মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০১৯

চতুর্থ ভাগ


লোকটা জেগে আছে

(আমন্ত্রিত কলম)

শুভঙ্কর দাস

পালকি চলেছে বীরসিংহের দিকে। চারজন বেহারা
হনহনিয়ে ছুটে চলেছে মাঠ-হাট পেরিয়ে।
ভেতরে বসে আছেন, এক আলোর পথিক।
যতদূর এগিয়ে যান, ততদূর অন্ধকার দূর হয়ে যায়।
সহসা ধেয়ে এল আক্রমণ। মাঠের মাঝখানে।
ক্রমাগত পাথর, ঢেলা আর লাঠির কুরুক্ষেত্র।
বেহারা রক্তাক্ত। প্রাণ বাঁচাতে হাওয়ায় গেল মিশে।
এবার পরমপথিক বেরিয়ে এলেন।
যে লোকটা পায়ের তলায় পিষতে থাকা মেয়েদের সামনের সারিতে এনেছেন।
 যে লোকটা পিতা-মাতাকে ঈশ্বর মনে করেন।
যে লোকটা বাঙালীর হাতে দিয়েছেন এমন এক আশ্চর্য ব‌ই,
যা ধরে তারা পৃথিবী পারাপার করতে পারে।
যে লোকটা ধর্মের দেখনদারির ঊর্ধ্বে কর্মকে পূজা করেছেন,
সেই লোকটা নেমে এলেন, দিলেন এক সিংহগর্জন,
'ওরে মূর্খ, এখন‌ও নিজেদের ভালো বুঝতে শিখলি না'


মূর্খের দল ভয়ে লুকায় যুগের জমাট অন্ধকারে।
কিন্তু তারা কোনদিন সরে না, নড়ে না বা মরে না!
তারা ঘরে ঘরে এইট পাশ মেয়ের বিয়ে দেয়, বিধবা মেয়েকে লাইনে নামিয়ে দেয়, লোহার পাতের উপর ধর্ষণ করে, পুত্রসন্তান হয়নি বলে বুকের উপর করাত চালায়, টাকার জন্য রেশনের কেরোসিনে
খান্ডবদহন সারে আর দিনরাত জিভে-চোখে-আঙুলে পুতুলের মত নাচায়।

তখন সেই সিংহগর্জন মহালয়ার অসুরদলনী
সুরের মতো ভাসতে থাকে
যা কোনদিন থামে না----
'ওরে মূর্খ, এখন‌ও নিজেদের ভালো বুঝতে শিখলি না!'

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন