বৃহস্পতিবার, ২১ জুন, ২০১৮

সৌমেন গুহ রায়ের কবিতা।



সহজ জীবনের চেনা জানা উপপাদ্য।


১. কবিতা:

জ্যৈষ্ঠের দুপুরে ছাদে গয়না বড়ি দিতে দিতে ঠাকুমা ছুঁয়ে যেতেন সব আলাপচারিতায়
সিঁদুর গলে গলে পড়তো
তার নথ ছুঁইয়ে চিবুকে
ক্রমশ হয়ে উঠতেন ঈশ্বরী
তাকে ঘিরে তখন মা কাকিমাদের সব নিভৃত দীর্ঘশ্বাস
আলতো করে ছুঁয়ে দিতেই ভেঙে পড়ত পাঁচিল

ঠাকুমা গল্প শোনাতেন বারদূয়ারীর চৌকাঠ ডিঙনোর
জল এসে ভিজিয়েছে গোড়ালি কতবার
কেঁপে উঠতো সবাই
কলকল করে কুয়োতলায় গা ধোয়ার হিড়িক

আঙুলে আঙুলে গয়নাবড়ি তখন সারা ছাদ জুড়ে




২. কবিতা:


সম্ভবত বাদুরেরা জানেনা
কটা ক্যামেরা তাক করা আছে
আকাশের দিকে উড়লেই
ফ্লাশ ঝলসে উঠবে
পথ হারিয়ে ফলের কাছে যাওয়া হবে না আর

পলেস্তরা খসা দেওয়ালে তখন কচি পাতা মেলছে বট

চতুর্দশীর সন্ধ্যায়
একটা ছেনাল মেঘ এসে চাঁদকে আড়াল করতেই
রোহিনীদির আঁচল খসে পড়ল
বালক ঠুকরে যাচ্ছে জোড়া বেল

চাদমারিতে তখন ব্যাধেদের বিতর্ক সভা




৩. কবিতা:


কত কত সর্বনাশ নিয়ে বসে আছি আজ ও
শিথিল শ্বাস অসাড় প্রত্যঙ্গ ক্ষয়ে পড়া
প্রাচীন ফটক গুহালিপির অচেনা সংকেতে
যে যার নিজস্বতায়
বেঁচে থাকে
হিমশৈল গলে যায় গার্হস্তের করুন উত্তাপে

ভেঙে পড়ে দেওয়াল পাঁজরের শেষ পর্দাটুকু
শূন্যতাকে ঘাড়ে করে তখন ও প্রেমিক
করে মাণ্ডবীর খোঁজ

এ বসন্তেও অনাথ পাতার মত হলুদ সর্বনাশে ভরে ওঠে আমার উঠোন
আমি তাই দেখি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন