বৃহস্পতিবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৮

পদ্মজা- ১৪



১. কবিতা: অপরিচিত

শুভব্রত মন্ডল

আমাকে  না চেনা মানে মাটি আর জল কে না চেনা;
অনুপম বুদ্ধ যেমন অচেনা তেমনই আমার পদক্ষেপে শুধু স্মিত হাসি।
আমার চাউনি আর অন্যমনস্কতার ভাঁজে ভাঁজে হিম সন্ধ্যেবেলা;
আমাকে না স্পর্শ না করার অর্থে হাজার বছর পিছিয়ে যাওয়া।
আমিতো পাঁচমারির দেওয়াল লিখনের কারিগর।
আমার কাছে না এলে হাভানা চুরুটের মৌতাতে শীৎকার তুলবে কি করে বলো?



২. কবিতা:

শুভব্রত মন্ডল

পুঙ্গব

আমি আজীবন গাছ আঁকি
কখনো পলাশ কখনো বা ঝাঁকড়া বট;
কখনো শুধুই পালকের মতো ঘাস।
সারাজীবন গাছ আঁকলাম
দেখিনি কত আঘাতে গাছ কাঁদে?
তাই আমি একটিও প্রেমের জন্ম দিতে পারিনি।

নদী
রজঃস্বলা নারীর মতোই লালচে গেরুয়া জল;
কালশেষে দুপাড় চরায় পলি আর সবুজ শিশুর মতো ফসল।

উঠোন

তোমার চুলের গন্ধ নিতে যে তেপান্তর পার করি;
চাপাকলে দুলে উঠে দুরন্ত যৌবন।

বেতের মোড়া

লাল শাল গায়ে কমলামাখা রোদে;
দুহাতের দ্রুত ছন্দে উলের গোলায় উত্তাপ প্রস্তুতি;
দুরের দৃষ্টিতে খোঁজ কলেজ প্রেমিকার।
যে আসন জানে স্বামী পুরুষের মনের ভার।




৩. কবিতা: আমার পাখিরা

শুভব্রত মন্ডল



পাখিরা নীল শাড়ি পরো কপালে লাল সাদা চন্দনের ছোঁয়া
আমার শরতে শিউলি ছিল সাদা উষ্ণ পারিজাত।
এখনতো রোদ্দুর বিবর্ণ তাপহীন।
শারদ আকাশে চিমনির দল বড়ো আঁশটে গন্ধের কারবারি।
মন্ডপে মন্ডপে উড়ন্ত কিশোরীরা মেছুনির মতো;
কেবল দরদাম মুঠোফোনে;

**পাখি একবার সবুজসাদা পাখনা মেলে উড়ে এসো **

আমার শরতে কাশবনে দামোদর তীরে;তর্পণের শেষে ভাসা কুশ তিলে মেখেছি পিতৃপিতামহের ঘ্রাণ;আজন্মলালিত প্রেম যেন শালিখের ভীতু খুনসুটি; বুকের কবোষ্ণ অক্ষরে সাইকেল টুংটাং ব্রজের রাখালের বাঁশী;বিনুনির বাঁধনে এত আলো; আলোর পথশেষে অবিরল জিজ্ঞাসা 'ভালো আছো?'

**পাখি আমার উত্তাপে রেখো নরম কমলালেবু আমার কপালে।*


হিমযুগ শারদপ্রাতে সেইসব শালিখ,শিউলিরা শীতঘুমে;শব্দেরা চিলচিৎকারে বাজায়  উৎসবের ভেরী;মন্দিরে শঙ্খধ্বনি লুকানো গভীরে; নির্মম নিস্পৃহ কাপালিক আর ঝলসানো শিশু; কালো কালো দিনে মাঝে মাঝে মনে হয় ফিরে এসো পাখির দল;
*পাখিরা লালশাড়ী পরো কপালে সবুজ টিপ**

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন