শনিবার, ১৪ জুলাই, ২০১৮

আম্রমাধুরী সংখ্যা- ৬



১. ভাইরাস /  বিধান শীল

স্মার্ট ফোনের ভয়ানক অ্যাপসগুলো মাথা তুলে গ্রাস করছে মূল্যবান সময়
নৈতিক বোধের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নানান শিষ্টাচার
প্রতি মুহূর্তে ভাইরাসে নীল হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড  জীবন

 মসৃণ আয়নায় যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শারীরিক
কোন অ্যান্টি ভাইরাস কাজে দেয় না প্রাত্যহিক কাজ কর্ম ।

আনলিমিটেডে প্যাকের আড়ালে যৌনতার সুড়সুড়ি
ফোর জি স্পিডে  ডাউনলোড হয় যাবতীয় কৌতূহল ।

প্রবল বঞ্চনায় সিদ্ধ হয় রান্নাঘরে প্রবঞ্চনার ভাত
আমিষ ছাড়া গলা দিয়ে পার হয় না দুপুরের খাবার

বিশাল যজ্ঞের হোমে নিজেকে ফোকাস করে ধর্মগুরু
আমিও পাকা ডুবুরির মতো জলতলে খুঁজি ঝিনুকে  মুক্তো ।

আমার গোটা শরীরে পাক দিয়ে থাকে বিষধর সাপ
বিষে বিষ কাটে ;  লোহাতে লোহা
ফুলের সুগন্ধে জ্যোৎস্নারা চুমু দেয় পদ্মের বোঁটায় ।

ভাইরাসের বিপুল আয়োজনে আক্রান্ত কোষ অসাড়
হাত-পা বেঁধে আমরা ঝুলছি অদৃশ্য হাওয়ায় ।



২. দর্শন  / বিধান শীল

কোন এক গভীর রাত্রে চাঁদ দেখতে গিয়ে গলা অবধি আগুন খেয়েছিলাম । সময়ের প্রতি মুহূর্ত আজ পুড়িয়ে মারে আমায় । কী অলুক্ষণে জ্যোৎস্নার নেশা মাতাল করেছিল অরণ্য । বেঘোরে ঘন্টার পর ঘন্টা ভিজেছিল রাস্তা ।

কবিতার নেশা মদ , গাঁজা , হেরোইন এর চেয়ে বেশি । বিছানায় নিদ্রা যাবার আগে এক গ্লাস শব্দ পান না করলে তৃপ্তি আসে না কবির । কাঁটাছেঁড়া চালায় দক্ষ ডাক্তার মতো । সূচ সুতোয় সেলাই করে তৈরি করে বর্ণময় পোশাক । মুক্তির আনন্দে  বিজন বাতাসে ডানা মেলে উড়ে পাখি ।

কোন একদিন প্রেমপত্রে বানান ভুল ধরার জন্য প্রেমিকা রাগে কুটিকুটি করে ছিঁড়ে মুখে উপর ছুঁড়ে মেরেছিল প্রেমপত্র । মুখে একটুও আঘাত লাগে নি , লেগেছিল হৃৎপিন্ডে । আঠা দিয়ে জড়াতে চেয়েছিলাম টুকরো টুকরো কাগজ । অলুক্ষণে বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে দূরত্বের দেশে ।

কোন এক গভীর রাত্রে চাঁদ দেখতে গিয়ে গলা অবধি আগুন খেয়েছিলাম । এখনও দাউ দাউ করে জ্বলছে অরণ্যের ভিতর । হাজার লিটার জল ঢেলেও নিভে না বনে লাগানো আগুন । দমকল আসে , ফিরে যায় ।

ধীরে ধীরে অলসতা গ্রাস করছে কবিমন ।  দুর্দিনের কুটিরে নেমে আসছে অভাবী মেঘ । কালো আকাশ দেখে ভীত হয়ে পড়ছে ব্যক্তি স্বাধীনতা । কবি প্রতিজ্ঞা করে আর কখনো সে চাঁদ দেখবে না । অন্ধকার কুটিরে আবদ্ধ থাকতে পারবে কি কবি ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন