((সম্পাদকীয়))
সুপ্রীতি বর্মন
((লকডাউনে ঘরবন্দী নাগরিক সংক্রমণ
শীতঘুমের অজ্ঞাতবাসে মৃত্যুর পরিসংখ্যান
ক্রমবর্ধমান নাগরিক অবক্ষয়))
Current affairs
(Editorial segment)
News Collected from News 18 Bangla
পরিণয়ের উত্তরণ একসাথে যাত্রায় সিঁড়ির প্রথম ধাপে যখন আছড়ে পড়েছে মৃত্যুরমণক্রিয়ার শোক,,,,,
তখন সেই শৈবালের গোছানো চাদরে ঘাটে নোঙরের কাছে পরাজিত বশ্যতায় আত্মসমর্পণ করতে লেগেছে গার্হস্থ্য এর সারি সারি নৌকা যেন তাদের যাত্রা এখন আপাতত স্থগিত আছে আর ঘর থেকে বের হবার কোন প্রয়োজন নেই এখন,,,,,
এখনো তাদের সময় হয়ে আসেনি দেরি আছে,,,,
মৃত্যুমিছিলের পরিসংখ্যানে বাড়লো আরো একটি অস্থিচর্মসার মনুষ্য শুধু একটি সংখ্যা,,,,,
এখন তার অস্তিত্ব তখন ঝুরো বালির মতন হয়ে যায় আর পায়ের তলার মাটি চলে যায় এক স্ত্রীর তার মৃত স্বামীকে নিয়ে,,,
অশ্লীল নির্লজ্জতায় তখন হাড়গিলেদের ছায়ার কোরিওগ্রাফির অচল মুদ্রার স্থিরচিত্র চতুষ্পার্শে থেকে তৈরী করে এক শ্বাসরোধকর জমাট অন্ধকারের নির্জনবাস,,,,,
দূরে থেকে দাঁড়িয়ে কেবল পৈশাচিক নাগরিক পতঙ্গ শুকতে থাকে মৃত শরীরে সংক্রামক ব্যাধির লক্ষ্মণ,,,,
সেটা আছে কী নেই তার শরীরে তাও এখন এক জটিল ধাঁধা হয়েই থেকে যায়,,,,
লকডাউনে যখন শাঁখা পলা ভাঙা অশ্রুশিশির ভোরে ধুয়ে যেতে লেগেছে অভিশপ্ত জাগ্রত বিগ্রহ তবুও কুসংস্কারাচ্ছন্ন লুন্ঠিত চাঁদ ঐ খোলা বুকে আছড়ে পড়ে হয়ে যেতে লেগেছে পুড়ে ছাই,,,,,
তবুও শোকের জীবাণুর গলাধঃকরণ অসমাপ্তই থেকে যায়,,,,
এক মায়ের পাথর দৃষ্টি প্রতীক্ষায় উন্মুখ হয়ে তাকিয়ে থাকে শেষ দেখা ছেলেকে দেখাবার জন্য তার পিতার,,,,,,
প্রয়াণে যে পড়ে আছে অজ্ঞাতবাসে প্রবাসে বিদেশ বিঁভুইয়ে কারণ তার আসা কিংবা তার পিতাকে একবার চোখের শেষ দেখা সবকিছুই এক অজন্মাভ্রূণ শোক একেবারেই অসম্ভব এই লকডাউনে,,,,
সসাগরা ধরিত্রীর গর্ভে যখন লুটিয়ে পড়েছে এক স্ত্রীর ইচ্ছাশক্তি আর সকল মনস্কাম বৈকল্য হয়ে অস্তাচলে আশ্রয় নিতে লেগেছে শেষ আঁধারটুকু শুষে নিয়ে এই হাঙর সময়ে,,,,,
তখন পর্ণমোচী সম্পর্ক গাঁটছড়ায় নিজেই নিজের স্কন্ধে তুলে নেয় সে মৃত স্বামীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ভার,,,,,
যেন আজ সেই পরিণয়ের মাল্যদানে আটকে থেকে যায় তখন বিধবার কালবেলা,,,,,
আটঘাট নেই বাঁধা,,,,,
নেই কোন আয়োজন নেই কোন ভিড়ের জমায়েত হবার প্রয়োজন,,,,
শুধু মৃত্যুপ্রহরীর বাঁশি বেজে যেতে থাকে যে সময় হয়ে গেছে আর বিলম্ব নয় এবার নিয়ে যেতেই হবে মরদেহ বেশিক্ষণ ফেলে রাখতে নেই,,,
নেই কোন বিকল্প সহজাত উপায় এর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার,,,
সময় তখন পক্ষাঘাতে গুটিয়ে মড়কলাগা গাছগাছালি যারা শুধু কাঙাল একটু প্রশান্তির ছায়া পেতে রৌদ্রদগ্ধ রাজকার্য সেরে,,,,
আর মনে মনে চলতে থাকে তখন অভিব্যক্তির সেই এক আচরণ হতাশার ঐ স্ত্রীর তার মৃত স্বামীকে ঘিরে যে আমারো পাশে দাঁড়াবে কেউ আছে হাত বাড়ালেই তাকে ছোঁয়া যায় অমোঘ বিশ্বাসে,,,
কিন্তু সবটাই শূন্য হয়ে যায় নাগরিক শৃঙ্খলে জং ধরা স্বভাবসিদ্ধ আচরণে,,,,
প্রত্যেকেই প্রায় এই অজ্ঞাতবাসে ভয় ও শঙ্কায় গুটিয়ে থাকা ঘরকুনো এক অপ্রচলিত শ্যাওলা যে শুধু নীরব দর্শকের মতন তাকিয়ে দেখবে কিন্তু কিছু বের হয়ে করতে পারবে না এক অকাল কুষ্মাণ্ড এর মতন প্রতিদিন ধরে এক আচরণ নিয়েই থেকে যাবে তারা তাদের সঙ্কোচনশীল গহ্বরে,,,,
সর্বরোগহর শোক কামনা যা অর্ধসত্য এক প্রচ্ছদে লুকানো ক্ষণস্থায়ী মগ্নতা শীঘ্রই উড়ে যায় যৌবনের মতন,,,,,
একদিন চুয়াচন্দনআতরস্নিগ্ধ ললাটে ললিতসখ্যপ্রণয়লাস্যে এঁকে দিয়েছিলে তুমি সিঁথির আগুনে গৈরিক গোধুলি সন্ধ্যে,,,,
এখন তা ক্ষয়াটে পাঁজর দুমড়ে মুচড়ে হাড়কাঠ অগুরুচন্দন তোমার দাহে তাই ভয়ে কাঁটা আমার নিঃসঙ্গ শরীর পাশে কেউ নেই শুধু আত্মস্থ হাহাকার ছাড়া,,,,,
ছেলে থাকতেও সে আসতে পারছে না উত্তরাধিকারী সূত্রে তার জন্মসিদ্ধ প্রায়োগিক অধিকার শেষ কার্য করতে পারার অধিকার সঙ্গে নিয়ে,,,,
চৌদিকে তখন সেই অসহায় গিরিমাটি চোখ রাঙিয়ে ধ্বসে পড়তে লেগেছে ঝুরোমাটি রূপে তবুও প্রখর সহনশীলতায় ধুমাবতীর বিষাদাগ্নির আঁচল পাতা শেষবারের তরে তার স্বামীকে দেওয়া আশ্রয় শুধু একলা পথে চলা একলা একার অভিজ্ঞতা হয়েই থেকে যায়,,,,
দুহাতের করতলের ভাগ্যরেখায় অঝোর ধারায় শ্রাবণে মুখ লুকানো তার শুষ্ক ঠোঁটের চিৎকারে ডাকে সন্তানের শুশ্রূষা কাছে পাবার জন্য কিন্তু কাউকেই নিজের কাছে আশ্রয় হিসাবে পায় না,,,,
