সোমবার, ২০ আগস্ট, ২০১৮

স্বাধীনতা- ১৪



স্বাধীনতার মানে


শুভ্রাশ্রী মাইতি।


স্বাধীনতার মানে কি?


চৌমাথার মোড়ের প্লাস্টিকের তেরঙ্গা পতাকা বিক্রি করা ছেলেটাকে প্রশ্ন কর।

পিচুটি চোখের একমুখ হলুদমাখা হাসি বলবে----

ই আর বলতি হয়! দুটা বেশি পয়সা গো বাবু...আর কিছু নয়!

যা দিয়া ইকটা রুটি বেশি কিনা যায়...

পেটের উনানটার আগুন কিছুতেই নিভতে চায় নি যে!


যদি প্রশ্ন কর মাংস দোকানের ফাই-ফরমাশ খাটা বাচ্চা ছেলেটাকে

রক্তমাখা ছুরিটা ছাল ছাড়ানো মুরগীর শরীরে বসাতে বসাতে বলবে---

দোকানের বেশি বিক্রি ছাড়া আবার কি?

একটা গোটা ছুটির দিন বলি কথা---মদ-মাংস ছাড়া আয়েস হয়!

জান,আজ মুইও খাব মা-বোনের সাথে--একথালা গরম ভাত আর বাতিল ছাঁটকাটের মাংসের ঝোল।


আদালতে ছেলের বিরূদ্ধে বিচার চাইতে আসা আশির নুয়ে পড়া বৃদ্ধাকে প্রশ্ন কর।

শুকনো চোখের জল মুছে বলবে---

লাথি-ঝাঁটা না খেয়ে আর কটা দিন যেন শান্তিতে কাটাতে পারি।


যদি প্রশ্ন কর অন্ধকার গলিতে দাঁড়ানো রং মাখা সূর্যাস্তের যৌবনকে--

কোমর দুলিয়ে চোখের ইশারায় বলবে---

আজ বাবুরা দিলখোলা গো!

হাতে দুটো পয়সা জমলে কোলের মেয়াটারে পড়ালিখা শিখাবো।


এভাবেই প্রতি বছর আসে স্বাধীনতা দিবস।

যেমন আসছে একাত্তরটা বছর ধরে---

বিপ্লবীদের মিছিল,পিস্তল,হাতবোমা আর ফাঁসির দড়ির রক্তভেজা মানচিত্রের

টুকরো টুকরো সীমায় আজও দাগা বুলিয়ে চলে

ভিটেছাড়া আব্দুল মাঝি,ছিনাথ বহুরূপী আর দুলে বাগদীর বউটা।

বয়স বাড়তে বাড়তে তিন কুড়ি ছাড়িয়ে যায়--এখনও খুঁজে চলে নিজের দ্যাশ,নিজের মাটি।


দেশ ভাঙে আর গড়ে----

স্বাধীনতার মানে শুধু পাল্টে পাল্টে যায়।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন