বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০১৯

শৈলেন দাস


রঙ ও প্রণয় সংখ্যা:


রক্তিম যুবতি পলাশের দোহন

সৌরভের শিখায় দগ্ধ প্রণয় সখা

রংমিলান্তি সোহাগে সজনী ফাগুন



যজ্ঞক্ষণ

শৈলেন দাস

   আসলে কারো সাহস নেই সামনে নগ্নকায়ায় দাঁড়ানোর, নামাবলী দিয়ে জন্ম কুণ্ডলিনী লুকোতে ব্যস্ত সবাই ।
কালো জন্মদাগে লেগে থাকা কয়েক পরত ঘৃণাচিহ্ন,
রঙের উপরে রঙ, তার উপর আবার রঙ---না   ঢাকতে চোখ ধাঁধানো শৈল্পিক আভরণ ।
ময়ূর-পুচ্ছি বেল্ট আঁটা নতুন শান্তিপুরি বরের ধুতি
নপুংসক অঙ্গের ক্লেদ ঢেকে রাখে । পার্লারি সুন্দরী পুকুরে নাইলে প্যাঁচির মা।
    পুঁজি ও পিস্তলে ছিনাথের বল। সাবালক হওয়ার
তেল মেখে রৌদ্রে দাঁড়িয়ে লণ্ঠন উসকে দেওয়ার লগ্ন
এখন । আয় হোম জ্বালাই, চিতা জ্বালাই----



আঁধার মন্থন

শৈলেন দাস


উচ্ছল মাঝনদীতে ভাসছি দুজনে, তুমি মাঝি আমি
যাত্রী।গলিয়ে দিলে বজ্র কঠিন প্রতিজ্ঞা,কুমারী তাপে পুড়িয়ে দিলে গৈরিকবেশ। পারানির বদলে দহিলে
আজন্মলালিত ব্রহ্মচর্য, মায়াবী জাদুতে হেরে গেল
হাজার বছরের কঠিন তপফল।দোদুল নৌকোয়
প্রথম বিপ্রতীপ বীজ বপন ,হল পদ্মযোনি লাভ ।
 পঙ্কিল পথ পেরিয়ে রাজ-বীর্যে  জন্ম নেয় স্বর্গভ্রষ্ট
দেবদূত; ভারতের প্রথম পুরুষ, তীব্র বেমানান
দেবত্বমন্ডিত মর্ত্যজন্মে দাগ দেয় ঋষি অভিশাপ।

এরপর মাঝরাতে মাত,শ্বেত শুভ্র  বাসরসজ্জায়   নিমীলিত প্রদীপ শিখায় উপোসি ভাদ্রবধূর  ঘরে
শোধ নিলে মাতৃঋণ । অবাধ্য হইনি তবে সলজ্জিত,
ভীত সন্ত্রস্ত অন্ধ হরিণী গর্ভ নষ্ট বীর্যে জন্ম দিল
তীব্র অনিচ্ছার, অনুতাপের কুঞ্চিত নষ্ট দুটি ফল ।
অনিচ্ছের বর অচিরেই কীটদ্রষ্ট ।ভ্রষ্ট দীপশিখা
তোমার অন্দরমহল ভেদি ছড়াল  সমগ্র ভারত ।

শতপুত্র শোকে কেন বিচলিতা?চোখের কৃষ্ণ বন্ধনী
উন্মুক্ত করে দেখনি  কোনোদিন পুত্রের স্বার্থগর্বিত
অহঙ্কার ।পঞ্চগ্রাম পরিবর্তে সসাগরা ভূমন্ডল !
সূচাগ্র মেদিনী প্রতি লোভ সম্বরণ শেখাওনি তুমি
অন্ধপুত্রে । স্নেহান্ধ আজীবন শুধু আপন পুত্র হেতু।

অথ আলোক সূত্র লিখন পূর্বে এই আঁধার মন্থন ।



ঊনবিংশতি দিবস

শৈলেন দাস


আলোসুত, এখানে প্রতিদিন লাল গোলাপ ফোটে,
তাজা রক্তলাল। গোলাপ সজ্জায় শুয়ে আছে
ভীষ্ম পিতামহ। প্রতিদিন চক্রবূহ্য রচনা নিপুণ,
পুন্যক্ষেত্রে বীর সপ্তরথী লজ্জাশরাঘাত ভয়ে
গামছা মুখ ঢাকে। খোলা থাকে পশু জন্মচিহ্ন।

এবুকে গোলাপ ফোটে প্রতিদিন ----- রক্তগোলাপ।
একবুক তৃষ্ণা নিয়ে উৎকন্ঠার বালিশে নিদ্রাহীন।
দূরে কোথাও কৃষ্ণনাম রাত জাগে ভয়ে ভয়ে,
ফজরের নামাজের আগে চোখে ভর করে ঘুম।
রাত কাটে আরেকটা গোলাপ ফোটার প্রতীক্ষায়।

গদাধর সেতু সন্নিকটে চিতার জ্যোতির্ময় তাপ
ছুঁয়ে যায় পরম শত্রুর হৃদয়। সূচাগ্র মেদিনী নয়-----
সসাগরা পৃথিবী পুড়তে পুড়তে নাইকুন্ডে বিলীন।
জল ঢেলে ঢেলে ঠান্ডা করে চিতার উষ্ণতা নাকি
আত্মদাহতাপ! কৌরব পান্ডব লাল নীল গেরুয়া----
নদীজল লিখে নেয় নাবালক মঞ্চ-যুদ্ধ-কথা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন