শ্রাবণ
সুপ্রকাশ অধিকারী
আমার কচিবেলার শ্রাবণ...
সাঁকোর নিচে অগাধ স্রোত
এ-মাঠ থেকে ও-মাঠ ভাসতে ভাসতে শিখে গেছি কত বিচিত্র সাঁতার।
এখন জলে জলে বিষ;
নর্দমা মিশে গেছে মাঠেদের সাথে; বাথটবে শিখছে সাঁতার
ও-পাড়ার ধনীদের মেয়ে।
আমার অঙ্কুরোদগমের শ্রাবণ...তিন-চারদিন লাগাতার চলতো বৃষ্টি-তুফান।
গাঁয়ে ঘরে লোকে বলে ফাঁপি...এ-দুয়ার সে-দুয়ারে ঘুরে ঘুরে অবসরে কচিকাঁচা শিখে যেত টোয়েন্টি-নাইন।
রাতে জেগে চলতো পাউস; আঙটি'তে লাগাতার লড়াই... মাগুগের কাঁটা-মানুষের হাত আর ঢ্যুঁর'টার দাঁতে।
সেই বিল আর নেই ... বয়েসের ভারে মজে যায় সব...
এই শ্রাবণের তাপে।
আমার আঠারোর শ্রাবণ!
কুঠার ওপর হ্যারিকেন জেলে, খড়ের চালের ফুটোর নিচে হাঁড়ি পাতে মা! সারারাত জেগে জল ভরা জল ফেলা খেলা ... হাসি মুখে অবহেলা অভাবের সাথে।
আমার বন্যার শ্রাবণ...
সব হারিয়ে আশ্রয় নিয়েছি তোমার পাকা দালানে...মুঠো ভরে খেয়েছি চিড়ে-গুড় সুখে।
কোন ফাঁকে চুপ করে গুঁজে দিলে হাতে গরম পাঁপড়।
এখনও শ্রাবণ আসে;
বৃষ্টি বিহীন মেঘে আর নেই জল...এখানে সুখ নেই... দুঃখ নেই...
শুধুই সময় বয়ে যাই হাওয়াদের সাথে!
অজান্তে বোকা চাষি হয়ে গেছে কখন মজুর।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন