বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৮

বর্ষামঙ্গল সংখ্যা- ২৮



১. কবিতা: বোধিবৃক্ষ।
নাম: মহাম্মদ আরিফ।

ওগো বটবৃক্ষ আবৃত পাতায় কলেবর তোলো
বেতস চোখে অঞ্জন দিলে প্রায়ান্ধকার আঁচলের
সমাকীর্ণ কোটরে পাতি এক অধিবাস।
আবার যদি বা জন্ম নিল হংসমিথুন তোমার সকাশে।

ফিরে এসে দেখি তোমায় তেমনই অলকদামে।
জোনাকিপুঞ্জ হাসে ও ভাসে তোমার আলোর ঝর্ণা স্নানে।
স্তব্ধ রাত পাতা খুলে দ্যাখে জাতক গল্প
ঝুরি বেয়ে বেয়ে নেমে যায় গভীর প্রক্ষালনে।

বিরহ হলো প্রগাঢ় এখন নিথর দুপুরে
দীঘির জলের বেদনা তোমার মুখের চাদরে
নামিয়ে দিল শরৎ মেঘের টুকরো বাহু
পথের কাঁকড়ে আরো দাগ লাগে পিঙ্গলঘন।

কতদিন তুমি অদেখা হয়ে নিজের মাঝে?
কম্পিত হাতে কম্পিত পায়ে বুকের সমাধি আরো প্রাচীন
সকাল সন্ধে বাহু বন্ধনে তোমাকেই ডাকি,
একাকী, সুগম বন্ধু আমার মর্মতলের
বটবৃক্ষ, আঁকড়িয়া থাকো আমায় আমার।



২. কবিতা: মেঘ সারাদিন।
নাম: মহাম্মদ আরিফ।

মেঘ সারাদিন বৃষ্টিতে হলাম সর্বহারা
শার্সি ভেজে বাষ্প জলে, সামনে দাঁড়িয়ে
অথৈ ভিড়ে ভাস্কর্যের নিঁখুত মীরে, পাগলপারা।
ধুয়ে গেছে কবে 'বৃষ্টি ভেজা'।
মেঘের আদলে মেঘের ভিতর চতুর ঝঞ্ঝা
কীট ঘোরতর, ছেয়ে দিল সব হৃদিমজ্জা।
তুমি অপেক্ষায়, নগ্ন কায়ায় আছে শয্যা
আদুর পুলকে নিভু আলোকে খেলার মায়ায়।
আতিপাতি খুঁজি, বহু চেনা তুমি ফুঁপিয়ে কাঁদো
হারিয়ে মুখোশে মুখ ধ্রুবতারা লুকোচুরি খেলায়।

উৎপাটিত 'মন কেমনের" দুয়ারে বাড়িয়ে
পায়ের দলন, যেন সব ক্ষণ অনাদি স্মরণ।
কোন সুদূর নদী হয়েছিল সে সব মেঘেরা?
রামকিঙ্করও গেয়ে উঠেছিল বেসুরো গলায়
রাত নর্তকীকে শক্তিতে পেল, গালিবে পেল সাকীকে।
বিষাদস্নাত স্নিগ্ধ বিকেলে জল ঝরিয়ে
সে সব মেঘেরা হাওয়ার দোলায় জলকে যায়
সাত সমুদ্দরে ঠিকানা হারিয়ে মাঝ রাত্তিরে।
তখন তোমার মুখে ফুটে উঠেছিল প্রদোষ ছায়ায় একাকী বনলতা।
সামনে রাখা চতুর্ভূজ আলো কবে হয়ে গেল
মেঘ সারাদিন মেঘ সারাদিন
শার্সি ভেজে বাষ্প জলে, বৃষ্টিতে আমি সর্বহারা
অথৈ ভিড়ে পাগলপারা।



1 টি মন্তব্য: