শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

অভিজিৎ দাস কর্মকার,,,রথযাত্রা ও আজকের সমাজ


রথযাত্রা সংখ্যায় বিশেষ আকর্ষণ,,,,,

রথযাত্রা ও আজকের সমাজ,,,,,


অভিজিৎ দাসকর্মকার


বেদে জগন্নাথের সুস্পষ্ট উল্লেখ নেই। তিনি দশাবতার অথবা বৈদিক হিন্দু দেবমণ্ডলীর সদস্যও নন। অবশ্য কোন কোন ওড়িয়া গ্রন্থে জগন্নাথকে বিষ্ণুর নবম অবতার রূপে বুদ্ধের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। বিষ্ণুর রূপভেদ হিসেবে জগন্নাথ এক অসাম্প্রদায়িক দেবতা। তাঁকে এককভাবে হিন্দুধর্মের কোন একটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। বৈষ্ণব , শৈব , শাক্ত, স্মার্ত সকল শাখার অনুগামীরাই জগন্নাথকে পূজা করেন। এমনকি বৌদ্ধ  ও জৈন ধর্মসম্প্রদায়ের সঙ্গেও জগন্নাথের যোগ দেখানো হয়।

জগন্নাথের সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসবটি হল বাৎসরিক রথযাত্রা। এই উৎসবের সময় জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার মূর্তি মূল মন্দিরের (বড় দেউল) গর্ভগৃহ থেকে বের করে এনে কাঠের তৈরী তিনটি বিরাট রথে (প্রতি বছরই নতুন করে প্রতিটি রথ তৈরি হয়- জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ- রথে জগন্নাথের সঙ্গী হন মদনমোহন- নন্দীঘোষের উচ্চতা ৪৫ ফুট, ১৬ চাকা- ৮৩২ কাঠের টুকরো দিয়ে গড়া হয় রথ- লাল ও হলুদ কাপড়ে সাজানো হয়- নন্দীঘোষের সারথির নাম দারুকা- রথের মাথায় থাকা পতাকার নাম ত্রৈলোক্যমোহিনী- এই রথে ৪ ঘোড়া থাকে- জগন্নাথের রথের রশির নাম ‘শঙ্খচূড়া নাগুনি’- জগন্নাথের রথে সওয়ার হন আরও ৯ দেবতা- এঁদের মধ্যে আছেন গোবর্ধন, কৃষ্ণ, নরসিংহ, রাম, নারায়ণ, হনুমান, রুদ্র- জগন্নাথের রথে একজন রক্ষীও থাকেন- এই রক্ষীর নাম গারুদা

- বলভদ্রের রথের নাম তালধ্বজ- রথে বলভদ্রের সঙ্গী হন রামকৃষ্ণ- তালধ্বজের উচ্চতা ৪৪ ফুট- এই রথে মোট ১৪ চাকা রয়েছে- ৭৬৩ কাঠের টুকরো দিয়ে তৈরি হয় রথ- লাল ও সবুজ কাপড়ে সাজানো হয় রথ- তালধ্বজের সারথির নাম মাতালি- তালধ্বজের রক্ষীর নাম বাসুদেব- রথের মাথায় পতাকার নাম উন্যানী- রথের রশির নাম বাসুকি নাগ- বলভদ্রের রথেও ৯ দেবতা থাকেন- এঁদের মধ্যে আছেন কার্তিক, গণেশ, সর্বমঙ্গলা, মৃত্যুঞ্জয়, মুক্তেশ্বর- তালধ্বজেও থাকে ৪ ঘোড়া

- সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন- রথে সুভদ্রার সঙ্গী সুদর্শনা-দর্পদলনের উচ্চতা ৪৩ ফুট- এই রথে মোট ১২ চাকা রয়েছে- লাল এবং কালো কাপড়ে সাজানো হয় রথ- দর্পদলনের সারথির নাম অর্জুন- দর্পদলনের মাথায় থাকা পতাকার নাম নদম্বিকা- রথের রশির নাম স্বর্ণচূড়া নাগুনি- সুভদ্রার রথে থাকেন ৯ দেবী- এঁদের মধ্যে রয়েছেন চণ্ডী, চামুণ্ডা, বনদুর্গা, শুলিদুর্গা, শ্যামাকালী, মঙ্গলা, বিমলা- সুভদ্রার রথকেও টেনে নিয়ে যায় ৪ ঘোড়া) করে জগন্নাথদেবের মন্দিরের সামনে 'বড়দাণ্ড' নামক প্রশস্ত রাস্তা দিয়ে রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হয় উত্তর দিকে  গুণ্ডিচা মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।


প্রাচীন রীতি অনুসারে বিগ্রহ রথে তোলার পরে ওড়িশার গজপতি রাজবংশের প্রতিনিধি পথ পরিষ্কার করেন সোনার ঝাঁটা দিয়ে। প্রভু জগন্নাথের এই সেবাকে বলে ছেরাপহরা। রথ টেনে আনা হয় বলগণ্ডি। জগন্নাথদেবের মন্দির ও গুণ্ডিচার প্রায় মাঝামাঝি জায়গার নাম 'বলগণ্ডি'। রথের মাঝেই এখানে বিশ্রাম নেন পূজারি, সেবকরা। বিশ্রাম নেন জগন্নাথ, বলভদ্র, সুভদ্রাও। একটু খাওয়াদাওয়া হয়। একে বলে 'বলগণ্ডি ভোগ'। সেই বিশেষ ভোগে থাকে সুমধুর পানীয়, নানা ধরণের মিষ্টান্ন, খেজুর, আখ, নারকেল, কলা, প্রিয় ফল, ক্ষীরের তৈরি বিভিন্ন মিষ্টি, সুবাসিত শীতল জল, কর্পূর ও লবঙ্গ দিয়ে তৈরি সুগন্ধি মশলা পান ছাড়াও অসংখ্য উপকরণ। এর পরে গুণ্ডিচা বাড়ির দিকে চূড়ান্ত যাত্রা।

সেই সময়ে মহালক্ষ্মীকে তুষ্ট করার জন্য জগন্নাথ আবার তাঁকে ‘আজ্ঞা মালা’ (সম্মতির মালা) উপহার দেন। মহালক্ষ্মীকে ক্রুদ্ধ দেখে সেবকেরা গুণ্ডিচার প্রধান দরজাটি বন্ধ করে দেন। মহালক্ষ্মী অন্য একটি দ্বার দিয়ে প্রধান মন্দিরে ফিরে আসেন। ‘হেরা গোহরি’ নামে একটি পথ দিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। এরই নাম হেরা পঞ্চমী।


অসাম্প্রদায়িক দেবতা____ তবে কেন আমরা দলাদলি, রং অরাজনৈতিক জায়গায় রাজনীতির ছাপ ফেলে আমিত্বকে বড়ো করার প্রচেষ্টায় উঠে-পড়ে লেগেছি। কিসের জন্য?অস্তিত্ব কি সত্যিই সংকট জনক? তবে সরে আসি।অন্য যে আমার থেকে সুপিরিয়র আমি হয়তো ইগোর জায়গা থেকে মানতে চাইছি না।
ভাবুন। দেখুন এই যে রথযাত্রার আড়ম্বর---কেন? আনন্দ,আশা, সম্প্রীতি রঙিন আর মনুষ্যত্ব।এই তো!____তাই না!
"জগন্নাথ" কথাটি তৎপুরুষ সমাস। 
"জগন্নাথ" শব্দটি "লোকনাথ" শব্দটির মতোই একটি বর্গনাম। আসলে যে দেবতাকেই সর্বোচ্চ জ্ঞান করা হয়, তাঁকেই "জগন্নাথ" বলা চলে। 

ওড়িয়া ভাষায় "জগন্নাথ" দেবের মূর্তির গড়ন অনুসারে তাঁর "কাল্য" (অর্থাৎ, "কালো দেবতা" বা "কালের দেবতা"), "দারুব্রহ্ম" (অর্থাৎ, কাষ্ঠরূপী ব্রহ্ম), "দারুদেবতা" (অর্থাৎ, কাঠের দেবতা), "চকাক্ষী", "চকাদোলা বা "চকানয়ন" (অর্থাৎ, যে দেবতার চোখ গোলাকার) নামেও প্রচলিত। জগন্নাথের মধ্যে বিষ্ণুর সকল অবতারের চিহ্ন আছে। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে তাঁকে বিষ্ণুর এক-একটি অবতারের মূর্তিতে পূজা করা হয়। বার্ষিক রথযাত্রার সময়ও জগন্নাথকে বামন রূপে পূজা করা হয়। 
                 কাহিনী অনুসারে, এমনও শোনা যায় বৃন্দাবনে গোপীরা একদিন কৃষ্ণের লীলা ও তাঁদের কৃষ্ণপ্রীতির কথা আলোচনা করছিলেন। কৃষ্ণ গোপনে সেই সকল কথা আড়ি পেতে শুনছিলেন। কৃষ্ণভগিনী সুভদ্রাকে নিয়োগ করা হয়েছিল গোপীরা যখন কৃষ্ণের কথা আলোচনা করেন তখন কৃষ্ণ যেন তাঁদের নিকটবর্তী না হতে পারে সেদিকে নজর রাখার জন্য। কিন্তু গোপীদের কৃষ্ণপ্রীতি দেখে পরিতুষ্ট সুভদ্রা তাঁদেরই কথা শুনতে শুনতে বিমোহিত হয়ে গেলেন। দেখতে পেলেন না যে তাঁদের দুই দাদা কৃষ্ণ ও বলরাম এগিয়ে আসছেন। শুনতে শুনতে দুই ভাইয়ের কেশ খাড়া হয়ে উঠল, হাত গুটিয়ে এল, চোখদুটি বড় বড় হয়ে গেল এবং মুখে আনন্দের উচ্চ হাসির রেখা ফুটে উঠল। এই কারণেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার এইপ্রকার রূপ। বৈষ্ণবরা কৃষ্ণের এই বিমূর্ত রূপটিকে পূজা করেন।


আবার বহুল ভাবে প্রচলিত কৃষ্ণ তাঁর ভক্ত রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের সম্মুখে আবিভূর্ত হয়ে পুরীর সমুদ্রতটে ভেসে আসা একটি কাষ্ঠখণ্ড দিয়ে তাঁর মূর্তি নির্মাণের আদেশ দেন। মূর্তিনির্মাণের জন্য রাজা একজন উপযুক্ত কাষ্ঠশিল্পীর সন্ধান করতে থাকেন। তখন এক রহস্যময় বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ কাষ্ঠশিল্পী তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হন এবং মূর্তি নির্মাণের জন্য কয়েকদিন চেয়ে নেন। সেই কাষ্ঠশিল্পী রাজাকে জানিয়ে দেন মূর্তি নির্মাণকালে কেউ যেন তাঁর কাজে বাধা না দেন। বন্ধ দরজার আড়ালে শুরু হয় কাজ। রাজা ও রানী সহ সকলেই নির্মাণকাজের ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ওঠেন। প্রতিদিন তাঁরা বন্ধ দরজার কাছে যেতেন এবং শুনতে পেতেন ভিতর থেকে খোদাইয়ের আওয়াজ ভেসে আসছে। ৬-৭ দিন বাদে যখন রাজা বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এমন সময় আওয়াজ বন্ধ হয়ে যায়। অত্যুৎসাহী রানী কৌতুহল সংবরণ করতে না পেরে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন। দেখেন মূর্তি তখনও অর্ধসমাপ্ত এবং কাষ্ঠশিল্পী অন্তর্ধিত। এই রহস্যময় কাষ্ঠশিল্পী ছিলেন দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা।  মূর্তির হাত-পা তখনও তৈরী হয়নি বলে রাজা বিমূর্ষ হয়ে পড়েন। কাজে বাধা পড়লো, অনুতাপ করতে থাকলেন। তখন দেবর্ষি নারদ তাঁর সম্মুখে আবির্ভূত হন। নারদ রাজাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন এই অর্ধসমাপ্ত মূর্তি পরমেশ্বরের এক স্বীকৃত স্বরূপ।



তাহলে কি তিনি ঠুঁটো জগন্নাথ?  না... কারণ একটু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন একহাতে চক্র আর অন্য হাতে শঙ্খ আছে।আমাদের বিশ্বাস উনি আমাদের রক্ষা করার জন্য সর্বদাই তৎপর।কারণ উনিও জানেন ওনার সন্তানেরা সকলেই বিপদের দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে চলেছে।সময়.....কাল...নিয়ে চলেছে এক অজানা খাদের দিকে।সন্তান খারাপ কাজ করলে তাকি কি ফেলে দিতে পারে পিতা হিসাবে? না। শুধরে নেন।আমাদের ও তিনিই শুধরে নেবেন। তবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে বই কি!জ্ঞানত তেমন কাজে নিজেদের লিপ্ত না করে চলুন সুস্থ স্বাভাবিক একটা সমাজ গড়ে চলি।
         রথযাত্রা হিন্দু সমাজের একটি বাৎসরিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের ২য়া তিথিতে রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এর সাতদিন পর শুক্লপক্ষেরই দশমী তিথিতে রথের ফিরতি টান অনুষ্ঠিত হয়। একে বলা হয় উল্টোরথ। পুরনো কোন কোন লেখায় পাওয়া যায়- বৌদ্ধ সামাজিক উৎসবে রথে করে বুদ্ধমূর্তি নিয়ে পথ পরিক্রমা করা হতো। ‘ফা-হিয়েনের ভ্রমণ-বৃত্তান্তে বৈশাখী পূর্ণিমায় রথযাত্রার কথা পাওয়া যায়। নটরাজ শিবের মূর্তি নিয়ে কর্ণাটে (ভারত) রথ ভ্রমণে প্রথা আছে পৌষালী পূর্ণিমার চারদিন আগে।’ তবে ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের সর্বত্র রথারোহী দেবতা হলেন প্রভু জগন্নাথ, সঙ্গে বৈমাত্রেয় ভাইবোন বলরাম ও সুভদ্রা। তবে অনেক স্থানেই জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার বিগ্রহের অভাবে রাধা-মাধব তথা রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ রথে স্থাপনপূর্বক রথযাত্রা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।

রাজ-কর্মচারীবৃন্দ রথের রশি ধরে সর্বশক্তি প্রয়োগে টানছেন কিন্তু রথের চাকা অনড়। খবর পেয়ে দেশের রাজা প্রতাপ রুদ্র সপরিষদ এসে রথের রশি ধরে আকর্ষণ করতে লাগলেন; তথাপি রথের চাকা স্থির, নিশ্চল। তখন মহাপ্রভু বললেন- যে শবর বা নিম্ন বর্ণের মানুষদের তোমরা অচ্ছুত-অন্ত্যজ বলে দূরে সরিয়ে রেখেছ, তাদের রথের রশি ধরার সুযোগ দাও, তোমাদের শক্তির সঙ্গে ওদের শক্তিও যোগ কর তাহলেই রথ তার গতি ফিরে পাবে। অনেক টালবাহানার পর সমাজে পিছিয়ে থাকা অচ্ছুৎ অন্ত্যজদের রথের রশি ধরার অনুমতি মিলল। সমাজের অন্য সবার শক্তির সঙ্গে যে মুহূর্তে যোগ হল তথাকথিত অন্ত্যজদের শক্তি- সবাইকে অবাক করে দেবতার রথের চাকা তখনই সশব্দে এগিয়ে চলল সামনের দিকে।


রথযাত্রার উদ্দেশ্য  হোলো অগ্রগতি। চাকার অগ্রগতির সাথে মন মানসিকতার অগ্রগতি। আমরা জনি রথের চাকা সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে, মানেই সমাজের অগ্রগতির পথ এগিয়ে চলেছে।সে তো ভারতের পতাকার অশোকচক্র ও অগ্রগতিরই প্রতিক।কিন্তু দলাদলি কাদা ছোড়াছুড়ি করে অগ্রগতির নামে কি করছি? আমরা কি জানি না? বুঝতে পারছি না? সব গোচরে।আসলে জ্ঞান পাপী। কিছু প্রতিবাদ করতে গেলেই রাশ ধরে টানে সংসার,বৌ আছে বাবা-মা বৃদ্ধ, সন্তানের ভবিষ্যৎ।তবে যারা স্বাধীনতা আনলো? তারা ভাগ্যিস নেই।উঁচু উঁচু মূর্তি মোড়ে মোড়ে সাজিয়ে রেখেছি। বছরে একদিন পরিস্কার করা হয় আর মিডিয়ার সামনে ঘটা করে মাল্যদান হয়।
        সামগ্রিক বিচারে রথযাত্রা হলো সমাজের সামনের দিকে এগিয়ে চলার প্রতীক। সামাজিক ন্যায়-নীতি প্রতিষ্ঠা ও দায়-দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সমাজের কোন অংশকে অপাঙ্ক্তেয় করলে, অচ্ছুত-অন্ত্যজ বলে দূরে সরিয়ে রাখলে সমাজের সামনের দিকে এগিয়ে চলার গতিও রুদ্ধ হয়ে পড়ে; সমাজ ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। সমাজ তার ইপ্সিত লক্ষ্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়। পক্ষান্তরে সমাজের উচ্চ-নীচ, ধনী-নির্ধন, নারী-পুরুষ, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণ যদি নিশ্চিত হয়, তবেই সমাজ সামনে এগিয়ে চলে। এক কথায়, রথযাত্রা মানুষের মধ্যে গোষ্ঠীভাব জাগায়, সমাজের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে মানুষকে সমষ্টিগতভাবে বাঁচতে উদ্বুদ্ধ করে। এই হল রথযাত্রার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য। আমার সামান্য জানা আপনাদের সাথে ভাগ করলাম মাত্র।


সম্পাদিকা বন্ধুসম সুপ্রীতি বর্মনের বিশেষ ইচ্ছাকে প্রাধান্য জানিয়ে লিখলাম। শুধু সুস্থ সমাজ হোক এটাই কাম্য।আমরা ছোটবেলায় সারাটাদিন রথতলায় খাওয়া-দাওয়া মাচায় তোলা সময় কাটাতাম।আমি বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা।আমাদের মন্দির নগরী বিষ্ণুপুর গুপ্ত বৃন্দাবন নামে পরিচিত। কথিত আছে বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজাকে শ্রীকৃষ্ণ স্বপ্নাদেশ দেন যেন বিষ্ণুপুর বৃন্দবন হিসাবে জগতে পরিচিত হয়।শর্ত ছিল বৃন্দবন থেকে যে রথ বিষ্ণুপুর আসবে তা বিষ্ণুপুর ঢোকার আগেই যদি ভোরের কাক ডাকে তবে রথ সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হবে।কালের চক্রে রথ নগরদ্বারের ৫০ মিটার দূরে কাক ডাকলো।চাকা ওখানেই প্রতিষ্ঠিত হলো।তাই গুপ্ত বৃন্দবন।আমাদের রথ পিতলের। প্রায় ৩০ ফুট উচ্চ। ওখানে রাধলাল জিউ কে বসানো হয়।তাই আমরাও চাই আমাদের উত্তরসূরিদের একটা গর্বের ভবিষ্যৎ দিয়ে যেতে,,, যাই হোক এটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।
  ভালো থাকুন।
  কবিতায় থাকুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন