মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮

স্বাধীনতা- ১৯



১. কবিতা: স্বাধীনতা

Amit Naskar

যেমনি খোলা দ্বার, সহস্র জোনাকির অভিসার,
স্বাধীনতারে বুকে নিয়ে, শুধু মরিবার!
দিন যায়, রাত যায়, চলে যায় সময়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তারে খুঁজে নাই পায়!


দেখল সে চোখ মেলে, সেই অসীম আকাশ,
তারি বুকে লেখা কত, কত ইতিহাস।
তারি বুকে লেখা কত, কত মহা-মানুষের নাম,
তারি সাথে ভেসে গেল, কত স্বাধীনতার দাম।
ভেসে গেল কত রক্ত, কত কান্না, কত কত হাহাকার,
অনেক পথ ফুরাল, এখনও অনেক পথ ফুরাবার!
সব তারা নিভল, সব পাখি উড়ল, বাতাস ভরলো সেই দখিন্ হাওয়ায়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তবু তারে খুঁজে নাই পায়!


দেখল সে হাজার মিছিল, হাজার মিটিং, কত প্রতিবাদের ঝড়,
তারি সাথে উড়ে গেল, কত! কত মানুষের ঘর।
উড়ল আকাশ জুড়ে, কত বিজয় পতাকা,
তারি সাথে কাটা গেল, কত মানুষের মাথা।
কাটা গেল কত বিবেক, কত মনুষ্যত্ব, আজও আছে ব্যাথা তার,
অনেক পথ ফুরাল, এখনও অনেক পথ ফুরাবার!
সব তারা নিভল, সব পাখি উড়ল, বাতাস ভরলো সেই দখিন্ হাওয়ায়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তবু তারে খুঁজে নাই পায়!


দেখল সে চোখ মেলে, কত পদ্মমুখী চোখ,
তারি মাঝে লেগে থাকা, সেই পদ্মকাটাঁর শোক্।
উড়িয়ে তার আঁচলখানি, সে দেবী দশভূজা,
তারি সাথে লুন্ঠিত, তারি নারীর সত্ত্বা।
লুন্ঠিত কত লজ্জা, কত সজ্জা, কত কত অলংকার,
অনেক পথ ফুরাল, এখনও অনেক পথ ফুরাবার!
সব তারা নিভল, সব পাখি উড়ল, বাতাস ভরলো সেই দখিন্ হাওয়ায়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তবু তারে খুঁজে নাই পায়!


দিন যায়, রাত যায়, চলে যায় সময়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তারে খুঁজে নাই পায়!
তারে সে কোথায় খোঁজে, কোথায় সে পায়,
মনে মনে ভাবে তাই, সে বুঝি অসহায়।
মনে মনে ভাবে সে, নাই সে নাই,
বৃথা এই খুঁজে চলা, কোনও লাভ নাই।
দিন যায়, রাত যায়, চলে যায় সময়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, হায়! তবু তারে খুঁজে নাই পায়!!


হাজার পথ শেষে, এবার বন্ধ সে দ্বার,
স্বাধীনতারে বুকে নিয়ে, শুধু মরিবার!
যেমনি বন্ধ দ্বার, সহস্র জোনাকির অভিসার,
খুঁজে পেল, খুঁজে পেল, তারি সেই অলংকার।
বুকের মাঝে এতদিন, ছিল যে তার,
তাকে নিয়ে এইবার, শুধু মরিবার!
তারে সে ডাকে শুধু, আয় কাছে আয়,
বুকের মাঝে তবু, কেনও দূরে সরে যায়!
তারে সে পাবে, তাই সে তারি কাছে যায়,
নিজতার কোন বলে, তবু ঢাকা থেকে যায়।
নিজতার কোন জালে, সে দুরে সরে যায়,
নিজতার কোন বাঁধন, সে বাঁধা থেকে যায়।


যেমনি ভাঙা দ্বার, সহস্র জোনাকির অভিসার,
একদিন-একদিন, ছাড়াবে সে তার সকল পাড়।
আকাশ তখন ভরবে আবার, সেই আলোর ধারায়,
জীবন-মৃত্যুর কোনও খেলাই, বাকি রবে না আর।
মনের মাঝে নিজের-পরের, ছিঁড়বে সকল তার,
ছোট-বড়, উঁচু-নিচু, সব হবে একাকার।
সব তারা নিভবে, সব পাখি উড়বে, বাতাস ভরবে সেই দখিন্ হাওয়ায়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, সবই তার বুকের মাঝেই হায়!
সব তার ছিঁড়বে, সব বাঁধন খুলবে, হারাবে সে তার, নিজের অসীমতায়,
স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল, স্বাধীনতা তার বুকের মাঝেই হায়!!!




২. কবিতা: আমি শুধু হাসি
Amit Naskar

অর্থ আমারে করেছে খুশি, আমি অর্থের গান গাই,
ভালোবাসা! সেতো হাসির কথা, আমি শুধু হাসি তাই।
অর্থের বলে আমি বিশ্ব ঘুরি, আমি দেখি অর্থের রুপ,
সন্ধ্যা-আরতি, আজানের গান, ভুলেছি হারানোর সুখ।
দুই শালিকে আর করেনা ঝগড়া, আমার বাড়ির ছাদে,
কখন আসে, কখন যে যায়, আমার হাসির ফাঁকে।
দমকা এই হাসির চোটে, নীরবতার বানী গুমরে কাঁদে,
মুগ্ধতা আর আসে না ফিরে, আমার এই হাসির মাঝে।
ও মেয়ে তোর আঁচল দেখে, মনে পড়ে না আর মায়ের কথা,
সোনা-রুপা দিয়ে তাই, এবার তোর মুর্তি গড়া।
ঐ মুর্তির অহং মেখে, আমি জ্বালাই তোকে, আর নিজেও আমি জ্বলি।
ও মেয়ে তোর রুপের অহং, হায়রে! কারে আমি বলি।
প্রেমের কথা যতই বলি, ইন্দ্রীয় ভোগে ততই মাতি,
ভালোবাসা, তারে হাটে কিনি, আর আমি শুধু হাসি।

অর্থ আমারে করেছে খুশি, আমি অর্থের গান গাই,
ভালোবাসা! সেত হাসির কথা, আমি শুধু হাসি তাই।


৩. কবিতা: উল্টোস্রোতে

Amit Naskar

বইছে রক্ত উল্টোস্রোতে, আসক্তিরই রঙে রেঙে,
বেচা-কেনায় মন মেতেছে, মনুষ্যত্বের এই বাজারে।
বিবেক-বুদ্ধি হল বেচা, ভালোবাসা এবার হল কেনা,
নারীত্বে আমার ঘূণ ধরেছে, যায় না আর তাকে চেনা।
ধর্ম এবার বলছে কথা, ব্যাকুলতার সব উর্ধ্বে উঠে,
সন্ধ্যা-আরতি, আজানের গান, পায় প্রতিষ্ঠা আমার আমিত্বে।
বাইবেল, কোরাণ, গীতার বানী, চলছে তারও দর কষাকষি।
ভক্তিমাখা চোখের পানি, হায়রে! তোরে আমি কোথায় বেচি?

বইছে রক্ত উল্টোস্রোতে, আসক্তিরই রঙে রেঙে,
বেচা-কেনায় মন মেতেছে, মনুষ্যত্বের এই বাজারে।





1 টি মন্তব্য:

  1. সত্যি তোর লেখা সাধারণ মাপের নয়, তু্ই অবাক করলি আমাকে তুই লেখা দিয়ে অনেক উন্নতি কর ,এই আশীর্বাদ korlamp

    উত্তরমুছুন