বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ১১



মনোলগ..
-------------
সুমনা পাল ভট্টাচার্য্য


এক একটা রাতে মা'কে ফুঁপিয়ে কাঁদতে দেখেছি..
মুখে নুনের পুঁটলি প্রাণপণ চেপে ধরে, আঁশবটিতে নিজের মুড়ো আর ল্যাজাকে নিপুণভাবে মা দুভাগ করে নিতো রোজ..
:
আমি তখনও কলমিডগায় ফুল খুঁজে বেড়ানো কাল্পনিক চোখ,
প্রশ্নের বিভাজনী রেখা পেরোতে পেরোতে বুকের ভেতরে শীত নেমে আসা পরিযায়ী পাখি,
ডানায় ভরা আলোস্নানের তৃষ্ণা..

তবু, শুধু একটা হাত আস্তে করে রাখতাম মায়ের ভেজা পাঁজরের পর্দায়...
সেই অস্থির ফাঁপরের সরগম তাল ছিটকোচ্ছে বুঝে আমার শিরায় মোচড় দিতো যে কতোবার সে কথা জানতো, মশারির দীর্ঘ রাত্রিবাস।
:
তারপর নদীর বাঁকে বাঁকে পলি জমলো, গর্ভবতী হল মেঘ, আমিও কোল জুড়ে বৃষ্টির জন্ম দিতে দিতে একদিন বাবার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বুঝেছিলাম, এই ক্ষত বিক্ষত পেরেক ঠোকা ছাদটা  আমার মায়ের 'পুরুষ'..

যতোই বুঝলাম, ঠিক ততোই এক শতচ্ছিন্ন শাড়ির মতো মায়ের  অবয়ব কাঠামো ছাপিয়ে রক্তমাংসের দলা হয়ে গলায় আটকে গেলো. ..

সে বিষ গিলতে গিলতে আজও মশারির রাতগুলো বড় নীল হয়ে ওঠে, চোখের নীচে বিসর্জন হতে দেখি জন্ম আর জন্মান্তরের

নিজের হাঁটু দুটো জড়িয়ে বুকের কাছে গুটিয়ে নিতে নিতে চিবুকের জানলায় বড় মেঘ জমে....

রাতভোর বৃষ্টি, আর বৃষ্টি....
                                            @সুমনা।।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন