সহজিয়া প্রেমের নাব্যতার রাজপাট ছন্নছাড়া
প্রেমিকের বাউন্ডুলে ঘরদোর আঙ্গিকে কলম।
১. ঢেউ।
------
দেওয়ালের গা বেয়ে গান নামতে নামতে
পাঁজর চিরে বেরিয়ে আসে গাছ ,
চারপাশে কামাক্ত জল,অস্পষ্ট লবন উচ্ছ্বাসে
পাড়ের মতো নিস্তব্ধতা নিয়ে শীত আসে মৃত শামুকের মতো,
ফড়িংয়ের ডানা থেকে ঝরে পড়ে কবেকার বিকেলের ক্ষোভ ।
ঠিক যেভাবে প্রকৃতি বুকে ক্রমশ ডুবে যেতে থাকি
পারাপার, ঘুম , নিঃস্ব মাটির মতো মাঝরাতে নদী ভালোবেসে
অজানা শহরের বাঁকে,ক্লান্ত জনপথে...
শব সম্পর্ক ডিপ ফ্রিজে সাজানো থাকে ,
প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ফুরিয়ে এলে একদিন ভেসে উঠে তারা ;
নামহীন প্রতিবাদ হীন অন্ধকার পাথরের গায়
অজস্র কালো কালো ধূপ, ছায়াহীন সঙ্গীনিকে সদ্য পুড়িয়ে এসে ,অভিমানে ,তীব্র জলোচ্ছ্বাসে ...
হে জন্মান্ধ প্রেমিক !
তবে কেন তোমাকেও হেরে যেতে দেখি ;
রঙবেরঙের ছন্দহীন সারি সারি সম্পর্কের ভিড়ে ?
২. সহযাত্রী।
_______
চলে যাওয়াটা আসলে বাহানা মাত্র ।স্টেশনে বসে থাকা যে সহপাঠী তার চুল খুলে প্রথমবার খোলা আকাশে একটা প্রজাপতি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল সে 'মুক্ত',সেই সহপাঠী এখনও পর্যন্ত চলে গিয়েও যেতে পারেনি। তারপর থেকে যাকে কোনদিনের জন্যও অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি স্টেশন চত্বরে ।
বাইপাস থেকে দশ পা দূরে কমলা-লাল বাড়িটার কার্নিশের গা ঘেঁষে সেদিন হলুদ শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে ভীষন রকম মেঘ করেছিল, মেঘে মেঘে ঘর্ষণে বৃষ্টি নেমে এসেছিল সমগ্র উঠোন জুড়ে।
চারপাশে এত কোলাহল, নিয়মমাফিক ট্রাফিক জ্যাম কিংবা মৃত সিগন্যালের মতো তার প্রতিটি স্মৃতি জ্বলে ওঠে শিরায় শিরায়।ফুলে ওঠে রাত্রি এবং ঘাম।গ্রাম ছাড়িয়ে শহরে ঢুকে পড়ে অজস্র পায়ের ছাপ,ফেলে আসা দুপুরের ঘুম, ক্লান্তি জড়ানো কালো কালো ছায়া।
যাকে ইচ্ছে না হলেও মাড়িয়ে যেতে হয় ।বৃষ্টিস্নাত পাথরের বুক কিংবা শ্যাওলা জড়ানো প্রেমিকার শেষ হাসির মতো।যেভাবে প্রতিনিয়ত ভালো আছি বলে অপেক্ষায় থাকে শেষ ট্রেনের অপেক্ষায় বসে থাকা প্রতিটি সহযাত্রী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন