অনুগল্প: গৃহযুদ্ধ
কলমে : ভারতী দাস
এই লজ্জা আর প্রাণে সয় না। সামান্য একটা চাওয়া, সেটার জন্য এতো কিছু.......
রাগে গজগজ করতে করতে এসে বসলুম,চায়ের দোকানে। কি ভাগ্যিস সেটা খোলা ছিল! এতদিনের গৃহবন্দী জীবনে একটু মুক্তির স্বাদ।
দূরত্ব টা বজায় রেখেছিলুম, পুরো এক মিটার। প্রাণে ভয় সবারই তো আছে!
দোকানের বেঞ্চির শেষ প্রান্তটা একেবারে জাতীয় সড়কের গা ঘেঁষা। এখন গাড়ি চলাচল নেই বললেই চলে। হরিণ গেলা অজগরের মতো পড়ে আছে রাস্তাটা। ইতিউতি এক দুটো মানুষ চোখে পড়লেও, সংখ্যায় খুবই কম।
মোহন সবে চায়ের জল বসিয়েছে। আমিও মুঠোফোনে নতুন খবরের সন্ধানে ব্যস্ত। চোখ পড়েনি সড়কটার দিকে। একটা পাগলা হাতি কখন যেন চাকার সাহায্যে এলোমেলো ছুটে আসছে..........
গতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না কিছুতেই, হুড়মুড়িয়ে এসে পড়লো দোকানের ওপর.......
যন্ত্রণা, অসহ্য যন্ত্রণা........
ককিয়ে উঠে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতেই........
হিমশীতল জলের ঝাপটা চোখে মুখে, সাথে তীক্ষ্ণ বাক্যবাণ বিদীর্ণ হল কর্ণপটহ......
"সারাদিন শুধু পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে, আর স্বপ্ন দেখে চেঁচাচ্ছে। দেখে গা জ্বলে যায়।
তোমায় যে চা পাতা আনতে বললাম, সেটা না এনে, তুমি দিবা নিদ্রায় মগ্ন!বলি, সংসারটা কি আমার একার? "
হাজার কথার মাঝেও দেখলুম এককাপ চা বেলা বারোটার সময়েও, সরলা রেখে গেছে আমার জন্য।কোথা থেকে যে সবদিক সামলায়,ঈশ্বর জানেন। বড্ড ভালো বৌ আমার। না, কাল সকালেই সব বাজার করে নিতে হবে, না হলে গৃহযুদ্ধ যে কোন দিন শুরু হয়ে যেতে পারে।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন