১. বর্ষামঙ্গল
---সবর্না চট্টোপাধ্যায়
মেঘের পেট চিরে দাঁড়িয়ে আছো মাকালীর মতো
দুপাশের গাল বেয়ে ঘন আকাশ
শ্রাবণের কারুকাজে আশ্বিনের
ঘোর কেটে বৃষ্টি নেমেছে বাদামী উপত্যকায় বর্ষার ঘ্রাণে ভেজা নিটোল স্তন.....
ফুটে আছে পদ্মের ঢঙে...
বিদ্যুত চেরা লকলকে জিভ দিয়ে
চেটে খাওয়া বেশ্যারাত,
যোনিসিক্ত
উপচে আসা ঢেউ,
বইতে বইতে....
নাভি ছুঁয়ে
ফাঁক হয়ে আসে তার ঠোঁট...
আর ক্রমশ ছোট হতে হতে
চকলেটের মন্ড
মিশে লীন উদ্দাম আকাশের বুকে।
চাপা পড়া লতাপাতা সরিয়ে সরিয়ে
রামধনু গেঁথে দেয় কাদারজঙ্গলে...
শ্রাবণের শৃঙ্গে তখন দারুণ গর্জন!
বাঁধ ভাঙা জলে ডুবে যাচ্ছে দুটো
হিসহিসে শরীর।
অবিশ্রান্ত ধারাবিবরণীর ঝাপসা রাত্রি বিছিয়ে
চাবুকপ্রেমিক এঁকে চলেছে বৃষ্টির গতিপথ..
ক্রমে, শান্ত হতে হতে,
আগুনের পাখি
মিলিয়ে যাচ্ছে ক্ষীণ, ঘনমেঘে।
সারা আকাশের বুকে
বেজে চলেছে...
মিয়ামল্লারে বর্ষার সন্তুর।
২. সুনতালেখোলার পথে
-----সবর্না চট্টোপাধ্যায়।
মেঘের সিঁড়ি ভেঙে
নেমে আসা আকাশ মস্করা করে
বেয়াদপ হাওয়ায়
গোলাপের ছবিঘরে রাখা ভালোবাসার ব্যথারা
ঘুম ছেড়ে ওঠে,
গা ঝাড়া দেয় ধুলো জমা বাদ্যযন্ত্র
কোন এক যান্ত্রিক অসাড়তায় ঝিমধরানো মধুকর প্রলাপ বকছে শরীরের ঘামে…
নাভিমূল খসে পড়া গোলাপের মতো ঠোঁট
ছুঁয়ে আছে পাথরের স্তনে ঝরনার জল হয়ে।
আমি তাকে চিনি।
বহুকাল আগে ফেলে আসা শীতের আঁচলে ঢাকা তার মুখ
কাঞ্চনজঙ্ঘায় বরফ গললে
তার বুক উপচে আসে দুধে
হাওয়াদের আদিখ্যেতায় সে লাস্যময়ী আলো ছড়িয়ে হাসে, কপালে লাল রডোডেনড্রন
আকাশ তাকে উড়িয়েছে খইয়ের হাওয়ায় পাহাড় থেকে পাদদেশে..
কমলালেবুর শাখায় তখন ভোরের আলাপ
সবুজ দিগন্ত জুড়ে ফুটে আছে
থোকাথোকা নীল মেঘ..
পাইনের জঙ্গল মারিয়ে শ-শ ঝিঁঝি
পাহাড় নামিয়ে এনেছে তরাইয়ের উঠোনে
আমার পা ছুঁয়ে সে পাগল ভালোবাসা
বিছিয়ে দেয়…
শরীর কাঁপতে থাকে আকস্মিক সঙ্গমে
নির্জনতায় ডুবতে ডুবতে আচমকা লাফিয়ে
দেখি, চারদিকে ভরে আছে মূর্তির ডাক আর একঝাঁক গোলাপি কৃষ্ণচূড়া…
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন