শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০১৯

চাণক্য বাড়ৈ

চাণক্য বাড়ৈ - এর কবিতাগুচ্ছ


সনেট-১

আবার এসেছি বঁধু, ধরো এই কাঙালের হাত
উন্মাতাল ভ্রমরে নাও পদ্ম ফোঁটা বক্ষের বাগে,
বিরলে উঠুক জমে দুজনার কামের মৌতাত
শোয়াও সোনার খাটে, স্বর্গ রচি সোহাগে-সম্ভোগে।
অধর তূণীর হতে লক্ষ্যভেদী তীরন্দাজ নারী
তিলের ঐ তীর ছোঁড়ো; সমর্পনে পুরুষের সুখ
প্রেমের সীমার তুমি তীক্ষèধার তনু-তরবারি
বসনের আধার হতে নির্দ্বিধায় করো উন্মুখ।

কে কবে কম কোথা কামিনীর কায়ার কেরামতি
যেভাবে দিয়েছ নারী ডেকে নিয়ে বেহেস্তের ফল!
লাল লেহেঙ্গা ফেলে লজ্জাবতী লো, সাজো লীলাবতী
রূপের তর্জমা করি, পান করি অমৃত গরল।
কার্পণ্য করেনি বিধি, পেলে তাই অনন্ত যৌবন
নিরুত্তরে আছ কেন শোনো নাকি কবির ক্রন্দন?





সনেট-২

রতির আফিম নিয়ে ধীর বেগে নেমে এল রাত
যৌবন শরাব তুলে এলে তুমি দয়িতা আমার
নিষিদ্ধ লবণ স্বাদে এসো ভুলি হারানো জান্নাত
তোমার বসন আজ রমণীয় রাতের আঁধার
পিদিম নিভিয়ে দাও ফিরে যাই আদিম গুহায়
খুঁজে দেখি কোথা আছে আঁধারের সপক্ষ বচন
অলক এলিয়ে এসো সুগন্ধি ছড়িয়ে হাওয়ায়
সর্বাঙ্গে বিলাও সখি, ঈষদুষ্ণ মদির চুম্বন।

রাতের প্রহর গুণে বাড়ে সখী তোমার তিয়াস
তনুর পেয়ালা হতে ঢেলে দাও ফেনিল শরাব
স্মরণীয় হয়ে থাক আজিকার রজনী বিলাস
রাতের মাহাত্ম্য নিয়ে শাস্ত্রকার লিখুক কিতাব
সরল স্বীকার শোনো, পুরুষের মিথ্যা বাহাদুরি
কবির কাব্যের গাছে চিরকাল জল ঢালে নারী।

সনেট-৩

কর্ষণে নিমগ্ন চাষা খুলে দেখি পুবের দুয়ার
এ বর্ষণে ফলাবে সে মুঠি মুঠি সোনার ফসল
এক হাতে পুষ্ট বীজ স্বপ্ন চোখে অজস্র অপার
মাটির জঠরগামী অন্য হাতে লোহার লাঙল
ফালের আঘাত সয়ে কেঁপে ওঠে অনাবাদী জমি
মেঘের গর্জন শুনে তড়পায় কৃষাণের বুক
সাপের জিভের মতো যেই জ্বলে অস্তাচলগামী
বঙ্কিম বিজুলি ছটা কাঁদে এই বুকের ডাহুক।

দিন, ক্ষণ, তিথি গুণে এ কৃষাণ দিতে পারে চাষ
নরম কাদার মতো যদি হও শয্যায় সরস
আমার মৃত্তিকা তুমিÑ ব্যক্ত করি এই অভিলাষ
কুল রক্ষা করো যদি, পান করো রতির চরস
বর্ষণে সৃজনে সুখ প্রকৃতির এই শুদ্ধ রীতি
শিয়রে দাঁড়িয়ে কবি; একবার দাও অনুমতি।


সনেট -৪

কুসুম বদনে বঁধু কত মধু করেছ ধারণ
কারে যাচি মুখখানি ভিজিয়েছ রূপের সুধায়
রূপে তব লেখা আছে বল সখী কাহার মরণ
আলোর ঝলকে দেখো হারায়েছি ফড়িঙ হৃদয়
প্রেমিক পুরুষ আমি যেন এক কামার্ত মদন
কেন দাও দাহ দেহে দগ্ধ করো কিসের আশায়
শিশিরে সিনান করি কামরাঙা কোমল নয়ন
কেন করো পরাজিত ছলনার কপট পাশায় ?

কাতর কায়ায় কেন মেখে রাখো কামের কাজল
চুলের খোঁপায় বুঝি ছল করে আমাকেই বাঁধো
আমারে জড়াতে বুঝি পেতে রাখো বুকের আঁচল
বাঁশির বিরহী সুর কেন বঁধু সকরুণ সাধো
কেন এত প্রহেলিকা কেন বলো এত ছলাকলা
অবুঝ কবির কাছে কিছু তার যাবে নাকি বলা ?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন