প্রান্তিক মুহূর্ত
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
পারলে মাছেদের সঙ্গে সংসার করে দেখো
কানকোর নিঃস্বাস চিরে ধ্বসে পড়তে পারে দেয়াল-
সমস্ত ইতিহাস বইতে তুমি লেপ্টে রাখো শহরের ছবি
সমুদ্রে ডুবে থাকা সত্ত্বেও যেসমস্ত ঘর জলমগ্ন নয়
পারলে সেখানেই বাস করে দেখো
বেঁচে থাকার জন্য আরো উদাহরণ খুঁজে পাবে...
শুধু মাছেদের নিঃশ্বাস জমে থাকে সমুদ্রের নিচে-
তুমি প্রেমিকের সঙ্গে একা দরজা আটকালেও
জলজ সমাজ সেই খবর ধামাচাপা দেয়...
আমি বহুযুগ ধরেই জ্ঞানত ঘুমিয়ে আছি জলের গভীরে
তুমি চাইলে আসতেই পারো
আমি কোনদিন কানকোর নাতিশীতোষ্ণতায় তাজা রোদ্দুর লাগতে দেব না-
সামান্য উষ্ণতার তারতম্যে আমি প্রতিটি জীবনের প্রান্তিক মুহূর্ত খুঁজি...
শরীর চুরি
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
ঘামে ভেজা চিঠি থেকে সরিয়ে রাখো ছায়া
কখনো তা শরীরে মুড়ে শুধরে নাও অনিচ্ছাকৃত ভুল-
ঘরে মুখ লুকিয়ে রাখলে তুমি আবার দোষী সাব্যস্ত হও
সমস্ত শরীর ছেড়ে বুকে ছায়া মেখে নিলে
আমি জানতে পারি আকাশ থেকে শাখাবট ঝুলে পড়েছে ধুলোর রাস্তায়...
তুমিও সন্ধ্যে হলেও নিয়মিত ছায়া খুঁজে দেখো
শুয়ে থাকো প্রবীণ উত্তাপ থেকে জেগে ওঠা সুচালো ঠেসমূলের গায়ে
প্রতিটি অস্ত্রের ধার পিঠে সয়ে নিলেও
হাত রাখার জন্য কোনো অবাধ নির্ভরতা প্রশ্রয় দেয় নি আজ-
যেকোনো সকাল থেকেই তুমি ছদ্মবেশে বন্দি
বুকে জমে থাকা পাথরের ছায়া সরালেই
আমি প্রতিদিনের মত তোমার ক্ষতচিহ্ন দেখতে পাই...
আবার রাত্রি নামবে
আবার ঘন হবে গাছেদের একাকিত্ব
তুমি বিশ্বাস রেখো
ছায়ার বিভেদ বোঝাতে আমি আজও তোমার শরীর চুরি করি...
খোলস
কৌশিক চক্রবর্ত্তী
একটা বৃত্তের মধ্যে বেড়ে উঠছে ক্ষমতা
এখনো সমানুপাতে চওড়া রেললাইনের ধারে
বিক্রি হচ্ছে খসে পড়া বুক
কাওকে ভালোবেসেছিলাম বলে জমা করে রেখেছি সমস্ত কৈফিয়ত
যা হয়ত কখনো তুলে দিতে হবে গণতন্ত্রবাদীদের হাতে...
আমি এখন ব্যারিকেড ভাঙতে পারি,
আমি এখন হেঁটে যেতে পারি সমস্ত ধর্মঘটের বুকে,
আমি আবার ডানাপাখনা গুটিয়ে নিজের শরীরেই পুষে রাখতে পারি লোভ-
ফিরে যাবার জন্য কোনো ফুটপাথ লাগে না-
একটা আঁচড়ে যখন খুলে পড়ে রোদ, আলো পড়ে রাস্তায়
স্বভাবতই আমি তখন বিচ্ছিন্নতাকামীদের দলে...
এখনো সাহসী হোক রাস্তায় শুয়ে থাকা গোপনচরিত্ররা-
হয়ত সেখানে কিছু জবানবন্দী ফেরি হতে পারে,
যা শুনলে বলে দেবো রেললাইনের পাশে নির্জীব পাতাগুলো
সৈনিকের বুক থেকে ঝরে পড়েছে কিনা...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন