বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

অপূর্ব অধিকারীর কবিতা।




ঝারাঝাপটা গূঢ় তাত্ত্বিক বিশ্লেষনী অঙ্গরাগ

সুধা প্রেমের স্পর্শ ও উন্মাদনার আঙ্গিকে কলম।


১. "সাক্ষ্য-প্রমাণ"।


বিশ্বাস করো- আমি তোমাকেই ভালোবাসি;
সাক্ষী তোমার বাড়ির দারোয়ানের বক্রদৃষ্টি।
তোমার ছোট ছোট পাড়াতো ভায়েরাও তা জানে;
চকলেটের বিনিময়ে কতবার তোমার খবর নিয়েছি।
বিশ্বাস করো- আমি তোমাকেই ভালোবাসি;
সাক্ষী আমার মায়ের বকুনি আর তোমার দিদির ভ্রুকুটি।
নির্ঘুম দীঘল রজনীরা কি অস্বীকার করবে...?
একাকী বসে তোমায় ভেবে কাটানো সব রাত!!
রাত জেগে লেখা অজস্র কবিতা সাক্ষী-
আমি তোমাকেই ভালোবাসি।
সাক্ষী সেইসব বাতাসের সাথে আমার হিংসেমি'
যে বাতাস তোমার সুরভিত শরীর ছুঁয়ে যায়।
কিংবা সাক্ষী ঐ ফটকি নদীর প্রতি আমার রাগ...
স্নানের ছলে যে তোমার সাথে খেলা করার ফন্দি আঁটে।
ভরা পূর্ণিমার চাঁদ (যে আলো ছড়ানোর বাহানায়)-
তোমার অঙ্গরাজ্যে ভ্রমণ করার স্পর্ধা দেখায়!
বিশ্বাস করো সেই চাঁদের সাথে আমার শত্রুতা সাক্ষী-
আমি তোমাকেই ভালোবাসি!
সাক্ষী আমার প্রতিদিনের মেঘলা আকাশ'
যেখানে অবহেলার মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে নামে।
হ্যাঁ, আমি তোমাকেই ভালোবাসি....!
ডাইরির পাতায় সংরক্ষিত অনুভূতিরা তার প্রমাণ;
তার প্রমাণ তোমার নেশায় আমার সব পাগলামি!
এবং তোমায় ঘিরে রচনা করা ব্যর্থ স্বপ্নের হাহাকার!
আর প্রমাণ প্রতিটি রাতের জ্বলন্ত নিকোটিন শলাকা;
তোমার দেওয়া কষ্টে যারা 'ডোন্ট কেয়ার' ভাব আনে।
বুকের পাঁজরে জমা পুঁজ আর সেখানে ওড়া মাছিরাও প্রমাণ;
হাসির আবরণে ঢাকা মর্মভেদী যন্ত্রণা কিংবা
তোমার দাদার তর্জনীও একই সাক্ষ্য দেবে-
আমি তোমায়...হ্যাঁ, কেবলই তোমায় ভালোবাসি।।


     
 ২. অনভিপ্রেত।
         

অযত্নে বেড়ে ওঠা এক নিষ্ফলা গাছ আমি'
গোড়ায় জল ঢালার সাহস কেউ দেখায় নি।
সবাই ভাবে আমি মানুষখেকো রাক্ষুসে গাছ'
ভুল করে বেখেয়ালি বৃষ্টিরা আমাকে বাঁচায়'
এই মৃত্তিকাও আমার ঘোরতর বিরোধী।
তাই আমি বহুরন্ধ্রী হলেও নেই রস টানার জো'
নইলে হয়তো আমিও হতাম সুমিষ্ট ফলের পিতা।
দেখ- আগাছাগুলো আমাকে জাপটে ধরেছে-
ভালোবেসে নয়, ওরা নিজেরা বাঁচবে বলে।
ঝড় উঠলেই সকল আগাছা আমার হয়ে যায়'
তারপর আবার লেপে দেয় কলঙ্কের প্রলেপ'
ভরা কলঙ্কে মনে হয় নিজেকে উপড়ে ফেলি!
কিন্তু আমার শিকড় আজ বহুদূর বিস্তৃত...
মায়ার জালে আর স্বার্থপর হওয়া হলো না।
কী আছে না হয় সবাই-ই অস্বীকার করুক
ওদের কাছে আমার নিত্যকার প্রয়োজন-টুকু।
না হয় ভাঙুক আমার ডাল, ছিঁড়ুক কিছু পাতা
কিংবা অস্ত্রাঘাতে হোক শরীর বর্ণহীন রক্তাভ!
তবু জানতে তো পেরেছি এ তেজস্বী রাহুকালে
"ঠিক ততক্ষণই প্রিয়জন, যতক্ষণ প্রয়োজন"।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন