছেঁড়ার টান মাতৃত্বের আঁচ।
নিষ্প্রদীপ বংশপ্রদীপ পরপারে অসহ্য শোক বঞ্চিত পূর্বপুরুষের তর্পন।
মাংসদলা নাড়িয়ে লিঙ্গ নির্ধারন,
তোমারো চাই অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি।
আমার বউয়ের ব্যাটা হবে গো, ব্যাটা।
কে জানে বার্ধক্যে আদৌ উপার্জিত অর্থে তোমায় দেখবে কিনা না মুখে মারবে ঝাঁটা।
বলবে চুলের মুঠি ধরে এই বুড়ি লিখে দে বলছি সম্পত্তি না হলে মারবো টেনে এক থাপ্পর।

আলতা পায়ে সালংকারা মা লক্ষ্মীর গৃহপ্রবেশ একদা পেছনে রেখে স্মৃতিচিত্র ছেলেবেলা বাপের বাড়ি।
এখন জ্বলন্ত চুল্লীর অসন্তোষের ক্ষোভ কুন্ডলী পাকিয়ে উর্ধ্বসম চিন্তার ধোঁয়া,
ছেড়ে দাও ভিটেবাড়ি যাও চলে বৃদ্ধাশ্রম মুখেতেই শুধু হাজারো কচকচানি মাজা ভাঙ্গা, ভাঙা দাঁতে চাও বিলাসিতার পান সুপারী।

উঠতে বসতে গলগ্রহ সকলের দৃষ্টিশূল আবর্জনা সংসারের বাড়তি বোঝা।
কালি ছাড়া পেনের দৌরাত্ম্য সহ্য কি করে হবে সাদা কাগজে।
নির্জলা উপবাসে গৃহবন্দী শোকে বার্ধক্য,
রঙীন হাওয়া সন্ততির ঝোলা চামড়ার কোন থেকে যৎপরোনাস্তি সুবিধাভোগ,
চলবে চলবে দৌড়াবে লক্ষ্মীর ঝাঁপি মায়ের বন্ধ্যাত্বের শোক।

ভরাপেটে কাঁচা পোয়াতীর ক্যোৎ ক্যোৎ লাথি মেরে অজন্মা নবজাতক নীলমৃত্যুর কোলে শেষ হাঁপিয়ে নিঃশ্বাস, বল মা আমার কি অপরাধ।
কন্যাভ্রূনের অপমৃত্যু বাপের ঘাড় থেকে বোঝার নিষ্কৃতি, আর খুঁজতে হবে না কো ছেলে।
পুরুষতন্ত্র ছাড়া মেয়েছেলের বারো হাত কাপড়েও ন্যাংটো।
চৈতী বাসন্তী হাওয়ায় মদমত্ত নৈশিল কায়া উপক্রম বিবস্ত্রে পড়িমরি পুরুষের ক্ষুধাতুর পিপাসা, জীবাশ্ম হতে চায় সাগরের বুকে মুখ গুঁজে লজ্জায় নারায়ন শিলার পাথর।
ঝোলা স্তনে ভিখারীর অভুক্ত বাছার দুগ্ধপান শহুরে বাবুদের জীবন পরিক্রমায় জুতোর শুকতলা ফেটে চৌচিড় ঘরেতে আছে বিবাহিত স্ত্রী।

তবুও মুখে লালা ঝড়ে পাগলামো কাম উচাটন বিষ পিঁপড়ে, ডাঁশা পাকা পেয়ারায় সুযোগে অবকাশে দাঁতের কামড় বসাতে চায়।
গাছেরো খাবো আর পারলে কুড়িয়ে তলারো,
অথচ কি আশ্চর্য স্ত্রীর বাঁধাধরা ছকের বাইরে বেলাল্লাপনা মানেই পরপুরুষের সাথে রাতবিরিতে ঢলাঢলি দুশ্চরিত্রা,
সংসারের বিষাক্ত ধুতুরা ফল মহাদেবের,
অনিবার্যকারন বশতঃ তার বহিঃষ্করন জরুরী।

বাপের বাড়ির যৌতুক ধন তালাবন্দী অলংকারের সিন্দুক, একান্ত শুধু তোমার দায় বংশমর্য্যাদা, ঠেকা নিয়ে রেখেছো সমাজের আর পাঁচটা লোকের কূটকাচালী,, কি ভাববে কি বলবে।
ঝাঁকামুঠো ঋণ সকলকে খুশী করার দায় সংসারের অবশিষ্ট পাতে তুমি সর্বংস্বহা।
তোমাতেই ধৈর্য্য ধরিত্রীর শেষভাগে কোমরে আঁচল বেঁধে তোমাকেই হতে হয় কান্ডারী।

সংসারের তেলে জলে কলমীলতার বাড় বুড়ো বাপের বলিরেখার কাঁপন চোখের কোলে মান্ধাতার চাপ, মেয়ে বড় হয়েছে কি করে হবে গতি।
টানাপোড়েন সংসার চ্যাপ্টা হাতায় জ্বলন্ত ফোড়ন বিলাসিতা উচ্চশিক্ষা, নির্বাসন ছাত্রীর।
হাতেনাতে দাও সংসার চালানোর গিন্নিপনা।
ভবিষ্যতে কাজে লাগবে না হলে সমাজের মুখ ঝামটা কালশিটে কলঙ্কের ঘা,
মেয়ে বড় হচ্ছে যদি কিছু হয় পুরুষজাতি।
তুমিই রক্ষক আবার অপভ্রংশে তুমিই ভক্ষক,

ছোট ছোট হাঁটু অবধি যৌবন জল ধারনে অক্ষম পাতলা ছিটকাপড় তবেই তো হয় লালায়িত ধর্ষক অশ্লীল তুমি নারী, দেখাও কেন নগ্ন চিত্রপট অঙ্গপ্রদর্শন, কম পয়সায় বাপের হোটেলে ভাত মেরে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে পুরুষদন্ড ছোটাও আতঙ্কে ঢেঁকির পাড় ভাঙার শমন, ছেলে ছোঁকড়ার ছ্যাবলামো, ইভটিজিং তুই আমাদের বাপোত্ত সম্পত্তি,
দে বলছি আকার ইঙ্গিতে তোর নরম মাংসের ভোগ।

বাপ মায়ের অজাতশত্রু মরনচিন্তা মেয়ের গতি, কপালে ভাঁজ নৈঃশব্দে ঘুমের ভাঙন সমুদ্র নেই তোমার তৃপ্তি হাঁপর টানা দীর্ঘশ্বাসে একমাত্র পুরুষের প্রদত্ত লাল দু টাকার সিঁদুরে তোমার মেয়েবেলার মুক্তি।
বিবাহিত শয্যা ছেড়ে স্বামীর পলায়ন মধ্যরাত্রির ঝরা পাতার শোক আমার অবশিষ্ট আছে মিলন।
তুমি বদতমিজ মুখশুদ্ধি করো অবৈধ ঘৃণ্য বীর্যপাতে মাতৃত্বের সাথে,
থরথর মেদিনী কম্পিত মধুযামিনীর চিত্ত একি দেখছি আমি তোমার স্ত্রী না একি আমার ভীমরতি।

অপভ্রংশ সকল শিক্ষাদীক্ষা এ কোন পচা ডোবা জলে কোমর ভিজিয়ে করতে গিয়েছিলাম রৌদ্রদগ্ধ স্নান, লোপ পেয়েছে আজ আমার মানসিক শক্তি।
চোখের সামনে যখনি দেখি পুরুষ বলে উঠি শালা বাঞ্চত্ হয়েছি আজ আমি ভদ্রলোকের আঁধারি পোষাক ছেড়ে বস্তির ছোটলোক।
অনেক খুশী বদ্ধ ঘরের লৌহকপাট গেছে ভেঙ্গে আজ পেয়েছি সিঁদুরের চাপ থেকে মুক্তি।
সকলে বলে উঠে আমায় এই পাগলী এই পাগলী।

সমাজের ন্যাকামো সংসার সংসার ছেলেখেলা অক্ষমতার পাষাণপ্রস্তর চাপ ছিনিয়ে নিয়েছে বইখাতা, সামনে এসেছে হেঁশেল কড়াই খুন্তীর ছেলেখেলা, গলাধঃকরন গান্ডেপিন্ডে উদয়াস্ত খুঁটিনাটি প্রমোদ ত্যাগে চাকার অগ্রগমন।
আমি চলেছি দিনে রাতে, চলতে যে আমাকে হবে, আহা করে ঢঙ মেরে আলালী আর করোনা বদঅভ্যাস তোমার যন্ত্রনার বহিঃপ্রকাশ।
আর তোমাকে একদম মানায় না যতই হোক তুমি হয়েছো আজকে ছেলের মা।

অর্ধেক কপাল আমি অর্ধাঙ্গিনী তোমারো তো খুব সখ বউ হবার স্বীকৃতির সিঁদুর পেতে তুমি আগ্রহী।
ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনতিক্রম্য তোমার যাত্রা স্বর্গসুখ ক্ষনকালের স্পর্শে পরাগরেনুর উদগ্র তেজে নতুন নতুন পাত্রস্থ আমার ফুলশয্যা।
অধরা স্পর্শে অতৃপ্ত অশৌচ প্রেম যত্রতত্র বসন্তের প্রবেশ অবাধ খোলা তোমার দ্বারে আলিঙ্গন, আমি যেন আশিতীপর মাসীর ক্রয়বিক্রয়ের বিচক্ষণতায় বাজারের ভোগ্য মাল।
তবে কিসের অধিকারে গলা ফাটিয়ে ঘটা করো আন্তর্জাতিক নারী দিবস।
সবার প্রথমে নারীত্বের স্বয়ংসিদ্ধা রূপে করো সমাজের উন্মুক্ত প্রেক্ষাপটে আত্মপ্রকাশ।