কিন্তু কালিন্দীর গর্ভে শুধুই জমতে থাকে অদৃষ্টের পরিহাসে পোড়া ছাই এর অজ্ঞাতবাস,,,,,
বিধাতার উত্তরপুরুষ অসহায় সজলধারা চোখে পাথর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকে কী করুণ এই মৃত্যুর পর মরদেহের দুর্দশা,,,,
সসাগরা ধরিত্রীর অসুখ হয়েছে কে জানে কবে আবার সে আরোগ্যলাভ করে সুস্থ হয়ে উঠবে কে জানে,,,,
তখন হঠাৎ এই মুঠো মুঠো অস্থিভস্মছাই এর মোচ্ছবপ্রাতের দৃশ্য ধরা পড়ে ভিডিও কলের মাধ্যমে স্পর্শযোগ্য দুরত্বে থাকা ছেলের কাছে,,,,,
ছেলে দেখে একলা একা এক স্ত্রীর যাত্রা অগ্নিশিখার কাজলে জেগে উঠেছে যার অভিজ্ঞান শাস্ত্রনিয়মনীতির এক বিরুদ্ধাচরণ হয়ে,,,,
নিজেই নিজে আগুন দেয় স্বামীর মুখে,,,,
নিষিদ্ধ তীর্থক্ষেত্রে তখন জাঁকিয়ে বসতে লেগেছে মৃত্যুর হিমশীতলজমাট বাঁধা অবসাদ,,,,
যেখানে অজ্ঞাতবাসের আদিখ্যেতায় স্পর্শযোগ্য দূরত্বে থাকতে গিয়ে অসহায় হয়ে উঠেছে প্রতিটি মানুষের উপচিকীর্ষার মনন,,,
অল ক্লিয়ার মরণের আকন্ঠ অগ্নিদাহ শরীর মোক্ষ পাবার চাহিদায় কাছছাড়া তৃষ্ণায় ডুকড়ে কেঁদে ওঠে,,,,,
হয়ত ঐ মৃত ব্যক্তির মনন ও তার অনুরণন নিঃশর্ত সমর্পণ যে আমার আজকে অন্তিম যাত্রায় কেউ নেই কাছে,,,,
কিন্তু একদিন আমারো ছিল সব
ছিল এক সুখী গৃহকোণ আজ সে সকল কিছু রয়েছে কাছছাড়া,,,,
পৃথিবীর অসুখ করেছে আর সেই অসুখ একদিন ঠিক সেরে যাবে মনে মনে বিধাতার উত্তরপুরুষ কে জানায় সে তার অন্তিম প্রার্থনা,,,,,
যে সকলে যেন ভালো থাকে আর তুমি যেন সবাইকে ভালো রেখো এর থেকে বেশি কিছু চাওয়ার নেই আমার,,,,,
আত্মশ্লাঘার কালো ধোঁয়া কুন্ডলী পাকিয়ে মর্ত্য থেকে সংক্রামিত বিষাক্ত ধরিত্রী ছেড়ে স্বর্গে উঠে খুঁজে নিতে চায় অন্য ঠিকানা নতুন করে,,,,
আর সেই কালো ধোঁয়ার ছাই ধুমাবতীর শরীরে আঁচল হয়ে জড়িয়ে যেতে থাকে দ্বিতীয়বার পুনর্জন্ম নেবার অসম্ভব প্রত্যাশায়,,,,
সমগ্র শরীর তখন শোকতাপদগ্ধ জ্বর শুষে ছুট লাগিয়েছে আবার নতুন করে পেতে সেই সিঁথির বিষাদ শুভ্রজ্যোৎস্না পাগলকরা উল্লাসের পথে,,,,,
এক পেছনে ফেলে আসা অতীতে কিশোরীর জীবনযাপন,,,,,
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন