বিজয়া দশমী ((সম্পাদকীয়))
চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন
দুর্গে দুর্গতিনাশিনী
কাঞ্চনবর্ণেই কৃষ্ণবর্ণা
আদ্যাশক্তির রূপান্তরকামী
((Controversial issues arising from this structure of Goddess for leaving the conventional structure of Durga))
সুপ্রীতি বর্মন
Editorial Segment
((Philosophical Interpretation))
বক্ষের পাঁজরভাঙা প্রত্যাশায় ঠোঁটের আজন্মপালিত মা মা ডাকেও রাত্রির নৈঃশব্দ্য ভাঙতেই চায় না কিছুতেই।। শিমুলতুলোর অন্তঃসারশূন্য কাঙালি শরীর আছাড়িপাছাড়ি করে হাঁকে ক্ষুধার্ত হাঁ এ এবং চিবুকের পূর্ণচ্ছেদের লালিত্যে যে মা তুই কেন আমাকে ছেড়ে চলে গেলি জন্মের মতন এক মহাপ্রলয় ঘটিয়ে আমার আকাঙ্খার দরদালানে যেখানে আমি অন্ধ ভক্ত হয়েই বসে আছি তোর চির সনাতনী কালো রূপের মোহে।।।।সেই কৃষ্ণবর্ণা রূপায় আমার ক্লান্ত হিজল অজস্র ঝুরি নামিয়ে তপস্যার শুধু তাকেই মগ্নচৈতন্যে জড়িয়ে জাপটে ধরে রেখেছে নিজের কাছে কুক্ষিগত করে।।।। আমার অস্তিত্বের সঙ্কোচনশীল গহ্বরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও আক্রোশে সেখানে তাই তোর তপ্ত কাঞ্চনবর্ণা ধরা দিতেই চায়নি কারণ আমিই হয়তো ছিলাম সম্পূর্ণ রূপে দৃষ্টিকোণের শাপদগ্ধ খিলান ভাঙা অচ্ছুৎ পিপাসায় জরান্ধ হয়ে তোর কালো রূপের মোহে ।।।।।।
মৈনাক অন্ধত্ব যেন ভর করেছিল আলতা রাঙা প্ররোচনায় অর্ধউন্মাদ তোর পাগল ছেলে সেই অনূঢ়া কুসুম সেই পদ্মরাগ মনি কুমারী কে নতুন করে চিনে উঠতে পারেনি আমার অন্তরে যে লুকিয়ে ছিল দীর্ঘকাল ধরে।।।।।
তোকে শুধু নিজের সর্বস্বপণ করে ধরে রাখা সংরক্ষণ করার আভিজাত্য অহংকার আলস্যে কোন এক সপ্তডিঙা হয়ে ছিলাম আমি এই পার্থিব মন্দিরের ভগ্ন চৌকাঠে প্রতীক্ষায় এক অতন্দ্র প্রহরায়।।।।।
তোর আসল স্বরূপ কী তাকে খুঁজতে না চেয়ে যা দেখে আসছি যা বুঝেছি সেই অবশিষ্টের উচ্ছিষ্ট যাপনে থেকে গেছি তাই আমার অজান্তেই রাতের লাস্যময়ী বিভঙ্গে নাভিপদ্মে জেগে উঠা কুমারী কে চিনে উঠতে পারিনি যে সেই আসলে তোর বিশ্বজননী রূপংদেহির অন্তরসত্য ছিল।।।। পুরুষোত্তম শরীরের অভ্রান্ত ভ্রূণাধারে জেগে উঠে এক প্রখর নিঃসঙ্গ অসুখ ও যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ যার আড়ালে প্রহর ভাঙছে তারই স্পর্ধায় থাকা অশ্রুধারার আষাঢ়স্য মেঘে অশরীরী আগুন যে সে কিছুতেই তোকে ছেড়ে অপর কোন দেবী কে অঞ্জলি দিয়ে পুজো করতেই চায় না ।।।।।।
পার্থিব দাহ্য ধুলো শরীরের অগ্রাহ্য করা সত্তায় বলে উঠে সে চরম তাচ্ছিল্য এর চিৎকারে রগরগে ছাগলতাড়ানির সোহাগের বর্ষণে যেখানে চুপটি করে পয়মন্তী কুমারী অজ্ঞাতসারে লুকিয়ে আছে তার খুব কাছের পুত্রের স্নেহে যে "তুই কী চক্ষুকর্ণের মাথা খেয়ে বসে আছিস মা,,
আমি যে এতো করে তোকে ডেকে যাচ্ছি বুঝে উঠতে পারছিস না"।।।।।
"কেন তুই মা আমাকে ছেড়ে জন্মের মতন পগার পার হয়ে চলে গেলি,,
এক মা হয়ে তোর যতো আদিখ্যেতা আমি কেন সহ্য করে যাবো বল"?????
সন্তান ও মায়ের দেখা ও দেখায় কিংবা আলো ও আলেয়া এর এক রূপান্তরকামী জীবাশ্ম দেহে মধ্যবর্তী এক অদৃশ্য ও কঠোর দেওয়াল এর জন্মজন্মান্তর সংঘর্ষের প্রাচীর হয়ে থেকে গেছে এই মা ও ছেলের সম্পর্ক চিরাচরিত প্রথায়।।।।।।
পরিযায়ী শ্রমিকের অকর্মণ্য জীবন যাপনের যান্ত্রিকতার কোলাহলে শীর্ণ পাটকাঠি শরীরের লাঙল পীড়নে উপেক্ষিত দীর্ঘশ্বাসে রুগ্ন পায়ের পাতা কোনদিন কী প্রতিষ্ঠিত দৈবী কায়ায় জেগে উঠতে পারে লৌকিকতার নিষ্প্রাণ প্রস্তররমণী রূপে?????
তাই শুধু শুধু আর স্তনসন্ধির শাড়ির আটপৌরে খুঁটের আঁচল ফেলে রমণীয়শৈলীলাবণ্যময়ীরঐন্দ্রিলার অপরাজেয় ক্ষিপ্র চালে নিরুদ্বেগ লৌকিকতায় আর ধরতে চায় না ত্রিশূল অসুরের বক্ষ বিদীর্ণ করে ঐতিহ্যময়ীর সেই মান্ধাতার আমল থেকে দিয়ে আসা উপরিউপর আঘাত তার জমকালো জাঁকিয়ে বসা ঐশ্বর্যের ঘামতেল আম্রস্তনের কাঁচামিঠে রোদ্দুর পৌরুষের ঘ্রাণে কনককাঞ্চনা হয়ে।।।।।
এবার তবে বছর ঘুরে এক জাহ্নবীর পুণ্যিপুকুর পুরুষ্টু কমন্ডুলের ক্ষিধে না মিটাতে থেকে এক শিল্পীর শৈল্পিক ক্ষুধার মধুমক্ষিকার স্তুতি কিংবা স্তোত্র ও শ্লোকপ্রেমপাঠের মন্ত্রৌচ্চারণে দিকে দিকে জেগে উঠে অলকান্দার নিমজ্জিত অর্ঘ এর প্রকৃত ছাড়পত্র।।।।
তখন এক অভাবী মায়ের শরীরে জেগে উঠে মহামায়া তার উরুমাছ ভাস্কর্য আটপৌরে সংযম ও সিঁদুরে চুল ছাড়া উড়ো সংলাপ প্রত্যাশায়।।যখন পুরুষালির শুক্রাণুর জোর গেছে কমে সেই পরিস্থিতিতে তার উদাসী চুলে রাত্রিকালীন অগোছালো সরীসৃপ সম দুঃশ্চিন্তার চীর হরণে দামাল ছেলে পিলেকে কাঁখে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোন বিকল্প থাকে না।। অরণ্যানীর পদমূলের শৃঙ্খলে এক মহাপ্রলয় জাগিয়ে দুর্গতির সংহারে এক মা জেগে উঠে।।।। তার বোবা চৌকাঠে জংধরা সিঁদুরে মেঘ এবং ঠোঁটে উপোসি জাহ্নবী চোয়ালে গুমর ভাঙে এই জগতের সেই চিরাচরিত গৌরচন্দ্রিকার মাৎস্যনায় এর বিরুদ্ধাচরণে এক রূঢ়কায়াকল্পে।।।।
তাই ঘুরে তাকানো জেগে উঠা দশপ্রহরণধারিণী বিনা অস্ত্র এ বিনা লৌকিকতায় তার পাঁজরের প্যাঁকাল মাছের ঝাপটে আর ঝালাপালা ঢঙ মারা গায়ে গতরের লাবণ্য ও শিল্প সৌকর্য ঘামতেল ছেড়ে দিয়ে সে বজ্রপাত এর মতন নির্ভীক দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ নির্ভীক চিত্তে ঘুরে দাঁড়ায় মাতৃঋণযাপন স্বরূপা হয়ে।।। তার ওষ্ঠদ্বয়ের হিমাঙ্কে জমতে লেগেছে দৈন্যকাতরতার ব্যুমেরাং।।।।।অর্থনীতির শিকারে জরাগ্রস্ত কঙ্কালসার দেহে হাঁপড় টানা দীর্ঘশ্বাস এ রহস্যিক খননে তখন জেগে উঠে অগ্ন্যুৎপাত এর অসহ্য লালার উদ্গিরণে ক্ষুধার্ত জ্বালাপোড়া দুটি চোখ।।ঐ দৃষ্টির করালগ্রাস যার ছোবলে হোঁচট খেতে বাধ্য হবে এই ঘরকুণো সোহাগ নিষেকে জন্ম নেওয়া লক্ষ লক্ষ বঙ্গসন্তান।।।।।।
জননীর চিরন্তন ঐতিহ্যের শ্রীময়ীর রূপ আদ্যাশক্তি ধরা দিক আজ আমাদের আলিঙ্গনে তার চেনাজানা চিরন্তন চিরপরিচিত মমতাময়ী মায়ের শাসনের চোখরাঙানির প্রাণপ্রতিষ্ঠার জাগরণে এবং তার নিকষ অন্ধকার এর ছেঁড়া ছেঁড়া বাঙালি দেউলিয়া কাঙালিনীর কাপড়ের আভূষণে সেই চির পরিচিত রূপে সেটাই বেশি আলো লাগে।।।।।।
মোহময়ী লাগে তোমাকে মা অনেক বেশি "রূপং দেহি,,জয়ং দেহি,, যশো দেহি,, দ্বিষো জহি"।।।।।।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন