অণুগল্প: ভাতের_গন্ধ
কলমে : ভারতী দাস
সাত সকালে রিফুইজী ক্যাম্পে চাল ফোটার গন্ধে সুরভিত চারপাশ।
ছন্নছাড়া উদ্বাস্তু লোকগুলো তীর্থের কাকের মতো চেয়ে আছে জ্বলন্ত উনুন টার দিকে।
চুলের থেকে শেষ বিন্দু তেল উবে গেছে বহুদিন। কোটরগ্রস্থ পিচুটি চোখে উদাস দৃষ্টি। বদলে যাওয়া পৃথিবী টায় ওরা পরিযায়ী শ্রমিক।
ডালে ফোড়নের গন্ধে কঁকিয়ে ওঠে ছেলেটা। চিল চিৎকারে ছিন্ন হয় নিস্তব্ধতা। অল্পবিস্তর কাশি সবার হলেও, নিরন্ন পেটে শিশুর কান্না যেন অসহ্য!
কোণায় বসে থাকা অচেনা বৃদ্ধার ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়........
"বলি অ বৌ, ছিলাটোকে চুপ করা কেনে। একটুকু বুকের দুধ দে কেনে, চুপ হয়ে যাবেক।"
ঝাঁঝিয়ে ওঠে অষ্টাদশী , তিনদিন পথ চলার ধকলে অবসন্ন শরীর। জঠর পুড়ছে খিদের আগুনে.......
" দুধ থাইকলে তুমায় বলতেই হইতো না মাসি। বেটা তো আমার, পরাণ আমার হু হু করইছে । এই অভাগা দিনে ভাগ্যের সাথে দুধটোও শুকায়ে গেছে গো। তিন দিন জলও পেট ভইরে জুটে নাই।"
বৃদ্ধার চোখ ভিজে আসে, অপলক তাকিয়ে থাকে উনুনের ছাইয়ের দিকে।
পাত পড়তে শুরু করেছে কাঙালী ভোজনের জন্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন