মঙ্গলবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৮

উমা পর্ব--১২



  "মহিষাসুরমর্দিনী ধরায় রক্তাক্ত ধর্ষিত সামাজিক অবরোধে বিপর্যস্ত ছাপোষা মানুষ শুধু শারদীয়ার জৌলুসে চারদিনের উৎসবের ঘোর",,,,,,,,,


 কবিতা: ১ " সেরা তকমা "
   
 রাণা চ্যাটার্জী


জগত সভায় এবার অন্যভাবে ভারত সবার সেরা,

বিপজ্জনক দেশ আমাদের, নিরাপদ নয় নীরা।


ট্রেনে বাসে পড়ছে সবাই হেড লাইন নিউজ ।

কেউ হাসে বাঁকা চোখে,কেউ লজ্জায় ফিউজ।


মন্দ কি আর গর্ব করো , এমন ভালো খবর

পুরুষরূপী জন্তু গুলো খুঁড়ছে দেশের কবর ।


যে দেশে হয় গৃহ হিংসা, মজার খোরাক নারী

সে দেশ মাতা কলঙ্কিত,এ আমাদের বাহাদুরি!


অ্যাসিড অ্যাটাক ,পাথর ছোড়া, কত কুৎসা বলি,

বিজ্ঞ চোখে খবর পড়ি ,বাড়ে অভিজ্ঞতার ঝুলি।


মনে কি পড়ে দু-হাজার বারো, নির্ভয়া গণ ধর্ষণ,

মিডিয়া ,পেপার মন্ত্রী সান্ত্রী কতো কথার বর্ষণ ।


কি দেখলাম প্রতিবাদী ঝড়, মোমবাতির মিছিল,

শত শত অভিযোগ আজও,ফাইল গড়ছে পাঁচিল।


এদেশে আছে অনেক আইন,বাঁচার অনেক পথ,

কামুকতা আড়ালে ছিল,এখন প্রকাশ্যে বিজয়রথ।


নারীরা আছে সে তিমিরেই,দিকে দিকে লোলুপতা

রাস্তাঘাটে কি ভিড়েতে কনুই,অদৃশ্য হাতের গুঁতা ।


এখন দোসর ফ্রি জিও ডাটা,এ দেশে আটা দামী ,

বেশ করেছি,স্বাধীন দেশ,প্রকাশ্যেই  খাবো হামি।


বাড়ির বৌ কেনা দাসি বাঁদি ,যা খুশি পারি বলতে

স্বামী,ভাসুর,শ্বশুরও পটু পণ নিয়ে খোঁটা ডলতে।


কত রকমের প্রকল্প আছে,সামাজিক সুরক্ষা

নারীপাচার,যৌনতা ভীতি,কে করবে শুনি রক্ষা।


মেয়ে হলো ঘরের লক্ষী,নয়কো সে ভোগ্য পণ্য!

'থমসন'রিপোর্টে মুখপুড়লো,ভারত হলো ঘৃণ্য।


দ্য থমসন রয়টার ফাউন্ডেশন এর রিপোর্টে অনুসারে,(যে নারী রা সেফ নয় ভারতে)



কবিতা -২

  পরকীয়া

   রাণা চ্যাটার্জী

পেপার খুলে চমকে দেখি পরকীয়া নয় অপরাধ বাতিল সেই মান্ধাতা আইন প্রেমে মঞ্জুরি অবাধ।
৪৯৭ ধারা অবৈধ হলো,পরকীয়ায় আর নয় ভয়।আমার ভারত প্রগতির দেশ , নারী প্রগতির জয়।

দেশ চলেছে সমুখ পানে উন্নয়নের আকর্ষণে,
প্রেমে বাধা থাকছে না ,খুশি হও প্রেমের টানে। পরকীয়া নো ম্যাটার,প্রেম তুফানে বাজুক গিটার
প্রেমপর্বে ঘাটতি কেন,বাড়তে দাও প্রেমের মিটার।
প্রেমের বীজ হলে বপন,কি হবে রেখে তা গোপন এসব নিয়েই দৃষ্টি ঘুরুক,মুদ্রাস্ফীতি যখন তখন।

অসুখী দাম্পত্যে নাকি পরকীয়া  খোলা হাওয়া, ধর্ষণ কি কমবে এতে ভালোবাসার গান গাওয়া!
স্ত্রীর ওপর খবরদারি ,নয়কো পুরুষ এ বাহাদুরি
স্ত্রীও তো স্বাধীন মানুষ,কমুক এবার নজরদারি।



কবিতা: ৩

বনধ-অবরোধ

                      রাণা চ্যাটার্জী


রাজনীতিতে ঘেন্না,বীতশ্রদ্ধ আমি,

এসবের শেষ কই,শুধুই দেখি নোংরামি।

রাজনীতি আর দুর্নীতি যেন যমজ ভাই,

রোজ হুমকি,নেতার ধমকি,মানুষ অসহায়।


উৎসবে কোলাকুলি, নামাবলী সম্প্রীতি

দিন ভোর রাজনীতি যার নেই কোন ইতি ।

ছোট বড় কত দাদা,রোয়াবেতে লাগে ধাঁধা,

শক্তি প্রদর্শনে মাঠে,খেয়ে নামে জল আদা।


জনসভা,পথ অবরোধ ,মিটিং একগাদা

মিথ্যার প্রতিশ্রুতি,ছোঁড়াছুঁড়ি শুধু কাদা।

এই নিয়ে বসবাস, রাজনীতির সহবাস

অশান্তি বুকে নিয়ে সুখে থাকা বারোমাস।


চারিদিকে রব হৈ হৈ, নেপোয় মারে দই

নেতাদের মুখে বুলি,মুখেতে ফোটে খই।

তবু বলি আছি বেশ,অশান্তির হোক শেষ,

নেট দুনিয়ায় ভাসো,অবক্ষয়ের নোনা রেশ।




কবিতা-৪

       দোষারোপ

               রাণা চ্যাটার্জী


তকমা দেওয়া ভীষণ সহজ

  পুরুষগুলোর ভাবখানায়,

পাড়ার মোড়ে ক্লাবের ঘরে

সমালোচনার কারখানা।


নারী কেন বাইরে একা ,

কার সাথে সে ঘোরে,

মুচকি হাসি কাকে দেখে

সে চর্চাও রাস্তার মোড়ে।


কোন অফিসে কি কাজ

  ফিরছে কটায় বাড়ি!

ওরে পুরুষ কাজ কি নেই

কেবল নারীর খবরদারি?


নারী হল মায়ের জাত,

   অসুর নাশিনী।

যুগে যুগে পুরুষ শাসন

কবে বন্ধ হবে শুনি ?


মিডিয়া পেপার যতই বলে

"নারী পুরুষ" একই .

বিভেদের এই আঁতুড়ঘর

  সহজে বন্ধ হবে কি!



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন